ঢাকা ০৮:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
গজারিয়ায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান দুই প্রতিষ্ঠান কে অর্থদন্ড টেকপাড়া ও ইয়াকুব নগরের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্হদের মাঝে নগর অর্থ ও বস্ত্র বিতরণ বাস ও ফুটওভার ব্রিজ মুখোমুখি সংঘর্ষ “২৬শে এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে শার্ক ট্যাংক বাংলাদেশ” –মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর এলাকা হতে ৫৩ কেজি গাঁজাসহ ০৩ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০; মাদক বহনে ব্যবহৃত পিকআপ জব্দ। “মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন” ইন্দুরকানীতে দিনব্যাপী পারিবারিক পুষ্টি বাগান ও বস্তায় আদা চাষ বিষয়ক প্রশিক্ষণ চট্টগ্রামে সড়ক অবরোধ করে চুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন … লালমনিরহাটে বৃষ্টির জন‍্য বিশেষ নামাজ আদায় মিছিল ও শোডাউন করায় মতলব উত্তর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে মানিক দর্জিকে শোকজ

মনপুরায় বিলুপ্তির পথে খেজুরের রস

মো কামরুল হোসেন সুমন,স্টাফ রিপোর্টারঃ

ভোলায় খেজুর রসের চাহিদা থাকলেও আগের মতো খেজুর গাছ না থাকায় অনেকের স্বাদের রস ইচ্ছা থাকলেও প্রাপ্য হচ্ছে না। এক সময় মানুষের বাড়িতে, সড়কের পাশে সারি সারি খেজুর গাছ দেখা যেত। শীতকাল আসলে গাছিরা সন্ধ্যায় গাছ কেটে হাঁড়ি বসিয়ে ভোর সকালে রস বিক্রি করত। এখন গাছ নেই বললেই চলে। মাঝে মাঝে দু’একটি খেজুর গাছ থাকলেও তাও সবল নয়। দুর্বল প্রকৃতির গাছগুলোতে আগের মতো রস পড়ে না।

বর্তমানে গাছিরা পরিবেশ দূষণকে দায়ী করে বলেন, আগে পরিবেশ ছিল ভালো, প্রতিটি ফল মূলের গাছে ছিল ফুলে ফলে ভরা। বিভিন্ন পরিবেশ দূষণের কবলে পড়ে ফল মূলের গাছে আগের মতো ফল ধরে না। আগে সকালে হাঁড়ি নামিয়ে রস নিয়ে যাওয়ার পরও গাছে ফোঁটায় ফোঁটায় অবিরত ঝড়তে থাকত দুপুর পর্যন্ত।
খেজুর রস সংগ্রহকারী (গাছালি) মনপুরা উপজেলার ৪নং দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়ন রহমানপুর গ্রামের গাছালী মো আবদুল মতিন গাজী বলেন, ২০১৭/১৮ সালে আমি প্রায় একশ গাছ থেকে দৈনিক রস সংগ্রহ হতো প্রায় ২০০-৩০০ কেজি। আর এখন তা আগের মতো নয়। তিনি আরও বলেন, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বিভিন্ন দূষণে গাছের শক্তি ও ভিটামিন কমে গেছে।

তার মতে আগে প্রচুর খেজুর গাছ ছিল অত্র এলাকায়, কিন্তু পরিবেশ দূষণ ও গাছের মালিকরা গাছগুলো ইটভাটায় লাকড়ি হিসেবে বিক্রি করে দেয়ায় খেজুর গাছ ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে।

এক সময় প্রতি কেজি খেজুর রস বিক্রি হতো ৮-১০ টাকায়। বর্তমানে সে খেজুরের রস ৫০-১২০ টাকা প্রতি কেজি। অনেক জায়গাতে ১০০-২০০ টাকাও বিক্রি হচ্ছে। তিনি আরো জানান, রসের চাহিদা অনেক, কিন্তু এরপরও চাহিদা মতো দেয়া যায় না, অনেকে রসের জন্য ঝগড়াও করেন। পালা করে করে রস দিতে হচ্ছে ক্রেতাদের। রসের পিঠার মজাই আলাদা বলে বছরে একবার প্রতিটি পরিবারে রস সংগ্রহ করে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ডুই পিঠা (ভাপা পিঠা), গুরা পিঠা, চিতল পিঠা, পাটিসাপটা, হাতজারা পিঠা খেয়ে থাকেন। আবার অনেকেই আপনজনের বাসায়ও নিয়ে যান দৃষ্টি গোছরের জন্য খেজুর রস। সূযোগের অভাবে দুরন্ত কিশোররা আগের মতো পথের খেজুর গাছের ফোঁটা রস আর খেতে পারে না। খেজুর রস পানের আগ্রহ কোনো কালেই যেন বিলুপ্ত না হয় সেজন্য পরিবেশ বান্ধব এই খেজুর গাছ লাগানো ও বনবিভাগ কর্তৃপক্ষের যথাযথ ভূমিকা নেয়ার দাবি করেন তিনি।

