বিপ্লব চন্দ্র মাতব্বর,সিনিয়র রিপোর্টার:

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল কর্তৃক বাস্তবায়িত ‘আনুষঙ্গিক সুবিধাসহ বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল ভবন নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় রাজধানীর ৪৮, কাজী আলাউদ্দিন রোডে বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিলের নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ১০তলা ভিতের উপর ৫ তলা বিশিষ্ট এ ভবন নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৬ কোটি ৮৩ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা।
গত১৮জুলাই ২০২২, সোমবার বিকাল ৩ টায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব শ ম রেজাউল করিম এমপি নবনির্মিত এ ভবন উদ্বোধন করেন। ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠান এবং ‘বাংলাদেশে ভেটেরিনারি সেবা জোরদারকরণে বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিলের ভবিষ্যত অগ্রাধিকার’ বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাঃ মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিলের সভাপতি ডা. মো. মনজুর কাদির। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ডা. গোপাল চন্দ্র বিশ্বাস এবং সেমিনারের প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক চৌধুরী, প্যাথলজি বিভাগ, ভেটেরিনারি অনুষদ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ও সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।
ভবনটির নীচ তলায় ভেটেরিনারি পেশাজীবীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং ২য় তলায় রয়েছে ২৪০ জন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন কনফারেন্স হল। ৩য় তলায় প্রশাসনিক ও আর্থিক শাখা। ৪র্থ তলায় বোর্ড রুম, সভাপতির কক্ষ, অফিস কক্ষ ও মহিলাদের প্রার্থনা কক্ষ। ৫ম তলায় আইসিটি শাখা, লাইব্রেরী, ই-লাইব্রেরী ও ভিডিও কনফারেন্স কক্ষ।
উল্লিখত প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল পূর্ণাঙ্গ অবয়বে বিকশিত হয়েছে এবং প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। দেশের ১৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন/বিএসসি ভেট.সায়েন্স এন্ড অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি ডিগ্রীধারীদের নিবন্ধন ও সনদ প্রদান কার্যক্রম এ ভবন থেকে সহজেই পরিচালিত করা সম্ভব হবে। তাছাড়া ৫টি লাইভস্টক সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি ইন্সটিটিউট, ২টি ভেটেরিনারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট থেকে পাশকৃত ডিপ্লোমাধারীগণও ভবিষ্যতে এ প্রতিষ্ঠান থেকে নিবন্ধন ও সনদ গ্রহণের মাধ্যমে ভেটেরিনারি পেশার সহকারি হিসেবে কাজ করার সুযোগ পাবেন।
নবনির্মিত এ ভবন থেকে বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল ভেটেরিনারি শিক্ষা, পেশা ও সেবার মান নিয়ন্ত্রণ, উন্নয়ন, সম্প্রসারণ এবং গবেষণা পরিচালনা করতে পারবে। এছাড়া ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনারদের পেশাগত নৈতিকতা ও পেশাগত দক্ষতার মান বজায় রাখার জন্য এ কাউন্সিল ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। এ প্রতিষ্ঠান ভেটেরিনারি শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য স্বীকৃতি প্রদান, বিদেশি ডিগ্রি বা ডিপ্লোমার সমতা মূল্যায়নসহ শিক্ষার মান বজায় রাখার মাধ্যমে দক্ষ জনবল সৃজনে তথা মানবসম্পদ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ভেটেরিনারি প্র্যাকটিশনারদের বিশেষায়িত জ্ঞানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল বাংলাদেশ কলেজ অব ভেটেরিনারি সার্জন নামে একটি প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি প্রদান করেছে। যেখান থেকে পেশাজীবীরা মেম্বার অব কলেজ অব ভেটেরিনারি সার্জন (এমসিভিএস), এফসিভিএস ইত্যাদি বিশেষায়িত ডিগ্রী নেয়ার সুযোগ পাবে। নতুন কাউন্সিল ভবন নির্মাণের মাধ্যমে ভবনটিতে বিদ্যমান প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে ৮টি ক্যাটাগরিতে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে ভেটেরিনারি পেশাজীবীদের দক্ষতার মান বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ডা. গোপাল চন্দ্র বিশ্বাস তার বক্তব্যে বলেন বঙ্গবন্ধু কন‍্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশ নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতা এবং মাননীয় মন্ত্রী জনাব শ ম রেজাউল করিম স‍্যার বাংলাদেশ মৎস্য প্রানী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাঃ মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা . মো. মনজুর কাদির , অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক চৌধুরী, প্যাথলজি বিভাগ, ভেটেরিনারি অনুষদ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সহ সকলের মহানুভবতার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে।তবে আমরা আশাবাদী ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু বাংলাদেশের জনগনকে উপহার দিতে পারব।মাননীয় মন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন আমাদের ডাক্তারদের মানবজাতির কল‍্যানে আরও সচেতন হতে হবে।তিনি আরও বলেন এই নতুন ভবন উদ্ভোদন এর মধ্যে দিয়ে কাউন্সিলের কাঁধে নতুন দায়িত্ব বোধ বর্নিত হলো।কাজেই আমাদের বর্নিত এই দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করতে হবে কারণ একজন মানুষ তার কষ্টের কথা বলতে পারে কিন্তু একটা প্রানী তার মনের কথা বলতে পারেনা,তাই আমি মনেকরি একজন মানুষকে চিকিৎসা করার চেয়ে একটা প্রানীর চিকিৎসা করা খুবই কঠিন একটা প্রানীর কষ্ট হৃদয় দিয়ে হৃদঙ্গম করতে হবে । সবশেষে সভাপতির বক্তব্যে এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষনা করা হয়।