ঢাকা ১০:০৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রাঙ্গুনিয়ায় নববর্ষ বৈশাখী উৎসবে জলকেলি ও বলি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে বেলখাইন স্পোটিং ক্লাবের অলনাইট ফুটবল টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল সম্পন্ন বগুড়ায় চাঞ্চ্যল্যকর শিশু বন্ধনকে গলাকেটে হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন গজারিয়ায় দুই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিরুল ইসলাম এর পক্ষে গনসংযোগ ও লিফলেট বিতরন প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনী সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে আলোচনা ও পুরুষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠান –অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। চট্টগ্রামে দুই চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে-২ ঘণ্টার কর্মবিরতির ঘোষণা বিএমএর হকার আর যত্রতত্র আবর্জনা কমাতে অভিযানের ঘোষণা মেয়র রেজাউলের রামগঞ্জে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী ২০২৪ অনুষ্ঠিত। অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

রাতে ত্রাণ নিয়ে হাজির ম্যাজিস্ট্রেট

রাহাত মামুন
চট্টগ্রাম সংবাদদাতা

চট্টগ্রাম হালিশহরে পাঁচ সন্তান নিয়ে বস্তির ছোট্ট একটি ঘরে বসবাস করেন এক নারী। স্বামীহারা অসহায় এই নারী সন্তানের মুখে দুমুঠো খাবার তুলে দিতে কাজ করতেন নগরের একটি দর্জির দোকানে। সরকারঘোষিত কঠোর লকডাউনে বন্ধ হয়ে গেছে সেই দোকানটি। দৈনিক বেতনে কাজ করা ওই দোকান বন্ধের সঙ্গে থমকে গেছে তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সন্তানের মুখে কী তুলে দেবেন সেই চিন্তায় হয়ে গেছেন একপ্রকার দিশেহারা।

শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) দিবাগত রাতে ঘড়ির কাটায় রাত তখন ১১টা ২০ মিনিট বাজে। হঠাৎ দরজায় কে যেন ঠক ঠক করল। খুলে দেখেন কয়েকজন ভদ্রলোক একটা শুকনো খাবারের পোটলা নিয়ে এসেছেন। পরিচয় জেনেই চোখ যেন কপালে উঠল ওই নারীর। তিনি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। ওই নারীর দুর্ভোগে পড়ার বিষয়টি জেনে খাবার নিয়ে ছুটে এসেছেন তিনি।

চোখ ছলছল করা কৃতজ্ঞতাপূর্ণ ওই মুখে যেন কোনো কথাই বের হচ্ছিল না। শুধু মুখ বিড়বিড় করে কী যেন বলছিলেন।

শুধু ওই নারী না। শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর, মেহেদীবাগ, ২ নম্বর গেট, আগ্রাবাদ, সদরঘাটসহ বেশ কয়েকটি স্থানের প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারের মুখে হাসি ফুটিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। একই দিন সকাল বেলা এক হাজারেরও অধিক পরিবারে ত্রাণ এবং ২০৬ জনের মাঝে এক লাখ তিন হাজার টাকার নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। এ নিয়ে গত তিনদিনে শুধুমাত্র জেলা প্রশাসনের উদ্যোগেই কয়েক হাজার পরিবারে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।

রাতে বেলা এই মহতী কাজে অংশ নেয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক বলেন, ‘মূলত যারা লাইনে দাঁড়িয়ে বা নির্দিষ্ট জায়গায় দেয়া ত্রাণ আনতে সংকোচবোধ করছেন তারা জেলা প্রশাসকের মোবাইলে এসএমএস এবং কলের মাধ্যমে জানাচ্ছেন। তাদের কাছেই রাতের বেলা ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘লকডাউন শুরুর পর গত তিনদিন ধরে রাতের বেলা এভাবে অসহায় ও দুস্থদের মাঝে ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছি। কিছু মানুষ আছে যারা মানসম্মানের কারণে দিনের বেলা ত্রাণ নিতে অনাগ্রহী। কিন্তু অভাবের কারণে তারা জেলা প্রশাসকের নম্বরে ফোন দিয়ে ত্রাণের জন্যে বলছেন। এরপর তাৎক্ষনিক তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে ত্রাণ পৌঁছানোর ব্যবস্থা করছেন। জেলা প্রশাসনের এ কার্যক্রম চলমান থাকবে।’

