ঢাকা ১১:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষের শহরে অভিবাসন ও জীনবমান নিয়ে মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত রাঙ্গুনিয়ায় আ: লীগ নেতার মৃত্যুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর শোক বরিশালে বৃষ্টি কামনায় নামাজ আদায়। রুপগঞ্জ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে এক দুর্ধর্ষ ডাকাত ওমর ফারুক গ্রেফতার বানারীপাড়ায় কিশোরী অপহরণ করে ধর্ষণ। বাকেরগঞ্জ থেকে ধর্ষক গ্রেফতার। “কোলোরেক্টাল ক্যান্সার সচেতনতা ফোরামের আয়োজন করেছে এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা” বরিশালে পথ শিশুদের সহযোগিতায় কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। গজারিয়ায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান দুই প্রতিষ্ঠান কে অর্থদন্ড টেকপাড়া ও ইয়াকুব নগরের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্হদের মাঝে নগর অর্থ ও বস্ত্র বিতরণ বাস ও ফুটওভার ব্রিজ মুখোমুখি সংঘর্ষ

মহাদেবপুরে ঐতিহ্যবাহী হুর মেলা

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর মহাদেবপুরে ঐতিহ্যবাহী হুর মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতি বছরের বৈশাখের দ্বিতীয় রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের চেরাগপুর গ্রামে একটি বট গাছের নিচে অধাবেলা এ মেলা হয়ে থাকে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অর্থ্যাৎ হুড় হুড় করে এ মেলা শুরু হয় এবং হুড় হুড় করে শেষ হয় বলে হুর মেলা নামে পরিচিত। জানাগেছে, গত কয়েকশ বছর থেকে চেরাগপুর গ্রামের বট গাছকে কেন্দ্র করে এ গাছের নিচে হুর মেলা হয়ে আসছে। এটি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় মেলা বলে দাবী করেন এলাকাবাসী। মাটির একটি ঘরের মধ্যে মন্ডব ও মাজার। মাদার নামে এক ব্যক্তির নামে এ মাজার। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন মন্ডবে আর মুসলমানরা মাজারে আসেন নিজেদের মন বাসনা পূর্ন করতে। মানত পুরণ হলে বৈশাখের দ্বিতীয় রবিবার তারা এসে মানত উদ্যেশে রান্না করে সবাইকে খাইয়ে থাকেন। প্রতি বছর এ মেলা হয়ে থাকে বলে কৃষিযন্ত্রপাতি থেকে শুরু করে আসবাবপত্র ও পোশাক-পরিচ্ছদ, দই, মিষ্টি মেলা থেকে কিনেন এলাকাবাসীরা। বছরের এ দিনটিকে ঘিরে গ্রামে যেন আনন্দের জোয়ার বয়ে আসে। মেয়ে ও জামাইকে দাওয়াত করে নিয়ে আসা হয়। ঘরে ঘরে যেন উৎসবের আমেজ বইতে থাকে। মান্দার মৈনম গ্রাম থেকে আসা সাইদুল বিশ্বাস ও বদলগাছী থেকে আসা জাকারিয়া জাকির বলেন, এ মেলার অনেক ইতিকথা শুনেছি। তাই মেলার দেখার জন্য পরিবার সহ বেড়াতে আসছি। মহিষের গোস্ত অন্য সময় পাওয়া যায়না। এ মেলার ঐতিহ্য হচ্ছে মহিষের গোস্ত। বয়জ্যেষ্ঠ রইচ উদ্দিন বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকে এ মেলা হয়ে আসছে। অনেকে মন বাসনা পূরন করতে মেলায় আসেন। আবার অনেকে এখানে পরিবারের সবাই দল বেঁধে এসে রান্না করে খান। এক কথায় এখানে মিলন মেলায় পরিনত হয়। ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় এখানে দোকানীরা দোকান নিয়ে বসেছিল তখন লোকজনকে নিষেধ করেও মেলা ভাঙা যায়নি। কারণ পাঞ্জাবীরা যদি কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটায় তাহলে সবকিছু নিশ্চিন্ন হয়ে যাবে। সে বছর সুষ্ঠু ভাবে মেলা সম্পন্ন হয়েছিল। মাজারের খাদেম শুকচান বলেন, আলাদা ধর্মের মানুষদের জন্য আলাদা উপাসনালয় আছে। কিন্তু এখানে যারা মানত করেন সকল ধর্মবর্ণের মানুষরা এসে এ মাজারে সিজদা করেন। যে যার মতো করে মানত করেন। তাদের মানত পূর্ন হলে এখানে এসে সিন্নি (রান্না) করে উপস্থিত সবার মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। চেরাগপুর গ্রামের মেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক হুমায়ন কবীর বলেন, এ মেলায় মাজার এবং মন্ডপ দুটোই আছে। মেলায় ধর্মবর্ণ বির্নিশেষে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের আগমণ ঘটে। বাড়ি বাড়ি আত্মীয়দের সমাগম ঘটে। আর আধাবেলা অনুষ্ঠিত এ মেলা থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে ঐরুশে ছিন্নি ও তবারক উপস্থিত সবাইকে বিতরণ করা হয়। এক কথায় মিলন মেলায় পরিনত হয়।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষের শহরে অভিবাসন ও জীনবমান নিয়ে মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত

