ঢাকা ০৩:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
চট্টগ্রামে দুই চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে-২ ঘণ্টার কর্মবিরতির ঘোষণা বিএমএর হকার আর যত্রতত্র আবর্জনা কমাতে অভিযানের ঘোষণা মেয়র রেজাউলের রামগঞ্জে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী ২০২৪ অনুষ্ঠিত। অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন গজারিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে দিনভর গনসংযোগ ও লিফলেট বিতরন গজারিয়ায় নারী উদ্যোক্তা সম্মেলন অনুষ্ঠিত পুলিশের বিশেষ অভিযানে ভয়ঙ্কর ডাকাত সর্দার মামুন গ্রেফতার বগুড়ায় অবকাশ হোটেলে অবৈধ কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ৯ জন খরিদ্দারকে দুই দিনের কারাদণ্ড দিলেন আদালত নানা বাড়ি বেড়াতে এসে নদীতে ডুবে কিশোর কিশোরীর মৃত্যু চরফ্যাসনে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ৯।।

নীলফামারী থেকে চুরি যাওয়া সোনা সৈয়দপুরের রুপশী জুয়োলার্স থেকে উদ্ধার

শাহাজাহান আলী মনন, নীলফামারী জেলা সংবাদদাতা ॥ নীলফামারীর সৈয়দপুরে রোববার (২১ এপ্রিল) দিবাগত রাতে শহরের রুপশী জুয়োলার্সে অভিযান চালিয়ে চোরই সোনা উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় ২ ভরি চার আনা সোনা উদ্ধার করা হয়। নীলফামারী থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার জানান, সদর উপজেলার প্রগতিপাড়ার (আলিয়া মাদ্রাসা রোড) বাসিন্দা নীলসাগর গ্রুপের পরিচালক (কৃষি) মো: আব্দুল আজিজ গত ১২ এপ্রিল নীলফামারী থানায় এজাহার দায়ের করেন। মামলাটি রেকর্ড হয় পরদিন ১৩ এপ্রিল। এজাহারে উল্লেখ করেন, বাসা থেকে ৮ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের ২৭ ভরি সোনা ও নগদ ২ লাখ টাকা চুরি যায়। এনিয়ে তদন্ত করে গত ২০ এপ্রিল সোনা চুরির দায়ে সদর উপজেলার প্রগতি পাড়ার মৃত. হোদোর ছেলে লিটন (৩২) কে আটক করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২১ এপ্রিল রোববার সৈয়দপুর শহরের (শেরে বাংলা) সিনেমা সড়কের রুপশী জুয়েলার্সে অভিযান চালিয়ে সোয়া দুই ভরি সোনা উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে তাপস নামে এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সৈয়দপুর থানায় নিয়ে আসা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, সৈয়দপুর সার্কেলের (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) অশোক কুমার পাল ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: শাহজাহান উপস্থিত ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদে আটক তাপস সরল বিশ্বাসে সোনা কিনেছেন বলে জানান। পরে তাকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। গভীর রাতে তাপসকে ছেড়ে দেয়ায় সৈয়দপুরের স্বর্ণ ব্যবসায়ী মালিকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। কারণ তাদের অধিকাংশের ধারণা চোরাই সোনা কেনাসহ চুরির সাথেও তাপসের সম্পৃক্ততা রয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার বাদি মো: আব্দুল আজিজের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, গত ১২ এপ্রিল দিবাগত রাতে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে আমার দ্বিতল ভবনের ছাদের তালা ভেঙ্গে প্রবেশ করে বাসায় রক্ষিত