ঢাকা ১২:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাকেরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জনপ্রিয়তার শীর্ষে বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা। কুমিল্লার চার উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে লড়বেন ১৪ জন প্রার্থী গজারিয়ায় ৩ হেভিওয়েটসহ চেয়ারম্যান পদে ৫,ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪,মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ নারায়ণগঞ্জে মাই টিভির ১৫ তম প্রতিষ্ঠাতা বার্ষিক উপলক্ষে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠিত ফিরিঙ্গিবাজারে বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারকে তিন হাজার টাকা দেয়ার ঘোষণা মেয়রের গজারিয়ায় অজ্ঞাত তরুনীর রক্তাত লাশ উদ্ধার গজারিয়ায় অজ্ঞাত তরুনীর রক্তাত লাশ উদ্ধার বরিশালে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে আসামির পিটুনিতে আসামি নিহত। কর্ণফুলী নদীকে আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে অর্থ প্রতিমন্ত্রী: বেগম ওয়াসিকা আয়শা খান টানা ৬ দিনের ছুটি শেষে চট্টগ্রাম নগরে ফিরছে মানুষ

বিশ্ব নেতাদের মতে রাজনীতিতে শেখ হাসিনার বিকল্প শুধু শেখ হাসিনাই

স্টাফ রিপোর্টারঃ
গত ১৫ বছরে বিশ্ব রাজনীতিতে অনেক উত্থান-পতন ঘটেছে। অপ্রত্যাশিতভাবে অনেক দেশের সরকার পরিবর্তন হয়েছে, সুসম্পর্ক বজায় থাকা অনেক দেশের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে টানাপোড়েন, অনেক বৈরি সম্পর্কযুক্ত দেশের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে নবদিগন্তের সূচনা। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের চেষ্টা দেশে যেমন হয়েছে, বাইরে থেকেও অনেকে চেষ্টা করেছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়চেতা নেতৃত্ব, অপ্রত্যাশিত কূটনৈতিক পদক্ষেপ এবং অবিচল নেতৃত্ব বাংলাদেশকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়; একইসাথে শেখ হাসিনা গণ্য হয়েছেন বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রভাবশালী নেতাদের একজন হিসেবে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে, বিভিন্ন জোট ও সংস্থায় এবং প্রভাবশালী গণমাধ্যম তো বটেই, বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলোতেও নিয়মিত আলোচনায় বারবার উঠে এসেছে বাংলাদেশ, শেখ হাসিনা এবং তাঁর দক্ষ নেতৃত্বের কথা। অর্থনৈতিক মন্দা, মহামারিসহ বিভিন্ন দুর্যোগে আন্তর্জাতিক নান সমীক্ষাকে তুড়ি মেরে শুধুমাত্র নেতৃত্ব দিয়েই টিকিয়ে রেখেছেন বাংলাদেশকে। আজ তিনি নিজ যোগ্যতায় সুউচ্চ আসনে আসীন।

তাই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের চোখ ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তিন দেশ সফরের দিকে। শেখ হাসিনা যে নিছক শুভেচ্ছা সফরে যাচ্ছেন না, এক ঢিলে বহু শিকার ঘায়েল করা তাঁর লক্ষ্য, এটা মোটামুটি সবারই জানা। তাই স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, বঙ্গবন্ধু কন্যার এই তিন দেশ সফর কি বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি টার্নিং পয়েন্ট হতে যাচ্ছে? আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে এই সফর কি আওয়ামী লীগকে কোনো বিশেষ কূটনৈতিক সুবিধা এনে দিচ্ছে? এমন প্রশ্ন রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। বিশেষ করে শেখ হাসিনাকে নিয়ে আইএমএফ প্রধান ও বিশ্বব্যাংকের প্রধানের বক্তব্য, তাদের উচ্ছাস ও প্রশংসা বাণীর পর এটুকু স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, আন্তর্জাতিক মহল শেখ হাসিনার কোন বিকল্প ভাবছে না। বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রাষ্ট্রের যে জোট গঠিত হতে যাচ্ছে, তাতে শেখ হাসিনার কথাই শেষ কথা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

