ঢাকা ০৮:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
“মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন” ইন্দুরকানীতে দিনব্যাপী পারিবারিক পুষ্টি বাগান ও বস্তায় আদা চাষ বিষয়ক প্রশিক্ষণ চট্টগ্রামে সড়ক অবরোধ করে চুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন … লালমনিরহাটে বৃষ্টির জন‍্য বিশেষ নামাজ আদায় মিছিল ও শোডাউন করায় মতলব উত্তর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে মানিক দর্জিকে শোকজ –গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা এলাকায় স্বামী কর্তৃক স্ত্রী হত্যা মামলার পলাতক প্রধান আসামি শ্রী রুপেন দাশ’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব । চন্দনাইশে পুকুরে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু ইষ্টার্ণ হাউজিংয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়ায় সাংবাদিকদের উপর হামলা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে কোরআন শরিফ অবমাননা করায় মানববন্ধন রাঙ্গুনিয়ায় সড়ক দূর্ঘটনার চুয়েটের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু

বর্ধিত বেতন-সেশন ফি কমানোর আবেদন নিয়ে আসা অভিভাবকদের তাড়িয়ে দিলেন অধ্যক্ষ ও চেয়ারম্যান

মাতৃভূমির খবর ডেস্ক : নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের অভিজাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের বেতন-সেশন ও অন্যান্য ফি কমানোর আবেদন নিয়ে আসা অভিভাবকদের আবেদন গ্রহণ না করে উল্টো তাদের তাড়িয়ে দিলেন অধ্যক্ষ ও পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান। ১৬ ফেব্রুয়ারী শনিবার সকালে এ ঘটনা ঘটেছে স্কুল প্রাঙ্গনে। এসময় অভিভাবকরা ক্ষিপ্ত হয়ে দৃঢ় অবস্থান করলে চেয়ারম্যান পুলিশ ডেকে স্কুল প্রাঙ্গনে বিশৃঙ্খলার দায়ে গ্রেফতার করা এবং আগত অভিভাবকদের উচিত শিক্ষা দেয়া হবে বলেও হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন উপস্থিত অভিভাবকরা। অভিভাবকরা তাদের লিখিত আবেদনে বলেছেন যে, স্কুলের বেতন, সেশন ও অন্যান্য ফি যে হারে বৃদ্ধি করা হয়েছে তা আমাদের মতো মধ্যবিত্ত ও নিন্মমধ্যবিত্ত অভিভাবকদের পক্ষে বহন করা খুবই কষ্টসাধ্য। তাছাড়া আমাদের অনেকের একাধিক শিক্ষার্থী অত্র প্রতিষ্ঠানে রয়েছে তারা এই অতিরিক্ত ব্যয়ভার বহন করতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন। চলতি বছরের বেতন, সেশন ও অন্যান্য ফি বৃদ্ধির হার এতটাই বেশি যে ছেলে মেয়েদের লেখা পড়া চালিয়ে নেয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় উক্ত ব্যয়ভার ফি অভিভাবকদের আর্থিক অবস্থা সুবিবেচনা করে সহনীয় পর্যায়ে নির্ধারন করত: মধ্যবিত্ত ও নিন্মমধ্যবিত্ত  অভিভাবকদের সন্তানদের লেখাপড়ার পথ সুগম করতে কর্তৃপক্ষের সদয় সম্মতি হয়। অভিভাবকরা জানান, এই আবেদন নিয়ে গত এক সপ্তাহ যাবত প্রায় ৫ শতাধিক অভিভাবক পরামর্শ পূর্বক প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের কাছে শনিবার সকাল ১১ টায় জমা দিতে যান। এসময় অধ্যক্ষ মো: নজরুল ইসলাম কিশোর অভিভাবকদের আবেদন গ্রহণ না করে তাদের স্কুল চত্বর থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। এসময় অভিভাবকরা বলেন আবেদনটি রিসিভ করে নেন। বেতন ফি কমাবেন বা না কমাবেন তা