ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫ , ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ই-পেপার

নারীর হিজাব ও পশ্চিমা বিশ্বে ইসলামের বিরুদ্ধে বৈষম্য

আপলোড সময় : ১৬-০৩-২০২৫ ০৩:১০:১৯ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১৬-০৩-২০২৫ ০৪:১৫:২৮ অপরাহ্ন
নারীর হিজাব ও পশ্চিমা বিশ্বে ইসলামের বিরুদ্ধে বৈষম্য প্রতীকী ছবি

নারীর স্বাধীনতা ও ব্যক্তিস্বাধীনতা নিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব বরাবরই উচ্চকণ্ঠ। কিন্তু বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। যখন বিষয়টি আসে মুসলিম নারীদের হিজাব পরার অধিকারের ক্ষেত্রে, তখন তাদের কথিত উদারনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও মানবাধিকারের বুলি মুখ থুবড়ে পড়ে।

 

সম্প্রতি ফ্রান্স, জার্মানি, সুইজারল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশে হিজাব নিষিদ্ধ করার নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। স্কুল, কলেজ ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে মুসলিম নারীদের হিজাব পরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, যা স্পষ্টতই একটি বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত। একদিকে যখন তারা নারীদের পোশাকের স্বাধীনতা নিয়ে সরব, অন্যদিকে মুসলিম নারীদের জন্য সেই স্বাধীনতাকে অস্বীকার করছে।

 

এই বৈষম্য শুধু ইউরোপের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মতো দেশেও একাধিকবার হিজাব পরার কারণে মুসলিম নারীদের হয়রানি ও আক্রমণের শিকার হতে দেখা গেছে। ইসলামের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা, মুসলিম নারীদের নিপীড়ন, এবং ইসলামবিদ্বেষী নীতিগুলো স্পষ্ট করে দেয় যে পশ্চিমা বিশ্বে "ধর্মনিরপেক্ষতা" ও "মানবাধিকার" কেবল তাদের সুবিধামতো ব্যবহৃত হয়।

 

তাহলে প্রশ্ন থেকে যায়, হিজাব কি শুধুই একটি পোশাক? নাকি এটি মুসলিম নারীদের আত্মপরিচয়ের প্রতীক? ইসলামে হিজাব কেবলমাত্র একটি পোশাক নয়; এটি নারীর মর্যাদা, সতীত্ব ও আত্মসম্মানের প্রতীক। এটি একটি স্বাধীন সিদ্ধান্ত, যা একজন মুসলিম নারী স্বেচ্ছায় গ্রহণ করেন। কিন্তু পশ্চিমা বিশ্বে এটিকে নিপীড়নের প্রতীক হিসেবে দেখানো হয়।

 

এখানে দ্বিচারিতা স্পষ্ট— যখন একজন ইউরোপীয় নারী যা খুশি পরতে পারেন, তখন একজন মুসলিম নারী কেন তার ধর্মীয় পোশাক পরতে পারবেন না? যখন ‘ফ্রিডম অব চয়েস’ বা ‘ব্যক্তিস্বাধীনতা’ পশ্চিমাদের জন্য প্রযোজ্য, তখন সেটি মুসলিম নারীদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম কেন?

 

পশ্চিমা বিশ্বে ইসলামবিদ্বেষী নীতি ও মুসলিম নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধ করা জরুরি। হিজাব বা ইসলামের প্রতীকী পোশাক পরার অধিকারও মানবাধিকারের অন্তর্ভুক্ত। এটি কোনো রাষ্ট্র বা প্রশাসনের হস্তক্ষেপের বিষয় নয়। বিশ্ববাসীকে বুঝতে হবে, প্রকৃত স্বাধীনতা হলো প্রত্যেক ব্যক্তির নিজস্ব বিশ্বাস অনুযায়ী জীবনযাপন করার অধিকার, যা মুসলিম নারীদের ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য।

 

পশ্চিমা বিশ্ব যদি সত্যিকার অর্থে মানবাধিকারের চ্যাম্পিয়ন হতে চায়, তবে মুসলিম নারীদের হিজাব পরার অধিকারকে সম্মান জানাতে হবে। অন্যথায় তাদের "স্বাধীনতা" ও "মানবাধিকারের" বুলি নিছক ভণ্ডামি ছাড়া কিছুই নয়।

 

লেখকঃ মোহাম্মদ আনিসুর রহমান সোহাগ (বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবং সম্পাদক, দৈনিক মাতৃভূমির খবর) 

 

 
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : mainadmin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