ঢাকা ০৭:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রোজা মানুষের মানবিক গুণাবলি বিকশিত করে-লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল। গজারিয়া বালুয়াকান্দি ইউনিয়নে সিকদার পরিবারে আমিরুল ইসলাম এর সর্মথনে আলোচনা সভা ও ইফতার দোয়া মাহফিল চসিকের ৬ ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ৩৮ তম সাধারণ সভায় মশা কমাতে কার্যক্রম বাড়াবে : মেয়র রেজাউল “বিড়ি শিল্পে ট্যাক্স প্রত্যাহারসহ চার দাবিতে রংপুর শ্রমিকদের মানববন্ধন” ইন্দুরকানী প্রেসক্লাবে ইফতার মাহফিল বরিশাল চকবাজার এবায়দুল্লাহ মসজিদে অগ্নিকান্ড। টাঙ্গাইলে দৈনিক সকালের সময় পত্রিকার পাঠক ফোরাম গঠিত চট্টগ্রাম পাহাড়তলীতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার চট্টগ্রামে জালনোটসহ প্রতারকচক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ রমজান মাসের পবিত্রতা লঙ্ঘন করছে নারায়ণগঞ্জ চিশতিয়া বাউল সমিত

মুন সিনেমা হলের মালিককে শত কোটি টাকা দেবে সরকার

পুরান ঢাকার মুন সিনেমা হলের মালিকানা নিয়ে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের রায় এসেছিল। তবে ওই সম্পত্তির অর্থ পাননি মালিকপক্ষ। সম্পত্তির মূল্য হিসেবে সরকার থেকে প্রায় ১০০ কোটি টাকা মুন সিনেমা হলের মালিক ইতালিয়ান মার্বেল ওয়ার্কস লিমিটেডকে দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে বলে আদালতকে জানিয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগে আজ সোমবার এই তথ্য জানান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এই প্রক্রিয়ার জন্য তিন মাস সময় চাওয়া হলে আদালত আগামী ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিষয়টি মুলতবি রেখেছেন।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক চিঠির বরাতে আদালতকে জানানো হয়েছে, সংশোধিত বাজেট থেকে ওই অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক। অন্যদিকে মুন সিনেমা হলের মালিকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি ও সাইফুল্লাহ মামুন।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, মুন সিনেমা হল ও এর সম্পত্তির মূল্য বাবদ ৯৯ কোটি ২১ লাখ ৭৩ হাজার ৭৪ টাকা ২৭ পয়সা পরিশোধের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের অনুকূলে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পরে আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি প্রথম আলোকে বলেন, সরকারকে ওই অর্থ আগামী ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে পরিশোধ করতে বলেছেন আদালত।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, আদালত বিষয়টি ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করেছেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক চিঠির বরাতে জানানো হয়েছে, সম্পূরক বাজেট থেকে ওই অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে।

পুরান ঢাকার ওয়াইজঘাটে একসময়ে মুন সিনেমা হলের মালিক ছিল ইতালিয়ান মার্বেল ওয়ার্কস লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি। মুক্তিযুদ্ধের সময় ওই সম্পত্তি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরে ওই সম্পত্তি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে ন্যস্ত করা হয়। ইতালিয়ান মার্বেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল আলম এই সম্পত্তির মালিকানা দাবি করেন।

জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ঘোষিত এক সামরিক ফরমানে সরকার কোনো সম্পত্তি পরিত্যক্ত ঘোষণা করলে তা আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না বলা হয়। ইতালিয়ান মার্বেল ২০০০ সালে হাইকোর্টে ওই ফরমানসহ সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করেন। ২০০৫ সালের ২৯ আগস্ট হাইকোর্ট রায় দেন। মোশতাক, সায়েম ও জিয়ার ক্ষমতাগ্রহণ সংবিধানপরিপন্থী ঘোষণা করা হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয় ২০১০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন। পাশাপাশি ৯০ দিনের মধ্যে ইতালিয়ান মার্বেলকে মুন সিনেমা হল ফেরত দিতে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এ অবস্থায় সম্পত্তি ফিরে পেতে ২০১২ সালের ১০ জানুয়ারি ইতালিয়ান মার্বেল ওয়ার্কস মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেন। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালের ১৫ জানুয়ারি আপিল বিভাগ ওই সম্পত্তি অভিজ্ঞ ও নিরপেক্ষ এক প্রকৌশলীকে দিয়ে জমি ও স্থাপনার মূল্য নির্ধারণ করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেন।

অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীকে দিয়ে এই মূল্য নির্ধারণ করতে বলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ। গত ১৮ জানুয়ারি ওই অর্থ তিন কিস্তিতে পরিশোধ করতে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট ও এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের প্রতি নির্দেশ দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

Tag :

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রোজা মানুষের মানবিক গুণাবলি বিকশিত করে-লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল।

মুন সিনেমা হলের মালিককে শত কোটি টাকা দেবে সরকার

আপডেট টাইম ০৫:১২:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৮ অক্টোবর ২০১৮

পুরান ঢাকার মুন সিনেমা হলের মালিকানা নিয়ে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের রায় এসেছিল। তবে ওই সম্পত্তির অর্থ পাননি মালিকপক্ষ। সম্পত্তির মূল্য হিসেবে সরকার থেকে প্রায় ১০০ কোটি টাকা মুন সিনেমা হলের মালিক ইতালিয়ান মার্বেল ওয়ার্কস লিমিটেডকে দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে বলে আদালতকে জানিয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগে আজ সোমবার এই তথ্য জানান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এই প্রক্রিয়ার জন্য তিন মাস সময় চাওয়া হলে আদালত আগামী ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিষয়টি মুলতবি রেখেছেন।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক চিঠির বরাতে আদালতকে জানানো হয়েছে, সংশোধিত বাজেট থেকে ওই অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক। অন্যদিকে মুন সিনেমা হলের মালিকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি ও সাইফুল্লাহ মামুন।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, মুন সিনেমা হল ও এর সম্পত্তির মূল্য বাবদ ৯৯ কোটি ২১ লাখ ৭৩ হাজার ৭৪ টাকা ২৭ পয়সা পরিশোধের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের অনুকূলে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পরে আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি প্রথম আলোকে বলেন, সরকারকে ওই অর্থ আগামী ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে পরিশোধ করতে বলেছেন আদালত।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, আদালত বিষয়টি ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করেছেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক চিঠির বরাতে জানানো হয়েছে, সম্পূরক বাজেট থেকে ওই অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে।

পুরান ঢাকার ওয়াইজঘাটে একসময়ে মুন সিনেমা হলের মালিক ছিল ইতালিয়ান মার্বেল ওয়ার্কস লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি। মুক্তিযুদ্ধের সময় ওই সম্পত্তি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরে ওই সম্পত্তি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে ন্যস্ত করা হয়। ইতালিয়ান মার্বেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল আলম এই সম্পত্তির মালিকানা দাবি করেন।

জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ঘোষিত এক সামরিক ফরমানে সরকার কোনো সম্পত্তি পরিত্যক্ত ঘোষণা করলে তা আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না বলা হয়। ইতালিয়ান মার্বেল ২০০০ সালে হাইকোর্টে ওই ফরমানসহ সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করেন। ২০০৫ সালের ২৯ আগস্ট হাইকোর্ট রায় দেন। মোশতাক, সায়েম ও জিয়ার ক্ষমতাগ্রহণ সংবিধানপরিপন্থী ঘোষণা করা হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয় ২০১০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন। পাশাপাশি ৯০ দিনের মধ্যে ইতালিয়ান মার্বেলকে মুন সিনেমা হল ফেরত দিতে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এ অবস্থায় সম্পত্তি ফিরে পেতে ২০১২ সালের ১০ জানুয়ারি ইতালিয়ান মার্বেল ওয়ার্কস মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেন। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালের ১৫ জানুয়ারি আপিল বিভাগ ওই সম্পত্তি অভিজ্ঞ ও নিরপেক্ষ এক প্রকৌশলীকে দিয়ে জমি ও স্থাপনার মূল্য নির্ধারণ করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেন।

অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীকে দিয়ে এই মূল্য নির্ধারণ করতে বলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ। গত ১৮ জানুয়ারি ওই অর্থ তিন কিস্তিতে পরিশোধ করতে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট ও এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের প্রতি নির্দেশ দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।