আপনাদের বিবেচ্য বিষয়। কিন্তু তাতেও অধ্যক্ষ রাজি না হওয়ায় অভিভাবকরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এমতাবস্থায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পপতি লায়ন মো: নজরুল ইসলাম উপস্থিত হয়ে অভিভাবকদের পুলিশ ডেকে তাড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন। এতে পরিস্থিতি আরও বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে স্কুলের শিক্ষকরা অভিভাবকদের ঘিরে ফেলে তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে বাক-বিতন্ডার সৃষ্টি হয়। পরে অভিভাবকদের পক্ষে স্থানীয় ন্যাশনাল ব্যাংক কর্মকর্তা মো: গোলাম ফারুকের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে এবং তার সাথে কয়েকজন অভিভাবক স্কুল অধ্যক্ষের কক্ষে গিয়ে অধ্যক্ষ ও চেয়ারম্যানের নিকট উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন কিন্তু তাতেও তারা ক্ষ্যান্ত না হয়ে আবারও অভিভাবকদের অপমান করে তাড়িয়ে দেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। জাহেদ আলী নামে এক অভিভাবক বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষের সর্বোচ্চ ব্যক্তিরা যদি এমন আচরণ করেন তাহলে এখানে সন্তানদের দিয়ে আমরা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে কিভাবে নিশ্চিত থাকবো। তারা অভিভাকদের সাথে কোনভাবেই এ ধরণের ব্যবহার করতে পারেন না। এদিকে আরেক অভিভাবক ডা. খায়রুল বাশার বালেন, আবেদন অনুযায়ী বেতন ফি কমানো হোক বা না হোক আবেদন গ্রহণ করতেও তাদের এতো দ্বিধা কেন। তারা যে ভাবে বেতন ও ফি বৃদ্ধি করেছে তাতে মনে হয় এটা মগের মুল্লুক। কেননা প্রতিটি ক্লাসের বেতন ও সেশন ফি গত বছরের চেয়ে একেবারে দ্বিগুন করা হয়েছে। সে সাথে অন্যান্য ফি’র নামে প্রতিমাসেই অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা কর্তৃপক্ষের এ ধরনের আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই এবং যথাযথ শাস্তি দাবি করছি। অন্যথায় এ ঘটনা নিয়ে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হলে তার দায়ভার স্কুল কর্তৃপক্ষকেই বহন করতে হবে। আমরা ন্যায্য দাবি নিয়ে এসেছি, তারা তা গ্রহণ করতেও পারে নাও করতে পারে। কিন্তু তাই বলে কি তারা আমাদের তাড়িয়ে দিবে? এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ মো: নজরুল ইসলাম কিশোর এর সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, অভিভাবকরা অহেতুক দাবি নিয়ে প্রতিষ্ঠানের ভিতরে উচ্ছৃঙ্খলা সৃষ্টি করায় তাদের বাইরে যেতে বলা হয়েছে। তাদের সাথে কোন প্রকার খারাপ আচরন করা হয়নি। চেয়ারম্যান লায়ন নজরুল ইসলাম বলেন, অভিভাকরা দাবি উত্থাপনের নামে উচ্ছৃঙ্খলা করায় পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের স্বরনাপন্ন হবো বলে জানিয়েছি। তাতেই তারা আরও বেশি হট্টগোল শুরু করলে পরিবেশটা ঘোলাটে হয়ে যায়। এটার জন্য অভিভাবকরা দায়ী। তারা তাদের সন্তানদেরকে শিক্ষার্থী ও বয়স্কদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় তা এমনভাবে উপস্থাপন করবে ভাবা যায়না। তারা এমন শিক্ষাই যদি দিতে চায় তাহলে এ প্রতিষ্ঠানে পড়ানোর দরকার নেই। তাদের সামর্থ অনুযায়ী অন্যত্র নিয়ে যেতে পারেন।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

“মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন”

বর্ধিত বেতন-সেশন ফি কমানোর আবেদন নিয়ে আসা অভিভাবকদের তাড়িয়ে দিলেন অধ্যক্ষ ও চেয়ারম্যান

আপডেট টাইম ০৭:২৯:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৯

মাতৃভূমির খবর ডেস্ক : নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের অভিজাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের বেতন-সেশন ও অন্যান্য ফি কমানোর আবেদন নিয়ে আসা অভিভাবকদের আবেদন গ্রহণ না করে উল্টো তাদের তাড়িয়ে দিলেন অধ্যক্ষ ও পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান। ১৬ ফেব্রুয়ারী শনিবার সকালে এ ঘটনা ঘটেছে স্কুল প্রাঙ্গনে। এসময় অভিভাবকরা ক্ষিপ্ত হয়ে দৃঢ় অবস্থান করলে চেয়ারম্যান পুলিশ ডেকে স্কুল প্রাঙ্গনে বিশৃঙ্খলার দায়ে গ্রেফতার করা এবং আগত অভিভাবকদের উচিত শিক্ষা দেয়া হবে বলেও হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন উপস্থিত অভিভাবকরা। অভিভাবকরা তাদের লিখিত আবেদনে বলেছেন যে, স্কুলের বেতন, সেশন ও অন্যান্য ফি যে হারে বৃদ্ধি করা হয়েছে তা আমাদের মতো মধ্যবিত্ত ও নিন্মমধ্যবিত্ত অভিভাবকদের পক্ষে বহন করা খুবই কষ্টসাধ্য। তাছাড়া আমাদের অনেকের একাধিক শিক্ষার্থী অত্র প্রতিষ্ঠানে রয়েছে তারা এই অতিরিক্ত ব্যয়ভার বহন করতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন। চলতি বছরের বেতন, সেশন ও অন্যান্য ফি বৃদ্ধির হার এতটাই বেশি যে ছেলে মেয়েদের লেখা পড়া চালিয়ে নেয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় উক্ত ব্যয়ভার ফি অভিভাবকদের আর্থিক অবস্থা সুবিবেচনা করে সহনীয় পর্যায়ে নির্ধারন করত: মধ্যবিত্ত ও নিন্মমধ্যবিত্ত  অভিভাবকদের সন্তানদের লেখাপড়ার পথ সুগম করতে কর্তৃপক্ষের সদয় সম্মতি হয়। অভিভাবকরা জানান, এই আবেদন নিয়ে গত এক সপ্তাহ যাবত প্রায় ৫ শতাধিক অভিভাবক পরামর্শ পূর্বক প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের কাছে শনিবার সকাল ১১ টায় জমা দিতে যান। এসময় অধ্যক্ষ মো: নজরুল ইসলাম কিশোর অভিভাবকদের আবেদন গ্রহণ না করে তাদের স্কুল চত্বর থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। এসময় অভিভাবকরা বলেন আবেদনটি রিসিভ করে নেন। বেতন ফি কমাবেন বা না কমাবেন তা আপনাদের বিবেচ্য বিষয়। কিন্তু তাতেও অধ্যক্ষ রাজি না হওয়ায় অভিভাবকরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এমতাবস্থায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পপতি লায়ন মো: নজরুল ইসলাম উপস্থিত হয়ে অভিভাবকদের পুলিশ ডেকে তাড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন। এতে পরিস্থিতি আরও বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে স্কুলের শিক্ষকরা অভিভাবকদের ঘিরে ফেলে তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে বাক-বিতন্ডার সৃষ্টি হয়। পরে অভিভাবকদের পক্ষে স্থানীয় ন্যাশনাল ব্যাংক কর্মকর্তা মো: গোলাম ফারুকের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে এবং তার সাথে কয়েকজন অভিভাবক স্কুল অধ্যক্ষের কক্ষে গিয়ে অধ্যক্ষ ও চেয়ারম্যানের নিকট উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন কিন্তু তাতেও তারা ক্ষ্যান্ত না হয়ে আবারও অভিভাবকদের অপমান করে তাড়িয়ে দেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। জাহেদ আলী নামে এক অভিভাবক বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষের সর্বোচ্চ ব্যক্তিরা যদি এমন আচরণ করেন তাহলে এখানে সন্তানদের দিয়ে আমরা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে কিভাবে নিশ্চিত থাকবো। তারা অভিভাকদের সাথে কোনভাবেই এ ধরণের ব্যবহার করতে পারেন না। এদিকে আরেক অভিভাবক ডা. খায়রুল বাশার বালেন, আবেদন অনুযায়ী বেতন ফি কমানো হোক বা না হোক আবেদন গ্রহণ করতেও তাদের এতো দ্বিধা কেন। তারা যে ভাবে বেতন ও ফি বৃদ্ধি করেছে তাতে মনে হয় এটা মগের মুল্লুক। কেননা প্রতিটি ক্লাসের বেতন ও সেশন ফি গত বছরের চেয়ে একেবারে দ্বিগুন করা হয়েছে। সে সাথে অন্যান্য ফি’র নামে প্রতিমাসেই অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা কর্তৃপক্ষের এ ধরনের আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই এবং যথাযথ শাস্তি দাবি করছি। অন্যথায় এ ঘটনা নিয়ে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হলে তার দায়ভার স্কুল কর্তৃপক্ষকেই বহন করতে হবে। আমরা ন্যায্য দাবি নিয়ে এসেছি, তারা তা গ্রহণ করতেও পারে নাও করতে পারে। কিন্তু তাই বলে কি তারা আমাদের তাড়িয়ে দিবে? এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ মো: নজরুল ইসলাম কিশোর এর সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, অভিভাবকরা অহেতুক দাবি নিয়ে প্রতিষ্ঠানের ভিতরে উচ্ছৃঙ্খলা সৃষ্টি করায় তাদের বাইরে যেতে বলা হয়েছে। তাদের সাথে কোন প্রকার খারাপ আচরন করা হয়নি। চেয়ারম্যান লায়ন নজরুল ইসলাম বলেন, অভিভাকরা দাবি উত্থাপনের নামে উচ্ছৃঙ্খলা করায় পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের স্বরনাপন্ন হবো বলে জানিয়েছি। তাতেই তারা আরও বেশি হট্টগোল শুরু করলে পরিবেশটা ঘোলাটে হয়ে যায়। এটার জন্য অভিভাবকরা দায়ী। তারা তাদের সন্তানদেরকে শিক্ষার্থী ও বয়স্কদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় তা এমনভাবে উপস্থাপন করবে ভাবা যায়না। তারা এমন শিক্ষাই যদি দিতে চায় তাহলে এ প্রতিষ্ঠানে পড়ানোর দরকার নেই। তাদের সামর্থ অনুযায়ী অন্যত্র নিয়ে যেতে পারেন।