ঢাকা ০৬:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
“২৬শে এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে শার্ক ট্যাংক বাংলাদেশ” –মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর এলাকা হতে ৫৩ কেজি গাঁজাসহ ০৩ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০; মাদক বহনে ব্যবহৃত পিকআপ জব্দ। “মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন” ইন্দুরকানীতে দিনব্যাপী পারিবারিক পুষ্টি বাগান ও বস্তায় আদা চাষ বিষয়ক প্রশিক্ষণ চট্টগ্রামে সড়ক অবরোধ করে চুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন … লালমনিরহাটে বৃষ্টির জন‍্য বিশেষ নামাজ আদায় মিছিল ও শোডাউন করায় মতলব উত্তর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে মানিক দর্জিকে শোকজ –গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা এলাকায় স্বামী কর্তৃক স্ত্রী হত্যা মামলার পলাতক প্রধান আসামি শ্রী রুপেন দাশ’কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব । চন্দনাইশে পুকুরে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু ইষ্টার্ণ হাউজিংয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়ায় সাংবাদিকদের উপর হামলা

বর্গা চাষীদের বিঘা প্রতি লোকসান আড়াই থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা রাণীনগরে ধানের ন্যায্য মূল্য বঞ্চিত কৃষকরা

এফএনএস,মো: ওহেদুল ইসলাম মিলন,রাণীনগর (নওগাঁ) : নওগাঁর রাণীনগরে পুরো দমে শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটা। তবে শেষ মহুর্তে ধানে কারেন্ট পোকার আক্রমনে দিশে হারা হয়ে পরেছেন কৃষকরা। ব্লাস্ট রোগ আর কারেন্ট ও মাজরা পোকার আক্রমনে ধানের ফলন কমে গেছে বলে জানিয়েছেন চাষীরা। এছাড়া বাজারে ধান বিক্রিতে ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় বিঘা প্রতি আড়াই থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা লোকসানের কবলে পরেছেন বর্গা চাষীরা । রাণীনগর উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানাগেছে, চলতি ইরি/বোরো মৌসুমে এউপজেলায় সাড়ে ১৯ হাজার হেক্টর জমিতে ধান রোপন করা হয়েছে। শুরু থেকে আবহাওয়া ভাল থাকায় ধানের গাছ বেশ ভালই ছিল। এলাকার কৃষকরা বলছেন,ধান বের হবার পর থেকে হঠাৎ করেই ব্লাস্ট রোগ আর মাজরা পোকার আক্রমনে ধানের শীষ মরতে থাকে। বিভিন্ন কিটনাশক ছিটিয়েও তেমন কোন ফল মেলেনি। ফলে ধানের ফলন নিয়ে কৃষকদের মাঝে চরম হতাশা দেখা দেয় । এছাড়া শেষ সময়ে কারেন্ট পোকা আক্রমন করায় ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত হয়ে পরেছেন চাষীরা। তবে