গত ১৬ থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত মৃত্যু, সহিংসতা, নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের তদন্তে হাইকোর্ট বিভাগের তিন বিচারপতির সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিশন পুনর্গঠন করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানকে সভাপতি করে গঠিত এই কমিশনের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজল ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরী। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, কমিশন ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করবে।
এর আগে ১৬ জুলাই সংঘটিত ঘটনার তদন্তের জন্য বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানকে দায়িত্ব দিয়ে এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছিল। তবে গতকালের প্রজ্ঞাপনে পূর্বের প্রজ্ঞাপন রহিত করে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিশন পুনর্গঠন করা হয়েছে।
কমিশনের কার্যপরিধি অনুযায়ী, ১৬ থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত সংঘটিত সহিংসতা ও মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটন এবং দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা হবে। এ সময়ের মধ্যে সংঘটিত নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিদেরও চিহ্নিত করা হবে। পাশাপাশি, সরকারি, আধাসরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করবে কমিশন।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ১৬ থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত সংঘাতে ১৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মতে, এই সংখ্যা ২৬৬। আগামী রোববার (৪ আগস্ট) থেকে কমিশন সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করতে রংপুর যাচ্ছে। রংপুর সার্কিট হাউসে ৫ আগস্ট সকাল ৯টায় সহিংসতায় নিহত আবু সাঈদের বিষয়ে সাক্ষ্য গ্রহণ করবে কমিশন। ৬ আগস্ট নিহত সাজ্জাদ হোসেন, মোসলেম উদ্দিন মিলন ও মানিক মিয়া এবং ৭ আগস্ট নিহত মেরাজুল ইসলাম ও আবদুল্লাহ আল তাহেরের বিষয়ে সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে। বিচারপতি দিলীরুজ্জামান জানিয়েছেন, রংপুরে কমিশনের যাওয়ার বিষয়টি সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে জানানোর জন্য আজ শুক্রবার থেকে সেখানে মাইকিং করা হবে।