সিনিয়র রিপোর্টার,মাসুদ হাসান মোল্লা রিদম,ঢাকা: গ্রাহকদের অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ গ্রাহকের জমাকৃত ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ও শত কোটি টাকা কানাডায় পাচারের অভিযোগে আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স এন্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড এর চেয়ারম্যান ও সভাপতি এম তাজুল ইসলামকে আটক করেছে সিআইডি। রবিবার সকাল ১১ টায় রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি হেড কোয়ার্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির এসএস মোল্লা নজরুল ইসলাম। এর আগে সিআইডি ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের বিশেষ পুলিশ সুপার মোঃ কামরুজ্জামান এর তত্ত্বাবধানে একটি টিম এই মামলার প্রধান আসামি প্রতারক কে গ্রেপ্তার করে। সিআইডির এসএস মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেন,রাজধানীর মতিঝিল এলাকা থেকে সাধারণ গ্রাহকের জমাকৃত ৩০০ (তিনশত) কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং শত কোটি টাকা পাচারের দায়ে আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স এন্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম এম তাজুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। সিআইডির মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেন,আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স এন্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড এর কার্যক্রম হাজার ১৯৮৪ সালে শুরু হয় এম এম তাজুল ইসলাম ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড এর ১৯৮৪ সাল হতে ২০০২ সাল পর্যন্ত চাকুরীরত ছিলেন ।তিনি ২০০৫ সাল হতে আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স এন্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড এর সাথে যুক্ত হন।সমবায় অধিদপ্তর কর্তৃক আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স এন্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড এর কার্যক্রম সমগ্র বাংলাদেশ ২৬ টি শাখার অনুমোদন থাকলেও ১৮০টি শাখা পরিচালনা করে।এদের গ্রাহকের সংখ্যা হচ্ছে ১১৪২৫ জন।এম তাজুল ইসলাম ও মোহাম্মদ জাকির হোসেন চৌধুরী শাখার ব্যবস্থাপক ও দ্বিতীয় কর্মকর্তাগনের মাধ্যমে সংঘবদ্ধভাবে ১২ টি বিভিন্ন তফসিলভুক্ত ব্যাংক এ ৭৭ হিসাবের মাধ্যমে তিন শত কোটি টাকা স্থানান্তর করে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়। সিআইডি কর্মকর্তা বলেন,ব্যাংক হিসাব বিবরণী ও স্টেটমেন্ট পযাচলনা করে দেখা যায় আসামীগণ গ্রাহকদের জমাকৃত ৩০০ (তিন শত ) কোটি টাকা নগদ ও অনলাইনে ট্রান্সফার করে পরস্পর যোগসাজশে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এম এম তাজুল ইসলাম বিভিন্ন ব্যাংকের হিসাবে নিজের নামে,স্ত্রী আফরোজা পারভীন এবং ছেলে সাজ্জাদুল ইসলাম তানভীর কর্তৃক পরিচালিত সাউদি বাংলাদেশ লিমিটেড ঢাকা তানভীর এন্টারপ্রাইজ ঢাকা,তানভীর অটো ব্রিকস লিমিটেড ঢাকা এর হিসাবে স্থানান্তর করেন। সাজ্জাদুল ইসলাম তানভির সহ অন্যান্যদের নামে ব্যবস্থাপনা কমিটির বর্তমান ও সাবেক সদস্য ও কর্মকর্তাগনের যোগসাজেশে নগদ টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে আত্মসাৎ করে বিভিন্ন ব্যাংকে পেরন,স্থানান্তর,রূপান্তরের মাধ্যমে হস্তান্তর করে বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া গেছে। সিআইডির পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন,আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স এন্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড এর সভাপতি এম তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে বিএনপির বংশাল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার মামলা নম্বর হচ্ছে ৪৩। মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেন আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স এন্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট ব্যাংক নামে আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স এন্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড ব্যাঙ্ক শব্দটি ব্যবহার করে সমিতির কার্যক্রম পরিচালনা করে মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে প্রতারণা পূর্ব গ্রাহক ও আমন সংগ্রহ করে গ্রাহকদের জমাকৃত অর্থ আত্মসাৎ করে জমি, প্লট নামে-বেনামে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান চালু এবং নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ পৌর সভার আটি মৌজার ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডে আজিজ কো-অপারেটিভ মুক্তি শপিং কমপ্লেক্স ( টাওয়ার) নামে ৬০ শতাংশ জমির উপর বহুতল ভবন স্থাপন করে স্থানান্তর, রূপান্তর হস্তান্তর করে মানি লন্ডারিং এর অপরাধে করেছে বলে অনুসন্ধানে প্রাথমিক প্রমাণিত হয়েছে। সিআইডির পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল বলেন,আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স এন্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড এর চেয়ারম্যান এম তাজুল ইসলাম কানাডার গ্রিন কার্ডধারী ও তার ছেলে ফরহাদুল ইসলাম সাব্বির ও রিয়াজুল ইসলাম রিজভি ২০১১ সাল হতে কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছে। আটককৃত আসামি এম তাজুল ইসলাম সাধারণ গ্রাহকের জমাকৃত আমানত হতে শত কোটি টাকা পাচার করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। এই সময় সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সিআইডি দক্ষিণের এসএস মোঃ কামরুজ্জামান,সিআইডির মিডিয়া শাখা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শারমিন জাহান ও সিআইডির এই মামলার আইও সাব ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ নেয়ামতুল্লাহ।