এব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেছেন,এলাকা জুরে কোথাও কারেন্ট পোকার আক্রমন নেই,তবে আবহাওয়ার কারনে অনেক জায়গায় ব্লাস্ট,মাজরা পোকার আক্রমন দেখা দিলেও ফলনে কোন কমতি হবেনা। কৃষকরা জানান, গত আমন মৌসুমে অণু খাদ্যের অভাবে ধান গাছ লাল বর্ণ হয়ে শত শত হেক্টর জমির ধান মরে যায় । এতে চরম লোকসানে পরেন তারা। লোকসান কাটিয়ে উঠতে কেউ বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋন নিয়ে আবার কেউ হাঁস-মুরগী,গরু- ছাগল বিক্রি করে প্রতি বিঘা জমি সাত থেকে সাড়ে সাত হাজার টাকায় বর্গা নিয়ে বোরো ধান রোপন করেন। চাষীদের মতে,চলতি মৌসুমে প্রতি বিঘা জমিতে বর্গাসহ ধান রোপন থেকে শুরু করে ঘরে তোলা পর্যন্ত অঞ্চল ভেদে প্রায় ১৬ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে ধানের ফলন হচ্ছে ২০ থেকে ২৪ মন । সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি ধান ২৬ টাকা দরে এক মন ধান এক হাজার চল্লিশ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হবার কথা থাকলেও রাণীনগর উপজেলা তথা অত্র অঞ্চলের মধ্যে ধানের মোকাম খ্যাত আবাদপুকুর বাজারে প্রতিমন ধান রকম ভেদে ৬ শ’ ২০ টাকা থেকে ৬ শ’৭০ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হয়েছে। এতে জমির মালিকদের কিছুটা লাভ হলেও বিঘা প্রতি আড়াই থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে বর্গাচাষীদের। এব্যাপারে রাণীনগর উপজেলার সিলমাদার গ্রামের গোলাম রাব্বানী,গুয়াতা গ্রামের আনোয়ার হোসেন,হরিশপুর গ্রামের জাহের আলীসহ অনেক বর্গা চাষীরা জানান,চলতি মৌসুমে প্রতি বিঘা জমিতে ধান উৎপাদন করতে মাটি ও অঞ্চল ভেদে ১৬ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকা খরচ পরেছে । পক্ষান্তরে প্রতি বিঘা জমিতে ২০-২৪ মন পর্যন্ত ধানের ফলন হচ্ছে । এই ধান বর্তমান বাজার দরে বিক্রি করে বিঘা প্রতি আড়াই থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে । বাজারে ন্যায্য মূল্য পেলে লোকসান কাটিয়ে বেশ ভাল লাভবান হওয়া যেত । আবাদপুকুর বাজার ধান-চাল আড়ৎ সমিতির সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দীন হেলু মন্ডল বলেন, মোকামে প্রচুর মজুদ থাকায় আগ্রহ নিয়ে কোন মহাজন ধান ক্রয় করছেনা । এছাড়া বর্তমান চালের বাজার দর কম হওয়ায় মোকামের দাম অনুসারে ধান ক্রয় করতে হচ্ছে । রাণীনগর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, সরকারীভাবে প্রতি কেজি ধান ২৬ টাকা দরে প্রতি মন ধান এক হাজার চল্লিশ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হবার কথা । কিন্তু স্থানীয় বাজারে যে দামেই বেচা- কেনা হোক না কেন এতে আমাদের কিছু করার নেই

