ঢাকা ০৫:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রোজা মানুষের মানবিক গুণাবলি বিকশিত করে-লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল। গজারিয়া বালুয়াকান্দি ইউনিয়নে সিকদার পরিবারে আমিরুল ইসলাম এর সর্মথনে আলোচনা সভা ও ইফতার দোয়া মাহফিল চসিকের ৬ ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ৩৮ তম সাধারণ সভায় মশা কমাতে কার্যক্রম বাড়াবে : মেয়র রেজাউল “বিড়ি শিল্পে ট্যাক্স প্রত্যাহারসহ চার দাবিতে রংপুর শ্রমিকদের মানববন্ধন” ইন্দুরকানী প্রেসক্লাবে ইফতার মাহফিল বরিশাল চকবাজার এবায়দুল্লাহ মসজিদে অগ্নিকান্ড। টাঙ্গাইলে দৈনিক সকালের সময় পত্রিকার পাঠক ফোরাম গঠিত চট্টগ্রাম পাহাড়তলীতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার চট্টগ্রামে জালনোটসহ প্রতারকচক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ রমজান মাসের পবিত্রতা লঙ্ঘন করছে নারায়ণগঞ্জ চিশতিয়া বাউল সমিত

রাজশাহীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নেসকো কর্মীর মৃত্যু

রাজশাহীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নেসকো কর্মীর মৃত্যু

অনুপ কুমার রায় রাজশাহীঃ
রাজশাহীতে নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) এক কর্মী বিদ্যুৎ সংযোগ লাইনে কাজ করার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিহত হয়েছেন।গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নিহত নেসকো কর্মীর নাম রেজাউল ইসলাম (৩৮)। তিনি নগরীর চন্দ্রিমা থানার মুসরইল এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
রেজাউল ইসলামের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন নেসকোর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শিরিন ইয়াসমিন।
তিনি জানান, রোববার দুপুর পৌনে একটার দিকে নগরীর পাঠানপাড়া এলাকায় নেসকোর একটি সাব স্টেশনের পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে কাজ করার সময় আহত হন রেজাউল ইসলাম। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে সময় ডাক্তাররা জানিয়েছিলো তার শরীরে প্রায় ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে ও একাধিক ফ্র্যাকচার হয়েছে। তাই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে সিরাজগঞ্জে তার মৃত্যু হয়।
নেসকোর কর্মচারীরা রেজাউলের সুচিকিৎসায় নেসকো কর্মকর্তাদের অবহেলার অভিযোগও করেন। নেসকোর কর্মচারীদের অভিযোগ, রেজাউল নেসকোর গাড়ি চালকদের হেল্পার হলেও তাকে প্রায়ই বৈদ্যুতিক কাজে পাঠানো হতো। রেজাউলকে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ওঠার জন্য একটি বাঁশের মই দেওয়া হয়েছিল এবং তাকে কোনো নিরাপত্তা সরঞ্জাম দেওয়া হয়নি।
রেজাউলের এক সহকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রেজাউল বাঁশের মই দিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে উঠে কাজ করছিলেন। সেখানে দুটি ৩৩ কেভিএ ও একটি ১১ কেভিএ লাইন ছিল। হঠাৎ রেজাউল যে বৈদ্যুতিক লাইনে কাজ করছিলেন তাতে স্পার্ক করে আগুন ধরে যায় এবং রেজাউল বাঁশের মই থেকে কমপক্ষে ২০ ফুট উচ্চতা থেকে নিচে পড়ে যান।
তিনি আরও জানান, রেজাউল তার কাজ শেষ করে নিচে নামছিলেন। কিন্তু, তখন ৩৩ কেভিএ-এর ওপর একটি তার পড়েছিল। পরে নিচে দাঁড়িয়ে থাকা নেসকোর এক কর্মকর্তা তারটি সরিয়ে দিতে বলেন। এসময় রেজাউল আবার ওপরে উঠে জানতে চান সংযোগ লাইন বিচ্ছিন্ন কিনা, তখন ওই কর্মকর্তা জানান লাইন বিচ্ছিন্ন আছে। কিন্তু, রেজাউল তারটি সরাতে গেলেই রেজাউল বিদ্যুতায়িত হয় এবং নিচে পড়ে যায়।
তবে, নেসকোর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শিরিন ইয়াসমিন এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, চিকিৎসায় কোনো ত্রুটি রাখা হয়নি। আমাদের নিজস্ব চিকিৎসক সব সময় হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে ছিলেন। রেজাউলের সঙ্গে চিকিৎসক ও কর্মকর্তারাও ঢাকায় গিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে রেজাউল যে কাজের জন্য ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন তা সম্পন্ন করেছিলেন। নিচে নেমে আসার সময় অন্য একটি সমস্যা চিহ্নিত করে তার সমাধান করতে গিয়ে দুর্ঘটনার মুখে পড়েন।
তিনি বলেন, তার (রেজাউলের) আহত হওয়া আমাদের কাছে অকল্পনীয় ছিল। ঘটনাটা তদন্ত করতে একজন সহকারী পরিচালকের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী অনিত কুমার রায় বলেন, রেজাউল গাড়ির ড্রাইভারের নয়, লাইনম্যানদের সাহায্যকারী হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। তবে, তিনি বৈদ্যুতিক কাজ এবং যানবাহন চালনা উভয় ক্ষেত্রে দক্ষ ছিলেন। তিনি দাবি করেন, রেজাউলকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছিল।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

