ঢাকা ০৮:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রেস বিজ্ঞপ্তি (২০ এপ্রিল ২০২৪ ) —————————————- ১৫ দিনের ঈদযাত্রায় ২৯৪ প্রাণের মৃত্যুমিছিল : সেভ দ্য রোড চন্দনাইশে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল বশর ভূঁইয়া পরিষদের ঈদ পুনমিলনী অনুষ্ঠিত ফরিদপুর জেলার মধুখালিতে “শ্যালিকার সঙ্গে পরকীয়ার জেরে দুলাভাইকে নৃশংসভাবে হত্যা” শীর্ষক চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার পলাতক প্রধান আসামি আশারুল শেখ এবং তার প্রধান সহযোগী ইলিয়াস শেখ ও খায়রুল শেখ’কে ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। রাঙ্গুনিয়ায় নববর্ষ বৈশাখী উৎসবে জলকেলি ও বলি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে বেলখাইন স্পোটিং ক্লাবের অলনাইট ফুটবল টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল সম্পন্ন বগুড়ায় চাঞ্চ্যল্যকর শিশু বন্ধনকে গলাকেটে হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন গজারিয়ায় দুই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিরুল ইসলাম এর পক্ষে গনসংযোগ ও লিফলেট বিতরন প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনী সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে আলোচনা ও পুরুষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠান –অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। চট্টগ্রামে দুই চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে-২ ঘণ্টার কর্মবিরতির ঘোষণা বিএমএর

পানি বিশুদ্ধ করার উপায়

মাতৃভূমির খবর ডেস্ক:  বলা হয় পানির অপর নাম জীবন কারণ পানি ছাড়া জীবন বাঁচানো যায় না। কিন্তু পানি নিরাপদ না হলে জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। জীবাণুযুক্ত পানি অনেক সময় মৃত্যুর কারণে পরিণত হয়। পানি খালি চোখে দেখতে পরিষ্কার মনে হলেও সব সময় নিরাপদ হয় না। কেননা এই পরিষ্কার পানির মধ্যে রোগ জীবাণু থাকতে পারে। দূষিত পানি পান করার ফলে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ে। হেপাটাইটিস, টাইফয়েড, ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয়, জন্ডিসের মতো মারাত্মক ব্যাধির উত্স দূষিত পানি। এ রকম দূষিত পানি দীর্ঘদিন পান করতে থাকলে আরও জটিল রোগ, এমনকি মরণব্যাধি ক্যান্সারও হতে পারে। বিশুদ্ধ পানির নিশ্চয়তা নিশ্চিত করতে না পারলে ঝুঁকির মধ্যে পড়বে জনস্বাস্থ্য। বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারলে খুব সহজেই বহুরোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কিন্তু অনেকেই ঠিকমতো জানেন না কীভাবে পানিকে বিশুদ্ধ করতে হয়। ওয়াটার এইডের পলিসি ও অ্যাডভোকেসি বিভাগের প্রধান আবদুল্লাহ আল মুঈদ পানি বিশুদ্ধ করার সাতটি পদ্ধতির কথা জানিয়েছেন।
