ঢাকা ০১:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
গজারিয়ায় বালুয়াকান্দী অটো ড্রাইভার ও মালিক সমিতির উদ্যোগে আমিরুল ইসলাম এর নির্বাচনী সভা ও দোয়া মাহফিল “মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের পক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি “ “ওয়াটারলিলি ইন্টারন্যাশনালের ইফতার ,দুআ ও আলোচনা সভা “ “বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্পে টেকসইতা ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে সুইডিশ প্রতিনিধিদলের ফকির অ্যাপারেলস সফর” “জাতীয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সংস্থার উদ্যোগে হতদরিদ্র দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ “ বিশ্ব নাট্য দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা ও নাট্যানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত মতলব উত্তরে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত বাবুগঞ্জে শিক্ষকের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন। ইন্দুরকানীতে এলজিইডি অফিসে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চট্টগ্রামে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা

শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু আজ

মাতৃভূমির খবর ডেস্ক:   আজ সোমবার থেকে ষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে শুরু হবে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা।পঞ্জিকা মতে, শুক্রবার (১৯ অক্টোবর) বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসবের। এর আগে রবিবার সায়ংকালে দেবীর বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

দুর্গা শব্দের অর্থ হলো ব্যূহ বা আবদ্ধ স্থান— যা কিছু দুঃখ কষ্ট মানুষকে আবদ্ধ করে, যেমন বাধাবিঘ্ন, ভয়দুঃখ, শোক, জ্বালা, যন্ত্রণা এসব থেকে তিনি ভক্তকে রক্ষা করেন। শাস্ত্রকাররা দুর্গার নামের অন্য একটি অর্থ করেছেন। দুঃখের মাধ্যমে যাকে লাভ করা যায় তিনিই দুর্গা। দেবী দুঃখ দিয়ে মানুষের সহ্যক্ষমতা পরীক্ষা করেন। তখন মানুষ অস্থির না হয়ে তাকে ডাকলেই তিনি তার কষ্ট দূর করেন।

হিন্দু পূরাণ মতে, দুর্গাপূজার সঠিক সময় হলো বসন্তকাল, কিন্তু বিপাকে পড়ে রামচন্দ্র, রাজা সুরথ এবং বৈশ্য সমাধি বসন্তকাল পর্যন্ত অপেক্ষা না করে শরতেই দেবীকে অসময়ে জাগ্রত করে পূজা করেন। সেই থেকে অকাল বোধন হওয়া স্বত্ত্বেও শরতকালে দুর্গাপূজা প্রচলিত হয়ে যায়।

ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনের মৃদুল মহারাজ বাসসকে বলেন, ‘জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার ঘোটক (ঘোড়ায়) চড়ে কৈলাশ থেকে মর্ত্যালোকে (পৃথিবী) আসবেন। এতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, রোগ শোক হানাহানি মারামারি বাড়বে। অন্যদিকে, কৈলাশে (স্বর্গে) বিদায় নেবেন দোলায় চড়ে— যার ফলে জগতে মড়কব্যাধি এবং প্রাণহানির মত ঘটনা বাড়বে।’

এদিকে, পূজাকে আনন্দমুখর করে তুলতে দেশজুড়ে বর্ণাঢ্য প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। সারাদেশে এখন বইছে উৎসবের আমেজ। ঢাক-ঢোল কাঁসা এবং শঙ্খের আওয়াজে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন মণ্ডপ।

রামকৃষ্ণ মিশনের নিঘণ্টে বলা হয়েছে, সোমবার সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে কল্পারম্ভ এবং বোধন আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্যদিয়ে উৎসবের প্রথম দিন ষষ্ঠী পূজা সম্পন্ন হবে।এদিন সকাল থেকে চণ্ডিপাঠে মুখরিত থাকবে সব মণ্ডপ এলাকা।

উৎসবের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার মহাসপ্তমীর পূজা অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৬টায়। বুধবার মহাঅষ্টমীর পূজা আনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায় এবং বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে কুমারী পূজা। সন্ধিপূজা শুরু হবে দুপুর ১২টা ৫৬ মিনিটে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে নবমী পূজা। পরদিন শুক্রবার সকাল ৭টায় পূজা সমাপণ ও দর্পণ বিসর্জন হবে সকাল ৮টায়। পরে প্রতিমা বিসর্জন ও শান্তিজল গ্রহণের মধ্যদিয়ে শেষ হবে পাঁচদিনব্যাপী এ উৎসবের।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটারর্জি বলেন, এবার সারা দেশে ৩১ হাজার ২৭২টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। আর রাজধানী ঢাকাতে এবার পূজা অনুষ্ঠিত হবে ২৩৪টি মণ্ডপে। গত বছর সারা দেশে ২৯ হাজার ৭৪টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং রাজধানী ঢাকায় মণ্ডপের সংখ্যা ছিল ২২৫টি।

দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের প্রতিটি পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, বিজিবি, র‌্যাবসহ অন্যান্য আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। ঢাকেশ্বরী মন্দির মেলাঙ্গণে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।

রাজধানীতে কেন্দ্রীয় পূজা উৎসব হিসেবে পরিচিত ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মণ্ডপে পূজার পাশাপাশি ভক্তিমূলক সঙ্গীতানুষ্ঠান, বস্ত্র বিতরণ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আরতি প্রতিযোগিতা, স্বেচ্ছা রক্তদান ও বিজয়া শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়াও ঢাকায় রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ পূজামণ্ডপ, গুলশান বনানী সার্বজনীন পূজা পরিষদ মণ্ডপ’ রমনা কালীমন্দির ও আনন্দময়ী আশ্রম, বরোদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির ও শ্মশান, সিদ্ধেশ্বরী কালিমাতা, ভোলানাথ মন্দির আশ্রম, জগন্নাথ হল, ঋষিপাড়া গৌতম মন্দির, বাসাবো বালুর মাঠ, শাখারী বাজারের পানিটোলা মন্দিরসহ অন্যান্য মণ্ডপে দুর্গোৎসবের ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

