ঢাকা ০৫:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষের শহরে অভিবাসন ও জীনবমান নিয়ে মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত রাঙ্গুনিয়ায় আ: লীগ নেতার মৃত্যুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর শোক বরিশালে বৃষ্টি কামনায় নামাজ আদায়। রুপগঞ্জ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে এক দুর্ধর্ষ ডাকাত ওমর ফারুক গ্রেফতার বানারীপাড়ায় কিশোরী অপহরণ করে ধর্ষণ। বাকেরগঞ্জ থেকে ধর্ষক গ্রেফতার। “কোলোরেক্টাল ক্যান্সার সচেতনতা ফোরামের আয়োজন করেছে এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা” বরিশালে পথ শিশুদের সহযোগিতায় কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। গজারিয়ায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান দুই প্রতিষ্ঠান কে অর্থদন্ড টেকপাড়া ও ইয়াকুব নগরের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্হদের মাঝে নগর অর্থ ও বস্ত্র বিতরণ বাস ও ফুটওভার ব্রিজ মুখোমুখি সংঘর্ষ

“২৪ বছরের দখলদারিত্ব থেকে মুক্ত হলো আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদ” নতুন চেয়ারম্যান সতন্ত্র প্রার্থী নিয়াজ মোর্শেদ রাজু

আমিনুর রহমান, কমলগঞ্জ প্রতিনিধি।। কমলগঞ্জের ৬ নং আলীনগর ইউনিয়নে চমক দেখালেন তরুণ সমাজ সেবক যুবলীগ নেতা মো. নিয়াজ মোর্শেদ রাজু। নির্বাচনে প্রথম দাঁড়িয়েই তিনি ভাঙ্গলেন ২৪ বছরের ইতিহাস। গত ৫ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আনারস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করে ২৪ বছরের দখলদারিত্বের রেকর্ড ভাঙলেন ৩২ বছর বয়সের এ তরুণ যুব নেতা। নির্বাচনে রাজুর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি টানা ৪ বারের চেয়ারম্যান ফজলুল হক বাদশা। নবীন প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক নিয়ে ২ হাজার ২৬৫ ভোটের ব্যবধানে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হক বাদশাকে হারিয়ে রাজু গড়েন নতুন এ রেকর্ড। একই সঙ্গে মৌলভীবাজার জেলার একমাত্র নবীন ইউপি চেয়ারম্যান হিসাবেও রেকর্ড গড়েছেন তিনি। এ জয়ের মধ্যদিয়ে একজন চেয়ারম্যানের দখলধারিত্ব থেকে আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদ মুক্ত হলো দীর্ঘ ২৪ বছর পর।
জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মরহুম মোহাম্মদ আলী ছিলেন আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদের দুই বারের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি ছিলেন এ ইউনিয়নের অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন চেয়ারম্যান। তাঁর ভাতিজা হলেন আওয়ামী লীগ নেতা ফজলুল হক বাদশা। চাচার জনপ্রিয়তায় ভর করে ১৯৯৭ সালে বিপুল ভোটে প্রথমবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বাদশা। এরপর ধারাবাহিক ভাবে ২০০৩, ২০১১ ও ২০১৬ সালে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১/১১ আর করোনাকালীন সময় মিলিয়ে তিনি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন টানা ২৪ বছর। ১৯৯৭ সালের আগে এ ইউনিয়নের টানা দুই বারের চেয়ারম্যান ছিলেন নিয়াজ মোর্শেদ রাজুর দাদা হাফিজ উল্ল্যা মহালদার। দাদা যখন আলীনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন তখন নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান রাজুর বয়স ছিল ৮ বছর। পরবর্তীতে এ ইউনিয়নে ২ বার রাজুর এক দাদা ও এক চাচা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও বিজয় তরী পাড় হতে পারেননি। ২০১৯ সালের শুরুতে সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আশা নিয়ে আলীনগর ইউনিয়নে নামেন তরুন সমাজ সেবক উপজেলা যুবলীগের অন্যতম সদস্য নিয়াজ মোর্শেদ রাজু। এ সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিতি আর এলাকার উন্নয়নে সার্বিক সহযোগীতায় এবং অনুদানে ইউনিয়ন জুড়ে তিনি পরিচিতি লাভ করেন। করোনাকালীন সময়ে আলীনগর ইউনিয়নবাসীর পাশে ছিলেন রাজু। প্রায় ৬ মাস পূর্বে নির্বাচনে আসার ঘোষণা দেন। পঞ্চম ধাপে ইউপি নির্বাচনের তফসিলে কমলগঞ্জের ৯ ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর তরুন সমাজ সেবক যুবলীগ নেতা নিয়াজ মুশের্দ রাজু দলীয় মনোনয়ন চান। কিন্তু নানা নাটকীয়তায় নৌকা জোটেনি তার ভাগ্যে। পরে ইউনিয়নবাসীর চাপে পারিবারিক পরিচয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে তিনি নির্বাচনী মাঠে নামেন। ৯ ডিসেম্বর মনোনয়ন দাখিল করে ভোট চাইতে ভোটারদের ঘরে ঘরে ছুটে যান। তারপর ২০ ডিসেম্বর প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় নামেন রাজু। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় প্রথমে আওয়ামী লীগ ও পরে যুবলীগ তাকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এতে বাড়তে থাকে তার জনপ্রিয়তা। ৬ মাস পূর্বের ঘোষণা আর পারিবারিক পরিচয় নিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিপুল ভোটে প্রথমবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এ জয়ের মধ্যদিয়ে আলীনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজ উল্ল্যাহ মহালদারের উত্তরসূরী হিসেবে দীর্ঘ ২৪ বছর পর চেয়ারম্যান হিসাবে চেয়ারে বসলেন হাফিজ উল্ল্যাহর নাতি নিয়াজ মোর্শেদ রাজু।