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

“২৬শে এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে শার্ক ট্যাংক বাংলাদেশ”

বর্গা চাষীদের বিঘা প্রতি লোকসান আড়াই থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা রাণীনগরে ধানের ন্যায্য মূল্য বঞ্চিত কৃষকরা

আপডেট টাইম ১১:৩৬:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ মে ২০১৯

এফএনএস,মো: ওহেদুল ইসলাম মিলন,রাণীনগর (নওগাঁ) : নওগাঁর রাণীনগরে পুরো দমে শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটা। তবে শেষ মহুর্তে ধানে কারেন্ট পোকার আক্রমনে দিশে হারা হয়ে পরেছেন কৃষকরা। ব্লাস্ট রোগ আর কারেন্ট ও মাজরা পোকার আক্রমনে ধানের ফলন কমে গেছে বলে জানিয়েছেন চাষীরা। এছাড়া বাজারে ধান বিক্রিতে ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় বিঘা প্রতি আড়াই থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা লোকসানের কবলে পরেছেন বর্গা চাষীরা । রাণীনগর উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানাগেছে, চলতি ইরি/বোরো মৌসুমে এউপজেলায় সাড়ে ১৯ হাজার হেক্টর জমিতে ধান রোপন করা হয়েছে। শুরু থেকে আবহাওয়া ভাল থাকায় ধানের গাছ বেশ ভালই ছিল। এলাকার কৃষকরা বলছেন,ধান বের হবার পর থেকে হঠাৎ করেই ব্লাস্ট রোগ আর মাজরা পোকার আক্রমনে ধানের শীষ মরতে থাকে। বিভিন্ন কিটনাশক ছিটিয়েও তেমন কোন ফল মেলেনি। ফলে ধানের ফলন নিয়ে কৃষকদের মাঝে চরম হতাশা দেখা দেয় । এছাড়া শেষ সময়ে কারেন্ট পোকা আক্রমন করায় ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত হয়ে পরেছেন চাষীরা। তবে এব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেছেন,এলাকা জুরে কোথাও কারেন্ট পোকার আক্রমন নেই,তবে আবহাওয়ার কারনে অনেক জায়গায় ব্লাস্ট,মাজরা পোকার আক্রমন দেখা দিলেও ফলনে কোন কমতি হবেনা। কৃষকরা জানান, গত আমন মৌসুমে অণু খাদ্যের অভাবে ধান গাছ লাল বর্ণ হয়ে শত শত হেক্টর জমির ধান মরে যায় । এতে চরম লোকসানে পরেন তারা। লোকসান কাটিয়ে উঠতে কেউ বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋন নিয়ে আবার কেউ হাঁস-মুরগী,গরু- ছাগল বিক্রি করে প্রতি বিঘা জমি সাত থেকে সাড়ে সাত হাজার টাকায় বর্গা নিয়ে বোরো ধান রোপন করেন। চাষীদের মতে,চলতি মৌসুমে প্রতি বিঘা জমিতে বর্গাসহ ধান রোপন থেকে শুরু করে ঘরে তোলা পর্যন্ত অঞ্চল ভেদে প্রায় ১৬ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে ধানের ফলন হচ্ছে ২০ থেকে ২৪ মন । সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি ধান ২৬ টাকা দরে এক মন ধান এক হাজার চল্লিশ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হবার কথা থাকলেও রাণীনগর উপজেলা তথা অত্র অঞ্চলের মধ্যে ধানের মোকাম খ্যাত আবাদপুকুর বাজারে প্রতিমন ধান রকম ভেদে ৬ শ’ ২০ টাকা থেকে ৬ শ’৭০ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হয়েছে। এতে জমির মালিকদের কিছুটা লাভ হলেও বিঘা প্রতি আড়াই থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে বর্গাচাষীদের। এব্যাপারে রাণীনগর উপজেলার সিলমাদার গ্রামের গোলাম রাব্বানী,গুয়াতা গ্রামের আনোয়ার হোসেন,হরিশপুর গ্রামের জাহের আলীসহ অনেক বর্গা চাষীরা জানান,চলতি মৌসুমে প্রতি বিঘা জমিতে ধান উৎপাদন করতে মাটি ও অঞ্চল ভেদে ১৬ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকা খরচ পরেছে । পক্ষান্তরে প্রতি বিঘা জমিতে ২০-২৪ মন পর্যন্ত ধানের ফলন হচ্ছে । এই ধান বর্তমান বাজার দরে বিক্রি করে বিঘা প্রতি আড়াই থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে । বাজারে ন্যায্য মূল্য পেলে লোকসান কাটিয়ে বেশ ভাল লাভবান হওয়া যেত । আবাদপুকুর বাজার ধান-চাল আড়ৎ সমিতির সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দীন হেলু মন্ডল বলেন, মোকামে প্রচুর মজুদ থাকায় আগ্রহ নিয়ে কোন মহাজন ধান ক্রয় করছেনা । এছাড়া বর্তমান চালের বাজার দর কম হওয়ায় মোকামের দাম অনুসারে ধান ক্রয় করতে হচ্ছে । রাণীনগর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, সরকারীভাবে প্রতি কেজি ধান ২৬ টাকা দরে প্রতি মন ধান এক হাজার চল্লিশ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হবার কথা । কিন্তু স্থানীয় বাজারে যে দামেই বেচা- কেনা হোক না কেন এতে আমাদের কিছু করার নেই