ইসমাইল হানিয়ার হত্যাকাণ্ডের পর হামাসের রাজনৈতিক শাখার নতুন নেতার দায়িত্ব কে নিতে পারেন তা নিয়ে জল্পনা চলছে। হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাসের নতুন শীর্ষ নেতা হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন খালেদ মাশাল। তবে ফিলিস্তিনের গাজায় হামাসের শীর্ষ কর্মকর্তা খলিল আল-হাইয়ার নামও আলোচনায় রয়েছে। তবে সার্বিক বিশ্লেষণে খালেদ মাশালই এগিয়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ইসরায়েলে সরাসরি হামলা চালানোর নির্দেশ দেন। ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তেহরানে গিয়েছিলেন হানিয়া। বৃহস্পতিবার তেহরানে আয়াতুল্লাহ খামেনির নেতৃত্বে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে লাখ লাখ মানুষ অংশ নেন।
পররাষ্ট্র বিশ্লেষক লিসা দফতরি ফক্স নিউজকে বলেন, "ইসলামিক রিপাবলিকের সর্বোচ্চ নেতা হানিয়া হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নেওয়ার কথা বলছেন। হানিয়া তাদের অতিথি ছিলেন এবং অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। তখনই তাঁকে হত্যা করা হয়। তাই এটি ইরানের ওপরও হামলা।"
এ প্রেক্ষাপটে হামাসের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে বিস্তৃত যুদ্ধের শঙ্কা বাড়ছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, "ইসরায়েল সম্প্রতি তাদের প্রতিপক্ষকে শক্তিশালী আঘাত করতে সক্ষম হয়েছে।" তিনি ইসরায়েলি বাসিন্দাদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, "সামনে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ আসছে।"
ইসরায়েলের দাবি, গত মাসে গাজা উপত্যকায় চালানো এক বিমান হামলায় হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দাইফ নিহত হয়েছেন। গাজার খান ইউনিসে ১৩ জুলাই চালানো ওই হামলায় ৯০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছিলেন। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা পরিচালনার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ছিলেন দাইফ।
তবে দাইফ হত্যার বিষয়ে হামাসের পক্ষ থেকে কোনো নিশ্চিত বার্তা আসেনি। হামাস সদস্য ইজ্জত আল-রাশক টেলিগ্রাম বার্তায় ইসরায়েলের দাবি ভিত্তিহীন বলে জানান। ইসরায়েল গোয়েন্দা মূল্যায়নের ভিত্তিতে দাবি করেছে যে, তারা নিশ্চিতভাবে মোহাম্মদ দাইফকে নিশ্চিহ্ন করেছে।
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় প্রতিনিয়ত হতাহতের ঘটনা ঘটছে। দ্য গার্ডিয়ান অনলাইন জানায়, বৃহস্পতিবার উত্তর গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আলজাজিরার দুই সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। তারা হলেন প্রতিনিধি ইসমাইল আল-গউল এবং আলোকচিত্রী রামি আল-রিফি। এ ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় এক শিশুও নিহত হয়েছে।
ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার মধ্যে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি) একটি জরুরি সভার আহ্বান করেছে। তারা দুই পক্ষকে শান্ত থাকার এবং বৃহত্তম যুদ্ধ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। তেহরানে হানিয়া হত্যার নিন্দা জানাতে ইরান নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।