গজারিয়ায় বালুয়াকান্দী অটো ড্রাইভার ও মালিক সমিতির উদ্যোগে আমিরুল ইসলাম এর নির্বাচনী সভা ও দোয়া মাহফিল

শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু আজ

আপডেট টাইম ০৬:৩১:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ অক্টোবর ২০১৮

মাতৃভূমির খবর ডেস্ক:   আজ সোমবার থেকে ষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে শুরু হবে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা।পঞ্জিকা মতে, শুক্রবার (১৯ অক্টোবর) বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসবের। এর আগে রবিবার সায়ংকালে দেবীর বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

দুর্গা শব্দের অর্থ হলো ব্যূহ বা আবদ্ধ স্থান— যা কিছু দুঃখ কষ্ট মানুষকে আবদ্ধ করে, যেমন বাধাবিঘ্ন, ভয়দুঃখ, শোক, জ্বালা, যন্ত্রণা এসব থেকে তিনি ভক্তকে রক্ষা করেন। শাস্ত্রকাররা দুর্গার নামের অন্য একটি অর্থ করেছেন। দুঃখের মাধ্যমে যাকে লাভ করা যায় তিনিই দুর্গা। দেবী দুঃখ দিয়ে মানুষের সহ্যক্ষমতা পরীক্ষা করেন। তখন মানুষ অস্থির না হয়ে তাকে ডাকলেই তিনি তার কষ্ট দূর করেন।

হিন্দু পূরাণ মতে, দুর্গাপূজার সঠিক সময় হলো বসন্তকাল, কিন্তু বিপাকে পড়ে রামচন্দ্র, রাজা সুরথ এবং বৈশ্য সমাধি বসন্তকাল পর্যন্ত অপেক্ষা না করে শরতেই দেবীকে অসময়ে জাগ্রত করে পূজা করেন। সেই থেকে অকাল বোধন হওয়া স্বত্ত্বেও শরতকালে দুর্গাপূজা প্রচলিত হয়ে যায়।

ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনের মৃদুল মহারাজ বাসসকে বলেন, ‘জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার ঘোটক (ঘোড়ায়) চড়ে কৈলাশ থেকে মর্ত্যালোকে (পৃথিবী) আসবেন। এতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, রোগ শোক হানাহানি মারামারি বাড়বে। অন্যদিকে, কৈলাশে (স্বর্গে) বিদায় নেবেন দোলায় চড়ে— যার ফলে জগতে মড়কব্যাধি এবং প্রাণহানির মত ঘটনা বাড়বে।’

এদিকে, পূজাকে আনন্দমুখর করে তুলতে দেশজুড়ে বর্ণাঢ্য প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। সারাদেশে এখন বইছে উৎসবের আমেজ। ঢাক-ঢোল কাঁসা এবং শঙ্খের আওয়াজে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন মণ্ডপ।

রামকৃষ্ণ মিশনের নিঘণ্টে বলা হয়েছে, সোমবার সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে কল্পারম্ভ এবং বোধন আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্যদিয়ে উৎসবের প্রথম দিন ষষ্ঠী পূজা সম্পন্ন হবে।এদিন সকাল থেকে চণ্ডিপাঠে মুখরিত থাকবে সব মণ্ডপ এলাকা।

উৎসবের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার মহাসপ্তমীর পূজা অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৬টায়। বুধবার মহাঅষ্টমীর পূজা আনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায় এবং বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে কুমারী পূজা। সন্ধিপূজা শুরু হবে দুপুর ১২টা ৫৬ মিনিটে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে নবমী পূজা। পরদিন শুক্রবার সকাল ৭টায় পূজা সমাপণ ও দর্পণ বিসর্জন হবে সকাল ৮টায়। পরে প্রতিমা বিসর্জন ও শান্তিজল গ্রহণের মধ্যদিয়ে শেষ হবে পাঁচদিনব্যাপী এ উৎসবের।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটারর্জি বলেন, এবার সারা দেশে ৩১ হাজার ২৭২টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। আর রাজধানী ঢাকাতে এবার পূজা অনুষ্ঠিত হবে ২৩৪টি মণ্ডপে। গত বছর সারা দেশে ২৯ হাজার ৭৪টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং রাজধানী ঢাকায় মণ্ডপের সংখ্যা ছিল ২২৫টি।

দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের প্রতিটি পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, বিজিবি, র‌্যাবসহ অন্যান্য আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। ঢাকেশ্বরী মন্দির মেলাঙ্গণে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।

রাজধানীতে কেন্দ্রীয় পূজা উৎসব হিসেবে পরিচিত ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মণ্ডপে পূজার পাশাপাশি ভক্তিমূলক সঙ্গীতানুষ্ঠান, বস্ত্র বিতরণ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আরতি প্রতিযোগিতা, স্বেচ্ছা রক্তদান ও বিজয়া শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়াও ঢাকায় রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ পূজামণ্ডপ, গুলশান বনানী সার্বজনীন পূজা পরিষদ মণ্ডপ’ রমনা কালীমন্দির ও আনন্দময়ী আশ্রম, বরোদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির ও শ্মশান, সিদ্ধেশ্বরী কালিমাতা, ভোলানাথ মন্দির আশ্রম, জগন্নাথ হল, ঋষিপাড়া গৌতম মন্দির, বাসাবো বালুর মাঠ, শাখারী বাজারের পানিটোলা মন্দিরসহ অন্যান্য মণ্ডপে দুর্গোৎসবের ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।