রোজা মানুষের মানবিক গুণাবলি বিকশিত করে-লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল।

রাজশাহীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নেসকো কর্মীর মৃত্যু

আপডেট টাইম ০৪:০৫:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২১

রাজশাহীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নেসকো কর্মীর মৃত্যু

অনুপ কুমার রায় রাজশাহীঃ
রাজশাহীতে নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) এক কর্মী বিদ্যুৎ সংযোগ লাইনে কাজ করার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিহত হয়েছেন।গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নিহত নেসকো কর্মীর নাম রেজাউল ইসলাম (৩৮)। তিনি নগরীর চন্দ্রিমা থানার মুসরইল এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
রেজাউল ইসলামের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন নেসকোর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শিরিন ইয়াসমিন।
তিনি জানান, রোববার দুপুর পৌনে একটার দিকে নগরীর পাঠানপাড়া এলাকায় নেসকোর একটি সাব স্টেশনের পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে কাজ করার সময় আহত হন রেজাউল ইসলাম। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে সময় ডাক্তাররা জানিয়েছিলো তার শরীরে প্রায় ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে ও একাধিক ফ্র্যাকচার হয়েছে। তাই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে সিরাজগঞ্জে তার মৃত্যু হয়।
নেসকোর কর্মচারীরা রেজাউলের সুচিকিৎসায় নেসকো কর্মকর্তাদের অবহেলার অভিযোগও করেন। নেসকোর কর্মচারীদের অভিযোগ, রেজাউল নেসকোর গাড়ি চালকদের হেল্পার হলেও তাকে প্রায়ই বৈদ্যুতিক কাজে পাঠানো হতো। রেজাউলকে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ওঠার জন্য একটি বাঁশের মই দেওয়া হয়েছিল এবং তাকে কোনো নিরাপত্তা সরঞ্জাম দেওয়া হয়নি।
রেজাউলের এক সহকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রেজাউল বাঁশের মই দিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে উঠে কাজ করছিলেন। সেখানে দুটি ৩৩ কেভিএ ও একটি ১১ কেভিএ লাইন ছিল। হঠাৎ রেজাউল যে বৈদ্যুতিক লাইনে কাজ করছিলেন তাতে স্পার্ক করে আগুন ধরে যায় এবং রেজাউল বাঁশের মই থেকে কমপক্ষে ২০ ফুট উচ্চতা থেকে নিচে পড়ে যান।
তিনি আরও জানান, রেজাউল তার কাজ শেষ করে নিচে নামছিলেন। কিন্তু, তখন ৩৩ কেভিএ-এর ওপর একটি তার পড়েছিল। পরে নিচে দাঁড়িয়ে থাকা নেসকোর এক কর্মকর্তা তারটি সরিয়ে দিতে বলেন। এসময় রেজাউল আবার ওপরে উঠে জানতে চান সংযোগ লাইন বিচ্ছিন্ন কিনা, তখন ওই কর্মকর্তা জানান লাইন বিচ্ছিন্ন আছে। কিন্তু, রেজাউল তারটি সরাতে গেলেই রেজাউল বিদ্যুতায়িত হয় এবং নিচে পড়ে যায়।
তবে, নেসকোর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শিরিন ইয়াসমিন এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, চিকিৎসায় কোনো ত্রুটি রাখা হয়নি। আমাদের নিজস্ব চিকিৎসক সব সময় হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে ছিলেন। রেজাউলের সঙ্গে চিকিৎসক ও কর্মকর্তারাও ঢাকায় গিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে রেজাউল যে কাজের জন্য ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন তা সম্পন্ন করেছিলেন। নিচে নেমে আসার সময় অন্য একটি সমস্যা চিহ্নিত করে তার সমাধান করতে গিয়ে দুর্ঘটনার মুখে পড়েন।
তিনি বলেন, তার (রেজাউলের) আহত হওয়া আমাদের কাছে অকল্পনীয় ছিল। ঘটনাটা তদন্ত করতে একজন সহকারী পরিচালকের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী অনিত কুমার রায় বলেন, রেজাউল গাড়ির ড্রাইভারের নয়, লাইনম্যানদের সাহায্যকারী হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। তবে, তিনি বৈদ্যুতিক কাজ এবং যানবাহন চালনা উভয় ক্ষেত্রে দক্ষ ছিলেন। তিনি দাবি করেন, রেজাউলকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছিল।