ঢাকা ০৯:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রাঙ্গুনিয়ায় নববর্ষ বৈশাখী উৎসবে জলকেলি ও বলি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে বেলখাইন স্পোটিং ক্লাবের অলনাইট ফুটবল টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল সম্পন্ন বগুড়ায় চাঞ্চ্যল্যকর শিশু বন্ধনকে গলাকেটে হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন গজারিয়ায় দুই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিরুল ইসলাম এর পক্ষে গনসংযোগ ও লিফলেট বিতরন প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনী সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে আলোচনা ও পুরুষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠান –অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। চট্টগ্রামে দুই চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে-২ ঘণ্টার কর্মবিরতির ঘোষণা বিএমএর হকার আর যত্রতত্র আবর্জনা কমাতে অভিযানের ঘোষণা মেয়র রেজাউলের রামগঞ্জে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী ২০২৪ অনুষ্ঠিত। অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

নির্বাচনী মাঠে সেনাবাহিনী

ফাইল ছবি

মাতৃভূমির খবর ডেস্ক :   একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের জন্য গতকাল মধ্যরাত থেকে নির্বাচনের মাঠে নেমেছে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। আজ থেকে তারা দায়িত্ব পালন শুরু করবেন। নির্বাচনী দায়িত্বে থাকবেন ২ জানুয়ারি পর্যন্ত। ভোট গ্রহণের আগে, ভোট গ্রহণের দিন ও পরে শান্তিশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় থাকবেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা।

এবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী পাঁচ বছর আগে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চাইতে কার্যকরভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে বলেই নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অনেকেরই ধারণা। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনা মোতায়নে করা হয়েছিল ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৯ থেকে ১৩০ ধারায়। আর এবারে মোতায়েন হচ্ছে ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৭ থেকে ১৩২ ধারায়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘ইন্সট্রাকশন রিগার্ডিং ইন এইড টু দ্যা সিভিল পাওয়ার’ অনুযায়ী কাজ করবেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। তারা মূলত জেলা, উপজেলা ও মহানগর এলাকার সংযোগ স্থলে (নডাল পয়েন্ট) অবস্থান করবেন, প্রয়োজন অনুযায়ী রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে টহল ও অন্যান্য আভিযানিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জারি করা এ সংক্রান্ত পরিপত্রে সশস্ত্র বাহিনীর এই কর্মপরিধি নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বুধবার এই পরিপত্র জারি করা হয়েছে। পরিপত্রে বলা হয়— ২৪ ডিসেম্বর থেকে আগামী ২ জানুয়ারি পর্যন্ত মাঠে থাকবে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। রিটার্নিং অফিসার সহায়তা চাইলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে তারা সহায়তা করবেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজন অনুসারে উপজেলা/থানায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ করা হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা বা প্রিসাইডিং কর্মকর্তার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে তার ভোট কেন্দ্রের ভিতরে বা ভোট গণনাকক্ষের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজন অনুযায়ী বা নির্দেশক্রমে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক-মহাসড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজনে ইসির কাজে যাবতীয় সহায়তা দেবে সশস্ত্র বাহিনী।

পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, অবৈধ সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে সশস্ত্র বাহিনীকে ডাকা হলে, তারা ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৭ থেকে ১৩২ ধারা অনুযায়ী কাজ করবে। এ ক্ষেত্রে অন্য কোনো উপায়ে বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করা না গেলে ঘটনাস্থলে থাকা সর্বোচ্চ পদের ম্যাজিস্ট্রেট সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ ও গ্রেফতারের নির্দেশ দিতে পারবেন। জরুরি পরিস্থিতিতে যদি কোনো ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হয়, সে ক্ষেত্রে কমিশন্ড অফিসার সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ এবং গ্রেফতার করার নির্দেশ দিতে পারবেন। সামরিক শক্তি প্রয়োগের জন্য ম্যাজিস্ট্রেটকে লিখিত নির্দেশ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা না থাকলেও, মৌখিক নির্দেশ দেওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব তা লিখিত আকারে দেবেন।

প্রথমবারের মত জাতীয় সংসদের ৬টি আসনের (রংপুর-৩, খুলনা-২, সাতক্ষীরা-২, ঢাকা-৬, ঢাকা-১৩ এবং চট্টগ্রাম-৯ আসনে ইভিএম ব্যবহার করে ভোট গ্রহণ করা হবে। ইতিমধ্যে দুই পর্যায়ে ইভিএম এর উপর সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করা হয়েছে এবং তৃতীয় পর্যায়ে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জনসচেতনতা ও প্রচারণা কার্যক্রমে ইভিএম-এর উপর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণ কারিগরী হিসেবে অংশগ্রহণ করছে। ৬টি নির্বাচনী আসনে ইভিএম ব্যবহার করে ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় কারিগরী সহায়তা প্রদানের জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে ০৩ জন করে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়াও উক্ত আসনসমূহের জন্য বিভিন্ন পর্যায়ের ইভিএম সংক্রান্ত কারিগরী সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য প্রস্তুত থাকবে।