বিভিন্ন সময়ে দেখা গেছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ব্যাপারে এক ধরনের নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করছিল। বিএনপি-জামায়াতের ভাড়াটে লবিস্টদের কল্যাণে মার্কিনিরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেয়। যুক্তরাষ্ট্র বর্তমান সরকারকে পাল্টে দিতে চায়- প্রধানমন্ত্রী নিজেই জাতীয় সংসদে দেয়া বক্তৃতায় বলেছেন যেকোনো সরকারকে উল্টেপাল্টে দেয়ার ক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্রের আছে। তাদের এই মনোভাব নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানারকম আলাপ-আলোচনা হয়েছিল। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা, গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ না জানানো, জো বাইডেনের চিঠি, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বিভিন্ন রকম অপতৎপরতার পর প্রশ্ন উঠেছে যে যুক্তরাষ্ট্র কি তাহলে এই সরকারকে সরিয়ে নতুন সরকার বসাতে চায়? বিএনপি-জামায়াতসহ সরকারবিরোধী গোষ্ঠকেও বেশ খুশি খুশি দেখাচ্ছিল। এমন অবস্থার মাঝেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে সফরে যান।

প্রধানমন্ত্রীর সফরের প্রত্যক্ষ ফলাফল তাঁর দেশে ফেরার আগেই পাওয়া যাচ্ছে। তাঁর কূটনৈতিক পদক্ষেপে যেন বদলে গেছে সার্বিক পরিস্থিতি। বিশেষ করে জাপান সফরের পর দেশটির সাথে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ইউটার্ন নিয়েছে। এর আগে মার্কিনিদের পরম মিত্র জাপানের রাষ্ট্রদূত ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে বিএনপি-জামায়াতপন্থীদের উস্কানির প্রেক্ষিতে এমন মন্তব্য করেছিলেন, যা পত্রপত্রিকায় রসালো চেহারায় উপস্থাপন করার মাধ্যমে জনগণের কাছে ভুল বার্তা যায়। যার প্রেক্ষিতে জাপানের রাষ্ট্রদূতের বিষয়ে বাংলাদেশের অসন্তুষ্টি প্রকাশ পায়। তাই এবার নতুন রাষ্ট্রদূত অনেকটাই সতর্ক। তিনি গণমাধ্যমের কাছে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের নির্বাচন তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এই ঘটনা সেসময় আপাতদৃষ্টিতে সামান্য বিষয় মনে হলেও এখন পুরো দৃশ্যপট পরিস্কার হয়ে আসছে। এই ঘটনাটি বাংলাদেশের রাজনীতি বিষয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের মানসিকতার বড় ধরনের বাঁক বদল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে যখন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সন্নিকটে এবং এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন সরগরম, তখন জাপানের নতুন রাষ্ট্রদূতের এই বক্তব্য সুস্পর্ষ্ট ইঙ্গিত বহন করে অবশ্যই। একই সময়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেলের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট করা হয়েছে বিশেষ কোনো দলের প্রতি তাদের সমর্থন নেই। জাপানের মত একইসুরে তিনিও বলেছেন বাংলাদেশের রাজনীতি, নির্বাচন, বিভিন্ন দলের অংশগ্রহণ- এসব তাদের নিজস্ব ব্যাপার। যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন এসব বিষয়ে হস্তক্ষেপের কথা ভাবে না। ওয়াশিংটনে কর্মরত বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার একান্ত আস্থাভাজন কতিপয় সুযোগসন্ধানী সাংবাদিকের মুখের ওপর এভাবেই জবাব ছুড়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এরইমধ্যে গতকাল যুক্তরাজ্যে রাজকীয় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে যোগ দিতে লন্ডন পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে উষ্ণ আতিথেয়তা তো পেয়েছেনই পাশাপাশি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেন। এসময় প্রটোকলের বাইরে গিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী রীতিমত উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করলেন শেখ হাসিনার নেতৃত্ব, ব্যক্তিত্ব ও রাজনৈতিক বিচক্ষণতার বিষয়ে। লন্ডনের পলমলে কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটের মার্লবোরো হাউজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে ঋষি সুনাক বেশ কয়েকবারই বলেছেন, ‘ইউ আর (শেখ হাসিনা) ইন্সপিরেশন ফর আস (আপনি আমাদের জন্য বিশাল বড় অনুপ্রেরণা)।’ ঋষি সুনাক আরও জানিয়েছেন তার দুটো ছোট মেয়ে আছে, তারা এবং তার স্ত্রী সবাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভক্ত। কোনো ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এ ধরণের প্রশংসা সত্যিই বিরল। উভয়ের মাঝে হৃদ্যতাপূর্ণ বৈঠকে বাংলাদেশের অনুকূলে অনেক পদক্ষেপ এবং সহযোগিতার আশ্বাসও দেন ঋষি। বৈঠকের বড় অংশজুড়েই ছিল শেখ হাসিনার প্রতি ঋষি সুনাকের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা এবং বিভিন্ন বিষয়ে ধন্যবাদ জ্ঞাপন।

সব মিলিয়ে এটা সুস্পষ্ট ম্যাসেজ যে, সাম্প্রতিক সময়ে যে শঙ্কার মেঘ জড়ো হয়েছিল বাংলাদেশের রাজনীতির আকাশে, তা শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বেই কেটে গেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সরকারের সমালোচনা করা আর সরকার পাল্টে ফেলা বা উৎখাত করা সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৪ বছরের বেশি সময় দেশ পরিচালনা করছে। এ সময় আওয়ামী লীগের অর্জন অনেক। পাশাপাশি সমালোচনারও অনেক জায়গা রয়েছে, অনেক বিষয়ে আরও ভালো করার সুযোগ রয়েছে। তবে সমালোচনা করা মানে এই নয় যে, সরকার পুরো ব্যর্থ হয়ে গেছে, তাই বদলে দেয়াটাই একমাত্র সমাধান। বরং অর্জনের পাল্লা বিবেচনা করলে, পরিসংখ্যান দেখলে যে কেউই বলবে, বাংলাদেশের আমূল পরিবর্তন ঘটে গেছে বিগত ১৫ বছরে। শুধু তা-ই নয়, বাংলাদেশের সাথে শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে এমন রাষ্ট্র কিংবা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন জোট ও সংস্থার মনোভাব এখানে গুরুত্বপূর্ণ। কূটনৈতিক সম্পর্ক নির্ধারণের ক্ষেত্রে তারা প্রথমেই ভাবে নেতৃত্ব নিয়ে। রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে দেশের স্থিতিশীলতাকে প্রাধান্য দেয় তারা। তাই তাদের কাছে এ মুহূর্তে শেখ হাসিনার চেয়ে সত্যিকারের কোনো বিকল্প নেই, এমন মত আন্তর্জাতিক রাজনীতির থিংকট্যাংকদেরও।

বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে ওয়াকেবহাল আন্তর্জাতিক মহল জানে, আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দল বিএনপি। সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় বিএনপির প্রধান দুই নেতা- খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুপযুক্ত বলে বিএনপি এখন নেতৃত্বহীন এবং নির্বাচনে অংশ নেয়ার মত সক্ষম নয়। এ অবস্থায় বিএনপি চলছে দ্বিতীয় ও তৃতীয় সারির অযোগ্য লোকজনের নেতৃত্বে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে যাদের কেউই প্রধান সারিতে ছিলেন না বলে তাদের নেতৃত্ব পরীক্ষিত নয়। তবুও দীর্ঘদিন বিদেশি দূতাবাসের দুয়ারে দুয়ারে ধর্না দিয়েছেন এই দ্বিতীয় ও তৃতীয় সারির নেতারা। তবে যখন বিদেশিরা প্রশ্ন করেছে বিএনপি নির্বাচনে গিয়ে যদি জয়ীও হয়, তবে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন- এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি বিএনপি। এতে কূটনীতিকরা বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির নেপথ্য কারণটাও বুঝতে পেরেছেন। কোনোমতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করে পেছনের দরজায় ফুটো তৈরি করতে পারলে সব আইন ডিঙিয়ে খালেদা-তারেককে গদিতে বসানো যায়।

১/১১-তে যেভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছিল, বাংলাদেশ কেন্দ্রিক বিদেশি ব্যবসাসহ বিভিন্ন দিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, বিদেশিরা তাই বাণিজ্যের অপার সম্ভাবনাময় বাংলাদেশকে সে অবস্থায় দেখতে চায় না আর। মহামারী ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বিশ্ব এখন টালমাটাল, এসময় বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে খুব বেশি লাভ নেই। বরং ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই অহেতুক নিজেদের শক্তি ও শ্রম ক্ষয় করে বিএনপির ফাঁদে আর পা দিতে চায় না বিদেশিরা। তাছাড়া কূটনীতিকরা বুঝতে পেরেছেন বিএনপি ক্ষমতায় বসার জন্য প্রস্তুত নয়। আর পশ্চিমপন্থী সুশীল হিসেবে পরিচিত যারা, তাদের মাধ্যমে গড়া অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় আনার প্রচেষ্টা বড় ধরণের রাজনৈতিক ঝুঁকি হয়ে যাবে। যা বর্তমান বাংলাদেশের অত্যন্ত শক্তিশালী দুই মিত্র- চীন ও রাশিয়া সহজে মেনে নেবে না।

তাছাড়া সুশীল সমাজে এমন কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি নেই যিনি সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম। ড. ইউনূস আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচারে লিপ্ত বটে, তবে তিনি সামনে থেকে দায়িত্ব নেয়ার মত বোকামি করতে রাজি নন। এতে তার সামাজিক ব্যবসার ধান্দার গোমর আরও উন্মোচিত হয়ে যাবে। এমনিতেই ১/১১’র অভিজ্ঞতার পর সুশীল শ্রেণির লোকজন বুঝে গেছেন, পত্রিকায় কলাম লেখা আর রাষ্ট্র পরিচালনা করা এক জিনিস নয়। তাই তারাও ক্ষমতার বলয়ের ধারেকাছে যেতে আগ্রহীন নন। তাছাড়া ১/১১’র প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। তখন সেনা সমর্থন নিয়েই এটা ঘটানো হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশে গত ১৫ বছরে সশস্ত্র বাহিনীতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে, আরও পেশাদার হয়ে উঠেছে বাহিনী। তারা রাজনৈতিক বিতর্কে নিজেদের জড়াবে না বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা। কারণ বহুবারই পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। সেনাবাহিনী এসব ফাঁদে পা দেয়নি, উল্টো যারা এসবের সাথে জড়িত ছিল, তাদের বহিষ্কার করে দেশছাড়া করেছে। তারা এখন প্রবাসে বসে ইউটিউবিং করে পেট চালায়।

এছাড় বাংলাদেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের স্বার্থ রয়েছে এমন দেশগুলো পশ্চিমাদের মিত্র হলেও তারাও চাইছে না বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি হোক। বিএনপির মত জঙ্গিবান্ধব দল ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশের প্রতিবেশি দেশগুলো বড় ধরণের ঝুঁকির মুখে পড়বে। অর্থাৎ, শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কোনো বিকল্প দেখছে না পশ্চিমারা। শেখ হাসিনাকে তাই তারা আরও দীর্ঘসময় বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চান। ফলে এটা পরিষ্কার, এই মুহূর্তে বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনা অপ্রতিদ্বন্দ্বী। আর বিকল্প নেতৃত্ব নাই বলেই আওয়ামী লীগকে উৎখাতের চিন্তা কোনো বুদ্ধিমান রাষ্ট্র করবে না। বলেই মত বিশ্লেষকদের।