আলাপকালে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান নিয়াজ মোর্শেদ রাজু বলেন,২৪ বছর ধরে ইউনিয়নবাসী নানা সমস্যায় জজর্রিত ছিলেন। সদ্য অনুষ্টিত আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটাররা তার জবাব দিয়েছেন। আলীনগর ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে রাজু বলেন, এই ইউনিয়নটি দীর্ঘ ২৪ বছর একজনের দখলদারিত্বে থাকায় তিনি তাঁর ইচ্ছামাফিক ইউনিয়নের কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। এতে সাধারণ মানুষ প্রকৃত নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত ছিল। ইউনিয়নের মানুষ এতোদিন তাদের আস্থা-ভরসার জায়গা পায়নি। এবারের নির্বাচনে মানুষ সেই দখলধারিত্বের প্রাচীর ভেঙ্গে ভোটের মাধ্যমে আমাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করে তারা এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে ইউনিয়নের সকল দল, মতের উর্দ্ধে উঠে এই অবহেলিত ইউনিয়নকে একটি মডেল ইউনিয়নে রুপান্তরিত করতে চাই। এতে ইউনিয়নের সকল নাগরিকের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষের শহরে অভিবাসন ও জীনবমান নিয়ে মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত

“২৪ বছরের দখলদারিত্ব থেকে মুক্ত হলো আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদ” নতুন চেয়ারম্যান সতন্ত্র প্রার্থী নিয়াজ মোর্শেদ রাজু

