মোঃকেফাইতুল ভুঁইয়া, বিজয়নগর, (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধিঃ
প্রাচীন রাস্তা অবৈধভাবে জোরপূর্বক দখল করে মানুষের চলাচলে বিঘ্নতা সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে হোসেন ভুইয়া (৫০) নামে এক মাদ্রাসার দপ্তরির বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের শ্রীপুর পশ্চিম পাড়ার ভুইয়া বাড়ির মৃত জয়দুল হোসেন ভুইয়ার ছেলে ও শ্রীপুর আলিয়া মাদ্রাসার দপ্তরি হোসেন ভুইয়া বছরের পুরনো এ রাস্তাটি বন্ধ করে এক পাশে একটি টিনশেড ঘর নির্মাণ করেন ও আরেক পাশে টিন দিয়ে বেড়া দিয়ে রাস্তার দু’পাশের প্রবেশপথ বন্ধ করে জনসাধারণের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছেন।
এ ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মেম্বার, চেয়ারম্যান, সাহেবসর্দার ও গন্যমান্য ব্যক্তিরা একাধিকবার শালিস করেও মিমাংসা করতে পারেননি।
এতে স্থানীয় জনসাধারনের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
জানা যায়, চান্দুরা-সিঙ্গারবিল সড়কের শ্রীপুর লুৎফর রহমান ফাউন্ডেশন থেকে শ্রীপুর পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দাদের যাতায়তের একমাত্র রাস্তাটি শত বছরের পুরনো । এ রাস্তাটি দিয়ে স্থানীয়রা আসা যাওয়া করেন। রাস্তাটির পশ্চিম উত্তর পাশের বাসিন্দা ও শ্রীপুর আলিয়া মাদ্রাসার দপ্তরি হোসেন ভুইয়া তার বাড়ি সংলগ্ন রাস্তাটি অবৈধভাবে জোরপূর্বক দখল করে রাস্তার উপর ঘর নির্মাণ ও টিন দিয়ে বেড়া দেন। এতে এলাকাবাসীর চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে।
সরজমিন ঘুরে দেখা যায় রাস্তাটি দিয়ে স্থানীয়রা তাদের বাড়িঘরে ও বিলে জমিজমা তথা কৃষি কাজে যাতায়ত করে আসছে। স্থানীয়রা রাস্তাটি দিয়ে তাদের কৃষি কাজের সরঞ্জামাদি ও বিল থেকে জমির ধান কেটে বাড়িতে আনা নেওয়াসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িতে যাতায়তের একমাত্র রাস্তা এটি।
সরজমিনে গিয়ে ৭০/৮০ জন স্থানীয় নারী পুরুষ ও যুবকদের উপস্থিতিতে কয়েকজনের সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের।
তারা জানিয়েছেন, হোসেন ভূঁইয়া সে কারো কথায় শুনেন না। রাস্তাটি বন্ধ না করতে প্রথমে স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে বাঁধা দেন। কিন্তু তাদের বাঁধা নিষেধ মানেননি। পরে সিঙ্গারবিল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, স্থানীয় মেম্বার ও গন্যমান্য ব্যক্তিগন মিলে শতবছরের পুরনো রাস্তাটির পাশে হোসেন ভুইয়ার বাড়ির সীমানা নির্ধারণ করে ৬ ফুট প্রশস্তের রাস্তাটি রেখে দুই পাশে কয়েকটি পিলার বসিয়ে দেন। পিলার বসিয়ে দেওয়ার প্রায় এক বছর পর গত ২০/২৫ দিন আগে সাহেবসর্দার ও গন্যমান্য ব্যক্তিদের দেওয়া পিলার গুলো সরিয়ে রাস্তাটির উত্তর পাশে একটি টিনশেড ঘর তুলেন এবং রাস্তাটির পূর্ব অংশের সীমানায় রাস্তা দখল করে টিন দিয়ে বেড়া দিয়ে রাস্তাটি পুরোপুরি বন্ধ করে দেন।
এ ব্যাপারে মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান ভুইয়া (৭০) নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, রাস্তাটি আমাদের বাপ-দাদাদের আমলের। আমরা জন্মের পর থেকে দেখে আসছি রাস্তাটি দিয়ে মানুষ বাড়ি-ঘরে আসা যাওয়া করতে। এ রাস্তাটি দিয়ে এলাকাবাসী বিলে কৃষি কাজ ও মাঠে গরু চড়াতে ব্যবহার করে আসছে। যা আমার এই ৭০ বছর বয়স ধরে দেখে আসছি ও আমরা নিজেরাও রাস্তাটি দিয়ে চলাফেরা করছি। তিনি বলেন, হোসেন ভুইয়ার বাড়ির দক্ষিন পাশে একটি আম গাছ রয়েছে। আম গাছটিই হচ্ছে হোসেন ভুইয়ার বাড়ির পূর্ব ও দক্ষিন পাশের সীমানা। আম গাছটির পূর্ব পাশ দিয়ে রাস্তাটি দক্ষিন দিক দিয়ে পূর্বপাশে চান্দুরা-সিঙ্গারবিল সড়কে গিয়ে মিলিত হয়। অপরদিকে, হোসেন ভুইয়ার বাড়ির দক্ষিন পাশের আম গাছ থেকে রাস্তাটি উত্তর দিকে গিয়ে পশ্চিম পাশের বিলে গিয়ে শেষ হয়।
সম্প্রতি রাস্তাটি পাকাকরণে বরাদ্দ হওয়ার পর রাস্তার পশ্চিমাংশ থেকে ইটের সলিং ও ঢালাই করে হোসেন ভুইয়ার বাড়ি পর্যন্ত এসে আটকে যায়। যা এলাকাবাসীর চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জনসাধারণের চলাচলের এ রাস্তাটি অবৈধ দখলদার হোসেন ভুইয়ার দেওয়া টিনের বেড়া ও টিনশেড ঘরটি উচ্ছেদ করে রাস্তাটি দখলমুক্ত করতে মাননীয় সংসদ সদস্য উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।