আমরা এখন সবসময়ই বলে আসছি যে, করোনা ভাইরাস অতীতের কোনো সময়ের ন্যায় একটি সাধারণ আঞ্চলিক গতানুগতিক ও সাময়িক মহামারি নয়। এটা মহা পরাক্রমশালী আল্লাহর পক্ষ হতে বিভ্রান্ত বিপথগামী ও সীমালঙ্ঘনকারী মানবজাতিকে ঈমান ও ইসলামে পরিপূর্ণরূপে ফিরে আসার লক্ষ্যে পরিচালিত আরো ভয়াবহ আযাবের এক চুড়ান্ত সতর্ক সংকেত। এই বিশ্বের মানুষ ধর্ম,বর্ণ ও জাতি নির্বিশেষে যেভাবে অশ্লীলতা, পাপ, অন্যায় ও অপরাধের বিশ্বায়ন ঘটিয়েছে। মহাবিজ্ঞানী আল্লাহ সামান্য অদৃশ্য এ জীবাণু দিয়ে তাঁর আযাবের একটি বিশ্বায়ন দেখাচ্ছেন মাত্র – যাতে মানবজাতি তাদের স্রষ্টা ও প্রতিপালকের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক ও ভালবাসা তৈরী করে এবং তাঁর ঘোষিত ক্ষমার প্রতি মনোযোগী হয়। আর নিজেদের মিথ্যা ও কল্পিত জীবন ব্যবস্থা থেকে আল্লাহ প্রদত্ত প্রাকৃতিক ও বৈজ্ঞানিক জীবন ব্যবস্থা ও দর্শনে ফিরে আসে এবং এককভাবে আল্লাহরই দাসত্ব ও আনুগত্য করে।
এখানে আমরা সর্বশেষ অবতীর্ণ মহাগ্রন্থ আল কুরআন থেকে আল্লাহর পক্ষ হতে অত্যাসন্ন বিভিন্ন আযাব – গজব কাদেরকে স্পর্শ করবে এবং কাদেরকে করবে না- তার একটি মৌলিক তালিকা প্রকাশ করছি:-
আল্লাহর অনুমোদনক্রমে করোনাসহ আসন্ন ভয়াবহ আপদ ও আযাব যাদেরকে এখন সংক্রমিত ও আঘাত করতে পারে :
১. ইসলাম ও মুসলিম জাতির বিরুদ্ধে (হত্যা ও উচ্ছেদের মাধ্যমে) ষড়যন্ত্রকারীদেরকে। জানুন আল্লাহর ঘোষণা: ৩:৫৪।৬:১২৩।১৬:৪৫।১৩:৩৪।১৪:৪৬।
২.মুশরিকদের তথা একক সার্বভৌমত্বের মালিক আল্লাহর সঙ্গে অংশীদার সমতুল্য ও সমকক্ষ স্থাপনকারীদেরকে। দেখুন আল্লাহর ঘোষণা : ১৫:৯৬।৩০:৪২।৩৩:৭৩।৩৯:৬৫।৪৮:৬।
৩. কাফিরদের তথা আল্লাহ ও তাঁর জীবন ব্যবস্থা অস্বীকার ও অমান্যকারীদেরকে।পড়ুন কুরআনের বাণী : ৩:৪,৫৬।৫:৭৩।৮:৫২।৯:২৬।১৩:৩২।১৪
৪. আল্লাহ ও সত্য জীবন ব্যবস্থার বিপক্ষে মিথ্যা ও কল্পিত রচনাকারীদেরকে। শুনুন কুরআনের ঘোষণা: ৬:৯৩,১৩৮।১০:৬৯।২০:৪৮,৬১।১৬:১১৬
৫. মিথ্যাচারী ও মুনাফিক তথা কপটচারীদেরকে।দেখুন আল্লাহর ঘোষণা : ২:১৭।৩:৬১।৪:১৪৩।৩৩:৭৩।৪৮:৬।৬৩:
৬. পাপীষ্ঠ, অশ্লীলতার প্রসারকারী ও শয়তানের দোসরদেরকে। পড়ুন কুরআনের বাণী : ৩:১১।২৪:১৯।৪৫:৭।২৬:২২২।৫৮:১৯।
৭. অন্যায়কারী ও অপরাধীদেরকে। জানুন আল্লাহর ঘোষণা : ৬:১২৪,১৪৭।৭:৮৪,১৩৩।১০:৫০।৩০:৪৭
৮. দাম্ভিক বা অহংবোধ প্রকাশকারীদেরকে।শুনুন কুরআনের বাণী : ৪:১৭৩।৩৫:৪৩।১৬:২৩।২৫:২১।৪০:৩৫।
৯. অকৃতজ্ঞ বা না শুকরকারীদেরকে। দেখুন আল্লাহর ঘোষণা : ২:২৪৩।৪:১৪৭।১০:৬।১৪:৭।২৭:৭৩।৩১
১০. অবৈধ সম্পদ অর্জনকারী,মানুষের ওপর জুলুম শোষণকারী তথা সর্বক্ষেত্রে সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে। জানুন আল্লাহর বাণী সমূহ :১০২:১,৩।১০৪:২।৫৯:৭।৬:৪৭।১০:৩৯
উল্লেখ্য যে, এই লেখায় করোনাসহ অত্যাসন্ন আযাব ও গজব এখন কাদেরকে সংক্রমিত ও আঘাত করবে আর কাদেরকে করবেনা এ দুটি প্রবন্ধ আমার গবেষণার ফসল। যেসব মানুষের ধর্ম জ্ঞান বিশ্বাস কর্ম মন ও আত্মা বিনষ্ট ও কলুষিত হয়ে গেছে এবং যাদের ওপর আল্লাহ তাআলা অসন্তুষ্ট ও শাস্তির ঘোষণা দিয়েছেন আর যাদের দ্বীন জ্ঞান বিশ্বাস কর্ম মন ও আত্মা সংশোধিত, নিষ্কলুষ রয়েছে এবং তাদের ওপর মহাসার্বভৌম আল্লাহ সুবহানাহু সন্তুষ্ট আছেন ও পুরস্কার কিংবা নিয়ামত প্রদানের ঘোষণা করেছেন। উভয় পক্ষকে চিহ্নিত ও নির্দিষ্ট করণের প্রয়াসেই এই দু’টি রচনা। মূলত শাস্তি দেয়া ও পুরস্কার প্রদান মহাসার্বভৌম আল্লাহরই কাজ ও একান্ত বিষয়। তিনি তো বিভিন্ন কারণে অনেক মানুষেরই পাপ ও অপরাধ ছেড়ে দেনে এবং ক্ষমা করে দেন। ব্যতিক্রম তো সব বিষয় ও ঘটনাতেই থাকে। আর ব্যতিক্রমটাও আল্লাহর বিশেষ হিকমাতে (তাঁর জ্ঞান ও রহস্যে) হয়।
অতএব, করোনাসহ আসন্ন আযাব ও গজব দিয়ে কাকে পাকড়াও করবেন আর কাকে ছেড়ে দিবেন- তা একান্তভাবে মহাস্রষ্টারই বিষয়। সবকিছু একমাত্র আল্লাহই ভালো জানেন – মানুষ জানেনা।
আল্লাহর অনুগ্রহে যাদের ওপর করোনা ভাইরাসসহ আসন্ন ভয়াবহ আপদ ও আযাব সংক্রমিত ও আঘাত করবে না :
১.সত্যিকার বিশ্বাসী তথা জীবনের সর্বক্ষেত্রে মহাস্রষ্টার একত্ববাদ গ্রহণকারীদের। দেখুন আল্লাহর ঘোষণা : ৩:১৭৯।২:১০৩।৭:৯৬।১৬:১২৩।৬১:১৩।
২.আল্লাহ তাআলাকে যারা আন্তরিকভাবে ভয় করে এবং তাঁর ভালোবাসা ও সন্তুষ্টির জন্য জীবনে সব কাজ করে। শুনুন সর্বশেষ ঐশী বাণী :২:১০৩,১৭৭।৩:১৭২।৭:৯৬।৫:৫৬,১১৯
৩.জীবনের সর্বক্ষেত্রে যারা এককভাবে আল্লাহর ওপর ভরসা করে বা নির্ভরশীল থাকে এবং ধৈর্য্য ধারণ করে চলে। জানুন কুরআনের বাণী :৮:৪৯।৪২:৩৬।১০:৭১।৬৫:৩।২:৪৫,১৫
৪.যারা সবসময় আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে এবং তাঁর কাছে বারবার ক্ষমা প্রার্থনা করে।পড়ুন আল্লাহর ঘোষণা :৪:১৪৭।১৪:৭।৩৯:৭।৩:১৪৭।৪:৩৫।৮:
৫.যারা সর্বাবস্থায় আল্লাহর অনুগত থাকে অর্থাৎ কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করে।দেখুন সর্বশেষ ঐশী বাণী : ২:১১২।৪:১২৫।৩:৮৫।৭২:১৪।৩১:২২।
৬.যারা জীবনের সর্বক্ষেত্রে সত্য ও উত্তম কর্মের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকে। জানুন আল্লাহর ঘোষণা : ৩৯:৩৩,৩৪।২:১৭৭।৪৯:১৫।৫:৬৯।১৬:৯
৭.যারা বৈধ উপায়ে অর্থ সম্পদ উপার্জন করে এবং তা সত্য প্রতিষ্ঠা ও মানবতার কল্যাণে ব্যয় করে তথা দান সাদাকাহ করে। শুনুন কুরআনের বাণী : ২:১৬৮।৬:১৫২।১৬:১১৪।২:৩,১৭৭,১৯৫
৮.যারা মানুষকে সকল মন্দ ও খারাপ কাজ থেকে নিষেধ বা বারণ করে এবং ইসলামের প্রকৃত দাওয়াহ বা প্রচার করে। পড়ুন আল্লাহর ঘোষণা : ৫:৬৩,৭৯।৩:১০৪,১১০।৭:১৬৫।৪১:৩৩।
৯.যারা সর্বদা আত্নশুদ্ধিতে রত থাকে ও বেশি বেশি তাওবাহ করে।দেখুন সর্বশেষ ঐশী বাণী: ৩৫:১৮।৮০:৩।৮৭:১৪।৯১:৯।৭:১৫৩।২:
১০.যারা আপন স্রষ্টা ও প্রতিপালক আল্লাহ কেন্দ্রিক পার্থিব জীবন গড়ার প্রচেষ্টা চালায় এবং মানবতার ঐক্য ও সম্প্রীতির লক্ষ্যে কাজ করে। জানুন আল্লাহর আয়াত : ৩:১০১।৪:১৪৬।২৯:৬৯,৬।২২:৭৮।২৫:৫
হে মানুষ! একটি বিষয় ভাল করে জেনে রাখুন – যে কোনো ঘটনা বা আপদ – বিপদে আপনার মৃত্যু এবং যতটুকু ক্ষতি ও অসুস্থ হওয়ার ফায়সালা আল্লাহর পক্ষ হতে নির্ধারিত আছে শুধু ততটুকুই হবে, একটুও কম ও বেশি হবে না। দেখুন : ৩:১৪৫,৬৩:১১।৬:১৭,১০:৪৯। অন্য সময় বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা ও অন্যান্য কারণে প্রতিদিন যত মানুষ মৃত্যুবরণ করতো এখন তা করছেনা।এবং পৃথিবীতেও অন্যান্য কারণে মৃত্যুর হার অনেক কমে গেছে। করোনার কারণে কিছু লোক মারা যাচ্ছে। যেভাবে নির্ধারন আছে সেভাবেই হচ্ছে। মূলকথা সবকিছু মহাস্রষ্টা আল্লাহর অনুমতি ও অনুমোদন ক্রমে মানুষের কর্মফলের কারণেই হয়। অন্য কারো কোনো ক্ষমতা ও শক্তি নেই যে কারো মৃত্যু দিতে পারে, কোনো ক্ষতি ও অসুস্থ করতে পারে। মানুষের জ্ঞান বিশ্বাস ও কর্ম নষ্ট হয়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে আরো আধুনিক ও ভয়াবহ আযাব গজব একের পর এক আসছে। ভবিষ্যতে আযাব গজবে কত কোটি মানুষ যে মারা যাবে একমাত্র মহাস্রষ্টাই জানেন। অতএব হে মানবজাতি এখনি অনুতপ্ত ও অনুশোচিত হয়ে আপন স্রষ্টা ও পালনকর্তা আল্লাহ ও তাঁর বৈজ্ঞানিক ও প্রাকৃতিক জীবন ব্যবস্থায় ফিরে আসুন। নইলে ভয়াবহ পরিণতির জন্য অপেক্ষা করুন।