পানি বিশুদ্ধ করার সবচেয়ে পুরনো ও কার্যকর পদ্ধতির একটি হলো সেটা ফুটিয়ে নেওয়া। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, পানি ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়ে  বেশি তাপমাত্রায় ৫ থেকে ২৫ মিনিট ধরে ফোটানো হলে এর মধ্যে থাকা জীবাণু, লার্ভাসহ সবই ধ্বংস হয়ে যায়। তারপর সেই পানি ঠাণ্ডা করে ছাকনি দিয়ে ছেকে পরিষ্কার পাত্রে ঢেকে সংরক্ষণ করার পরামর্শ দিয়েছেন আবদুল্লাহ আল মুঈদ। পানি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের  পাত্রের পরিবর্তে কাচ অথবা স্টিলের পাত্র ব্যবহার করার কথাও জানান তিনি। সেই সঙ্গে সেইসব পাত্র বা যে পাত্রে পানি খাওয়া হচ্ছে সেটি যথাযথভাবে পরিষ্কার করার ওপরও তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন। ফোটানো পানি দুই দিনের বেশি না খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
পানি বিশুদ্ধ করার দ্বিতীয় পদ্ধতিটি হলো ফিল্টারের মাধ্যমে বিশুদ্ধ করা। পানি ফোটানোর মাধ্যমেই ক্ষতিকর জীবাণু দূর করা সম্ভব হলেও পুরোপুরি আশঙ্কামুক্ত থাকতে ফিল্টারের মাধ্যমে বিশুদ্ধ করা যেতে পারে।
যে সব এলাকায় গ্যাসের সংকট সেখানে ফিল্টারে পানি বিশুদ্ধ করাই সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি। তবে আবদুল্লাহ আল মুঈদের মতে, ফিল্টার থেকে বিশুদ্ধ পানির বিষয়টি নিশ্চিত হলে ফিল্টারটি নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
পানি বিশুদ্ধ করার তৃতীয় পদ্ধতি ক্লোরিন ট্যাবলেট বা ব্লি­চিং। পানির জীবাণু ধ্বংস করতে ক্লোরিন বহুল ব্যবহূত একটি রাসায়নিক। যদি পানি ফোটানো বা ফিল্টার করার ব্যবস্থা না থাকে তাহলে পানি বিশুদ্ধকরণ ক্লোরিন ট্যাবলেট দিয়ে পানি পরিশোধন করা যেতে পারে। সাধারণত দুর্গম কোথাও ভ্রমণে গেলে অথবা দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে বা জরুরি কোনো অবস্থায় ক্লোরিন ট্যাবলেটের মাধ্যমে পানি শোধন করা যেতে পারে। প্রতি তিন লিটার পানিতে একটি ট্যাবলেট বা ১০ লিটার পানিতে ব্লি­চিং গুলিয়ে রেখে দিলে বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায়।
পানি বিশুদ্ধ করার চতুর্থ পদ্ধতি হিসেবে বলা যেতে পারে পটাশ বা ফিটকিরির কথা। এক কলসি পানিতে সামান্য পরিমাণ ফিটকিরি মিশিয়ে দুই থেকে তিন ঘণ্টা রেখে দিলে পানির ভেতরে থাকা ময়লাগুলো তলানিতে স্তর হয়ে জমে। এক্ষেত্রে পাত্রের ওপর থেকে শোধিত পানি সংগ্রহ করে তলানির পানি ফেলে দিতে হবে। অথবা পানি ছেকে নিয়ে সংরক্ষণের পরামর্শ দেন আবদুল্লাহ আল মুঈদ।
পানি বিশুদ্ধ করার পাঁচ নম্বর পদ্ধতি হিসেবে আবদুল্লাহ আল মুঈদ বলেছেন, সৌর পদ্ধতির কথা। যেসব প্রত্যন্ত স্থানে পরিশোধিত পানির অন্য কোনো উত্স নেই সেখানে প্রাথমিক অবস্থায় সৌর পদ্ধতিতে পানি বিশুদ্ধ করা যেতে পারে। এ পদ্ধতিতে দূষিত পানিকে জীবাণুমুক্ত করতে কয়েক ঘণ্টা তীব্র সূর্যের আলো ও তাপে রেখে দিতে হবে। এতে করে পানির সব ব্যাকটেরিয়া নষ্ট হয়ে যাবে।
ছয় নম্বর পদ্ধতি আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির ব্যবহার। পরিষ্কার ও স্বচ্ছ পানি জীবাণুমুক্ত করার জন্য অতিবেগুনি বিকিরণ কার্যকরি একটা পদ্ধতি। এতে করে পানির সব ধরনের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়ে যায়। বাজারের বেশ কয়েকটি আধুনিক ফিল্টারে এই আল্ট্রাভায়োলেট পিউরিফিকেশন প্রযুক্তি রয়েছে। তিনি জানান, ঘোলা পানিতে বা রাসায়নিক যুক্ত পানিতে এই পদ্ধতিটি খুব একটা কার্যকর নয়।
পানি বিশুদ্ধ করার সাত নম্বর পদ্ধতি হিসেবে আবদুল্লাহ আল মুঈদ আয়োডিনের কথা বলেছেন। এক লিটার পানিতে দুই শতাংশ আয়োডিন দ্রবণ মিশিয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রাখলেই পানি বিশুদ্ধ হয়ে যাবে।-বিবিসি
Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রেস বিজ্ঞপ্তি (২০ এপ্রিল ২০২৪ ) —————————————- ১৫ দিনের ঈদযাত্রায় ২৯৪ প্রাণের মৃত্যুমিছিল : সেভ দ্য রোড

পানি বিশুদ্ধ করার উপায়

আপডেট টাইম ০২:৪৪:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ অক্টোবর ২০১৮
মাতৃভূমির খবর ডেস্ক:  বলা হয় পানির অপর নাম জীবন কারণ পানি ছাড়া জীবন বাঁচানো যায় না। কিন্তু পানি নিরাপদ না হলে জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। জীবাণুযুক্ত পানি অনেক সময় মৃত্যুর কারণে পরিণত হয়। পানি খালি চোখে দেখতে পরিষ্কার মনে হলেও সব সময় নিরাপদ হয় না। কেননা এই পরিষ্কার পানির মধ্যে রোগ জীবাণু থাকতে পারে। দূষিত পানি পান করার ফলে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ে। হেপাটাইটিস, টাইফয়েড, ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয়, জন্ডিসের মতো মারাত্মক ব্যাধির উত্স দূষিত পানি। এ রকম দূষিত পানি দীর্ঘদিন পান করতে থাকলে আরও জটিল রোগ, এমনকি মরণব্যাধি ক্যান্সারও হতে পারে। বিশুদ্ধ পানির নিশ্চয়তা নিশ্চিত করতে না পারলে ঝুঁকির মধ্যে পড়বে জনস্বাস্থ্য। বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারলে খুব সহজেই বহুরোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কিন্তু অনেকেই ঠিকমতো জানেন না কীভাবে পানিকে বিশুদ্ধ করতে হয়। ওয়াটার এইডের পলিসি ও অ্যাডভোকেসি বিভাগের প্রধান আবদুল্লাহ আল মুঈদ পানি বিশুদ্ধ করার সাতটি পদ্ধতির কথা জানিয়েছেন।
পানি বিশুদ্ধ করার সবচেয়ে পুরনো ও কার্যকর পদ্ধতির একটি হলো সেটা ফুটিয়ে নেওয়া। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, পানি ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়ে  বেশি তাপমাত্রায় ৫ থেকে ২৫ মিনিট ধরে ফোটানো হলে এর মধ্যে থাকা জীবাণু, লার্ভাসহ সবই ধ্বংস হয়ে যায়। তারপর সেই পানি ঠাণ্ডা করে ছাকনি দিয়ে ছেকে পরিষ্কার পাত্রে ঢেকে সংরক্ষণ করার পরামর্শ দিয়েছেন আবদুল্লাহ আল মুঈদ। পানি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের  পাত্রের পরিবর্তে কাচ অথবা স্টিলের পাত্র ব্যবহার করার কথাও জানান তিনি। সেই সঙ্গে সেইসব পাত্র বা যে পাত্রে পানি খাওয়া হচ্ছে সেটি যথাযথভাবে পরিষ্কার করার ওপরও তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন। ফোটানো পানি দুই দিনের বেশি না খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
