ঢাকা ০৯:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষের শহরে অভিবাসন ও জীনবমান নিয়ে মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত রাঙ্গুনিয়ায় আ: লীগ নেতার মৃত্যুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর শোক বরিশালে বৃষ্টি কামনায় নামাজ আদায়। রুপগঞ্জ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে এক দুর্ধর্ষ ডাকাত ওমর ফারুক গ্রেফতার বানারীপাড়ায় কিশোরী অপহরণ করে ধর্ষণ। বাকেরগঞ্জ থেকে ধর্ষক গ্রেফতার। “কোলোরেক্টাল ক্যান্সার সচেতনতা ফোরামের আয়োজন করেছে এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা” বরিশালে পথ শিশুদের সহযোগিতায় কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। গজারিয়ায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান দুই প্রতিষ্ঠান কে অর্থদন্ড টেকপাড়া ও ইয়াকুব নগরের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্হদের মাঝে নগর অর্থ ও বস্ত্র বিতরণ বাস ও ফুটওভার ব্রিজ মুখোমুখি সংঘর্ষ

দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে জ্বালানি তেল ও ডলারের দাম

দুই বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্ববাজারে অল্প অল্প করে হলেও বাড়ছে জ্বালানি তেলের দাম। একই সঙ্গে দেশে বাড়ছে এর ব্যবহার ও আমদানি। আমদানির সঙ্গে জড়িত মার্কিন ডলার। সেই ডলারের দামও প্রায় দুই বছর ধরে বাড়ছে। এসবের পুঞ্জীভূত প্রভাবে জ্বালানি তেল আমদানি ও বিপণনে এ বছর প্রায় আট হাজার কোটি টাকা (প্রায় ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার) লোকসানের আশঙ্কা করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)।

বিপিসির সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে তাদের যে তেলের চালান এসেছিল, তাতে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম পড়েছিল ৪৩ দশমিক ১৭ ডলার। আর গত আগস্টে তারা আমদানি করেছে প্রতি ব্যারেল ৮১ দশমিক ৫১ ডলারে। ২০১৬ পর্যন্ত বিপিসি অবশ্য মুনাফা করেছিল প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। তখনো জ্বালানি তেলের মূল্য তেমন কমানো হয়নি।

আমদানি করা জ্বালানি তেলের অর্ধেকের বেশি ডিজেল। ২০১৬ সালের এপ্রিলে প্রতি ব্যারেল ডিজেল আমদানি করা হয়েছে ৫০ দশমিক ৩০ ডলারে। গত আগস্টে সেই দাম বেড়ে হয়েছে ৯১ দশমিক ৭০ ডলার। বিশ্ববাজারে মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা এখনো অব্যাহত রয়েছে। তবে সরকারি-বেসরকারি খাতের অনেকের ধারণা, আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে জ্বালানি তেলের দাম কমতে শুরু করবে।

জানতে চাইলে বিশিষ্ট জ্বালানি বিশেষজ্ঞ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ম. তামিম প্রথম আলোকে বলেন, জ্বালানি তেলের দাম কখন বাড়বে, আর কখন কমবে, তা অনুমান করা খুব কঠিন। বিশ্বব্যাংকসহ অনেকেরই পূর্বাভাস ছিল আগামী ডিসেম্বর নাগাদ দাম ৮০ ডলারে উঠবে। কিন্তু সেপ্টেম্বরেই ৮০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। আবার ইরানের সঙ্গে ইউরোপের চুক্তি হলেই দাম কমতে শুরু করবে। এই দাম কমা-বাড়ার বিষয়ে বাংলাদেশের কিছু করার নেই।

ম. তামিম আরও বলেন, বাংলাদেশের যেটা করা দরকার, সেট হলো নিজেদের জ্বালানিসম্পদ আহরণে ও ব্যবহারের পরিমাণ বাড়ানো। তেলের দাম প্রায় দুই বছর অনেক কম ছিল। ওই সময়ের মধ্যে নিজেদের সম্পদ আহরণের হার বাড়াতে পারলে এখনকার মূল্যবৃদ্ধি গায়ে লাগত না। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা নিজেদের জ্বালানিসম্পদ অনুসন্ধান ও আহরণ বাড়াতে না পারা।