মহাদেবপুরে ঐতিহ্যবাহী হুর মেলা

আপডেট টাইম ০৫:১৮:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০১৯

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর মহাদেবপুরে ঐতিহ্যবাহী হুর মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতি বছরের বৈশাখের দ্বিতীয় রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের চেরাগপুর গ্রামে একটি বট গাছের নিচে অধাবেলা এ মেলা হয়ে থাকে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অর্থ্যাৎ হুড় হুড় করে এ মেলা শুরু হয় এবং হুড় হুড় করে শেষ হয় বলে হুর মেলা নামে পরিচিত। জানাগেছে, গত কয়েকশ বছর থেকে চেরাগপুর গ্রামের বট গাছকে কেন্দ্র করে এ গাছের নিচে হুর মেলা হয়ে আসছে। এটি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় মেলা বলে দাবী করেন এলাকাবাসী। মাটির একটি ঘরের মধ্যে মন্ডব ও মাজার। মাদার নামে এক ব্যক্তির নামে এ মাজার। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন মন্ডবে আর মুসলমানরা মাজারে আসেন নিজেদের মন বাসনা পূর্ন করতে। মানত পুরণ হলে বৈশাখের দ্বিতীয় রবিবার তারা এসে মানত উদ্যেশে রান্না করে সবাইকে খাইয়ে থাকেন। প্রতি বছর এ মেলা হয়ে থাকে বলে কৃষিযন্ত্রপাতি থেকে শুরু করে আসবাবপত্র ও পোশাক-পরিচ্ছদ, দই, মিষ্টি মেলা থেকে কিনেন এলাকাবাসীরা। বছরের এ দিনটিকে ঘিরে গ্রামে যেন আনন্দের জোয়ার বয়ে আসে। মেয়ে ও জামাইকে দাওয়াত করে নিয়ে আসা হয়। ঘরে ঘরে যেন উৎসবের আমেজ বইতে থাকে। মান্দার মৈনম গ্রাম থেকে আসা সাইদুল বিশ্বাস ও বদলগাছী থেকে আসা জাকারিয়া জাকির বলেন, এ মেলার অনেক ইতিকথা শুনেছি। তাই মেলার দেখার জন্য পরিবার সহ বেড়াতে আসছি। মহিষের গোস্ত অন্য সময় পাওয়া যায়না। এ মেলার ঐতিহ্য হচ্ছে মহিষের গোস্ত। বয়জ্যেষ্ঠ রইচ উদ্দিন বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকে এ মেলা হয়ে আসছে। অনেকে মন বাসনা পূরন করতে মেলায় আসেন। আবার অনেকে এখানে পরিবারের সবাই দল বেঁধে এসে রান্না করে খান। এক কথায় এখানে মিলন মেলায় পরিনত হয়। ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় এখানে দোকানীরা দোকান নিয়ে বসেছিল তখন লোকজনকে নিষেধ করেও মেলা ভাঙা যায়নি। কারণ পাঞ্জাবীরা যদি কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটায় তাহলে সবকিছু নিশ্চিন্ন হয়ে যাবে। সে বছর সুষ্ঠু ভাবে মেলা সম্পন্ন হয়েছিল। মাজারের খাদেম শুকচান বলেন, আলাদা ধর্মের মানুষদের জন্য আলাদা উপাসনালয় আছে। কিন্তু এখানে যারা মানত করেন সকল ধর্মবর্ণের মানুষরা এসে এ মাজারে সিজদা করেন। যে যার মতো করে মানত করেন। তাদের মানত পূর্ন হলে এখানে এসে সিন্নি (রান্না) করে উপস্থিত সবার মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। চেরাগপুর গ্রামের মেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক হুমায়ন কবীর বলেন, এ মেলায় মাজার এবং মন্ডপ দুটোই আছে। মেলায় ধর্মবর্ণ বির্নিশেষে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের আগমণ ঘটে। বাড়ি বাড়ি আত্মীয়দের সমাগম ঘটে। আর আধাবেলা অনুষ্ঠিত এ মেলা থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে ঐরুশে ছিন্নি ও তবারক উপস্থিত সবাইকে বিতরণ করা হয়। এক কথায় মিলন মেলায় পরিনত হয়।