#শেখহাসিনা #বাংলাদেশ #রাজনীতি #আওয়ামীলীগ #বিশ্বনেতা #নির্বাচন

Tag :

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বাকেরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জনপ্রিয়তার শীর্ষে বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা।

বিশ্ব নেতাদের মতে রাজনীতিতে শেখ হাসিনার বিকল্প শুধু শেখ হাসিনাই

আপডেট টাইম ০৬:১২:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ মে ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টারঃ
গত ১৫ বছরে বিশ্ব রাজনীতিতে অনেক উত্থান-পতন ঘটেছে। অপ্রত্যাশিতভাবে অনেক দেশের সরকার পরিবর্তন হয়েছে, সুসম্পর্ক বজায় থাকা অনেক দেশের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে টানাপোড়েন, অনেক বৈরি সম্পর্কযুক্ত দেশের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে নবদিগন্তের সূচনা। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের চেষ্টা দেশে যেমন হয়েছে, বাইরে থেকেও অনেকে চেষ্টা করেছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়চেতা নেতৃত্ব, অপ্রত্যাশিত কূটনৈতিক পদক্ষেপ এবং অবিচল নেতৃত্ব বাংলাদেশকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়; একইসাথে শেখ হাসিনা গণ্য হয়েছেন বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রভাবশালী নেতাদের একজন হিসেবে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে, বিভিন্ন জোট ও সংস্থায় এবং প্রভাবশালী গণমাধ্যম তো বটেই, বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলোতেও নিয়মিত আলোচনায় বারবার উঠে এসেছে বাংলাদেশ, শেখ হাসিনা এবং তাঁর দক্ষ নেতৃত্বের কথা। অর্থনৈতিক মন্দা, মহামারিসহ বিভিন্ন দুর্যোগে আন্তর্জাতিক নান সমীক্ষাকে তুড়ি মেরে শুধুমাত্র নেতৃত্ব দিয়েই টিকিয়ে রেখেছেন বাংলাদেশকে। আজ তিনি নিজ যোগ্যতায় সুউচ্চ আসনে আসীন।

তাই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের চোখ ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তিন দেশ সফরের দিকে। শেখ হাসিনা যে নিছক শুভেচ্ছা সফরে যাচ্ছেন না, এক ঢিলে বহু শিকার ঘায়েল করা তাঁর লক্ষ্য, এটা মোটামুটি সবারই জানা। তাই স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, বঙ্গবন্ধু কন্যার এই তিন দেশ সফর কি বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি টার্নিং পয়েন্ট হতে যাচ্ছে? আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে এই সফর কি আওয়ামী লীগকে কোনো বিশেষ কূটনৈতিক সুবিধা এনে দিচ্ছে? এমন প্রশ্ন রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। বিশেষ করে শেখ হাসিনাকে নিয়ে আইএমএফ প্রধান ও বিশ্বব্যাংকের প্রধানের বক্তব্য, তাদের উচ্ছাস ও প্রশংসা বাণীর পর এটুকু স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, আন্তর্জাতিক মহল শেখ হাসিনার কোন বিকল্প ভাবছে না। বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রাষ্ট্রের যে জোট গঠিত হতে যাচ্ছে, তাতে শেখ হাসিনার কথাই শেষ কথা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

বিভিন্ন সময়ে দেখা গেছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ব্যাপারে এক ধরনের নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করছিল। বিএনপি-জামায়াতের ভাড়াটে লবিস্টদের কল্যাণে মার্কিনিরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেয়। যুক্তরাষ্ট্র বর্তমান সরকারকে পাল্টে দিতে চায়- প্রধানমন্ত্রী নিজেই জাতীয় সংসদে দেয়া বক্তৃতায় বলেছেন যেকোনো সরকারকে উল্টেপাল্টে দেয়ার ক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্রের আছে। তাদের এই মনোভাব নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানারকম আলাপ-আলোচনা হয়েছিল। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা, গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ না জানানো, জো বাইডেনের চিঠি, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বিভিন্ন রকম অপতৎপরতার পর প্রশ্ন উঠেছে যে যুক্তরাষ্ট্র কি তাহলে এই সরকারকে সরিয়ে নতুন সরকার বসাতে চায়? বিএনপি-জামায়াতসহ সরকারবিরোধী গোষ্ঠকেও বেশ খুশি খুশি দেখাচ্ছিল। এমন অবস্থার মাঝেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে সফরে যান।

প্রধানমন্ত্রীর সফরের প্রত্যক্ষ ফলাফল তাঁর দেশে ফেরার আগেই পাওয়া যাচ্ছে। তাঁর কূটনৈতিক পদক্ষেপে যেন বদলে গেছে সার্বিক পরিস্থিতি। বিশেষ করে জাপান সফরের পর দেশটির সাথে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ইউটার্ন নিয়েছে। এর আগে মার্কিনিদের পরম মিত্র জাপানের রাষ্ট্রদূত ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে বিএনপি-জামায়াতপন্থীদের উস্কানির প্রেক্ষিতে এমন মন্তব্য করেছিলেন, যা পত্রপত্রিকায় রসালো চেহারায় উপস্থাপন করার মাধ্যমে জনগণের কাছে ভুল বার্তা যায়। যার প্রেক্ষিতে জাপানের রাষ্ট্রদূতের বিষয়ে বাংলাদেশের অসন্তুষ্টি প্রকাশ পায়। তাই এবার নতুন রাষ্ট্রদূত অনেকটাই সতর্ক। তিনি গণমাধ্যমের কাছে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের নির্বাচন তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এই ঘটনা সেসময় আপাতদৃষ্টিতে সামান্য বিষয় মনে হলেও এখন পুরো দৃশ্যপট পরিস্কার হয়ে আসছে। এই ঘটনাটি বাংলাদেশের রাজনীতি বিষয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের মানসিকতার বড় ধরনের বাঁক বদল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে যখন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সন্নিকটে এবং এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন সরগরম, তখন জাপানের নতুন রাষ্ট্রদূতের এই বক্তব্য সুস্পর্ষ্ট ইঙ্গিত বহন করে অবশ্যই। একই সময়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেলের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট করা হয়েছে বিশেষ কোনো দলের প্রতি তাদের সমর্থন নেই। জাপানের মত একইসুরে তিনিও বলেছেন বাংলাদেশের রাজনীতি, নির্বাচন, বিভিন্ন দলের অংশগ্রহণ- এসব তাদের নিজস্ব ব্যাপার। যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন এসব বিষয়ে হস্তক্ষেপের কথা ভাবে না। ওয়াশিংটনে কর্মরত বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার একান্ত আস্থাভাজন কতিপয় সুযোগসন্ধানী সাংবাদিকের মুখের ওপর এভাবেই জবাব ছুড়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এরইমধ্যে গতকাল যুক্তরাজ্যে রাজকীয় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে যোগ দিতে লন্ডন পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে উষ্ণ আতিথেয়তা তো পেয়েছেনই পাশাপাশি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেন। এসময় প্রটোকলের বাইরে গিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী রীতিমত উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করলেন শেখ হাসিনার নেতৃত্ব, ব্যক্তিত্ব ও রাজনৈতিক বিচক্ষণতার বিষয়ে। লন্ডনের পলমলে কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটের মার্লবোরো হাউজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে ঋষি সুনাক বেশ কয়েকবারই বলেছেন, ‘ইউ আর (শেখ হাসিনা) ইন্সপিরেশন ফর আস (আপনি আমাদের জন্য বিশাল বড় অনুপ্রেরণা)।’ ঋষি সুনাক আরও জানিয়েছেন তার দুটো ছোট মেয়ে আছে, তারা এবং তার স্ত্রী সবাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভক্ত। কোনো ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এ ধরণের প্রশংসা সত্যিই বিরল। উভয়ের মাঝে হৃদ্যতাপূর্ণ বৈঠকে বাংলাদেশের অনুকূলে অনেক পদক্ষেপ এবং সহযোগিতার আশ্বাসও দেন ঋষি। বৈঠকের বড় অংশজুড়েই ছিল শেখ হাসিনার প্রতি ঋষি সুনাকের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা এবং বিভিন্ন বিষয়ে ধন্যবাদ জ্ঞাপন।