স্টিলের আলমিরার তালা ভেঙ্গে ৮ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের ২৭ ভরি সোনা ও নগদ ২ লাখ টাকা চুরি করে অজ্ঞাত চোরেরা। এনিয়ে থানায় অভিযোগ করলে প্রথমে প্রতিবেশী হোদোর ছেলে লিটনকে আটক করে পুলিশ। পরে তার তথ্যের ভিত্তিতে সৈয়দপুরের রুপশী জুয়েলার্স থেকে ২ ভরি ৪ আনা সোনা উদ্ধার করা হয় এবং আটক জুয়েলার্স মালিকের ছেলে তাপসকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া হয়। আমার ধারণা তাপসকে ভালোভাবে জিজ্ঞসাবাদ করা হলে আমার চুরি যাওয়া সম্পূর্ণ সোনা ও নগদ টাকা উদ্ধার করা যাবে। এদিকে বিভিন্ন সূত্রের অভিযোগ, সৈয়দপুরের কয়েকটি জুয়েলার্স দোকান মালিক ও স্বর্ণ শিল্পী তথা কারিগর চোরাই সোনা কেনা বা চুরির সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে। এদের সাথে সোনা চোরদের আতাত রয়েছে। এরা চুরির বিষয়টি ধামাপচা দেয়া বা চুরির সাথে সম্পৃক্তদের রক্ষায় প্রশাসনসহ বিভিন্ন পর্যায়ে দেখাশোনা করে থাকে। যারা সৈয়দপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চুরি যাওয়া সোনা অল্প দামে কিনে গলানোর মাধ্যমে বাজারজাত করে আসছে। তাই এ সূত্রগুলোর দাবি আটক তাপসকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এ সিন্ডিকেটের সাথে জড়িতদের বিষয়ে আরও তথ্য বেড়িয়ে আসবে। এতে নীলফামারী থেকে চুরি যাওয়া সোনার বাকিটুকুও উদ্ধার করা সম্ভব হতে পারে। তাছাড়া মূল হোতাদের ধরা সহজ হবে। কারণ ইতোপূর্বেও সৈয়দপুরে চোরাই সোনাসহ একাধিক ব্যবসায়ী আটকের ঘটনা ঘটেছে। সেসময়ও প্রশাসন তৎপর না হওযায় ওই ঘটনাগুলোর শেষ পর্যন্ত কোন সুরাহা হয়নি। পুলিশ আটকের বিষয়ে কথা হলে তাপস জানান, ভূল বোঝাবুঝির কারণে পুলিশ আমাকে দোকান থেকে আটক করে সৈয়দপুর থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আমাকে ছেড়ে দিয়েছে। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) নীলফামারী জেলা শাখার সভাপতি ও সৈয়দপুর শহরের বৌরানী জুযেলার্সের মালিক গোলাম রব্বানীর ০১৭২০২৬৩৪৮৩ নম্বরের মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি রিসিভ না করায় তার মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এব্যাপারে সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: শাহজাহান জানান, মামলাটি নীলফামারী থানায় হয়েছে। আপনারা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই প্রদীপ কুমারের সাথে যোগযোগ করেন। মামলার তদন্তকারী এস আই প্রদীপ কুমারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, চোর লিটনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রুপশী জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী রমেশ কর্মকারের ছেলে তাপস কর্মকারকে আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার কাছ থেকে ২ ভরি ৪ আনা সোনা উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু সোনা চুরির সাথে তার সম্পৃক্ততা নিশ্চিত না হওয়ায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সৈয়দপুর সার্কেলের (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) অশোক কুমার পাল জানান, রুপশী জুয়েলার্সের মালিক তাপস সরল বিশ্বাসে সোনা কিনেছেন। বিষয়টি প্রমানিত হওয়ায় তাকে মুচলেকায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

