মনির খাঁন স্টাফ রিপোর্টার
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন বাঙ্গরা পূর্ব ইউনিয়নের খামারগ্রামের বাঙ্গরা-বৃষ্ণপুর-যুগেরখিল সড়কের কাইউম সিদ্দিকিরি বাড়ীর পাশে^র খালে ব্রিজ নির্মাণ না করে অপরিকল্পিত ভাবে কালর্ভাট নির্মাণ করায় জনদুর্ভোগ বেড়েছে। প্রায় ১০ বছর পূর্বে কালর্ভাটটি নির্মাণ করা হলেও সংযোগ সড়ক না হওয়ায় বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা স্থানীয়দের। লোকাল গভর্ন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্ট (এলজিএসপি-২) কর্মসূচীর অধীন এই কালর্ভাটটি নির্মাণ করা হয়। বন্যার পানিতে কালর্ভাটটির নিচের অংশে থাকা মাটি ভেঙ্গে যাওয়ায় বর্তমানে হুমির মধ্যে পরেছে কালর্ভাটটি! সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ এখনই প্রয়োজনিয় ব্যাবস্থা না নিলে যে কোন সময় সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙ্গে পরতে পারে কালর্ভাটি। ঠিকাদারের সঙ্গে প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে এই কালর্ভাটটি নির্মাণ করে সরকারি অর্থের লুটপাট হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এলাকাবাসীর দাবি অচিরেই সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ এ দিকে নজর দিবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ২৫/৩০ ফুট প্রস্থ্য খালের উপর নির্মাণ করা হয়েছে ৪ ফুট প্রস্থ্য একটি কালর্ভাট, নেই কোন সংযোগ সড়ক। পার হতে পারে না কোন যানবাহন। বন্যার পানিতে কালর্ভাটটির নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় তৈরী হয়েছে গর্তের। এতে করে হেলে পরেছে কালর্ভাটটি! কালর্ভাটটি নির্মাণে মানুষের কোনো কাজে আসছে না, হেলে পরায় ভবিষ্যতে কাজে আসবে এমন কোনো সম্ভবনাও দেখছেনা বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বর্তমানে কালর্ভাটের উপর ও খালের মধ্যে দিয়ে বাঁশ দিয়ে সাকুঁ নির্মাণ করে চলাচল করছে এলাকাবাসী। এই অপ্রয়োজনীয় কালর্ভাটটি উপকারের পরিবর্তে উল্টো দূর্ভোগ বাড়িয়েছে এলাকাবাসীর।
নাম প্রকাশে না করার শর্তে গ্রামবাসীর অভিযোগ, কোন পরিকল্পনা না করেই প্রকল্পের শেষ পর্যায় এসে পকেট ভারি করতেই তড়িঘড়ি করে অপরিকল্পিত ভাবে কালর্ভাটি নির্মাণ করা হয়েছে। সঠিক পরিকল্পনা মধ্যদিয়ে ব্রিজ নির্মাণ করা হলে মানুষের কাজে লাগতো এবং সরকারী টাকা অপচয় হতো না।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন খামারগ্রাম গ্রামের ১ হাজার ও যুগেরখিল গ্রামের প্রায় ২ হাজার লোক এই সড়কটি দিয়ে যাতায়ত করে এবং যুগেরখিল গ্রামের লোকজনের বাঙ্গরা বাজার থানা সদর ও উপজেলায় সদরের সাথে সক্ষিপ্ত সময়ে যোগাযোগের সহজ মাধ্যম এই সড়কটি। সড়কটি এমনিতে কাচা সড়ক এর মধ্যে কালর্ভাটটির এই বেহাল অবস্থার কারনে এ এলাকার মানুষদের মাঝে কাটা গায়ে লবনের ছিটার মতো হয়ে দাড়িঁয়েছে! কোনও জরুরি কাজ থাকলে দ্রুত যেতে পারেন না শুধু রাস্তার অভাবে।
যুগেরখিল গ্রামের বাসিন্দা ও শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম (২১) বলেন, সংযোগ সড়ক না থাকায় কালর্ভাটটি চলাচলের ক্ষেত্রে কোনো কাজে আসেনি। এখানে সড়কসহ কালর্ভাটটির মেরামতের কাজ করা হলে খুব সহজে উপজেলা ও থানা সদরে যাতায়াত করা যাবে।
একই খামারগ্রাম গ্রামের আ: রহমান সিদ্দিকি (৪৫) বলেন, কালর্ভাটটির উত্তর পাশে অনেকের ফসলি জমি রয়েছে। আবার খামারগ্রাম গ্রামের অনেক বাসিন্দার জমিজমা রয়েছে যুগেরখিল গ্রামে। উভয় পাড়ের লোকজনকে প্রতিটি মৌসুমে উৎপাদিত ফসল আনা-নেওয়া করতে অনেক বিরম্ভনায় পরতে হয়। সংযোগ সড়ক নির্মাণসহ কালর্ভাটটি মেরামত করলে এ ঝামেলা আর হতো না।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল হাই খান বলেন, এইসব কালর্ভাট আমরা নির্মাণ করিনা! এইগুলো এলজিআরডি অফিস করে থাকে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিআরডি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এলজিএসপি’র কাজের দায়ীত্ব আমাদের না? আমরা শুধু ইস্টিমেট তৈরী করে দেই, বাকী কাজ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা করে থাকেন।
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাস বলেন, খালটির যে প্রস্থ্য তাতেতো সেখানে কালর্ভাট হওয়ার কথা না, সেখানে ব্রিজ হওয়ার কথা ছিল! কেহ আমাদের কাছে বিষয়টি লিখিত ভাবে জানালে ব্রিজ নির্মাণের প্রয়োজনিয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে এবং স্থানীয়দের প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় রাস্তা নির্মাণের মধ্যদিয়ে কালর্ভাটটি ব্যবহারযোগ্য করা হবে।