বৃষ্টি এলে যেসব আমল করবেন
আপলোড সময় :
১৭-০৪-২০২৫ ১২:৪৫:২৯ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১৭-০৪-২০২৫ ১২:৪৫:২৯ অপরাহ্ন
বৃষ্টি মহান আল্লাহর একটি নেয়ামত। পবিত্র কুরআনে তিনি বলেন, ‘তিনিই আল্লাহ, যিনি নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডল সৃজন করেছেন এবং আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে অতঃপর তা দ্বারা তোমাদের জন্য রিজিক উৎপন্ন করেছেন। নৌকাকে তোমাদের আজ্ঞাবহ করেছেন, যাতে তাঁর আদেশে সমুদ্রে চলাফেরা করে এবং নদ-নদীকে তোমাদের সেবায় নিয়োজিত করেছেন’ (সুরা ইব্রাহিম : ৩২)। বৃষ্টির সময় মুসলমানের কিছু করণীয় আমল রয়েছে।
কল্যাণ কামনা করা : বৃষ্টি শুরু হলে রাসুলুল্লাহ (সা.) কল্যাণ ও উপকার পেতে তিন শব্দের ছোট্ট একটি দোয়া বেশি বেশি পড়তেন। দোয়াটি হলো, ‘আল্লাহুম্মা সাইয়্যেবান নাফিয়া, অর্থাৎ হে আল্লাহ! আপনি মুষলধারায় যে বৃষ্টি দিচ্ছেন তা যেন আমাদের জন্য উপকারী হয়’ (বুখারি ও নাসাঈ)। এ দোয়া পড়লে আল্লাহ তায়ালা বৃষ্টির ক্ষতিকর দিকগুলো দূর করে কল্যাণকর ও উপকারী বৃষ্টি দান করবেন।
বৃষ্টির পানি স্পর্শ করা : বৃষ্টি উপভোগ করা এবং বৃষ্টির পানি গায়ে স্পর্শ করানো নবীজি (সা.)-এর একটি আমল। মাঝেমধ্যে রাসুল (সা.) আল্লাহর রহমতের বারিধারায় নিজের শরীর ভিজিয়ে নিতেন। হজরত আনাস (রা.) বলেন, আমরা সাথি-সঙ্গীরা একবার রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে ছিলাম, এমতাবস্থায় বৃষ্টি শুরু হলো। তখন রাসুল (সা.) তাঁর শরীর থেকে কাপড়ের একাংশ সরিয়ে দিলেন যেন বৃষ্টির পানি গায়ে লাগে। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! এমনটি কেন করলেন? নবীজি (সা.) বললেন, কেননা এই বৃষ্টি তাঁর রবের কাছ থেকে মাত্রই এসেছে। (মুসলিম ২৯৪)
ক্ষতি থেকে আশ্রয় চাওয়া : ঝড়-বৃষ্টির ভারী বর্ষণের ক্ষতি থেকে বেঁচে থাকতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেয়ে দোয়া করা সুন্নত। হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি জুমার দিন দারুল কাজার (বিচার করার স্থান) দিকের দরজা দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করল। এসময় আল্লাহর রাসুলুল্লাহ (সা.) দাঁড়িয়ে খুতবা দিচ্ছিলেন। লোকটি তাঁর সম্মুখে দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! ধনসম্পদ ধ্বংস হয়ে গেল এবং রাস্তাঘাট বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল।
কাজেই আপনি বৃষ্টি বন্ধের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন। হজরত আনাস (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) তখন দুহাত তুলে (এভাবে) দোয়া করলেন, ‘আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়া লা আলাইনা, আল্লাহুম্মা আলাল আকামি ওয়াল ঝিবালি ওয়াল আঝামি ওয়াজ জিরাবি ওয়াল আওদিয়াতি ওয়া মানাবিতিশ শাঝারি, অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমাদের আশপাশে, আমাদের ওপর নয়। হে আল্লাহ! টিলা, মালভূমি, উপত্যকায় এবং বনভূমিতে বর্ষণ করুন।’ হজরত আনাস (রা.) বলেন, তখন বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেল এবং আমরা বেরিয়ে রোদে চলতে লাগলাম। (বুখারি)
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ : বৃষ্টিপাত বন্ধ হলে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলতেন, যে ব্যক্তি (বৃষ্টির পর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন) এই দোয়া পাঠ করে, সে আমাকে বিশ্বাস করে আর তারকায় (তারার শক্তিতে) অবিশ্বাস করে। দোয়াটি হলো, ‘মুত্তিরনা বিফাদলিল্লাহি ওয়া রাহমাতিহি, অর্থাৎ আমরা আল্লাহর দয়া ও করুণার বৃষ্টি লাভ করেছি’ (বুখারি ও মুসলিম)। তা ছাড়া দোয়া কবুল হওয়ার বিশেষ সময়গুলোর মধ্যে বৃষ্টির সময়ও একটি।
সুতরাং বৃষ্টি শুরু হলে নিজেদের জানা দোয়াগুলো পেশ করতে আল্লাহর কাছে দুহাত তুলে রোনাজারি করা বা দোয়া করা জরুরি। প্রিয়নবী রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘দুই সময়ের দোয়া কখনো ফিরিয়ে দেওয়া হয় না ১. আজানের পর করা দোয়া ২. বৃষ্টির সময় করা দোয়া’ (আল-হাকিম)। আল্লাহ সবাইকে আমল করার তওফিক দিন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : mainadmin
কমেন্ট বক্স