বর্তমান দামে প্রতি লিটার ডিজেলে বিপিসির লোকসান হচ্ছে প্রায় ৯ টাকা। আর প্রতি লিটার ফার্নেস অয়েলে লোকসান ১২ টাকার বেশি। সব মিলে বর্তমানে বিপিসির প্রতিদিনের লোকসান প্রায় ২০ কোটি টাকা। মাসে লোকসান হচ্ছে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা।

প্রায় তিন বছর ধরে দেশে অকটেন ও পেট্রল আমদানি করতে হচ্ছে না। দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে গ্যাসের উপজাত হিসেবে পাওয়া কনডেনসেট দিয়ে দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে চাহিদার শতভাগ অকটেন-পেট্রল। ফলে এই দুটি পণ্যে সরকারের মুনাফা হচ্ছে।

মূল্যবৃদ্ধির কারণে ডিজেলচালিত কেন্দ্রগুলোতে উৎপাদিত প্রতি ইউনিট (এক কিলোওয়াট ঘণ্টা) বিদ্যুতের দাম পড়ছে এখন প্রায় ১৫ টাকা, যা ২০১৬ সালে ছিল ৯ টাকার মতো। আর ফার্নেস অয়েলচালিত কেন্দ্রগুলোতে উৎপাদিত প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম এখন পড়ছে প্রায় ১০ টাকা, যা প্রায় পাঁচ টাকায় নেমেছিল।

আমদানির সঙ্গে একসূত্রে গাঁথা হচ্ছে ডলার। প্রায় দুই বছর ধরে ডলারের দাম বাড়ছে। অর্থাৎ টাকার মূল্যমান কমছে। এই কারণেও জ্বালানির আমদানি ব্যয় অনেকটাই বেড়েছে। বর্তমানে দেশে ১ মার্কিন ডলারের দাম ৮৩ টাকা ৭৫ পয়সা, যা ২০১৬ সালে ৮০ টাকার কম ছিল।

২০১৬ সালে দেশে জ্বালানি তেল আমদানি করা হয়েছে ৬৪ লাখ টনের মতো। ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় এ বছর আমদানি করতে হবে ৭০ লাখ টনের কিছু বেশি। আর আগামী বছর আমদানির পূর্বাভাস হচ্ছে ৭৫ লাখ টন।

জ্বালানি তেলের পাশাপাশি আমদানি পণ্যের তালিকায় যুক্ত হয়েছে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি)। এলএনজির আমদানিও বিপুল ব্যয়সাপেক্ষ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, এর ফলে রাষ্ট্রীয় কোষাগার ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ বাড়ছে ঠিকই। আবার এসব জ্বালানি ব্যবহারে জাতীয় উৎপাদন ও প্রবৃদ্ধিও বাড়ছে। তবে জ্বালানির দাম না বাড়লে দেশের জন্য আরও ভালো হতো।

জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সূত্রে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রায় চার দশক আগে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) গঠিত হওয়ার পর থেকে চলতি আগস্ট পর্যন্ত ৪০ বছরের মধ্যে বিপিসি লোকসান দিয়েছে ২০ বছর। আর ২০ বছর মুনাফা করেছে। এই লাভ-লোকসান সমন্বয় করার জন্য সরকার বিপিসিকে ভর্তুকি বা ঋণ হিসেবে দিয়েছে ৩৯ হাজার কোটি টাকা। আর বিপিসির কাছ থেকে শুল্ক, কর ও মূসক বাবদ মোট নিয়েছে ৭৫ হাজার ৫৫২ কোটি টাকা।

এ ছাড়া ২০১৪-১৫ সাল পর্যন্ত বিপিসির যে মুনাফা হয়েছে, তার ওপর থেকে লভ্যাংশ (ডিভিডেন্ট) হিসেবে সরকার আরও নিয়েছে ১ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা। ২০১৪ সালের জুন থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম অব্যাহতভাবে কমতে থাকে। এই দাম কমার সুযোগ নিয়ে বিপিসি মুনাফা করেছে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। এ থেকেও সরকার প্রায় আট হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছে।

