দেশের বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ইসলামী ব্যাংকের মোট ঋণের অর্ধেকের বেশি নিয়ে গেছে এস আলম গ্রুপ। আর এসব ঋণ নেওয়া হয়েছে নামে-বেনামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে নতুন বোর্ডের সভা শেষে এসব কথা জানান ব্যাংকটির নতুন চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ।
ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ব্যাংকটির থেকে এস আলম গ্রুপের নেয়া ঋণের পূর্ণাঙ্গ হিসাব এখন বের করা হচ্ছে। এসব ঋণের বিপরীতে যেসব সম্পদ বন্ধক দেয়া আছে, তারও পুনর্মূল্যায়ন করা হচ্ছে। কারণ এসব সম্পদের দাম বেশি দেখিয়ে ঋণ বের করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইসলামী ব্যাংকের ঋণের বিপরীতে বন্ধক দেয়া হয়নি, এস আলম গ্রুপের এমন সম্পদের খোঁজ নিতে আইন মন্ত্রণালয়ের সহায়তা নেয়া হচ্ছে। এসব সম্পদ খুঁজে পাওয়ার পর তা ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা করা হবে।
ব্যাংকটির চেয়ারম্যান বলেন, ২০২২ সাল থেকে ব্যাংকে তারল্যসংকট শুরু হয়। এখন ব্যাংকের গ্রাহক, প্রবাসী আয় পাঠানো গ্রাহক, শেয়ারধারী ও বিদেশি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান-কেউই ব্যাংকের ওপর আস্থা পাচ্ছেন না। এ জন্য ব্যাংকের প্রকৃত অবস্থা যাচাইয়ে তিনটি নিরীক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা ব্যাংকের ঋণ, বিনিয়োগ ও মানবসম্পদের ওপর নিরীক্ষা করবে। আগে ভালো নিরীক্ষা হয়নি, তাই আজ ব্যাংকের এই পরিণতি।
এস আলমকে সহযোগিতা করেছে ব্যাংকের এমন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিচের দিকের কর্মকর্তাদের এখনই সরাতে চাচ্ছি না। নিচের দিকে হিট করলে সব ভেঙে পড়বে। ওপরের কিছু কর্মকর্তাকে সরানো হয়েছে, হচ্ছে। আইন অনুযায়ী সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে, অপরাধী কেউ ছাড় পাবে না। আবার ভুল প্রক্রিয়ায়ও কাউকে সরানো হবে না।
২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয় চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের ছেলে আহসানুল আলম। ব্যাংকটির ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে ব্যাংকটি থেকে প্রায় ৮৮ হাজার কোটি টাকা একাই বের করে নিয়েছে এস আলম গ্রুপ।