চট্টগ্রামে দুই চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে-২ ঘণ্টার কর্মবিরতির ঘোষণা বিএমএর

নীলফামারী থেকে চুরি যাওয়া সোনা সৈয়দপুরের রুপশী জুয়োলার্স থেকে উদ্ধার

আপডেট টাইম ০৬:২৩:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০১৯

শাহাজাহান আলী মনন, নীলফামারী জেলা সংবাদদাতা ॥ নীলফামারীর সৈয়দপুরে রোববার (২১ এপ্রিল) দিবাগত রাতে শহরের রুপশী জুয়োলার্সে অভিযান চালিয়ে চোরই সোনা উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় ২ ভরি চার আনা সোনা উদ্ধার করা হয়। নীলফামারী থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার জানান, সদর উপজেলার প্রগতিপাড়ার (আলিয়া মাদ্রাসা রোড) বাসিন্দা নীলসাগর গ্রুপের পরিচালক (কৃষি) মো: আব্দুল আজিজ গত ১২ এপ্রিল নীলফামারী থানায় এজাহার দায়ের করেন। মামলাটি রেকর্ড হয় পরদিন ১৩ এপ্রিল। এজাহারে উল্লেখ করেন, বাসা থেকে ৮ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের ২৭ ভরি সোনা ও নগদ ২ লাখ টাকা চুরি যায়। এনিয়ে তদন্ত করে গত ২০ এপ্রিল সোনা চুরির দায়ে সদর উপজেলার প্রগতি পাড়ার মৃত. হোদোর ছেলে লিটন (৩২) কে আটক করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২১ এপ্রিল রোববার সৈয়দপুর শহরের (শেরে বাংলা) সিনেমা সড়কের রুপশী জুয়েলার্সে অভিযান চালিয়ে সোয়া দুই ভরি সোনা উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে তাপস নামে এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সৈয়দপুর থানায় নিয়ে আসা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, সৈয়দপুর সার্কেলের (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) অশোক কুমার পাল ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: শাহজাহান উপস্থিত ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদে আটক তাপস সরল বিশ্বাসে সোনা কিনেছেন বলে জানান। পরে তাকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। গভীর রাতে তাপসকে ছেড়ে দেয়ায় সৈয়দপুরের স্বর্ণ ব্যবসায়ী মালিকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। কারণ তাদের অধিকাংশের ধারণা চোরাই সোনা কেনাসহ চুরির সাথেও তাপসের সম্পৃক্ততা রয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার বাদি মো: আব্দুল আজিজের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, গত ১২ এপ্রিল দিবাগত রাতে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে আমার দ্বিতল ভবনের ছাদের তালা ভেঙ্গে প্রবেশ করে বাসায় রক্ষিত স্টিলের আলমিরার তালা ভেঙ্গে ৮ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের ২৭ ভরি সোনা ও নগদ ২ লাখ টাকা চুরি করে অজ্ঞাত চোরেরা। এনিয়ে থানায় অভিযোগ করলে প্রথমে প্রতিবেশী হোদোর ছেলে লিটনকে আটক করে পুলিশ। পরে তার তথ্যের ভিত্তিতে সৈয়দপুরের রুপশী জুয়েলার্স থেকে ২ ভরি ৪ আনা সোনা উদ্ধার করা হয় এবং আটক জুয়েলার্স মালিকের ছেলে তাপসকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া হয়। আমার ধারণা তাপসকে ভালোভাবে জিজ্ঞসাবাদ করা হলে আমার চুরি যাওয়া সম্পূর্ণ সোনা ও নগদ টাকা উদ্ধার করা যাবে। এদিকে বিভিন্ন সূত্রের অভিযোগ, সৈয়দপুরের কয়েকটি জুয়েলার্স দোকান মালিক ও স্বর্ণ শিল্পী তথা কারিগর চোরাই সোনা কেনা বা চুরির সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে। এদের সাথে সোনা চোরদের আতাত রয়েছে। এরা চুরির বিষয়টি ধামাপচা দেয়া বা চুরির সাথে সম্পৃক্তদের রক্ষায় প্রশাসনসহ বিভিন্ন পর্যায়ে দেখাশোনা করে থাকে। যারা সৈয়দপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চুরি যাওয়া সোনা অল্প দামে কিনে গলানোর মাধ্যমে বাজারজাত করে আসছে। তাই এ সূত্রগুলোর দাবি আটক তাপসকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এ সিন্ডিকেটের সাথে জড়িতদের বিষয়ে আরও তথ্য বেড়িয়ে আসবে। এতে নীলফামারী থেকে চুরি যাওয়া সোনার বাকিটুকুও উদ্ধার করা সম্ভব হতে পারে। তাছাড়া মূল হোতাদের ধরা সহজ হবে। কারণ ইতোপূর্বেও সৈয়দপুরে চোরাই সোনাসহ একাধিক ব্যবসায়ী আটকের ঘটনা ঘটেছে। সেসময়ও প্রশাসন তৎপর না হওযায় ওই ঘটনাগুলোর শেষ পর্যন্ত কোন সুরাহা হয়নি। পুলিশ আটকের বিষয়ে কথা হলে তাপস জানান, ভূল বোঝাবুঝির কারণে পুলিশ আমাকে দোকান থেকে আটক করে সৈয়দপুর থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আমাকে ছেড়ে দিয়েছে। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) নীলফামারী জেলা শাখার সভাপতি ও সৈয়দপুর শহরের বৌরানী জুযেলার্সের মালিক গোলাম রব্বানীর ০১৭২০২৬৩৪৮৩ নম্বরের মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি রিসিভ না করায় তার মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এব্যাপারে সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: শাহজাহান জানান, মামলাটি নীলফামারী থানায় হয়েছে। আপনারা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই প্রদীপ কুমারের সাথে যোগযোগ করেন। মামলার তদন্তকারী এস আই প্রদীপ কুমারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, চোর লিটনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রুপশী জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী রমেশ কর্মকারের ছেলে তাপস কর্মকারকে আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার কাছ থেকে ২ ভরি ৪ আনা সোনা উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু সোনা চুরির সাথে তার সম্পৃক্ততা নিশ্চিত না হওয়ায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সৈয়দপুর সার্কেলের (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) অশোক কুমার পাল জানান, রুপশী জুয়েলার্সের মালিক তাপস সরল বিশ্বাসে সোনা কিনেছেন। বিষয়টি প্রমানিত হওয়ায় তাকে মুচলেকায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে।