ঢাকা ০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রাঙ্গুনিয়ায় নববর্ষ বৈশাখী উৎসবে জলকেলি ও বলি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে বেলখাইন স্পোটিং ক্লাবের অলনাইট ফুটবল টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল সম্পন্ন বগুড়ায় চাঞ্চ্যল্যকর শিশু বন্ধনকে গলাকেটে হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন গজারিয়ায় দুই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিরুল ইসলাম এর পক্ষে গনসংযোগ ও লিফলেট বিতরন প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনী সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে আলোচনা ও পুরুষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠান –অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। চট্টগ্রামে দুই চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে-২ ঘণ্টার কর্মবিরতির ঘোষণা বিএমএর হকার আর যত্রতত্র আবর্জনা কমাতে অভিযানের ঘোষণা মেয়র রেজাউলের রামগঞ্জে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী ২০২৪ অনুষ্ঠিত। অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

পটুয়াখালীতে ইলিশ ধরায় ‘নিষেধাজ্ঞা মানলেও জ্বালা, না মানলেও জ্বালা।

আঃ মজিদ খান, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীতে নিষেধাজ্ঞা মানলেও জ্বালা না মানলেও জ্বালা নিষেধাজ্ঞার জন্য সমুদ্র থেকে তীরে এসে অলস সময় কাটাচ্ছে মাছ ধরার নৌকাগুলো।
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ জানান, মেরিন ফিশারিজ অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী প্রতি বছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই মোট ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
চার লাখ টাকা দাদন নিয়ে নতুন ট্রলার আর জাল দিয়ে সাগরে ইলিশ ধরায় ব্যস্ত ছিলেন মোঃ জাকির হাওলাদার। আগামী জুন-জুলাইয়ের মধ্যে ইলিশের বিনিময়ে দাদন পরিশোধ করার পরিকল্পনা ছিল তার। এ জন্য দিন-রাত পরিশ্রমও করছিলেন তিনি। কিন্তু আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া যায়নি এবার। এর মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে আবার সাগরে মাছ ধরায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা।
নিষেধাজ্ঞার জন্য এখন মহাদুশ্চিন্তায় জাকির। পটুয়াখালীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের মৃত সামসু হাওলাদারের ছেলে তিনি।
তাকে প্রশ্ন করার আগেই ৫০ বছরের জাকির বলে উঠলেন, ‘তুফানের বাড়ি খাই আমরা আর চাউল পায় আইরারা।’
অর্থাৎ ট্রলার চালাতে গিয়ে প্রতিনিয়ত সাগরের ঢেউয়ের ঝাপটা সামলাতে হিমশিম খেতে হয় জেলেদের। অথচ নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারি খাদ্যসহায়তা থেকে বঞ্চিত হন তারা।
জাকির হাওলাদার বলেন, ‘কী কমু কন। টাহার চিন্তায় রাইতে ঘুমাইতে পারি না। পাঁচজনের সংসার। মরণ ছাড়া উপায় নাই। গত কয়েক দিন কিছু ইলিশ পাইছি, হয়তো কয়দিন পরে বৃষ্টি হইলে আরও অনেক পাইতাম। কিন্তু এহন দিল নিষেধাজ্ঞা। সরকারি নিষেধাজ্ঞা মানলেও জ্বালা, না মানলেও জ্বালা।’
জাকির হাওলাদার মনে করেন, মাছ ধরায় সাগরে ঘন ঘন নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং প্রকৃত জেলেরা সরকারি সহযোগিতা না পেলে অনেকেই এই পেশাটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হবেন।