সরকারি-বেসরকারি সূত্রগুলো জানায়, দাম যতই বাড়ুক, নির্বাচন সামনে রেখে সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়াবে না। ‘পলিটিক্যাল সাবসিডি’ দিয়ে চলবে। তবে অপেক্ষাকৃত কম দামের সুযোগে বাংলাদেশ থেকে ভারতে জ্বালানি তেল পাচার হয় কি না, সে বিষয়ে বিশেষ নজরদারি দরকার। তা না হলে রাষ্ট্রীয় কোষাগার ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ আরও বাড়বে।

Tag :

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষের শহরে অভিবাসন ও জীনবমান নিয়ে মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত

দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে জ্বালানি তেল ও ডলারের দাম

আপডেট টাইম ০৫:১৬:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ অক্টোবর ২০১৮

দুই বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্ববাজারে অল্প অল্প করে হলেও বাড়ছে জ্বালানি তেলের দাম। একই সঙ্গে দেশে বাড়ছে এর ব্যবহার ও আমদানি। আমদানির সঙ্গে জড়িত মার্কিন ডলার। সেই ডলারের দামও প্রায় দুই বছর ধরে বাড়ছে। এসবের পুঞ্জীভূত প্রভাবে জ্বালানি তেল আমদানি ও বিপণনে এ বছর প্রায় আট হাজার কোটি টাকা (প্রায় ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার) লোকসানের আশঙ্কা করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)।

বিপিসির সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে তাদের যে তেলের চালান এসেছিল, তাতে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম পড়েছিল ৪৩ দশমিক ১৭ ডলার। আর গত আগস্টে তারা আমদানি করেছে প্রতি ব্যারেল ৮১ দশমিক ৫১ ডলারে। ২০১৬ পর্যন্ত বিপিসি অবশ্য মুনাফা করেছিল প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। তখনো জ্বালানি তেলের মূল্য তেমন কমানো হয়নি।

আমদানি করা জ্বালানি তেলের অর্ধেকের বেশি ডিজেল। ২০১৬ সালের এপ্রিলে প্রতি ব্যারেল ডিজেল আমদানি করা হয়েছে ৫০ দশমিক ৩০ ডলারে। গত আগস্টে সেই দাম বেড়ে হয়েছে ৯১ দশমিক ৭০ ডলার। বিশ্ববাজারে মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা এখনো অব্যাহত রয়েছে। তবে সরকারি-বেসরকারি খাতের অনেকের ধারণা, আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে জ্বালানি তেলের দাম কমতে শুরু করবে।

জানতে চাইলে বিশিষ্ট জ্বালানি বিশেষজ্ঞ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ম. তামিম প্রথম আলোকে বলেন, জ্বালানি তেলের দাম কখন বাড়বে, আর কখন কমবে, তা অনুমান করা খুব কঠিন। বিশ্বব্যাংকসহ অনেকেরই পূর্বাভাস ছিল আগামী ডিসেম্বর নাগাদ দাম ৮০ ডলারে উঠবে। কিন্তু সেপ্টেম্বরেই ৮০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। আবার ইরানের সঙ্গে ইউরোপের চুক্তি হলেই দাম কমতে শুরু করবে। এই দাম কমা-বাড়ার বিষয়ে বাংলাদেশের কিছু করার নেই।

ম. তামিম আরও বলেন, বাংলাদেশের যেটা করা দরকার, সেট হলো নিজেদের জ্বালানিসম্পদ আহরণে ও ব্যবহারের পরিমাণ বাড়ানো। তেলের দাম প্রায় দুই বছর অনেক কম ছিল। ওই সময়ের মধ্যে নিজেদের সম্পদ আহরণের হার বাড়াতে পারলে এখনকার মূল্যবৃদ্ধি গায়ে লাগত না। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা নিজেদের জ্বালানিসম্পদ অনুসন্ধান ও আহরণ বাড়াতে না পারা।

বর্তমান দামে প্রতি লিটার ডিজেলে বিপিসির লোকসান হচ্ছে প্রায় ৯ টাকা। আর প্রতি লিটার ফার্নেস অয়েলে লোকসান ১২ টাকার বেশি। সব মিলে বর্তমানে বিপিসির প্রতিদিনের লোকসান প্রায় ২০ কোটি টাকা। মাসে লোকসান হচ্ছে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা।

