ঢাকা ০৭:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষের শহরে অভিবাসন ও জীনবমান নিয়ে মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত রাঙ্গুনিয়ায় আ: লীগ নেতার মৃত্যুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর শোক বরিশালে বৃষ্টি কামনায় নামাজ আদায়। রুপগঞ্জ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে এক দুর্ধর্ষ ডাকাত ওমর ফারুক গ্রেফতার বানারীপাড়ায় কিশোরী অপহরণ করে ধর্ষণ। বাকেরগঞ্জ থেকে ধর্ষক গ্রেফতার। “কোলোরেক্টাল ক্যান্সার সচেতনতা ফোরামের আয়োজন করেছে এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা” বরিশালে পথ শিশুদের সহযোগিতায় কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। গজারিয়ায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান দুই প্রতিষ্ঠান কে অর্থদন্ড টেকপাড়া ও ইয়াকুব নগরের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্হদের মাঝে নগর অর্থ ও বস্ত্র বিতরণ বাস ও ফুটওভার ব্রিজ মুখোমুখি সংঘর্ষ

পিলখানা হত্যাকাণ্ডে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা

মাতৃভূমির খবর ডেস্কঃ  বাংলাদেশের ইতিহাসে জঘন্যতম অধ্যায় পিলখানা হত্যাকাণ্ড। ২০০৯ সালের এইদিনে ঢাকার পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদরদফতরে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওই বছরের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারির পিলখানা ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারান ৫৮ জন সেনাসদস্য। শোকাবহ পিলখানা ট্র্যাজেডি দিবস। বনানী সামরিক কবরস্থানে নিহতদের প্রতি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।

এছাড়া, তিন বাহিনীর প্রধান, বিডিআর প্রধান শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা জানিয়েছেন পিলখানা ট্র্যাজেডিতে নিহতদের স্বজনরা।

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে ঢাকার পিলখানায় বিডিআর সদরদপ্তরে গুলির শব্দ শোনা যেতে থাকে। বিডিআর সপ্তাহ চলার কারণে প্রথমে অনেকেই ভাবছিলেন ভেতরে হয়ত কোনো কর্মসূচি চলছে। কিন্তু পরে জানা যায় ভেতরে বিদ্রোহ হয়েছে এবং পিলখানার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে জওয়ানরা। এরপর দেশের বিভিন্ন জেলায় বিডিআর দপ্তরে বিদ্রোহের খবর পাওয়া যায়।

একপর্যায়ে সরকারের পক্ষ থেকে বিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনা হয়। এরপর গভীর রাতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন পিলখানায় গেলে বিদ্রোহীরা তার কাছে অস্ত্র সমর্পণ করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বেরিয়ে আসার সময় বিদ্রোহীদের হাতে জিম্মি কয়েকজন সেনা কর্মকর্তা এবং তাদেরএকপর্যায়ে পরদিন ২৬ ফেব্রুয়ারি পুলিশ ও সেনাবাহিনী পিলখানার নিয়ন্ত্রণ নেয়। অবসান ঘটে প্রায় ৩৩ ঘণ্টার বিদ্রোহের। তবে বিদ্রোহের প্রথম দিন দুপুরে কামরাঙ্গীরচর বেড়িবাঁধের কাছে ম্যানহোলের মুখে দুই বিডিআর কর্মকর্তার লাশ পাওয়া যায়। আর বিদ্রোহ অবসানের পরদিন পিলখানায় পাওয়া যায় একাধিক গণকবর। সেখানে পাওয়া যায় বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ, তার স্ত্রীসহ সেনা কর্মকর্তাদের লাশ। রক্তাক্ত ওই বিদ্রোহের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) এর নাম বদলে এই বাহিনী নাম দেয়া হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন ওই বিদ্রোহের ঘটনার পর ৫৭টি বিদ্রোহের মামলার বিচার হয় বাহিনীর নিজস্ব আদালতে। সেখানে ছয় হাজার জওয়ানের কারাদণ্ড হয়। কিন্তু পরে পিলখানায় হত্যাকাণ্ডের মামলার বিচার শুরু হয় ঢাকার বিচারিক আদালতে। দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর এই হত্যা মামলায় ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। এছাড়া সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয় ২৫৬ জনকে। আর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পান ২৭৮ জন। পরবর্তীতে বিচারিক আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে করা আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শুরু হয় ২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারি। ৩৭০ কার্যদিবস শুনানির পর ২০১৭ সালের ২৬ ও ২৭ নভেম্বর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্ট তার রায়ে পিলখানায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যার দায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। এছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ১৮৫ জনকে। আর ২০০ জনকে দেয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। এছাড়া হাইকোর্ট তার রায়ে এই হত্যা মামলা থেকে ৪৫ জনকে খালাস দেন।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষের শহরে অভিবাসন ও জীনবমান নিয়ে মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত

পিলখানা হত্যাকাণ্ডে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা

আপডেট টাইম ০৯:০০:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০

মাতৃভূমির খবর ডেস্কঃ  বাংলাদেশের ইতিহাসে জঘন্যতম অধ্যায় পিলখানা হত্যাকাণ্ড। ২০০৯ সালের এইদিনে ঢাকার পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদরদফতরে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওই বছরের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারির পিলখানা ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারান ৫৮ জন সেনাসদস্য। শোকাবহ পিলখানা ট্র্যাজেডি দিবস। বনানী সামরিক কবরস্থানে নিহতদের প্রতি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।

এছাড়া, তিন বাহিনীর প্রধান, বিডিআর প্রধান শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা জানিয়েছেন পিলখানা ট্র্যাজেডিতে নিহতদের স্বজনরা।

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে ঢাকার পিলখানায় বিডিআর সদরদপ্তরে গুলির শব্দ শোনা যেতে থাকে। বিডিআর সপ্তাহ চলার কারণে প্রথমে অনেকেই ভাবছিলেন ভেতরে হয়ত কোনো কর্মসূচি চলছে। কিন্তু পরে জানা যায় ভেতরে বিদ্রোহ হয়েছে এবং পিলখানার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে জওয়ানরা। এরপর দেশের বিভিন্ন জেলায় বিডিআর দপ্তরে বিদ্রোহের খবর পাওয়া যায়।

একপর্যায়ে সরকারের পক্ষ থেকে বিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনা হয়। এরপর গভীর রাতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন পিলখানায় গেলে বিদ্রোহীরা তার কাছে অস্ত্র সমর্পণ করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বেরিয়ে আসার সময় বিদ্রোহীদের হাতে জিম্মি কয়েকজন সেনা কর্মকর্তা এবং তাদেরএকপর্যায়ে পরদিন ২৬ ফেব্রুয়ারি পুলিশ ও সেনাবাহিনী পিলখানার নিয়ন্ত্রণ নেয়। অবসান ঘটে প্রায় ৩৩ ঘণ্টার বিদ্রোহের। তবে বিদ্রোহের প্রথম দিন দুপুরে কামরাঙ্গীরচর বেড়িবাঁধের কাছে ম্যানহোলের মুখে দুই বিডিআর কর্মকর্তার লাশ পাওয়া যায়। আর বিদ্রোহ অবসানের পরদিন পিলখানায় পাওয়া যায় একাধিক গণকবর। সেখানে পাওয়া যায় বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ, তার স্ত্রীসহ সেনা কর্মকর্তাদের লাশ। রক্তাক্ত ওই বিদ্রোহের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) এর নাম বদলে এই বাহিনী নাম দেয়া হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন ওই বিদ্রোহের ঘটনার পর ৫৭টি বিদ্রোহের মামলার বিচার হয় বাহিনীর নিজস্ব আদালতে। সেখানে ছয় হাজার জওয়ানের কারাদণ্ড হয়। কিন্তু পরে পিলখানায় হত্যাকাণ্ডের মামলার বিচার শুরু হয় ঢাকার বিচারিক আদালতে। দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর এই হত্যা মামলায় ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। এছাড়া সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয় ২৫৬ জনকে। আর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পান ২৭৮ জন। পরবর্তীতে বিচারিক আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে করা আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শুরু হয় ২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারি। ৩৭০ কার্যদিবস শুনানির পর ২০১৭ সালের ২৬ ও ২৭ নভেম্বর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্ট তার রায়ে পিলখানায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যার দায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। এছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ১৮৫ জনকে। আর ২০০ জনকে দেয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা। এছাড়া হাইকোর্ট তার রায়ে এই হত্যা মামলা থেকে ৪৫ জনকে খালাস দেন।