ঢাকা ১২:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে বিসিআরসি’র মানববন্ধন “বাংলাদেশের হিট অফিসার কী করছেন? হিট নিয়ন্ত্রণে “ অগ্নিকাণ্ড ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে অনুদানের নগদ অর্থ সহায়তায়: আ জ ম নাসির “স্মার্ট সুদহারে বিপাকে ব্যবসায়ীরা ঢাকা মতিঝিলে ইসতেস্কার নামাজ ও দোয়া অনুষ্ঠিত প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষের শহরে অভিবাসন ও জীনবমান নিয়ে মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত রাঙ্গুনিয়ায় আ: লীগ নেতার মৃত্যুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর শোক বরিশালে বৃষ্টি কামনায় নামাজ আদায়। রুপগঞ্জ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে এক দুর্ধর্ষ ডাকাত ওমর ফারুক গ্রেফতার বানারীপাড়ায় কিশোরী অপহরণ করে ধর্ষণ। বাকেরগঞ্জ থেকে ধর্ষক গ্রেফতার।

নড়াইলের আমাদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান, আতঙ্কে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

শরিফুজ্জামান , নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইলের আমাদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে গত ৭ বছর ধরে চলছে পাঠদান। বিদ্যালয়ে নতুন কোনো ভবন নির্মাণ না হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান। এতে করে, ভয় আর আতঙ্কের মধ্যে আছে শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে স্কুল চলাকালীন সময় ওই ভবনের নবম শ্রেণির কক্ষে হঠাৎ করেই ধসে পড়ে ছাদের পলেস্তারা। মুহূর্তেই ছাদের বড় একটা অংশের দুর্বল রডগুলো বেরিয়ে যায়। আর ভেঙে পড়া পলেস্তারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে বেঞ্চের সবখানে।
তবে ভাগ্যক্রমে রক্ষা পেয়ে যান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
ঘটনার সময় তারা ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নির্বাচনী (টেস্ট) পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা থাকায় অন্য কক্ষে ছিল। আর তাতেই বড় ধরণের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় নবম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীরা।
এ ঘটনার পর থেকে রোববার (২৭ নভেম্বর) থেকে বিদ্যালয়টি চালু হলেও ওই শ্রেণিকক্ষে আর ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার আমাদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত। এরপর ১৯৯৪-৯৫ অর্থবছরে তিনরুম বিশিষ্ট একতলা ভবনটি নির্মান করা হয়। এর মধ্যে একটি কক্ষে নবম শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হচ্ছিল যেটির পলেস্তারা ভেঙে পড়েছে। এই শ্রেণিকক্ষের পাশেই প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষক ও কর্মচারীদের অফিস কক্ষ। তার পাশেই ছাত্রী মিলনায়তন। বর্তমানে তিনটি কক্ষের অবস্থা খুবই নাজুক।
বছর দুয়েক আগে শিক্ষকদের অফিস কক্ষের পলেস্তারাও ভেঙে পড়েছিল। এছাড়া কক্ষগুলোর ফ্লোর ভেঙে দেবে গেছে। সব মিলে ভবনটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তবুও নিরুপায় হয়ে ভবনটি ব্যবহার করতে হচ্ছে। কারণ, স্কুলটিতে এ ভবন ছাড়া আর কোনো পাকা ভবন নেই।
এছাড়া দুইটি টিনশেডের ঘর থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এখানে চারটি শ্রেণিকক্ষ থাকলেও প্রয়োজন রয়েছে সাতটির। আর টিনের ঘরে প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষক-কর্মচারীদের অফিস করার মতো ব্যবস্থা নেই।
স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা জানান , সেদিন জরাজীর্ণ ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ায় আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি। ভাগ্যক্রমে আমরা বেঁচে গেছি। আমরা ওখানে ঢুকতেও ভয় পাচ্ছি। আমাদের একটাই দাবি, যেন কর্তৃপক্ষ এটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে এবং নতুন একটি ভবন নির্মাণ করে দেয়।
স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক আলমগীর গাজী জানান, আমরা দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও নতুন ভবন পাচ্ছি না। ভগ্নদশা ভবনটিতে যে কোনো সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা অনেক বড় ঝুঁকিতে আছি। প্রধান শিক্ষক নির্মল কুমার কুণ্ডু জানান, স্কুলে একটি মাত্র পাকা ভবন থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিতে খুব সমস্যা হচ্ছে। আমাদের মোট ৩৫০ শিক্ষার্থী রয়েছে। অথচ, অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে। দ্রুতই আমাদের নতুন ভবন প্রয়োজন।
জেলা শিক্ষা অফিসার এস এম ছায়েদুর রহমান বলেন, বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে নতুন ভবন অনুমোদনের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

Tag :

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে বিসিআরসি’র মানববন্ধন

নড়াইলের আমাদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান, আতঙ্কে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

আপডেট টাইম ১১:০৯:১৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২২

শরিফুজ্জামান , নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইলের আমাদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে গত ৭ বছর ধরে চলছে পাঠদান। বিদ্যালয়ে নতুন কোনো ভবন নির্মাণ না হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান। এতে করে, ভয় আর আতঙ্কের মধ্যে আছে শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে স্কুল চলাকালীন সময় ওই ভবনের নবম শ্রেণির কক্ষে হঠাৎ করেই ধসে পড়ে ছাদের পলেস্তারা। মুহূর্তেই ছাদের বড় একটা অংশের দুর্বল রডগুলো বেরিয়ে যায়। আর ভেঙে পড়া পলেস্তারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে বেঞ্চের সবখানে।
তবে ভাগ্যক্রমে রক্ষা পেয়ে যান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
ঘটনার সময় তারা ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নির্বাচনী (টেস্ট) পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা থাকায় অন্য কক্ষে ছিল। আর তাতেই বড় ধরণের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় নবম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীরা।
এ ঘটনার পর থেকে রোববার (২৭ নভেম্বর) থেকে বিদ্যালয়টি চালু হলেও ওই শ্রেণিকক্ষে আর ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার আমাদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত। এরপর ১৯৯৪-৯৫ অর্থবছরে তিনরুম বিশিষ্ট একতলা ভবনটি নির্মান করা হয়। এর মধ্যে একটি কক্ষে নবম শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হচ্ছিল যেটির পলেস্তারা ভেঙে পড়েছে। এই শ্রেণিকক্ষের পাশেই প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষক ও কর্মচারীদের অফিস কক্ষ। তার পাশেই ছাত্রী মিলনায়তন। বর্তমানে তিনটি কক্ষের অবস্থা খুবই নাজুক।
বছর দুয়েক আগে শিক্ষকদের অফিস কক্ষের পলেস্তারাও ভেঙে পড়েছিল। এছাড়া কক্ষগুলোর ফ্লোর ভেঙে দেবে গেছে। সব মিলে ভবনটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তবুও নিরুপায় হয়ে ভবনটি ব্যবহার করতে হচ্ছে। কারণ, স্কুলটিতে এ ভবন ছাড়া আর কোনো পাকা ভবন নেই।
এছাড়া দুইটি টিনশেডের ঘর থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এখানে চারটি শ্রেণিকক্ষ থাকলেও প্রয়োজন রয়েছে সাতটির। আর টিনের ঘরে প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষক-কর্মচারীদের অফিস করার মতো ব্যবস্থা নেই।
স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা জানান , সেদিন জরাজীর্ণ ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ায় আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি। ভাগ্যক্রমে আমরা বেঁচে গেছি। আমরা ওখানে ঢুকতেও ভয় পাচ্ছি। আমাদের একটাই দাবি, যেন কর্তৃপক্ষ এটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে এবং নতুন একটি ভবন নির্মাণ করে দেয়।
স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক আলমগীর গাজী জানান, আমরা দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও নতুন ভবন পাচ্ছি না। ভগ্নদশা ভবনটিতে যে কোনো সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা অনেক বড় ঝুঁকিতে আছি। প্রধান শিক্ষক নির্মল কুমার কুণ্ডু জানান, স্কুলে একটি মাত্র পাকা ভবন থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিতে খুব সমস্যা হচ্ছে। আমাদের মোট ৩৫০ শিক্ষার্থী রয়েছে। অথচ, অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে। দ্রুতই আমাদের নতুন ভবন প্রয়োজন।
জেলা শিক্ষা অফিসার এস এম ছায়েদুর রহমান বলেন, বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে নতুন ভবন অনুমোদনের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।