সব মিলিয়ে এটা সুস্পষ্ট ম্যাসেজ যে, সাম্প্রতিক সময়ে যে শঙ্কার মেঘ জড়ো হয়েছিল বাংলাদেশের রাজনীতির আকাশে, তা শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বেই কেটে গেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সরকারের সমালোচনা করা আর সরকার পাল্টে ফেলা বা উৎখাত করা সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৪ বছরের বেশি সময় দেশ পরিচালনা করছে। এ সময় আওয়ামী লীগের অর্জন অনেক। পাশাপাশি সমালোচনারও অনেক জায়গা রয়েছে, অনেক বিষয়ে আরও ভালো করার সুযোগ রয়েছে। তবে সমালোচনা করা মানে এই নয় যে, সরকার পুরো ব্যর্থ হয়ে গেছে, তাই বদলে দেয়াটাই একমাত্র সমাধান। বরং অর্জনের পাল্লা বিবেচনা করলে, পরিসংখ্যান দেখলে যে কেউই বলবে, বাংলাদেশের আমূল পরিবর্তন ঘটে গেছে বিগত ১৫ বছরে। শুধু তা-ই নয়, বাংলাদেশের সাথে শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে এমন রাষ্ট্র কিংবা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন জোট ও সংস্থার মনোভাব এখানে গুরুত্বপূর্ণ। কূটনৈতিক সম্পর্ক নির্ধারণের ক্ষেত্রে তারা প্রথমেই ভাবে নেতৃত্ব নিয়ে। রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে দেশের স্থিতিশীলতাকে প্রাধান্য দেয় তারা। তাই তাদের কাছে এ মুহূর্তে শেখ হাসিনার চেয়ে সত্যিকারের কোনো বিকল্প নেই, এমন মত আন্তর্জাতিক রাজনীতির থিংকট্যাংকদেরও।

বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে ওয়াকেবহাল আন্তর্জাতিক মহল জানে, আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দল বিএনপি। সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় বিএনপির প্রধান দুই নেতা- খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুপযুক্ত বলে বিএনপি এখন নেতৃত্বহীন এবং নির্বাচনে অংশ নেয়ার মত সক্ষম নয়। এ অবস্থায় বিএনপি চলছে দ্বিতীয় ও তৃতীয় সারির অযোগ্য লোকজনের নেতৃত্বে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে যাদের কেউই প্রধান সারিতে ছিলেন না বলে তাদের নেতৃত্ব পরীক্ষিত নয়। তবুও দীর্ঘদিন বিদেশি দূতাবাসের দুয়ারে দুয়ারে ধর্না দিয়েছেন এই দ্বিতীয় ও তৃতীয় সারির নেতারা। তবে যখন বিদেশিরা প্রশ্ন করেছে বিএনপি নির্বাচনে গিয়ে যদি জয়ীও হয়, তবে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন- এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি বিএনপি। এতে কূটনীতিকরা বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির নেপথ্য কারণটাও বুঝতে পেরেছেন। কোনোমতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করে পেছনের দরজায় ফুটো তৈরি করতে পারলে সব আইন ডিঙিয়ে খালেদা-তারেককে গদিতে বসানো যায়।

