ঢাকা ১২:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
–অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। চট্টগ্রামে দুই চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে-২ ঘণ্টার কর্মবিরতির ঘোষণা বিএমএর হকার আর যত্রতত্র আবর্জনা কমাতে অভিযানের ঘোষণা মেয়র রেজাউলের রামগঞ্জে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী ২০২৪ অনুষ্ঠিত। অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন গজারিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে দিনভর গনসংযোগ ও লিফলেট বিতরন গজারিয়ায় নারী উদ্যোক্তা সম্মেলন অনুষ্ঠিত পুলিশের বিশেষ অভিযানে ভয়ঙ্কর ডাকাত সর্দার মামুন গ্রেফতার বগুড়ায় অবকাশ হোটেলে অবৈধ কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ৯ জন খরিদ্দারকে দুই দিনের কারাদণ্ড দিলেন আদালত নানা বাড়ি বেড়াতে এসে নদীতে ডুবে কিশোর কিশোরীর মৃত্যু

প্রকাশ্যে চলছে নিষিদ্ধ মাহেন্দ্র ট্রলি দিয়ে ফসলি জমির মাটি কাটার উৎসব

মোঃ আল আমিন হোসেন

অবৈধ ভাবে প্রকাশ্যে ফসলি জমির মাটি কাটার কর্মযজ্ঞ চালাচ্ছে প্রভাবশালী মহল। চলছে ফসলী জমির মাটিকাটা উৎসব।

ফসলী কৃষি জমি পরিনত হচ্ছে পুকুর-ডোবায়। দিন দিন ফসলের উৎপাদন কমছে, বেকার হচ্ছে কৃষক, পরিবেশ হচ্ছে দূষিত।
মাটি পরিবহনে ভারী ট্রাক ও মাহেন্দ্র ট্রলি ব্যবহারে ইউনিয়ন ও গ্রামীণ সড়ক হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্থ। আইন অমান্য করে এমনি কর্মকাণ্ড চলছে চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। উপজেলার ১৫নং রূপসা উত্তর ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামে ও ৮নং ইউনিয়নের কড়ৈতলী গ্রামসহ অন্যান্য আরো কিছু ইউনিয়নে প্রশাসনের নজর ফাকি দিয়ে আবার কিছু প্রশাসনের নাকের ডগাতেই ভেকু ও লেবার দিয়ে এ মাটি কাটছে প্রভাবশালী মহল।

অবৈধ মাহেন্দ্ৰ ট্রাক চলাচলে ধুলার কুয়াশায় ডেকে গেছে গোটা এলাকা।

সোমনার (২৩ জানুয়ারী) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার কড়ৈতলী শেখের বাড়ি থেকে কড়ৈতলী চৌরাস্তা পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তায় ধুলার কুয়াশায় ডেকে গেছে। স্থানীয়দের মতে এই রাস্তায় প্রতিদিন পাঁচশত মাটির ট্রাক ও অবৈধ মাহেন্দ্ৰ ট্রাক চলাচল করায় এলাকা ধুলা-বালুতে আচ্ছন্ন হয়, এতেকরে যাতায়াতে নানা শ্রেণির মানুষের শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগের সৃষ্টি হচ্ছে।বাড়ছে জনমনে ক্ষোভ।

এ অবস্থায় দিশেহারা ও অসহায় জীবন যাপন করছে এবং স্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে হাজার হাজার মানুষ। এ ধুলার কারণে ছাত্র-ছাত্রীরাও বিদ্যালয়ে যেতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে।

কোনো গণমাধ্যমকর্মী সংবাদ
সংগ্রহে গেলে ভূমিদস্যুদের নিজেস্ব সন্ত্রসী বাহিনী দিয়ে করা হয় অমার্জিত আচরণ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলায় বৈধ ও অবৈধ ইটভাটাগুলোর উৎপাদিত ইটের কাঁচামাল হিসেবে প্রায় ৭০ শতাংশ মাটি যায় ইউনিয়নের বিভিন্ন ফসলি জমি থেকে। দীর্ঘদিন যাবত এ মাটি কাটার কর্মযজ্ঞ চালাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক মহল।

সরকারি গেজেটে প্রকাশিত মাটির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও হ্রাসকরণ ২০১৩ সালের ৫৯ নং আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী কোন ব্যক্তি ইট প্রস্তত করার উদ্দেশ্যে কৃষি জমি হতে মাটি কাটা বা সংগ্রহ করে ইটের কাচাঁমাল হিসাবে ব্যবহার করতে পারবে না। যদি কোন ব্যক্তি আইনের এই ধারা লঙ্ঘন করেন তাহলে তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসরের কারাদণ্ড বা ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দণ্ডেদন্ডিত হইবেন।

অন্যদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মিত বা ইউনিয়ন
বা গ্রামীন সড়ক ব্যবহার করিয়া কোন ব্যক্তি ভারি যানবাহন দ্বারা ইট বা ইটের কাচাঁমাল পরিবহন করিতে পারিবেন না। যদি কোন ব্যক্তি আইনের এই ধারা লঙ্ঘন করেন তা হইলে তিনি ১ (এক) লক্ষ টাকা
অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন। এসব আইন থাকার পরও ভূমিদস্যুরা আইনের তোয়াক্কা না করে স্থানীয় প্রশাসনের চোখের সামনে এসব কর্ম চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। বিষয়টি স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করার পরও প্রশাসনের এই নিরব ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে এলাকাবাসীর মনে।

এব্যাপারে ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাসলিমুন নেছা বলেন, কিছুদিন পূর্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণে আনতে চাচ্ছিলাম কিন্তু ড্রাইভার’রা গাড়ি রেখে পালিয়ে যায় তাই কাজে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। আমি অনতিবিলম্বে এই ব্যাপারে যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহণ করবো এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলবো।

ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মোঃ আব্দুল মান্নান জানান, ফসলি জমির মাটি
কাটার বিষয়টি ব্যবস্থা নিবে প্রশাসন। মাটি কাটার বিষয়ে প্রশাসন
সহযোগীতা চাইছে আমরা সর্ব সময় প্রস্তুত।

Tag :

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

–অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০।

প্রকাশ্যে চলছে নিষিদ্ধ মাহেন্দ্র ট্রলি দিয়ে ফসলি জমির মাটি কাটার উৎসব

আপডেট টাইম ০৫:২৭:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৩

মোঃ আল আমিন হোসেন

অবৈধ ভাবে প্রকাশ্যে ফসলি জমির মাটি কাটার কর্মযজ্ঞ চালাচ্ছে প্রভাবশালী মহল। চলছে ফসলী জমির মাটিকাটা উৎসব।

ফসলী কৃষি জমি পরিনত হচ্ছে পুকুর-ডোবায়। দিন দিন ফসলের উৎপাদন কমছে, বেকার হচ্ছে কৃষক, পরিবেশ হচ্ছে দূষিত।
মাটি পরিবহনে ভারী ট্রাক ও মাহেন্দ্র ট্রলি ব্যবহারে ইউনিয়ন ও গ্রামীণ সড়ক হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্থ। আইন অমান্য করে এমনি কর্মকাণ্ড চলছে চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। উপজেলার ১৫নং রূপসা উত্তর ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামে ও ৮নং ইউনিয়নের কড়ৈতলী গ্রামসহ অন্যান্য আরো কিছু ইউনিয়নে প্রশাসনের নজর ফাকি দিয়ে আবার কিছু প্রশাসনের নাকের ডগাতেই ভেকু ও লেবার দিয়ে এ মাটি কাটছে প্রভাবশালী মহল।

অবৈধ মাহেন্দ্ৰ ট্রাক চলাচলে ধুলার কুয়াশায় ডেকে গেছে গোটা এলাকা।

সোমনার (২৩ জানুয়ারী) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার কড়ৈতলী শেখের বাড়ি থেকে কড়ৈতলী চৌরাস্তা পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তায় ধুলার কুয়াশায় ডেকে গেছে। স্থানীয়দের মতে এই রাস্তায় প্রতিদিন পাঁচশত মাটির ট্রাক ও অবৈধ মাহেন্দ্ৰ ট্রাক চলাচল করায় এলাকা ধুলা-বালুতে আচ্ছন্ন হয়, এতেকরে যাতায়াতে নানা শ্রেণির মানুষের শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগের সৃষ্টি হচ্ছে।বাড়ছে জনমনে ক্ষোভ।

এ অবস্থায় দিশেহারা ও অসহায় জীবন যাপন করছে এবং স্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে হাজার হাজার মানুষ। এ ধুলার কারণে ছাত্র-ছাত্রীরাও বিদ্যালয়ে যেতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে।

কোনো গণমাধ্যমকর্মী সংবাদ
সংগ্রহে গেলে ভূমিদস্যুদের নিজেস্ব সন্ত্রসী বাহিনী দিয়ে করা হয় অমার্জিত আচরণ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলায় বৈধ ও অবৈধ ইটভাটাগুলোর উৎপাদিত ইটের কাঁচামাল হিসেবে প্রায় ৭০ শতাংশ মাটি যায় ইউনিয়নের বিভিন্ন ফসলি জমি থেকে। দীর্ঘদিন যাবত এ মাটি কাটার কর্মযজ্ঞ চালাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক মহল।

সরকারি গেজেটে প্রকাশিত মাটির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও হ্রাসকরণ ২০১৩ সালের ৫৯ নং আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী কোন ব্যক্তি ইট প্রস্তত করার উদ্দেশ্যে কৃষি জমি হতে মাটি কাটা বা সংগ্রহ করে ইটের কাচাঁমাল হিসাবে ব্যবহার করতে পারবে না। যদি কোন ব্যক্তি আইনের এই ধারা লঙ্ঘন করেন তাহলে তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসরের কারাদণ্ড বা ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দণ্ডেদন্ডিত হইবেন।

অন্যদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মিত বা ইউনিয়ন
বা গ্রামীন সড়ক ব্যবহার করিয়া কোন ব্যক্তি ভারি যানবাহন দ্বারা ইট বা ইটের কাচাঁমাল পরিবহন করিতে পারিবেন না। যদি কোন ব্যক্তি আইনের এই ধারা লঙ্ঘন করেন তা হইলে তিনি ১ (এক) লক্ষ টাকা
অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন। এসব আইন থাকার পরও ভূমিদস্যুরা আইনের তোয়াক্কা না করে স্থানীয় প্রশাসনের চোখের সামনে এসব কর্ম চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। বিষয়টি স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করার পরও প্রশাসনের এই নিরব ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে এলাকাবাসীর মনে।

এব্যাপারে ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাসলিমুন নেছা বলেন, কিছুদিন পূর্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণে আনতে চাচ্ছিলাম কিন্তু ড্রাইভার’রা গাড়ি রেখে পালিয়ে যায় তাই কাজে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। আমি অনতিবিলম্বে এই ব্যাপারে যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহণ করবো এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলবো।

ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মোঃ আব্দুল মান্নান জানান, ফসলি জমির মাটি
কাটার বিষয়টি ব্যবস্থা নিবে প্রশাসন। মাটি কাটার বিষয়ে প্রশাসন
সহযোগীতা চাইছে আমরা সর্ব সময় প্রস্তুত।