আপডেট টাইম ০৯:৪০:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২২

আমিনুর রহমান, কমলগঞ্জ প্রতিনিধি।। কমলগঞ্জের ৬ নং আলীনগর ইউনিয়নে চমক দেখালেন তরুণ সমাজ সেবক যুবলীগ নেতা মো. নিয়াজ মোর্শেদ রাজু। নির্বাচনে প্রথম দাঁড়িয়েই তিনি ভাঙ্গলেন ২৪ বছরের ইতিহাস। গত ৫ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আনারস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করে ২৪ বছরের দখলদারিত্বের রেকর্ড ভাঙলেন ৩২ বছর বয়সের এ তরুণ যুব নেতা। নির্বাচনে রাজুর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি টানা ৪ বারের চেয়ারম্যান ফজলুল হক বাদশা। নবীন প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক নিয়ে ২ হাজার ২৬৫ ভোটের ব্যবধানে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হক বাদশাকে হারিয়ে রাজু গড়েন নতুন এ রেকর্ড। একই সঙ্গে মৌলভীবাজার জেলার একমাত্র নবীন ইউপি চেয়ারম্যান হিসাবেও রেকর্ড গড়েছেন তিনি। এ জয়ের মধ্যদিয়ে একজন চেয়ারম্যানের দখলধারিত্ব থেকে আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদ মুক্ত হলো দীর্ঘ ২৪ বছর পর।
জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মরহুম মোহাম্মদ আলী ছিলেন আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদের দুই বারের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি ছিলেন এ ইউনিয়নের অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন চেয়ারম্যান। তাঁর ভাতিজা হলেন আওয়ামী লীগ নেতা ফজলুল হক বাদশা। চাচার জনপ্রিয়তায় ভর করে ১৯৯৭ সালে বিপুল ভোটে প্রথমবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বাদশা। এরপর ধারাবাহিক ভাবে ২০০৩, ২০১১ ও ২০১৬ সালে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১/১১ আর করোনাকালীন সময় মিলিয়ে তিনি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন টানা ২৪ বছর। ১৯৯৭ সালের আগে এ ইউনিয়নের টানা দুই বারের চেয়ারম্যান ছিলেন নিয়াজ মোর্শেদ রাজুর দাদা হাফিজ উল্ল্যা মহালদার। দাদা যখন আলীনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন তখন নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান রাজুর বয়স ছিল ৮ বছর। পরবর্তীতে এ ইউনিয়নে ২ বার রাজুর এক দাদা ও এক চাচা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও বিজয় তরী পাড় হতে পারেননি। ২০১৯ সালের শুরুতে সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আশা নিয়ে আলীনগর ইউনিয়নে নামেন তরুন সমাজ সেবক উপজেলা যুবলীগের অন্যতম সদস্য নিয়াজ মোর্শেদ রাজু। এ সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিতি আর এলাকার উন্নয়নে সার্বিক সহযোগীতায় এবং অনুদানে ইউনিয়ন জুড়ে তিনি পরিচিতি লাভ করেন। করোনাকালীন সময়ে আলীনগর ইউনিয়নবাসীর পাশে ছিলেন রাজু। প্রায় ৬ মাস পূর্বে নির্বাচনে আসার ঘোষণা দেন। পঞ্চম ধাপে ইউপি নির্বাচনের তফসিলে কমলগঞ্জের ৯ ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর তরুন সমাজ সেবক যুবলীগ নেতা নিয়াজ মুশের্দ রাজু দলীয় মনোনয়ন চান। কিন্তু নানা নাটকীয়তায় নৌকা জোটেনি তার ভাগ্যে। পরে ইউনিয়নবাসীর চাপে পারিবারিক পরিচয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে তিনি নির্বাচনী মাঠে নামেন। ৯ ডিসেম্বর মনোনয়ন দাখিল করে ভোট চাইতে ভোটারদের ঘরে ঘরে ছুটে যান। তারপর ২০ ডিসেম্বর প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় নামেন রাজু। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় প্রথমে আওয়ামী লীগ ও পরে যুবলীগ তাকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এতে বাড়তে থাকে তার জনপ্রিয়তা। ৬ মাস পূর্বের ঘোষণা আর পারিবারিক পরিচয় নিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিপুল ভোটে প্রথমবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এ জয়ের মধ্যদিয়ে আলীনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজ উল্ল্যাহ মহালদারের উত্তরসূরী হিসেবে দীর্ঘ ২৪ বছর পর চেয়ারম্যান হিসাবে চেয়ারে বসলেন হাফিজ উল্ল্যাহর নাতি নিয়াজ মোর্শেদ রাজু।

আলাপকালে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান নিয়াজ মোর্শেদ রাজু বলেন,২৪ বছর ধরে ইউনিয়নবাসী নানা সমস্যায় জজর্রিত ছিলেন। সদ্য অনুষ্টিত আলীনগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটাররা তার জবাব দিয়েছেন। আলীনগর ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে রাজু বলেন, এই ইউনিয়নটি দীর্ঘ ২৪ বছর একজনের দখলদারিত্বে থাকায় তিনি তাঁর ইচ্ছামাফিক ইউনিয়নের কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। এতে সাধারণ মানুষ প্রকৃত নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত ছিল। ইউনিয়নের মানুষ এতোদিন তাদের আস্থা-ভরসার জায়গা পায়নি। এবারের নির্বাচনে মানুষ সেই দখলধারিত্বের প্রাচীর ভেঙ্গে ভোটের মাধ্যমে আমাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করে তারা এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে ইউনিয়নের সকল দল, মতের উর্দ্ধে উঠে এই অবহেলিত ইউনিয়নকে একটি মডেল ইউনিয়নে রুপান্তরিত করতে চাই। এতে ইউনিয়নের সকল নাগরিকের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।