১/১১-তে যেভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছিল, বাংলাদেশ কেন্দ্রিক বিদেশি ব্যবসাসহ বিভিন্ন দিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, বিদেশিরা তাই বাণিজ্যের অপার সম্ভাবনাময় বাংলাদেশকে সে অবস্থায় দেখতে চায় না আর। মহামারী ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বিশ্ব এখন টালমাটাল, এসময় বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে খুব বেশি লাভ নেই। বরং ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই অহেতুক নিজেদের শক্তি ও শ্রম ক্ষয় করে বিএনপির ফাঁদে আর পা দিতে চায় না বিদেশিরা। তাছাড়া কূটনীতিকরা বুঝতে পেরেছেন বিএনপি ক্ষমতায় বসার জন্য প্রস্তুত নয়। আর পশ্চিমপন্থী সুশীল হিসেবে পরিচিত যারা, তাদের মাধ্যমে গড়া অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় আনার প্রচেষ্টা বড় ধরণের রাজনৈতিক ঝুঁকি হয়ে যাবে। যা বর্তমান বাংলাদেশের অত্যন্ত শক্তিশালী দুই মিত্র- চীন ও রাশিয়া সহজে মেনে নেবে না।

তাছাড়া সুশীল সমাজে এমন কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি নেই যিনি সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম। ড. ইউনূস আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচারে লিপ্ত বটে, তবে তিনি সামনে থেকে দায়িত্ব নেয়ার মত বোকামি করতে রাজি নন। এতে তার সামাজিক ব্যবসার ধান্দার গোমর আরও উন্মোচিত হয়ে যাবে। এমনিতেই ১/১১’র অভিজ্ঞতার পর সুশীল শ্রেণির লোকজন বুঝে গেছেন, পত্রিকায় কলাম লেখা আর রাষ্ট্র পরিচালনা করা এক জিনিস নয়। তাই তারাও ক্ষমতার বলয়ের ধারেকাছে যেতে আগ্রহীন নন। তাছাড়া ১/১১’র প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। তখন সেনা সমর্থন নিয়েই এটা ঘটানো হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশে গত ১৫ বছরে সশস্ত্র বাহিনীতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে, আরও পেশাদার হয়ে উঠেছে বাহিনী। তারা রাজনৈতিক বিতর্কে নিজেদের জড়াবে না বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা। কারণ বহুবারই পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। সেনাবাহিনী এসব ফাঁদে পা দেয়নি, উল্টো যারা এসবের সাথে জড়িত ছিল, তাদের বহিষ্কার করে দেশছাড়া করেছে। তারা এখন প্রবাসে বসে ইউটিউবিং করে পেট চালায়।

এছাড় বাংলাদেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের স্বার্থ রয়েছে এমন দেশগুলো পশ্চিমাদের মিত্র হলেও তারাও চাইছে না বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি হোক। বিএনপির মত জঙ্গিবান্ধব দল ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশের প্রতিবেশি দেশগুলো বড় ধরণের ঝুঁকির মুখে পড়বে। অর্থাৎ, শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কোনো বিকল্প দেখছে না পশ্চিমারা। শেখ হাসিনাকে তাই তারা আরও দীর্ঘসময় বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চান। ফলে এটা পরিষ্কার, এই মুহূর্তে বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনা অপ্রতিদ্বন্দ্বী। আর বিকল্প নেতৃত্ব নাই বলেই আওয়ামী লীগকে উৎখাতের চিন্তা কোনো বুদ্ধিমান রাষ্ট্র করবে না। বলেই মত বিশ্লেষকদের।

#শেখহাসিনা #বাংলাদেশ #রাজনীতি #আওয়ামীলীগ #বিশ্বনেতা #নির্বাচন