ঢাকা ০৫:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষের শহরে অভিবাসন ও জীনবমান নিয়ে মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত রাঙ্গুনিয়ায় আ: লীগ নেতার মৃত্যুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর শোক বরিশালে বৃষ্টি কামনায় নামাজ আদায়। রুপগঞ্জ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে এক দুর্ধর্ষ ডাকাত ওমর ফারুক গ্রেফতার বানারীপাড়ায় কিশোরী অপহরণ করে ধর্ষণ। বাকেরগঞ্জ থেকে ধর্ষক গ্রেফতার। “কোলোরেক্টাল ক্যান্সার সচেতনতা ফোরামের আয়োজন করেছে এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা” বরিশালে পথ শিশুদের সহযোগিতায় কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। গজারিয়ায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান দুই প্রতিষ্ঠান কে অর্থদন্ড টেকপাড়া ও ইয়াকুব নগরের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্হদের মাঝে নগর অর্থ ও বস্ত্র বিতরণ বাস ও ফুটওভার ব্রিজ মুখোমুখি সংঘর্ষ

লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে করোনা রোগীর খাবার নিয়ে নয় -ছয় 

লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে করোনা রোগীর খাবার নিয়ে নয় -ছয়
সাহিদ বাদশা বাবু , লালমনিরহাট ::
একজন করোনা রোগীর প্রতিদিনের খাবারের জন্য ৩০০ টাকা করে সরকারি বরাদ্দ থাকলেও লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের একজন রোগীকে তিন বেলা যে খাবার দেওয়া হচ্ছে তার বাজারমূল্য ৬০-৭০ টাকার বেশি নয়। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ফলমূল দেওয়া কথা থাকলেও তা পাচ্ছেন না রোগীরা। ফলে অধিকাংশ রোগীকেই বাড়ির খাবারের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। খাবার সরবরাহে করোনা ইউনিটে দর্শনার্থীর আনাগোনায় সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকিও বাড়ছে।
 হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২২ জন করোনা রোগী। তাদের সকালের নাস্তায় দেওয়া হচ্ছে একটি করে পাঁচ টাকা দামের পাউরুটি, আট টাকা দামের ডিম ও চার-পাঁচ টাকা দামের কলা। দুপুরের খাবারে ভাতের সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে ডাল, একটি ডিম অথবা এক টুকরো মাছ এবং রাতের খাবারেও ভাতের সঙ্গে এক টুকরো মাছ অথবা একটি ডিম। বর্তমান বাজারদরে তিন বেলার খাবারের দাম হিসাব করলে দাঁড়ায় ৬০-৭০ টাকা। রোগীদের খাবারের সঙ্গে নিয়মিত ফলমূল দেওয়ার কথা থাকলেও সেগুলো দেওয়া হচ্ছে না।
হাসপাতালের করোনা ইউনিটের দুপুরের খাবার।
হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসা নেওয়া রোগী সুফী মোহাম্মদ  বলেন, ‘১০ দিন থেকে শুধু একদিন একটি মাল্টা পেয়েছিলাম। হাসপাতালের দেওয়া খাবার আমি খেতে পারিনি।’
তিনি বলেন, ‘সকালে নাস্তা হিসেবে একটা কলা দিয়েছিল সেটিও খাবার উপযোগী ছিল না। আর তরকারি দেখলে খাবার ইচ্ছা নষ্ট হয়ে যেত।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি বরাদ্দের টাকায় নিয়ম অনুযায়ী করোনা রোগীকে নিয়মিত ফলমূল ও হরলিক্স দেওয়ার কথা কিন্তু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা তা পাচ্ছেন না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে করোনা আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন এক রোগী , তিনি করোনা শনাক্ত হওয়ার পর কয়েকদিন ধরে হাসপাতোলের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন কিন্তু একদিনের জন্যেও হাসপাতালের দেওয়া খাবার খেতে পারেননি। ভাত ঠিকমতো সেদ্ধ হয় না। সকালে নাস্তা হিসেবে দেওয়া পাউরটিও খাবার মতো না। এছাড়া কোনোদিন ফলমূল পাননি। বাধ্য হয়েই বাড়ি থেকে খাবার এনে খেতে হচ্ছে।
হাসপাতালে চিকিসাধীন এক করোনা রোগীর স্বজন পারভীন আখতার বলেন ‘করোনা রোগীদের দেওয়া খাবার খুবই নিম্নমানের। রোগী হাসপাতালের দেওয়া খাবার খেতে পারেন না বলে বাড়ি থেকে খাবার পাঠাতে হয়।’
সদর হাসপাতালের কুক হজরত আলী  বলেন, ‘হাসপাতালে খাদ্য সরবরাহকারী যেভাবে খাবার সরবরাহ করছেন সেভাবে রান্না করে করোনা রোগীদের দেওয়া হচ্ছে। অনেক রোগী হাসপাতালের খাবার খেতে আগ্রহ প্রকাশ করেন না, তাই তাদের খাবার দেওয়া হয় না।’
এ বিষয়ে হাসপাতালের খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদার আজাহার আলী  বলেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী সব ধরনের খাবার, ফলমূল ও হরলিক্স সরবরাহ করছি। করোনা রোগীকে তালিকা অনুযায়ী খাদ্য বিতরণ করার দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।’
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মঞ্জুর মোর্শেদ দোলন এ বিষয়ে  বলেন, ‘তালিকা অনুযায়ী চিকিৎসাধীন করোনা রোগীদের সব ধরনের খাদ্য পাওয়ার কথা। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সিরাজুল ইসলাম  বলেন, ‘ঠিকাদার যেভাবে খাদ্য সরবরাহ করছেন সেভাবেই করোনা রোগীকে খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। অনেক সময় ঠিকাদারের খাদ্য সরবরাহে সমস্যা হলে খাবারের মান খারাপ হতে পারে।
Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষের শহরে অভিবাসন ও জীনবমান নিয়ে মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত

লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে করোনা রোগীর খাবার নিয়ে নয় -ছয় 

আপডেট টাইম ০৯:২৭:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ জুলাই ২০২১
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে করোনা রোগীর খাবার নিয়ে নয় -ছয়
সাহিদ বাদশা বাবু , লালমনিরহাট ::
একজন করোনা রোগীর প্রতিদিনের খাবারের জন্য ৩০০ টাকা করে সরকারি বরাদ্দ থাকলেও লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের একজন রোগীকে তিন বেলা যে খাবার দেওয়া হচ্ছে তার বাজারমূল্য ৬০-৭০ টাকার বেশি নয়। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ফলমূল দেওয়া কথা থাকলেও তা পাচ্ছেন না রোগীরা। ফলে অধিকাংশ রোগীকেই বাড়ির খাবারের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। খাবার সরবরাহে করোনা ইউনিটে দর্শনার্থীর আনাগোনায় সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকিও বাড়ছে।
 হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২২ জন করোনা রোগী। তাদের সকালের নাস্তায় দেওয়া হচ্ছে একটি করে পাঁচ টাকা দামের পাউরুটি, আট টাকা দামের ডিম ও চার-পাঁচ টাকা দামের কলা। দুপুরের খাবারে ভাতের সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে ডাল, একটি ডিম অথবা এক টুকরো মাছ এবং রাতের খাবারেও ভাতের সঙ্গে এক টুকরো মাছ অথবা একটি ডিম। বর্তমান বাজারদরে তিন বেলার খাবারের দাম হিসাব করলে দাঁড়ায় ৬০-৭০ টাকা। রোগীদের খাবারের সঙ্গে নিয়মিত ফলমূল দেওয়ার কথা থাকলেও সেগুলো দেওয়া হচ্ছে না।
হাসপাতালের করোনা ইউনিটের দুপুরের খাবার।
হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসা নেওয়া রোগী সুফী মোহাম্মদ  বলেন, ‘১০ দিন থেকে শুধু একদিন একটি মাল্টা পেয়েছিলাম। হাসপাতালের দেওয়া খাবার আমি খেতে পারিনি।’
তিনি বলেন, ‘সকালে নাস্তা হিসেবে একটা কলা দিয়েছিল সেটিও খাবার উপযোগী ছিল না। আর তরকারি দেখলে খাবার ইচ্ছা নষ্ট হয়ে যেত।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি বরাদ্দের টাকায় নিয়ম অনুযায়ী করোনা রোগীকে নিয়মিত ফলমূল ও হরলিক্স দেওয়ার কথা কিন্তু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা তা পাচ্ছেন না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে করোনা আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন এক রোগী , তিনি করোনা শনাক্ত হওয়ার পর কয়েকদিন ধরে হাসপাতোলের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন কিন্তু একদিনের জন্যেও হাসপাতালের দেওয়া খাবার খেতে পারেননি। ভাত ঠিকমতো সেদ্ধ হয় না। সকালে নাস্তা হিসেবে দেওয়া পাউরটিও খাবার মতো না। এছাড়া কোনোদিন ফলমূল পাননি। বাধ্য হয়েই বাড়ি থেকে খাবার এনে খেতে হচ্ছে।
হাসপাতালে চিকিসাধীন এক করোনা রোগীর স্বজন পারভীন আখতার বলেন ‘করোনা রোগীদের দেওয়া খাবার খুবই নিম্নমানের। রোগী হাসপাতালের দেওয়া খাবার খেতে পারেন না বলে বাড়ি থেকে খাবার পাঠাতে হয়।’
সদর হাসপাতালের কুক হজরত আলী  বলেন, ‘হাসপাতালে খাদ্য সরবরাহকারী যেভাবে খাবার সরবরাহ করছেন সেভাবে রান্না করে করোনা রোগীদের দেওয়া হচ্ছে। অনেক রোগী হাসপাতালের খাবার খেতে আগ্রহ প্রকাশ করেন না, তাই তাদের খাবার দেওয়া হয় না।’
এ বিষয়ে হাসপাতালের খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদার আজাহার আলী  বলেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী সব ধরনের খাবার, ফলমূল ও হরলিক্স সরবরাহ করছি। করোনা রোগীকে তালিকা অনুযায়ী খাদ্য বিতরণ করার দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।’
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মঞ্জুর মোর্শেদ দোলন এ বিষয়ে  বলেন, ‘তালিকা অনুযায়ী চিকিৎসাধীন করোনা রোগীদের সব ধরনের খাদ্য পাওয়ার কথা। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সিরাজুল ইসলাম  বলেন, ‘ঠিকাদার যেভাবে খাদ্য সরবরাহ করছেন সেভাবেই করোনা রোগীকে খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। অনেক সময় ঠিকাদারের খাদ্য সরবরাহে সমস্যা হলে খাবারের মান খারাপ হতে পারে।