ঢাকা , শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪ , ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ই-পেপার

অভিন্ন নদীর কোথায় অবকাঠামো হচ্ছে, না জানলে ঝুঁকি: রিজওয়ানা হাসান

আপলোড সময় : ২৫-০৯-২০২৪ ০৪:৩৬:৩৫ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২৫-০৯-২০২৪ ০৪:৩৬:৩৫ অপরাহ্ন
অভিন্ন নদীর কোথায় অবকাঠামো হচ্ছে, না জানলে ঝুঁকি: রিজওয়ানা হাসান
অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, সব অভিন্ন জলরাশির কোথায় কোথায় অবকাঠামো হচ্ছে, তা জানতে না পারলে দেশের পানিব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর গ্রিন রোডের পানি ভবনে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘অভিন্ন নদীতে বাংলাদেশের ন্যায্য অধিকার’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে বিশ্ব নদী দিবস ২০২৪ উদ্‌যাপন পরিষদ।

প্রতিবেশী দেশকে ইঙ্গিত করে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, পানি ভাগাভাগির বিষয়টি হয়তো জটিল। এই কাজে দুই দেশের স্বার্থকে সূক্ষ্মভাবে ভারসাম্য রক্ষা করতে হয়। তবে কতগুলো বিষয় আছে, সেগুলো খুব জটিল নয়। যেমন বন্যার পানি কখন বাংলাদেশে প্রবেশ করবে, কী মাত্রায় প্রবেশ করবে, বৃষ্টিপাতের মাত্রা কী, বাংলাদেশে কতটুকু প্রবাহিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে- এসব তথ্য নিতান্তই মানবিক কারণে জানানো উচিত, তা জানানো সম্ভব। এর মধ্যে রাজনীতি টেনে আনার প্রয়োজন নেই।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, সব অভিন্ন জলরাশির ওপর যেখানে যেখানে অবকাঠামো হচ্ছে, এটা কেবল ভারত নয়, চীন করল, নেপাল করল, কোথায় কোথায় অবকাঠামো হচ্ছে, এটা আমাদের জানতে হবে। এটা না জানলে আমাদের পানিব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, যদি ওয়েবসাইটে লিখে দেয়া হয়, ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে, সেখান থেকে কিছু বোঝা যায় না। ভারী কতটুকু? এটা কি স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভারী? যখন দেখা যাবে, ঘণ্টায় ঘণ্টায় পানি বেড়ে যাচ্ছে, তখন প্রতিবেশী দেশের এর জন্য আন্তর্জাতিক আইন সই করার প্রয়োজন নেই। এগুলো প্রথাগত অধিকার। সেগুলোর ভিত্তিতে যদি প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে জানিয়ে দেয়া হয়, এই পরিমাণ পানি প্রবাহিত হবে বা চলে আসবে, তখন সতর্ক হওয়া যায়। হয়তো বন্যা আটকানো যাবে না, কিন্তু সতর্ক হওয়া যাবে।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের এই সময়ে এসে যখন প্রলয়ংকরী বন্যা বাড়বে, তখন আমাদের ভারত থেকে, চীন থেকে, নেপাল থেকে এই তথ্যগুলো পেতে হবে যে একটা অভিন্ন জলরাশিতে কতগুলো স্থাপনা রয়েছে, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কী, পানির পরিমাণ কী, কতটুকু ছাড়া হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, যেহেতু এটা আন্তর্জাতিক নদী, তাই বলার সুযোগ নেই যে এটা আমার নদী। আমার মানুষকে পানি দিয়ে অন্যদের কথা ভাবব, এটা ভাবার সুযোগ নেই। কারণ, এটা আন্তর্জাতিক নদী। আন্তর্জাতিক নদীতে পানির একটা হিস্যা আমার রয়েছে।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা আমাদের এই পানির অধিকার নিয়ে, পানির বিষয় নিয়ে জনমানুষের কথা শুনে বোঝাপড়া ঠিক করে ভারতের সঙ্গে যে আলোচনা করব, তা আপনাদের জানাব। সেই আলোচনার সূত্রপাত খুব দেরি করে করব না, শিগগিরই করতে চাই। এই মুহূর্তে কিছু কিছু বিষয় আরও বেশি অগ্রাধিকারে আছে, তাই কিছুদিন সময় লাগবে।

আগাম তথ্য পেলে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা কমানো যায় বলে উল্লেখ করেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, আমাদের এবারের ক্ষয়ক্ষতির কথা তুলে ধরে, প্রাণহানির কথা তুলে ধরে মানবিক কারণে আমরা আমাদের উজানের দেশগুলোর সঙ্গে এই তথ্যগুলো পাওয়ার ব্যাপারে আলাপ শুরু করে দেব।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রিভার অ্যান্ড ডেলটা রিসার্চ সেন্টারের (আরডিআরসি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ব নদী দিবস উদ্‌যাপন পরিষদের আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস। সঞ্চালনা করেন বাপার সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম ইন বাংলাদেশের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা প্রমুখ।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Matribhumir Khobor

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