ঢাকা ১১:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে বিসিআরসি’র মানববন্ধন “বাংলাদেশের হিট অফিসার কী করছেন? হিট নিয়ন্ত্রণে “ অগ্নিকাণ্ড ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে অনুদানের নগদ অর্থ সহায়তায়: আ জ ম নাসির “স্মার্ট সুদহারে বিপাকে ব্যবসায়ীরা ঢাকা মতিঝিলে ইসতেস্কার নামাজ ও দোয়া অনুষ্ঠিত প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষের শহরে অভিবাসন ও জীনবমান নিয়ে মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত রাঙ্গুনিয়ায় আ: লীগ নেতার মৃত্যুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর শোক বরিশালে বৃষ্টি কামনায় নামাজ আদায়। রুপগঞ্জ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে এক দুর্ধর্ষ ডাকাত ওমর ফারুক গ্রেফতার বানারীপাড়ায় কিশোরী অপহরণ করে ধর্ষণ। বাকেরগঞ্জ থেকে ধর্ষক গ্রেফতার।

ষষ্ঠ দফায় আরো চার হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তর

চট্টগ্রাম সংবাদদাতা:

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবির থেকে ষষ্ঠ দফায় আরো চার হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তর করা হচ্ছে।

এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) দুপুরে কক্সবাজারের উখিয়ার ট্রানজিট পয়েন্ট থেকে দুই হাজার ৫শ ৫৫ জন রোহিঙ্গাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তত্ত্বাবধানে চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বুধবারও একই প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গাদের আরো একটি দল ভাসানচরের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হবে।

তবে এবার ষষ্ঠ দফায় যারা ভাসানচর যাচ্ছে তাদের মধ্যে প্রায় ১৭০ পরিবার আছে যারা গত ২২ মার্চ উখিয়ার বালুখালীর রোহিঙ্গা শিবিরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত।

কক্সবাজার ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন কার্যালয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে রোহিঙ্গাদের ৪৭টি বাসে করে ২ হাজার ৫৫৫ জন রোহিঙ্গাকে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাতে তাদের চট্টগ্রামে বিএএফ শাহীন কলেজের অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্পে রাখা হবে।

বুধবার সেখান থেকে তাদের নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় ভাসানচরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

একইভাবে দফায় বুধবারও কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে আরও অন্তত দুই হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হবে সেখান থেকে বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) তাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হবে।

কক্সবাজার শরণার্থী ও ত্রাণ প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, এর আগে পাঁচ দফায় ১৪ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে, ষষ্ঠ ধাপে স্বেচ্ছায় যেতে ইচ্ছুক আরো চার হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। চট্টগ্রাম থেকে বুধ ও বৃহস্পতিবার নৌবাহিনীর জাহাজে করে তাদের ভাসানচর নিয়ে যাওয়া হবে।

কক্সবাজার শরণার্থী ও ত্রাণ প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, ষষ্ঠ ধাপে রোহিঙ্গা স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থ ৮ ও ৯ নম্বর ক্যাম্প থেকে ১৭৩ পরিবার স্বেচ্ছায় ভাসানচর যাচ্ছে। অবশ্যই তারা অগ্নিকাণ্ডের আগেই ভাসানচর যাওয়ার তালিকায় ছিল।

এর আগে পাঁচ দফায় কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী শিবির থেকে প্রায় ১৪ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়।

এরমধ্যে ২০ সালের ৪ ডিসেম্বর প্রথম দফায় ১ হাজার ৬৪২ জনকে। ২৯ ডিসেম্বর ১ হাজার ৮০৪ জন, চলতি বছরের ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় দফার ৩ হাজার ২৪২ জন, ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ দফায় ৩ হাজার ১৮ জন, পঞ্চম দফায় ৩ ও ৪ মার্চ ৪ হাজার ২১ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচর স্থানান্তর করা হয়েছে। এছাড়া অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা ৩০৬ জন রোহিঙ্গাকে গত মে মাসে ভাসানচরে নিয়ে যায় সরকার, তারাও সেখানে রয়েছেন। দ্বীপে বেশ কিছু শিশুর জন্ম হয়েছে বলে জানা যায়।

