হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য পদে হবিগঞ্জের ৭ নারী নেত্রীকে নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা। এদের মধ্যে ২/৩ জন কেন্দ্রে দীর্ঘদিন ধরে জোর লবিং করছেন। তবে কে হচ্ছেন সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি তা এখনও কেউ নিশ্চিত হতে পারছেন না। ওই ৭ নারীর মধ্যে হবিগঞ্জের এক নারী সুনামগঞ্জের বধূ। তিনি হলেন শামীমা শাহরিয়ার, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের নেত্রী। বানিয়াচং উপজেলার যাত্রাপাশা গ্রামের বাসিন্দা প্রাক্তন শিক্ষক মরহুম আব্দুল হাই খানের কন্যা এবং রোটারিয়ান রেজাউল মোহিত খানের চাচাত বোন। শামীমা শাহরিয়ার বিগত নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তিনি এবার সুনামগঞ্জ জেলা থেকে সংরক্ষিত আসনের এমপি পদে মনোনয়ন ফরম কিনবেন বলে জানা গেছে। অপর ৬ জন হলেন- বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়া, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শিশু ও পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহফুজা বেগম সাঈদা, সাবেক মন্ত্রী দেওয়ান ফরিদ গাজীর মেয়ে সিলেট জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান দেওয়ান রুবা জেবীন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পর্যবেক্ষক উপ-কমিটির সদস্য ও জালালাবাদ এসোসিশেয়নের যুগ্ম সম্পাদক ফাহিমা চৌধুরী মনি, হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যুব মহিলা লীগ হবিগঞ্জ জেলা শাখা ও জনাব আলী ডিগ্রি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস শিরিন আক্তার, হবিগঞ্জ-১ আসনের সাবেক এমপি ইসমত চৌধুরী ও সংরক্ষিত আসনের সাবেক মহিলা এমপি আবেদা চৌধুরীর কন্যা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সদস্য ডাঃ নাজরা চৌধুরী। এই ৭ নারীনেত্রীর মধ্যে অনেকেই নানাভাবে চেষ্টা তদবির করে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারী বোর্ডের কাছে। কেউ কেউ আবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাত করেছেন। তাদের মধ্যে কারও স্বামী বা বাবা-মা, শ্বশুর আওয়ামী লীগের বড় নেতা। এবারে নতুনদের বেশি সুযোগ দেওয়ার সম্ভাবনার কথা আলোচনায় থাকায় আগ্রহীদের স্বজনরাও তৎপর রয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে আওয়ামী লীগ ধানমন্ডি কার্যালয়ে সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু হবে। ওই ৭ নারীনেত্রী আজ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করবেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর কমান্ডেন্ট মানিক চৌধুরীর কন্যা আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী সিলেট ও হবিগঞ্জ জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংরক্ষিত মহিলা এমপি নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার পর কেয়া চৌধুরী নবীগঞ্জ-বাহুবলে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড করে আলোচিত হন। তিনি ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে হবিগঞ্জ-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তিনি দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে স্বতন্ত্রভাবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল যদি অপ্রত্যাশিতভাবে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয় তাহলে যেন বিকল্প হিসেবে আওয়ামী লীগের একজন মাঠে থাকেন। আর আওয়ামী লীগ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল না হলে তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিতেন। কিন্তু ত্রæটি থাকার কারণে তার মনোনয়নপত্রটি বাতিল হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় কেয়া চৌধুরী আর আপিল করেননি। এবার কেয়া চৌধুরী সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হতে পারেন এলাকায় এমন আলোচনা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী অ্যাডভোকেট মাহফুজা বেগম সাঈদা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত রয়েছি। আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে এবার দলীয় মনোনয়ন চাইবো। আশা করি নেত্রী আমাকে মূল্যায়ন করবেন। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পর্যবেক্ষক উপ-কমিটির সদস্য ফাহিমা চৌধুরী মনি কোন মন্তব্য না করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নেন, সেটাই মেনে নিবো।
সাবেক মন্ত্রী দেওয়ান ফরিদ গাজীর মেয়ে দেওয়ান রুবা জেবীন চৌধুরী সংরক্ষিত আসনের ব্যাপারে বলেন- আমি মনোনয়ন চাইবো, সবকিছু নেত্রীর হাতে। তিনি যা ভাল মনে করেন সেটাই মেনে নিবো।
হবিগঞ্জ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী শিরিন আক্তার বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে দলের জন্য কাজ করছি। আশা করি দল আমাকে মূল্যায়ন করবে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পর্যবেক্ষক উপ-কমিটির সদস্য ডাঃ নাজরা চৌধুরী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছি। আওয়ামী লীগের সুখে-দুঃখে ছিলাম, আছি। মা-বাবা দুইজনই আওয়ামী লীগের এমপি ছিলেন, দলের জন্য কাজ করেছেন।