মাতৃভূমির খবর ডেস্ক : রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ এ দুটি তদন্ত কমিটি করে। দুই কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। গতকাল সোমবার ওই শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে। ঘটনাটি বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে। আজ সকালে ভিকারুননিসা ক্যাম্পাসে আসেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। সেখানে তিনি স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের তোপের মুখে পড়েন। পরে শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। অভিযোগ ও ক্ষোভের কথা শুনেছি। তাদের বলেছি, কেউ অপরাধী হলে অবশ্যই শাস্তি পাবে।
তিনি বলেন, একজন শিক্ষার্থী কতটা অপমানিত হলে, কতটা কষ্ট পেলে আত্মহত্যার মতো পথ বেছে নেয়? যে ঘটনাগুলো আমরা শুনছি, এর পেছনের কথা শুনছি, ঘটনার পেছনে বা ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, যদি প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
এদিকে অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনায় ঘটনায় দুটি কমিটি হয়েছে। স্কুলের পক্ষ থেকে করা কমিটিতে আছেন শিক্ষক খুরশিদ জাহানা মালা, ফেরদৌসি বেগম ও আতাউর রহমান। অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস জানান, গতরাতে অভিভাবকদের সঙ্গে স্কুলের শিক্ষকদের একটি সভায় এই কমিটি করা হয়।
অভিভাবক প্রতিনিধি সিদ্দিকী নাসির উদ্দিন জানান, রাত তিনটায় অনুষ্ঠিত ওই সভায় অভিযুক্ত শিক্ষক জিন্নাত আরাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ঢাকা অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের নির্দেশে এই কমিটি করা হয়।
অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী জানান, মেয়ের স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। রোববার পরীক্ষা দেওয়ার সময় তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের স্কুলে যেতে বলে। স্কুলে যাওয়ার পর কর্তৃপক্ষ জানায়, তার মেয়ে পরীক্ষার হলে মোবাইলের মাধ্যমে নকল করছিল। তাই তাকে টিসি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ খবর শোনার পর স্কুল থেকে অরিত্রী বাসায় ফিরে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে দ্রুত উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
দিলীপ অভিযোগ করেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ মেয়ের সামনে আমাকে অপমান করেছে এবং জানিয়ে অরিত্রী পরীক্ষা দিতে পারবে না। এ মানসিক আঘাত সইতে না পেরে সে বাসায় ফিরে আত্মহত্যা করেছে।
এ বিষয়ে ঘটনার পর পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আতাউর রহমান জানান, স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যার খবর পেয়ে ঢামেক হাসপাতালে যেয়ে মৃতদেহ পাওয়া গেছে।