সরকার নিজস্ব অথায়নে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের জন্য তিন হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্প করা হয়েছে। প্রায় ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গার আধুনিক মানসম্মত ১২০টি গুচ্ছগ্রামের এ অবকাঠামো তৈরি করা হয়।

গত ২২ মার্চ উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা শিবিরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১০ হাজার বসতি ও স্থাপনা পুড়ে যায়। এসময় অন্তত ১১ জন রোহিঙ্গা পুড়ে মারা যান।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে বিসিআরসি’র মানববন্ধন

ষষ্ঠ দফায় আরো চার হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তর

আপডেট টাইম ০৭:৫৩:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ মার্চ ২০২১

চট্টগ্রাম সংবাদদাতা:

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবির থেকে ষষ্ঠ দফায় আরো চার হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তর করা হচ্ছে।

এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) দুপুরে কক্সবাজারের উখিয়ার ট্রানজিট পয়েন্ট থেকে দুই হাজার ৫শ ৫৫ জন রোহিঙ্গাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তত্ত্বাবধানে চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বুধবারও একই প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গাদের আরো একটি দল ভাসানচরের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হবে।

তবে এবার ষষ্ঠ দফায় যারা ভাসানচর যাচ্ছে তাদের মধ্যে প্রায় ১৭০ পরিবার আছে যারা গত ২২ মার্চ উখিয়ার বালুখালীর রোহিঙ্গা শিবিরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত।

কক্সবাজার ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন কার্যালয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে রোহিঙ্গাদের ৪৭টি বাসে করে ২ হাজার ৫৫৫ জন রোহিঙ্গাকে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাতে তাদের চট্টগ্রামে বিএএফ শাহীন কলেজের অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্পে রাখা হবে।

বুধবার সেখান থেকে তাদের নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় ভাসানচরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

একইভাবে দফায় বুধবারও কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে আরও অন্তত দুই হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হবে সেখান থেকে বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) তাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হবে।

কক্সবাজার শরণার্থী ও ত্রাণ প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, এর আগে পাঁচ দফায় ১৪ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে, ষষ্ঠ ধাপে স্বেচ্ছায় যেতে ইচ্ছুক আরো চার হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। চট্টগ্রাম থেকে বুধ ও বৃহস্পতিবার নৌবাহিনীর জাহাজে করে তাদের ভাসানচর নিয়ে যাওয়া হবে।

কক্সবাজার শরণার্থী ও ত্রাণ প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, ষষ্ঠ ধাপে রোহিঙ্গা স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থ ৮ ও ৯ নম্বর ক্যাম্প থেকে ১৭৩ পরিবার স্বেচ্ছায় ভাসানচর যাচ্ছে। অবশ্যই তারা অগ্নিকাণ্ডের আগেই ভাসানচর যাওয়ার তালিকায় ছিল।

এর আগে পাঁচ দফায় কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী শিবির থেকে প্রায় ১৪ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়।

এরমধ্যে ২০ সালের ৪ ডিসেম্বর প্রথম দফায় ১ হাজার ৬৪২ জনকে। ২৯ ডিসেম্বর ১ হাজার ৮০৪ জন, চলতি বছরের ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি তৃতীয় দফার ৩ হাজার ২৪২ জন, ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ দফায় ৩ হাজার ১৮ জন, পঞ্চম দফায় ৩ ও ৪ মার্চ ৪ হাজার ২১ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচর স্থানান্তর করা হয়েছে। এছাড়া অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা ৩০৬ জন রোহিঙ্গাকে গত মে মাসে ভাসানচরে নিয়ে যায় সরকার, তারাও সেখানে রয়েছেন। দ্বীপে বেশ কিছু শিশুর জন্ম হয়েছে বলে জানা যায়।

সরকার নিজস্ব অথায়নে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের জন্য তিন হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্প করা হয়েছে। প্রায় ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গার আধুনিক মানসম্মত ১২০টি গুচ্ছগ্রামের এ অবকাঠামো তৈরি করা হয়।

গত ২২ মার্চ উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা শিবিরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১০ হাজার বসতি ও স্থাপনা পুড়ে যায়। এসময় অন্তত ১১ জন রোহিঙ্গা পুড়ে মারা যান।