প্রায় তিন বছর ধরে দেশে অকটেন ও পেট্রল আমদানি করতে হচ্ছে না। দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে গ্যাসের উপজাত হিসেবে পাওয়া কনডেনসেট দিয়ে দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে চাহিদার শতভাগ অকটেন-পেট্রল। ফলে এই দুটি পণ্যে সরকারের মুনাফা হচ্ছে।

মূল্যবৃদ্ধির কারণে ডিজেলচালিত কেন্দ্রগুলোতে উৎপাদিত প্রতি ইউনিট (এক কিলোওয়াট ঘণ্টা) বিদ্যুতের দাম পড়ছে এখন প্রায় ১৫ টাকা, যা ২০১৬ সালে ছিল ৯ টাকার মতো। আর ফার্নেস অয়েলচালিত কেন্দ্রগুলোতে উৎপাদিত প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম এখন পড়ছে প্রায় ১০ টাকা, যা প্রায় পাঁচ টাকায় নেমেছিল।

আমদানির সঙ্গে একসূত্রে গাঁথা হচ্ছে ডলার। প্রায় দুই বছর ধরে ডলারের দাম বাড়ছে। অর্থাৎ টাকার মূল্যমান কমছে। এই কারণেও জ্বালানির আমদানি ব্যয় অনেকটাই বেড়েছে। বর্তমানে দেশে ১ মার্কিন ডলারের দাম ৮৩ টাকা ৭৫ পয়সা, যা ২০১৬ সালে ৮০ টাকার কম ছিল।

২০১৬ সালে দেশে জ্বালানি তেল আমদানি করা হয়েছে ৬৪ লাখ টনের মতো। ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় এ বছর আমদানি করতে হবে ৭০ লাখ টনের কিছু বেশি। আর আগামী বছর আমদানির পূর্বাভাস হচ্ছে ৭৫ লাখ টন।

জ্বালানি তেলের পাশাপাশি আমদানি পণ্যের তালিকায় যুক্ত হয়েছে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি)। এলএনজির আমদানিও বিপুল ব্যয়সাপেক্ষ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, এর ফলে রাষ্ট্রীয় কোষাগার ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ বাড়ছে ঠিকই। আবার এসব জ্বালানি ব্যবহারে জাতীয় উৎপাদন ও প্রবৃদ্ধিও বাড়ছে। তবে জ্বালানির দাম না বাড়লে দেশের জন্য আরও ভালো হতো।

জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সূত্রে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রায় চার দশক আগে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) গঠিত হওয়ার পর থেকে চলতি আগস্ট পর্যন্ত ৪০ বছরের মধ্যে বিপিসি লোকসান দিয়েছে ২০ বছর। আর ২০ বছর মুনাফা করেছে। এই লাভ-লোকসান সমন্বয় করার জন্য সরকার বিপিসিকে ভর্তুকি বা ঋণ হিসেবে দিয়েছে ৩৯ হাজার কোটি টাকা। আর বিপিসির কাছ থেকে শুল্ক, কর ও মূসক বাবদ মোট নিয়েছে ৭৫ হাজার ৫৫২ কোটি টাকা।

এ ছাড়া ২০১৪-১৫ সাল পর্যন্ত বিপিসির যে মুনাফা হয়েছে, তার ওপর থেকে লভ্যাংশ (ডিভিডেন্ট) হিসেবে সরকার আরও নিয়েছে ১ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা। ২০১৪ সালের জুন থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম অব্যাহতভাবে কমতে থাকে। এই দাম কমার সুযোগ নিয়ে বিপিসি মুনাফা করেছে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। এ থেকেও সরকার প্রায় আট হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছে।

সরকারি-বেসরকারি সূত্রগুলো জানায়, দাম যতই বাড়ুক, নির্বাচন সামনে রেখে সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়াবে না। ‘পলিটিক্যাল সাবসিডি’ দিয়ে চলবে। তবে অপেক্ষাকৃত কম দামের সুযোগে বাংলাদেশ থেকে ভারতে জ্বালানি তেল পাচার হয় কি না, সে বিষয়ে বিশেষ নজরদারি দরকার। তা না হলে রাষ্ট্রীয় কোষাগার ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ আরও বাড়বে।