সিনিয়র রিপোর্টার (মাসুদ হাসান মোল্লা রিদম),ঢাকা: বাংলাদেশ রেলওয়ে ২০ টি মিটারগেজ লোকোমেটিভ ক্রয় দক্ষিণ কোরিয়ান হুন্দাই রোটেম’র সাথে চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে। সোমবার দুপুর তিনটার সময় রাজধানীর রেলওয়ের ভবনে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে ২০টি মিটারগেজ লোকোমেটিভ ক্রয় কোরিয়ান হুন্দাই রোটেম’র সাথে চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়। অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী সুজন বলেন,বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশ ৭৩টি ট্রেন বেসরকারি খাতে পরিচালিত হচ্ছে। ২০২০ সালে বেসরকারি কোম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের এসব ট্রেন পরিচালনা চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। এরপর থেকে আর কোনো ট্রেন বেসরকারি খাতে দেওয়া হবে না। অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে তার কোনো জমি বা ট্রেন আর কারো কাছে লিজ দেবে না। নতুন করে কোনো লিজ বা চুক্তি বর্ধিত করা হবে না। জনগণের টাকায় সরকার নতুন নতুন লোকোমেটিভ কিনবে, কোচ কিনবে রেলওয়ের স্থাপনা, লোকবল ব্যবহার করবে উনারা (লিজগ্রহিতা ব্যক্তি বা কোম্পানি) চুক্তির শর্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কেবল টাকা গুনবেন। জনগণের জন্য পড়ে থাকবে ভোগান্তি আর রেলওয়ের জন্য থাকবে বদনাম। এটা আর হতে দেওয়া হবে না। রেলকে রেলওয়ের লোককেই চালাতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো ছাড় নয়। রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মন্ত্রী বলেন, কোটি কোটি টাকার ক্রয়চুক্তি হবে আর ম্যানেজমেন্ট দুর্বলতায়। সবকিছু যদি বেসরকারি কোম্পানির হাতে দেওয়া হয়, তবে কোনো সুফল জনগণ পাবে না। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে মন্ত্রী জানান, রেলওয়ে মন্ত্রণালয় রেলের ভাড়া বাড়ানোর কোনো চিন্তা করেনি। কারণ কেবল যাত্রী ভাড়া দিয়ে রেলওয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের ব্যয় বহন করা যায় না। আমি নিজস্ব আগ্রহের কারণে একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তারা রেলের উন্নয়ন, অবকাঠামো, সেবা বিষয়ে একটি জরিপ চালাবে। এরপর তাদের প্রতিবেদন আমাকে দেবে। আমি সেই রিপোর্ট নিয়ে রেলের সার্বিক উন্নয়নের বিষয়ে সবার সঙ্গে কথা বলবো। ওই কমিটি রেলের সেবা, ভাড়া, ও পার্শ্ববর্তী দেশেগুলোর ভাড়ার তুলনামূলক চিত্রও তুলে ধরবে। রেলপথ নিয়ে সরকারের চিন্তা ভাবনা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, আমরা রেলপথ ও পানিপথকে অবজ্ঞা করে রাস্তায় (সড়কপথে) চলে গিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো দেশ রেলপথ, পানিপথ, সড়কপথ ও আকাশ পথের সমন্বয় ছাড়া উন্নতি করতে পারে না। বাংলাদেশের মতো অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ দেশে সস্তায় যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে রেলের বিকল্প নেই। এ কারণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত বুলেট ট্রেনের সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। পদ্মাসেতু হয়ে পায়রা বন্দর ও যশোরে রেললাইনের কাজ চলছে। দেশের প্রতিটি জেলাকে রেল নেটওয়ার্কে যুক্ত করা হচ্ছে। সোমবারের চুক্তি অনুযায়ী ৬৭৪ কোটি ৯ লাখ ৭৭ হাজার ৩৮২ টাকায় ২০টি মিটারগেজ লোকোমোটিভ ইঞ্জিন সরবরাহ করবে হুন্দাই রোটেম কোম্পানি। বর্তমানে রেলওয়ের বহরে কোম্পানিটির ৩৯টি লোকোমোটিভ সচল আছে। নতুন ইঞ্জিনের অর্থ জোগাবে কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকার। চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন হুন্দাইয়ের সিইও ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিয়ং উক কিম ও প্রকল্প পরিচালক আব্দুল মতিন চৌধুরী। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশে এই প্রথম শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত ইঞ্জিন সরবরাহ করছে হুন্দাই যাতে চালক ও সহকারীর জন্য চারটি ক্যাব আসন থাকবে। ইএন ১২ হাজার ৬৬৩ ধরনের শক্তি থাকবে ২ হাজার ২০০ হর্সপাওয়ারের। শীততাপ যন্ত্রের সক্ষমতা থাকবে ১৫ টন। ১০০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে এই মিটার লোকোমোটিভ। উত্তর চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব মোঃ মোফাজ্জল হোসেন, ডাইরেক্টর জেনারেল জনাব কাজী মোহাম্মদ রফিকুল আলম, জেনারেল ম্যানেজার (প্রজেক্ট ডাইরেক্টর) জনাব ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল মতিন চৌধুরী,রেল ওয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা জনাব মোঃ শরিফুল আলম ও দক্ষিণ কোরিয়ার হ্যুন্দাই প্রধান প্রতিনিধিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং প্রিন্ট, অনলাইন, ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ ।
সংবাদ শিরোনাম ::
বাংলাদেশ রেলওয়ের ২০টি মিটারগেজ লোকোমেটিভ ক্রয় দক্ষিণ কোরিয়ান হুন্দাই রোটেম’র সাথে চুক্তিপত্র স্বাক্ষর
- মাতৃভূমির খবর ডেস্ক
- আপডেট টাইম ০৩:৪০:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০১৯
- ৯৪৮ বার পড়া হয়েছে
Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