উল্লেখ্য, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০১৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৫ দিন মাঠে ছিল সেনাবাহিনী। তারা সাধারণ এলাকায় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মেট্রোপলিটন এলাকায় একজন কমিশনারের অধীনে দায়িত্ব পালন করে। ওই নির্বাচনে সারাদেশে প্রায় ৫০ হাজার সেনাসদস্য দায়িত্ব পালন করেন। এক্ষেত্রে প্রতিটি জেলায় একটি ব্যাটালিয়ন (৭৪০ সদস্য) ও প্রতিটি উপজেলায় এক প্লাটুন (৩৫ জন) সেনাসদস্য দায়িত্ব পালন করেন।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

রাঙ্গুনিয়ায় নববর্ষ বৈশাখী উৎসবে জলকেলি ও বলি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে

নির্বাচনী মাঠে সেনাবাহিনী

আপডেট টাইম ০৬:৪২:৫৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮

মাতৃভূমির খবর ডেস্ক :   একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের জন্য গতকাল মধ্যরাত থেকে নির্বাচনের মাঠে নেমেছে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। আজ থেকে তারা দায়িত্ব পালন শুরু করবেন। নির্বাচনী দায়িত্বে থাকবেন ২ জানুয়ারি পর্যন্ত। ভোট গ্রহণের আগে, ভোট গ্রহণের দিন ও পরে শান্তিশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় থাকবেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা।

এবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী পাঁচ বছর আগে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চাইতে কার্যকরভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে বলেই নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অনেকেরই ধারণা। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনা মোতায়নে করা হয়েছিল ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৯ থেকে ১৩০ ধারায়। আর এবারে মোতায়েন হচ্ছে ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৭ থেকে ১৩২ ধারায়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘ইন্সট্রাকশন রিগার্ডিং ইন এইড টু দ্যা সিভিল পাওয়ার’ অনুযায়ী কাজ করবেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। তারা মূলত জেলা, উপজেলা ও মহানগর এলাকার সংযোগ স্থলে (নডাল পয়েন্ট) অবস্থান করবেন, প্রয়োজন অনুযায়ী রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে টহল ও অন্যান্য আভিযানিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জারি করা এ সংক্রান্ত পরিপত্রে সশস্ত্র বাহিনীর এই কর্মপরিধি নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বুধবার এই পরিপত্র জারি করা হয়েছে। পরিপত্রে বলা হয়— ২৪ ডিসেম্বর থেকে আগামী ২ জানুয়ারি পর্যন্ত মাঠে থাকবে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। রিটার্নিং অফিসার সহায়তা চাইলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে তারা সহায়তা করবেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজন অনুসারে উপজেলা/থানায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ করা হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা বা প্রিসাইডিং কর্মকর্তার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে তার ভোট কেন্দ্রের ভিতরে বা ভোট গণনাকক্ষের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজন অনুযায়ী বা নির্দেশক্রমে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক-মহাসড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজনে ইসির কাজে যাবতীয় সহায়তা দেবে সশস্ত্র বাহিনী।

পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, অবৈধ সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে সশস্ত্র বাহিনীকে ডাকা হলে, তারা ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৭ থেকে ১৩২ ধারা অনুযায়ী কাজ করবে। এ ক্ষেত্রে অন্য কোনো উপায়ে বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করা না গেলে ঘটনাস্থলে থাকা সর্বোচ্চ পদের ম্যাজিস্ট্রেট সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ ও গ্রেফতারের নির্দেশ দিতে পারবেন। জরুরি পরিস্থিতিতে যদি কোনো ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হয়, সে ক্ষেত্রে কমিশন্ড অফিসার সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ এবং গ্রেফতার করার নির্দেশ দিতে পারবেন। সামরিক শক্তি প্রয়োগের জন্য ম্যাজিস্ট্রেটকে লিখিত নির্দেশ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা না থাকলেও, মৌখিক নির্দেশ দেওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব তা লিখিত আকারে দেবেন।

প্রথমবারের মত জাতীয় সংসদের ৬টি আসনের (রংপুর-৩, খুলনা-২, সাতক্ষীরা-২, ঢাকা-৬, ঢাকা-১৩ এবং চট্টগ্রাম-৯ আসনে ইভিএম ব্যবহার করে ভোট গ্রহণ করা হবে। ইতিমধ্যে দুই পর্যায়ে ইভিএম এর উপর সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করা হয়েছে এবং তৃতীয় পর্যায়ে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জনসচেতনতা ও প্রচারণা কার্যক্রমে ইভিএম-এর উপর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণ কারিগরী হিসেবে অংশগ্রহণ করছে। ৬টি নির্বাচনী আসনে ইভিএম ব্যবহার করে ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় কারিগরী সহায়তা প্রদানের জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে ০৩ জন করে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়াও উক্ত আসনসমূহের জন্য বিভিন্ন পর্যায়ের ইভিএম সংক্রান্ত কারিগরী সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য প্রস্তুত থাকবে।

উল্লেখ্য, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০১৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৫ দিন মাঠে ছিল সেনাবাহিনী। তারা সাধারণ এলাকায় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মেট্রোপলিটন এলাকায় একজন কমিশনারের অধীনে দায়িত্ব পালন করে। ওই নির্বাচনে সারাদেশে প্রায় ৫০ হাজার সেনাসদস্য দায়িত্ব পালন করেন। এক্ষেত্রে প্রতিটি জেলায় একটি ব্যাটালিয়ন (৭৪০ সদস্য) ও প্রতিটি উপজেলায় এক প্লাটুন (৩৫ জন) সেনাসদস্য দায়িত্ব পালন করেন।