Tag :

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

গজারিয়ায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান দুই প্রতিষ্ঠান কে অর্থদন্ড

মনপুরায় বিলুপ্তির পথে খেজুরের রস

আপডেট টাইম ০৯:০০:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ নভেম্বর ২০২২

মো কামরুল হোসেন সুমন,স্টাফ রিপোর্টারঃ

ভোলায় খেজুর রসের চাহিদা থাকলেও আগের মতো খেজুর গাছ না থাকায় অনেকের স্বাদের রস ইচ্ছা থাকলেও প্রাপ্য হচ্ছে না। এক সময় মানুষের বাড়িতে, সড়কের পাশে সারি সারি খেজুর গাছ দেখা যেত। শীতকাল আসলে গাছিরা সন্ধ্যায় গাছ কেটে হাঁড়ি বসিয়ে ভোর সকালে রস বিক্রি করত। এখন গাছ নেই বললেই চলে। মাঝে মাঝে দু’একটি খেজুর গাছ থাকলেও তাও সবল নয়। দুর্বল প্রকৃতির গাছগুলোতে আগের মতো রস পড়ে না।

বর্তমানে গাছিরা পরিবেশ দূষণকে দায়ী করে বলেন, আগে পরিবেশ ছিল ভালো, প্রতিটি ফল মূলের গাছে ছিল ফুলে ফলে ভরা। বিভিন্ন পরিবেশ দূষণের কবলে পড়ে ফল মূলের গাছে আগের মতো ফল ধরে না। আগে সকালে হাঁড়ি নামিয়ে রস নিয়ে যাওয়ার পরও গাছে ফোঁটায় ফোঁটায় অবিরত ঝড়তে থাকত দুপুর পর্যন্ত।
খেজুর রস সংগ্রহকারী (গাছালি) মনপুরা উপজেলার ৪নং দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়ন রহমানপুর গ্রামের গাছালী মো আবদুল মতিন গাজী বলেন, ২০১৭/১৮ সালে আমি প্রায় একশ গাছ থেকে দৈনিক রস সংগ্রহ হতো প্রায় ২০০-৩০০ কেজি। আর এখন তা আগের মতো নয়। তিনি আরও বলেন, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বিভিন্ন দূষণে গাছের শক্তি ও ভিটামিন কমে গেছে।

তার মতে আগে প্রচুর খেজুর গাছ ছিল অত্র এলাকায়, কিন্তু পরিবেশ দূষণ ও গাছের মালিকরা গাছগুলো ইটভাটায় লাকড়ি হিসেবে বিক্রি করে দেয়ায় খেজুর গাছ ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে।

এক সময় প্রতি কেজি খেজুর রস বিক্রি হতো ৮-১০ টাকায়। বর্তমানে সে খেজুরের রস ৫০-১২০ টাকা প্রতি কেজি। অনেক জায়গাতে ১০০-২০০ টাকাও বিক্রি হচ্ছে। তিনি আরো জানান, রসের চাহিদা অনেক, কিন্তু এরপরও চাহিদা মতো দেয়া যায় না, অনেকে রসের জন্য ঝগড়াও করেন। পালা করে করে রস দিতে হচ্ছে ক্রেতাদের। রসের পিঠার মজাই আলাদা বলে বছরে একবার প্রতিটি পরিবারে রস সংগ্রহ করে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ডুই পিঠা (ভাপা পিঠা), গুরা পিঠা, চিতল পিঠা, পাটিসাপটা, হাতজারা পিঠা খেয়ে থাকেন। আবার অনেকেই আপনজনের বাসায়ও নিয়ে যান দৃষ্টি গোছরের জন্য খেজুর রস। সূযোগের অভাবে দুরন্ত কিশোররা আগের মতো পথের খেজুর গাছের ফোঁটা রস আর খেতে পারে না। খেজুর রস পানের আগ্রহ কোনো কালেই যেন বিলুপ্ত না হয় সেজন্য পরিবেশ বান্ধব এই খেজুর গাছ লাগানো ও বনবিভাগ কর্তৃপক্ষের যথাযথ ভূমিকা নেয়ার দাবি করেন তিনি।