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

রাঙ্গুনিয়ায় নববর্ষ বৈশাখী উৎসবে জলকেলি ও বলি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে

রাতে ত্রাণ নিয়ে হাজির ম্যাজিস্ট্রেট

আপডেট টাইম ১০:৪৬:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২১

রাহাত মামুন
চট্টগ্রাম সংবাদদাতা

চট্টগ্রাম হালিশহরে পাঁচ সন্তান নিয়ে বস্তির ছোট্ট একটি ঘরে বসবাস করেন এক নারী। স্বামীহারা অসহায় এই নারী সন্তানের মুখে দুমুঠো খাবার তুলে দিতে কাজ করতেন নগরের একটি দর্জির দোকানে। সরকারঘোষিত কঠোর লকডাউনে বন্ধ হয়ে গেছে সেই দোকানটি। দৈনিক বেতনে কাজ করা ওই দোকান বন্ধের সঙ্গে থমকে গেছে তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সন্তানের মুখে কী তুলে দেবেন সেই চিন্তায় হয়ে গেছেন একপ্রকার দিশেহারা।

শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) দিবাগত রাতে ঘড়ির কাটায় রাত তখন ১১টা ২০ মিনিট বাজে। হঠাৎ দরজায় কে যেন ঠক ঠক করল। খুলে দেখেন কয়েকজন ভদ্রলোক একটা শুকনো খাবারের পোটলা নিয়ে এসেছেন। পরিচয় জেনেই চোখ যেন কপালে উঠল ওই নারীর। তিনি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। ওই নারীর দুর্ভোগে পড়ার বিষয়টি জেনে খাবার নিয়ে ছুটে এসেছেন তিনি।

চোখ ছলছল করা কৃতজ্ঞতাপূর্ণ ওই মুখে যেন কোনো কথাই বের হচ্ছিল না। শুধু মুখ বিড়বিড় করে কী যেন বলছিলেন।

শুধু ওই নারী না। শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর, মেহেদীবাগ, ২ নম্বর গেট, আগ্রাবাদ, সদরঘাটসহ বেশ কয়েকটি স্থানের প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবারের মুখে হাসি ফুটিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। একই দিন সকাল বেলা এক হাজারেরও অধিক পরিবারে ত্রাণ এবং ২০৬ জনের মাঝে এক লাখ তিন হাজার টাকার নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। এ নিয়ে গত তিনদিনে শুধুমাত্র জেলা প্রশাসনের উদ্যোগেই কয়েক হাজার পরিবারে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।

রাতে বেলা এই মহতী কাজে অংশ নেয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক বলেন, ‘মূলত যারা লাইনে দাঁড়িয়ে বা নির্দিষ্ট জায়গায় দেয়া ত্রাণ আনতে সংকোচবোধ করছেন তারা জেলা প্রশাসকের মোবাইলে এসএমএস এবং কলের মাধ্যমে জানাচ্ছেন। তাদের কাছেই রাতের বেলা ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘লকডাউন শুরুর পর গত তিনদিন ধরে রাতের বেলা এভাবে অসহায় ও দুস্থদের মাঝে ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছি। কিছু মানুষ আছে যারা মানসম্মানের কারণে দিনের বেলা ত্রাণ নিতে অনাগ্রহী। কিন্তু অভাবের কারণে তারা জেলা প্রশাসকের নম্বরে ফোন দিয়ে ত্রাণের জন্যে বলছেন। এরপর তাৎক্ষনিক তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে ত্রাণ পৌঁছানোর ব্যবস্থা করছেন। জেলা প্রশাসনের এ কার্যক্রম চলমান থাকবে।’