বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে কোচের পদ ছেড়ে দিয়েছেন জিনেদিন জিদান। বিশ্বকাপের পর আর রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেননি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। তাঁকেও হারাতে হয়েছে জুভেন্টাসের কাছে। দল থেকে চলে যাওয়ার গুঞ্জন উঠেছিল লুকা মদরিচের। এক বছরের ধারে চেলসিতে চলে গেছেন অভিমানী মাতেও কোভাচিচ। সব মিলিয়ে দলবদলের বাজারে রিয়াল মাদ্রিদের দুঃসময় চলছে বললে ভুল হবে না। কিন্তু এত কিছুর মাঝেও হুলেন লোপেতেগির রিয়াল মাদ্রিদ আশা দেখছে।
বিবিএ
ছিল বিবিসি, হয়ে গেল বিবিএ। ‘বিবিসি’ত্রয়ী ভেঙেছে ক্রিস্টিয়ানোর বিদায়ে। সে জায়গার প্রথমে ভি অর্থাৎ ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু মৌসুম শুরু হতে বোঝা যাচ্ছে, ভিনিসিয়ুস নয় রিয়াল এবার ভরসা মানছে মার্কো অ্যাসেনসিওকে। প্রাক মৌসুমে দলের একটি বাদে বাকি সব গোলেই অবদান ছিল বেল, বেনজেমা ও অ্যাসেনসিওর। আর ইউরোপিয়ান সুপার কাপ ও লিগের প্রথম ম্যাচের চার গোলেও কোনো না কোনো ভাবে জড়িত ছিলেন এ তিনজন। সব মিলিয়ে ‘বিবিএ’ত্রয়ী আশা দেখাচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদকে।
গোলদাতার সংখ্যা
রোনালদোর মতো প্রতি মৌসুমে ৫০ গোল করার লোক বর্তমানে রিয়াল মাদ্রিদে নেই, এ কথা সকলেই জানে। রিয়ালও সেটা মেনে নিয়েছে। এ পরিমাণ গোলের অভাব মেটাতে হলে পুরো দলকেই এগিয়ে আসতে হবে। প্রাক মৌসুমে সে কাজ করার চেষ্টা করেছে প্রতিটি খেলোয়াড়ই। বেল-অ্যাসেনসিও তিনটি, বেনজেমা দুইটি ও বোর্হা মায়োরাল এক গোল করেছেন। প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে বেনজেমা, বেলের সঙ্গে রামোস, কারভাহালও গোল পেয়েছেন। পোস্ট বাধা না হলে অ্যাসেনসিও থাকতেন গোলদাতাদের মাঝে। ফলে কে গোল করবে সে চিন্তা এখনো বড় হয়ে দেখা দেয়নি রিয়ালে।
বেঞ্চের শক্তিমত্তা
২০১৬/১৭ মৌসুমে ইতিহাস সৃষ্টি করা কৌশল গতবার কাজে লাগেনি। সাইড বেঞ্চ দুর্বল হওয়ায় তিন প্রতিযোগিতার চাপ সামলাতে পারেনি জিনেদিন জিদানের দল। বেঞ্চ থেকে নেমে ম্যাচের রূপ বদলে দেওয়ার ঘটনা তাই খুব একটা ঘটেনি। জিদানের দ্বিতীয় মৌসুমে এই পদ্ধতিতে ‘ডাবল’ জিতেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। এই মৌসুমে নতুন তিনজনের আগমন ও পুরোনোদের অভিজ্ঞতা অর্জনে শক্তি বেড়েছে সাইডবেঞ্চের। নাচো ফার্নান্দেজ, আলভারো ওদ্রিওজোলা, ইয়োরেন্তে, দানি সেবায়োস, ভিনিসিয়ুস, মায়োরালের ওপর আস্থা আছে লোপেতেগির।
প্রথমেই গোল
জিনেদিন জিদানের অধীনে রিয়ালের গোলের বেশির ভাগ আসত ম্যাচের শেষ ভাগে। প্রথমার্ধের শেষভাগে কিংবা দ্বিতীয়ার্ধে। কিন্তু লোপেতেগির অধীনে শুরুতেই গোল করার অভ্যাস দেখা যাচ্ছে। প্রতিটি খেলোয়াড় প্রথম থেকেই আক্রমণে থাকে। যে কারণে প্রথমেই গোল পাওয়ার প্রবণতাও বাড়ছে।
রোনালদো-জিদানের বিদায় সামলে নিতে আর বেশি সময় পাবে না রিয়াল মাদ্রিদ। ইউরোপিয়ান সুপার কাপে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে হেরে এমনিতেই প্রশ্নের মুখে পরে গেছে দল। বাকি মৌসুমটা কেমন কাটে সেটাই এখন দেখার বিষয়।