পানি বিশুদ্ধ করার দ্বিতীয় পদ্ধতিটি হলো ফিল্টারের মাধ্যমে বিশুদ্ধ করা। পানি ফোটানোর মাধ্যমেই ক্ষতিকর জীবাণু দূর করা সম্ভব হলেও পুরোপুরি আশঙ্কামুক্ত থাকতে ফিল্টারের মাধ্যমে বিশুদ্ধ করা যেতে পারে।
যে সব এলাকায় গ্যাসের সংকট সেখানে ফিল্টারে পানি বিশুদ্ধ করাই সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি। তবে আবদুল্লাহ আল মুঈদের মতে, ফিল্টার থেকে বিশুদ্ধ পানির বিষয়টি নিশ্চিত হলে ফিল্টারটি নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
পানি বিশুদ্ধ করার তৃতীয় পদ্ধতি ক্লোরিন ট্যাবলেট বা ব্লি­চিং। পানির জীবাণু ধ্বংস করতে ক্লোরিন বহুল ব্যবহূত একটি রাসায়নিক। যদি পানি ফোটানো বা ফিল্টার করার ব্যবস্থা না থাকে তাহলে পানি বিশুদ্ধকরণ ক্লোরিন ট্যাবলেট দিয়ে পানি পরিশোধন করা যেতে পারে। সাধারণত দুর্গম কোথাও ভ্রমণে গেলে অথবা দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে বা জরুরি কোনো অবস্থায় ক্লোরিন ট্যাবলেটের মাধ্যমে পানি শোধন করা যেতে পারে। প্রতি তিন লিটার পানিতে একটি ট্যাবলেট বা ১০ লিটার পানিতে ব্লি­চিং গুলিয়ে রেখে দিলে বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায়।
পানি বিশুদ্ধ করার চতুর্থ পদ্ধতি হিসেবে বলা যেতে পারে পটাশ বা ফিটকিরির কথা। এক কলসি পানিতে সামান্য পরিমাণ ফিটকিরি মিশিয়ে দুই থেকে তিন ঘণ্টা রেখে দিলে পানির ভেতরে থাকা ময়লাগুলো তলানিতে স্তর হয়ে জমে। এক্ষেত্রে পাত্রের ওপর থেকে শোধিত পানি সংগ্রহ করে তলানির পানি ফেলে দিতে হবে। অথবা পানি ছেকে নিয়ে সংরক্ষণের পরামর্শ দেন আবদুল্লাহ আল মুঈদ।
পানি বিশুদ্ধ করার পাঁচ নম্বর পদ্ধতি হিসেবে আবদুল্লাহ আল মুঈদ বলেছেন, সৌর পদ্ধতির কথা। যেসব প্রত্যন্ত স্থানে পরিশোধিত পানির অন্য কোনো উত্স নেই সেখানে প্রাথমিক অবস্থায় সৌর পদ্ধতিতে পানি বিশুদ্ধ করা যেতে পারে। এ পদ্ধতিতে দূষিত পানিকে জীবাণুমুক্ত করতে কয়েক ঘণ্টা তীব্র সূর্যের আলো ও তাপে রেখে দিতে হবে। এতে করে পানির সব ব্যাকটেরিয়া নষ্ট হয়ে যাবে।
ছয় নম্বর পদ্ধতি আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির ব্যবহার। পরিষ্কার ও স্বচ্ছ পানি জীবাণুমুক্ত করার জন্য অতিবেগুনি বিকিরণ কার্যকরি একটা পদ্ধতি। এতে করে পানির সব ধরনের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়ে যায়। বাজারের বেশ কয়েকটি আধুনিক ফিল্টারে এই আল্ট্রাভায়োলেট পিউরিফিকেশন প্রযুক্তি রয়েছে। তিনি জানান, ঘোলা পানিতে বা রাসায়নিক যুক্ত পানিতে এই পদ্ধতিটি খুব একটা কার্যকর নয়।
পানি বিশুদ্ধ করার সাত নম্বর পদ্ধতি হিসেবে আবদুল্লাহ আল মুঈদ আয়োডিনের কথা বলেছেন। এক লিটার পানিতে দুই শতাংশ আয়োডিন দ্রবণ মিশিয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রাখলেই পানি বিশুদ্ধ হয়ে যাবে।-বিবিসি