ঢাকা ০৫:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রেস বিজ্ঞপ্তি (২০ এপ্রিল ২০২৪ ) —————————————- ১৫ দিনের ঈদযাত্রায় ২৯৪ প্রাণের মৃত্যুমিছিল : সেভ দ্য রোড চন্দনাইশে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল বশর ভূঁইয়া পরিষদের ঈদ পুনমিলনী অনুষ্ঠিত ফরিদপুর জেলার মধুখালিতে “শ্যালিকার সঙ্গে পরকীয়ার জেরে দুলাভাইকে নৃশংসভাবে হত্যা” শীর্ষক চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার পলাতক প্রধান আসামি আশারুল শেখ এবং তার প্রধান সহযোগী ইলিয়াস শেখ ও খায়রুল শেখ’কে ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। রাঙ্গুনিয়ায় নববর্ষ বৈশাখী উৎসবে জলকেলি ও বলি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে বেলখাইন স্পোটিং ক্লাবের অলনাইট ফুটবল টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল সম্পন্ন বগুড়ায় চাঞ্চ্যল্যকর শিশু বন্ধনকে গলাকেটে হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন গজারিয়ায় দুই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিরুল ইসলাম এর পক্ষে গনসংযোগ ও লিফলেট বিতরন প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনী সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে আলোচনা ও পুরুষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠান –অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। চট্টগ্রামে দুই চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে-২ ঘণ্টার কর্মবিরতির ঘোষণা বিএমএর

বিজয়নগর উপজেলার একমাত্র সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১৮ বছর যাবত অবহেলিত

মোঃ কেফাইতুল ভুঁইয়া, বিজয়নগর; (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধিঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার একমাত্র সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দাউদপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়। সরকারের সু-দৃষ্টির অভাবে জরাজীর্ণ অবস্থায় শিক্ষা কার্যক্রম চরম ভোগান্তিতে পরছে।তা যেন দেখার কেউ নেই।

বিজয়নগর উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ চান্দুরা ইউনিয়নের আমতলী বাজারের পূর্বপাশের প্রায় ১২ একর বিশাল জায়গা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি ১৯৩১ ইং সালে এলাকাবাসীর উদ্যোগে শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য স্থাপিত হয়। প্রায় ১২ একর জায়গার মধ্যে একটি বড় খেলার মাঠ ও দুইটি দীঘি রয়েছে।

এই বিদ্যালয় থেকে গত ৯০ বছরে লক্ষাধিকের চেয়েও বেশী শিক্ষার্থী শিক্ষাগ্রহণ করে নিজেদেরকে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত করেছে।যার মধ্যে উলেক্ষযোগ্য হল বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এডঃ তানবীর ভূঞা,সাবেক সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান এ টি আহমেদুল হক চৌধুরী, পুলিশের সাবেক ডিআইজি আলী ইমাম চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আব্দুল বাছির,ইঞ্জিনিয়ার মোঃ নজরুল ইসলাম,ডাঃ এ কে আজাদ সহ দেশ বিদেশে অসংখ্য প্রতিষ্ঠানে সুনামের সাথে কর্মজীবন অতিবাহিত করছেন।

উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১২০০ ছাত্রছাত্রী অধ্যয়নরত রয়েছে।তাদের জন্য ৪ টি ভবন থাকলেও একটি সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত ও একটি টিনসেট ঘর রয়েছে। যার মধ্যে বৃষ্টির মৌসুমে অনেক সময় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হয়।

বিদ্যালয়টিতে সর্বশেষ সরকারি বরাদ্দকৃত ভবণ নির্মাণ হয়েছিল ২০০২/৩ অর্থবছরে।তারপর ১৮ বছর অতিবাহিত হলেও বড় কোন সরকারী বরাদ্দ বিদ্যালয়টিতে আসেনি।

এই দীর্ঘ সময় বিদ্যালয়ের কোন সরকারি বরাদ্দ না আসায় দুইটি দীঘি থেকে আসা নিজস্ব আয় থেকে একটি টিনসেট ভবন নির্মাণ করেছিল।কিন্তু তাও এখন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়েছে পরেছে।

গত ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তারিখে সরকারি প্রজ্ঞাপনে বিদ্যালয়টি জাতিয়করণ হয়েছে।কিন্তু জাতিয় করণ করার পরেও সরকারী নিয়ম অনুযায়ী সকল সুযোগ সুবিধা না আসায় বিপাকে পরেছে বিদ্যালয় পরিচালনার কার্যক্রম। তার মধ্যে আবার সরকারের এক নির্দেশে গত ৩ বছর যাবত সকল উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ রাখায় দুইটি দীঘির পাড় ভেঙ্গে ছাত্রাবাস বিলিনসহ চার পাশের বাড়িঘর হুমকী মুখের মুখে পড়েছে।

দুইটি দীঘির চার পাশের জনবসতিরা একাধিক বার পাড় সংস্কারের জন্য লিখিত প্রতিকার চেয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করেও কোন প্রতিকার চেয়ে পাচ্ছে না।

এমন ভবন সংকট ও শিক্ষা কার্যক্রম প্রতিবন্ধকতা পরেও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ৪ টি রুম নিজেদের দখলে নিয়ে উপজেলার সরকারি বিনামূল্য বই বিতরণের জন্য গোডাউন বানিয়ে রেখেছে।যা মরার উপর খাড়ার গা এর মত।

বিদ্যালয়টি ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত টানা ৫ বার জেলা পর্যায়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ হবার গৌরব অর্জন করে।২০১৬ সালে ব্রাক কর্তৃক বির্তক প্রতিযোগিতা চট্রগ্রাম বিভাগের রানার্সআপ হয়েছিল।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে ২০ জন শিক্ষকের জায়গা ১৩ জন রয়েছে।এছাড়া ৬ জন অতিথি শিক্ষক দিয়ে কার্যক্রম কোন রকম চালিয়ে যাচ্ছে।

এ প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন ছাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের কনসালটেন্ট ডাঃ এ কে আজাদ আক্ষেপ করে বলেন-“দুর থেকে যখন দেখি প্রিয় শিক্ষাঙ্গনের বেহাল অবস্থা তখন কষ্ট লাগে।ভাল মানের শিক্ষার্থী গড়ে তুলতে হলে সবার আগে প্রয়োজন শিক্ষার সঠিক পরিবেশ সৃষ্টি করা ও মেধাবী মানসম্মত শিক্ষক।”

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহজাহান মিয়া বলেন-“অনেক বার ক্লাসরুম,শিক্ষক,স্টাফসহ বিভিন্ন সংকটের কথা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। এখনো দৃশ্যমান কোন কিছু বরাদ্দ পাচ্ছি না।এর মধ্যে সরকারিকরণ হলেও সরকারি কোন সুযোগ সুবিধাও পাচ্ছি না। প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে হিমশিম খাচ্ছি। ”

উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি ( ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার) ও দাউদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি রাবেয়া আফছার সায়মা বলেন-“আমি নতুন আসছি। বিদ্যালয়ের বিস্তারিত কিছু জানিনা।আমি খুঁজখবর নিয়ে দেখছি।”

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রেস বিজ্ঞপ্তি (২০ এপ্রিল ২০২৪ ) —————————————- ১৫ দিনের ঈদযাত্রায় ২৯৪ প্রাণের মৃত্যুমিছিল : সেভ দ্য রোড

বিজয়নগর উপজেলার একমাত্র সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১৮ বছর যাবত অবহেলিত

আপডেট টাইম ০৪:৫৯:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২১

মোঃ কেফাইতুল ভুঁইয়া, বিজয়নগর; (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধিঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার একমাত্র সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দাউদপুর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়। সরকারের সু-দৃষ্টির অভাবে জরাজীর্ণ অবস্থায় শিক্ষা কার্যক্রম চরম ভোগান্তিতে পরছে।তা যেন দেখার কেউ নেই।

বিজয়নগর উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ চান্দুরা ইউনিয়নের আমতলী বাজারের পূর্বপাশের প্রায় ১২ একর বিশাল জায়গা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি ১৯৩১ ইং সালে এলাকাবাসীর উদ্যোগে শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য স্থাপিত হয়। প্রায় ১২ একর জায়গার মধ্যে একটি বড় খেলার মাঠ ও দুইটি দীঘি রয়েছে।

এই বিদ্যালয় থেকে গত ৯০ বছরে লক্ষাধিকের চেয়েও বেশী শিক্ষার্থী শিক্ষাগ্রহণ করে নিজেদেরকে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত করেছে।যার মধ্যে উলেক্ষযোগ্য হল বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এডঃ তানবীর ভূঞা,সাবেক সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান এ টি আহমেদুল হক চৌধুরী, পুলিশের সাবেক ডিআইজি আলী ইমাম চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আব্দুল বাছির,ইঞ্জিনিয়ার মোঃ নজরুল ইসলাম,ডাঃ এ কে আজাদ সহ দেশ বিদেশে অসংখ্য প্রতিষ্ঠানে সুনামের সাথে কর্মজীবন অতিবাহিত করছেন।

উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১২০০ ছাত্রছাত্রী অধ্যয়নরত রয়েছে।তাদের জন্য ৪ টি ভবন থাকলেও একটি সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত ও একটি টিনসেট ঘর রয়েছে। যার মধ্যে বৃষ্টির মৌসুমে অনেক সময় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হয়।

বিদ্যালয়টিতে সর্বশেষ সরকারি বরাদ্দকৃত ভবণ নির্মাণ হয়েছিল ২০০২/৩ অর্থবছরে।তারপর ১৮ বছর অতিবাহিত হলেও বড় কোন সরকারী বরাদ্দ বিদ্যালয়টিতে আসেনি।

এই দীর্ঘ সময় বিদ্যালয়ের কোন সরকারি বরাদ্দ না আসায় দুইটি দীঘি থেকে আসা নিজস্ব আয় থেকে একটি টিনসেট ভবন নির্মাণ করেছিল।কিন্তু তাও এখন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়েছে পরেছে।

গত ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তারিখে সরকারি প্রজ্ঞাপনে বিদ্যালয়টি জাতিয়করণ হয়েছে।কিন্তু জাতিয় করণ করার পরেও সরকারী নিয়ম অনুযায়ী সকল সুযোগ সুবিধা না আসায় বিপাকে পরেছে বিদ্যালয় পরিচালনার কার্যক্রম। তার মধ্যে আবার সরকারের এক নির্দেশে গত ৩ বছর যাবত সকল উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ রাখায় দুইটি দীঘির পাড় ভেঙ্গে ছাত্রাবাস বিলিনসহ চার পাশের বাড়িঘর হুমকী মুখের মুখে পড়েছে।

দুইটি দীঘির চার পাশের জনবসতিরা একাধিক বার পাড় সংস্কারের জন্য লিখিত প্রতিকার চেয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করেও কোন প্রতিকার চেয়ে পাচ্ছে না।

এমন ভবন সংকট ও শিক্ষা কার্যক্রম প্রতিবন্ধকতা পরেও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ৪ টি রুম নিজেদের দখলে নিয়ে উপজেলার সরকারি বিনামূল্য বই বিতরণের জন্য গোডাউন বানিয়ে রেখেছে।যা মরার উপর খাড়ার গা এর মত।

বিদ্যালয়টি ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত টানা ৫ বার জেলা পর্যায়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ হবার গৌরব অর্জন করে।২০১৬ সালে ব্রাক কর্তৃক বির্তক প্রতিযোগিতা চট্রগ্রাম বিভাগের রানার্সআপ হয়েছিল।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে ২০ জন শিক্ষকের জায়গা ১৩ জন রয়েছে।এছাড়া ৬ জন অতিথি শিক্ষক দিয়ে কার্যক্রম কোন রকম চালিয়ে যাচ্ছে।

এ প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন ছাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের কনসালটেন্ট ডাঃ এ কে আজাদ আক্ষেপ করে বলেন-“দুর থেকে যখন দেখি প্রিয় শিক্ষাঙ্গনের বেহাল অবস্থা তখন কষ্ট লাগে।ভাল মানের শিক্ষার্থী গড়ে তুলতে হলে সবার আগে প্রয়োজন শিক্ষার সঠিক পরিবেশ সৃষ্টি করা ও মেধাবী মানসম্মত শিক্ষক।”

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহজাহান মিয়া বলেন-“অনেক বার ক্লাসরুম,শিক্ষক,স্টাফসহ বিভিন্ন সংকটের কথা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। এখনো দৃশ্যমান কোন কিছু বরাদ্দ পাচ্ছি না।এর মধ্যে সরকারিকরণ হলেও সরকারি কোন সুযোগ সুবিধাও পাচ্ছি না। প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে হিমশিম খাচ্ছি। ”

উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি ( ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার) ও দাউদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি রাবেয়া আফছার সায়মা বলেন-“আমি নতুন আসছি। বিদ্যালয়ের বিস্তারিত কিছু জানিনা।আমি খুঁজখবর নিয়ে দেখছি।”