সম্প্রতি রাঙ্গাবালী উপজেলার কোড়ালিয়া খেয়াঘাট এলাকায় খালের পাড়ে তুলে রাখা ট্রলারের পাশে দাঁড়িয়ে কথা হয় জাকিরের সঙ্গে। এ সময় তার মতো আরও কয়েকজন জেলে নিজেদের হতাশার কথা জানান। রাঙ্গাবালীর ভাঙনকবলিত চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন। উত্তাল আগুনমুখা নদী পাড়ি দিয়ে যেতে হয় সেখানে। এই ইউনিয়নে বিবিরহাওলা গ্রামের ২০-২৫ জন জেলে সাগরে মাছ ধরেন। গ্রামের লঞ্চঘাট এলাকায় একটি গাছের নিচে বসেছিলেন তাদেরই একজন রিপন মিয়া। নোঙ্গর করা নিজের ট্রলার দেখিয়ে রিপন বলেন, ‘তিন দিন আগে বাজার-সদাই নিয়া সাগরে গেছিলাম। খরচ হইছিল ১৭ হাজার টাহা। গতকাইল আইছি। মাছ পাইছি মাত্র আট হাজার টাহার। এহন আবার ৬৫ দিন ঘরে বইয়া থাকতে অইবে। সাতজন শ্রমিক রাখছি, অগ্রিম টাহা দিয়া। ওগো তো ছাড়তেও পারমু না।’
রিপন আরো বলেন, ‘এইডাই মোগো জীবন। এ আর নতুন কিছু না। এই যে দেহেন নদীর ঢেউ রাস্তার পাশে আইসা পড়ে, আবার ভাডার টানে সব শুকায় যায়। মোগো জীবনও এমন। যহন মাছ পাই, তহন আল্লার নামে খালি পাইতেই থাহি। আর যহন পাই না, তহন খালি হাতেই ফিরতে হয়।’ নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারি খাদ্যসহায়তার বিষয়ে রিপন বলেন, ‘মোর ট্রলারে মোরা আটজন। এর মধ্যে চারজনে চাউল পাই। হেই চাউল আনতে আনতে মোগো জান শেষ। আর বাকি চাইরজনের তো হেই সুযোগও নাই।’
তবে মাছের উৎপাদন বাড়াতে সরকারি নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজন আছে বলেও মনে করেন রিপন।
বিবির হাওলা গ্রামের ওই লঞ্চঘাট থেকে প্রায় ১৫ কিলোমটিার দূরে চরলতা গ্রাম। সেই গ্রামেই কথা হয় আইয়ুব গাজী নামে আরেক জেলের সঙ্গে।
আইয়ুব গাজী বলেন, ‘সবে মাত্র মাছ পড়া শুরু করেছে, ঠিক সেই মুহূর্তেই সাগরে অবরোধ দিল। এর কোনো মানে অয় ? ১২ জন লোক মোর ট্রলারে। আগেই হেগো টাহা-টোহা দিয়া রাখছি।’
আইয়ুব গাজী জানান, গত বছর অবরোধের আগে ভালো মাছ পাওয়া গেলেও এবার তেমন পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, ‘চল্লিশ বছর ধইরা এই পেশায় আছি। ইচ্ছা করলেই ছাড়তে পারমু না। সরকারি আইন মেনেই মোরা মাছ ধরা বন্ধ রাখছি। আল্লাহ ভরসা। ৬৫ দিন যেভাবেই হোক ধারদেনা করে হলেও চালাইতে অইবে। এ ছাড়া তো আর কোনো উপায় দেহি না।’
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ জানান, মেরিন ফিশারিজ অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, প্রতি বছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই মোট ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
২০১৫ সালে এই নিষেধাজ্ঞা চালু হলেও ২০১৯ সাল পর্যন্ত শুধু ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রলার এর আওতায় ছিল। কিন্তু ২০২০ সালে ২৫ হাজার স্থানীয় ট্রলার ও নৌকাকেও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়।
মোল্লা এমদাদুল্লাহ বলেন, ‘মূলত হারিয়ে যাওয়া কিছু মাছের বংশবৃদ্ধির পাশাপাশি সামুদ্রিক ৪৭৫ প্রজাতির মাছের অবাধ প্রজননের জন্যই এই অবরোধ। এত বছর শুধু ইলিশ মাছের নিরাপদ প্রজননের জন্য নির্দিষ্ট কয়েকটি স্থানকে অভয়াশ্রম হিসেবে চিহ্নিত করে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হতো। এতে আমরা সফলও হয়েছি। প্রতি বছরই ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে।’
তিনি আরো জানান, অতীতের সফলতা মাথায় রেখেই মৎস্য গবেষকদের পরামর্শে গভীর সাগরে দেশীয় জলসীমায় ৬৫ দিন মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। গত দুই বছরে এই উদ্যোগে ইলিশসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের উৎপাদনও অনেক বেড়েছে।
তিনি বলেন , পটুয়াখালী জেলায় বিভিন্ন নদনদী এবং সাগরে ৭০ থেকে ৮০ হাজার জেলে মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত থাকলেও জেলা মৎস্য অফিস কর্তৃক নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা মোট ৬৭ হাজার। এর মধ্যে সমুদ্রগামী নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৪৭ হাজার ৮০৫ জন। নিষেধাজ্ঞা চলার সময় সমুদ্রগামী নিবন্ধিত প্রত্যেক জেলেকে ৮৬ কেজি চাল সরকারি খাদ্যসহায়তা দেয়া হ

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

রাঙ্গুনিয়ায় নববর্ষ বৈশাখী উৎসবে জলকেলি ও বলি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে

পটুয়াখালীতে ইলিশ ধরায় ‘নিষেধাজ্ঞা মানলেও জ্বালা, না মানলেও জ্বালা।

আপডেট টাইম ১০:১৩:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ মে ২০২২

আঃ মজিদ খান, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীতে নিষেধাজ্ঞা মানলেও জ্বালা না মানলেও জ্বালা নিষেধাজ্ঞার জন্য সমুদ্র থেকে তীরে এসে অলস সময় কাটাচ্ছে মাছ ধরার নৌকাগুলো।
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ জানান, মেরিন ফিশারিজ অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী প্রতি বছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই মোট ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
চার লাখ টাকা দাদন নিয়ে নতুন ট্রলার আর জাল দিয়ে সাগরে ইলিশ ধরায় ব্যস্ত ছিলেন মোঃ জাকির হাওলাদার। আগামী জুন-জুলাইয়ের মধ্যে ইলিশের বিনিময়ে দাদন পরিশোধ করার পরিকল্পনা ছিল তার। এ জন্য দিন-রাত পরিশ্রমও করছিলেন তিনি। কিন্তু আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া যায়নি এবার। এর মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে আবার সাগরে মাছ ধরায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা।
নিষেধাজ্ঞার জন্য এখন মহাদুশ্চিন্তায় জাকির। পটুয়াখালীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের মৃত সামসু হাওলাদারের ছেলে তিনি।
তাকে প্রশ্ন করার আগেই ৫০ বছরের জাকির বলে উঠলেন, ‘তুফানের বাড়ি খাই আমরা আর চাউল পায় আইরারা।’
অর্থাৎ ট্রলার চালাতে গিয়ে প্রতিনিয়ত সাগরের ঢেউয়ের ঝাপটা সামলাতে হিমশিম খেতে হয় জেলেদের। অথচ নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারি খাদ্যসহায়তা থেকে বঞ্চিত হন তারা।
জাকির হাওলাদার বলেন, ‘কী কমু কন। টাহার চিন্তায় রাইতে ঘুমাইতে পারি না। পাঁচজনের সংসার। মরণ ছাড়া উপায় নাই। গত কয়েক দিন কিছু ইলিশ পাইছি, হয়তো কয়দিন পরে বৃষ্টি হইলে আরও অনেক পাইতাম। কিন্তু এহন দিল নিষেধাজ্ঞা। সরকারি নিষেধাজ্ঞা মানলেও জ্বালা, না মানলেও জ্বালা।’
জাকির হাওলাদার মনে করেন, মাছ ধরায় সাগরে ঘন ঘন নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং প্রকৃত জেলেরা সরকারি সহযোগিতা না পেলে অনেকেই এই পেশাটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হবেন।
সম্প্রতি রাঙ্গাবালী উপজেলার কোড়ালিয়া খেয়াঘাট এলাকায় খালের পাড়ে তুলে রাখা ট্রলারের পাশে দাঁড়িয়ে কথা হয় জাকিরের সঙ্গে। এ সময় তার মতো আরও কয়েকজন জেলে নিজেদের হতাশার কথা জানান। রাঙ্গাবালীর ভাঙনকবলিত চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন। উত্তাল আগুনমুখা নদী পাড়ি দিয়ে যেতে হয় সেখানে। এই ইউনিয়নে বিবিরহাওলা গ্রামের ২০-২৫ জন জেলে সাগরে মাছ ধরেন। গ্রামের লঞ্চঘাট এলাকায় একটি গাছের নিচে বসেছিলেন তাদেরই একজন রিপন মিয়া। নোঙ্গর করা নিজের ট্রলার দেখিয়ে রিপন বলেন, ‘তিন দিন আগে বাজার-সদাই নিয়া সাগরে গেছিলাম। খরচ হইছিল ১৭ হাজার টাহা। গতকাইল আইছি। মাছ পাইছি মাত্র আট হাজার টাহার। এহন আবার ৬৫ দিন ঘরে বইয়া থাকতে অইবে। সাতজন শ্রমিক রাখছি, অগ্রিম টাহা দিয়া। ওগো তো ছাড়তেও পারমু না।’
রিপন আরো বলেন, ‘এইডাই মোগো জীবন। এ আর নতুন কিছু না। এই যে দেহেন নদীর ঢেউ রাস্তার পাশে আইসা পড়ে, আবার ভাডার টানে সব শুকায় যায়। মোগো জীবনও এমন। যহন মাছ পাই, তহন আল্লার নামে খালি পাইতেই থাহি। আর যহন পাই না, তহন খালি হাতেই ফিরতে হয়।’ নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারি খাদ্যসহায়তার বিষয়ে রিপন বলেন, ‘মোর ট্রলারে মোরা আটজন। এর মধ্যে চারজনে চাউল পাই। হেই চাউল আনতে আনতে মোগো জান শেষ। আর বাকি চাইরজনের তো হেই সুযোগও নাই।’
তবে মাছের উৎপাদন বাড়াতে সরকারি নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজন আছে বলেও মনে করেন রিপন।
বিবির হাওলা গ্রামের ওই লঞ্চঘাট থেকে প্রায় ১৫ কিলোমটিার দূরে চরলতা গ্রাম। সেই গ্রামেই কথা হয় আইয়ুব গাজী নামে আরেক জেলের সঙ্গে।
আইয়ুব গাজী বলেন, ‘সবে মাত্র মাছ পড়া শুরু করেছে, ঠিক সেই মুহূর্তেই সাগরে অবরোধ দিল। এর কোনো মানে অয় ? ১২ জন লোক মোর ট্রলারে। আগেই হেগো টাহা-টোহা দিয়া রাখছি।’
আইয়ুব গাজী জানান, গত বছর অবরোধের আগে ভালো মাছ পাওয়া গেলেও এবার তেমন পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, ‘চল্লিশ বছর ধইরা এই পেশায় আছি। ইচ্ছা করলেই ছাড়তে পারমু না। সরকারি আইন মেনেই মোরা মাছ ধরা বন্ধ রাখছি। আল্লাহ ভরসা। ৬৫ দিন যেভাবেই হোক ধারদেনা করে হলেও চালাইতে অইবে। এ ছাড়া তো আর কোনো উপায় দেহি না।’
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ জানান, মেরিন ফিশারিজ অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, প্রতি বছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই মোট ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
২০১৫ সালে এই নিষেধাজ্ঞা চালু হলেও ২০১৯ সাল পর্যন্ত শুধু ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রলার এর আওতায় ছিল। কিন্তু ২০২০ সালে ২৫ হাজার স্থানীয় ট্রলার ও নৌকাকেও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়।
মোল্লা এমদাদুল্লাহ বলেন, ‘মূলত হারিয়ে যাওয়া কিছু মাছের বংশবৃদ্ধির পাশাপাশি সামুদ্রিক ৪৭৫ প্রজাতির মাছের অবাধ প্রজননের জন্যই এই অবরোধ। এত বছর শুধু ইলিশ মাছের নিরাপদ প্রজননের জন্য নির্দিষ্ট কয়েকটি স্থানকে অভয়াশ্রম হিসেবে চিহ্নিত করে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হতো। এতে আমরা সফলও হয়েছি। প্রতি বছরই ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে।’
তিনি আরো জানান, অতীতের সফলতা মাথায় রেখেই মৎস্য গবেষকদের পরামর্শে গভীর সাগরে দেশীয় জলসীমায় ৬৫ দিন মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। গত দুই বছরে এই উদ্যোগে ইলিশসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের উৎপাদনও অনেক বেড়েছে।
তিনি বলেন , পটুয়াখালী জেলায় বিভিন্ন নদনদী এবং সাগরে ৭০ থেকে ৮০ হাজার জেলে মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত থাকলেও জেলা মৎস্য অফিস কর্তৃক নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা মোট ৬৭ হাজার। এর মধ্যে সমুদ্রগামী নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৪৭ হাজার ৮০৫ জন। নিষেধাজ্ঞা চলার সময় সমুদ্রগামী নিবন্ধিত প্রত্যেক জেলেকে ৮৬ কেজি চাল সরকারি খাদ্যসহায়তা দেয়া হ