সানোয়ার আরিফ (রাজশাহী ব্যুরো)
রাজশাহীর দুর্গাপুর সদর হোজা নদীর ওপর দিয়ে নির্মিত ঝুঁকিপূর্ণ বেইলী ব্রীজ। চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে এই উপজেলার মানুষ। যে কোন সময় ঘটেযেতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা। স্কুল কলেজ খোলার পর হাজারও শিক্ষার্থীর পারাপারের ভরসা এই বেইলী ব্রীজ। দুঘর্টনার কথা চিন্তা করে সিংগা হাট, দুর্গাপুর বাজার দোকান সমিতি,সাধারণ জনগণ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা ব্রীজ সংস্কারের দাবিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ ও স্থানীয় সুত্রে জানাযায়, গত ২০১০-১১সালে দুর্গাপুর সদর হোজা নদীর উপর সেতু নির্মাণ করে রাজশাহী সড়ক ও জনপদ বিভাগ। সেতু নির্মাণ কালে বিকল্প সংযোগ সেতু হিসেবে ঠিক তারই পাশেই নদীর উপর একটি বেইলী ব্রীজ নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের পর থেকে বিকল্প হিসেবে ব্রীজটি খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠে। প্রতিদিন দুর্গাপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, সিংগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সিংগা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, দুর্গাপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও একটি কিন্ডার গার্ডেন কেজি স্কুলের হাজারও শিক্ষার্থী, সিংগা হাটের জনসাধারণ, থানা স্টাফ ও কালিমন্দিরে লোকজন যাতায়াত করে এই ব্রীজটির উপর দিয়ে। বর্তমানে ব্রীজটি যাতায়াতের একবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্ট্রীলের ব্রীজ দীর্ঘ দিন সংস্কার না হয়ে মরিচা ধরে খসে পড়ে মারাত্নক নিচের অংশ ফাকা হয়ে পড়েছে। ফলে দুর্গাপুর সদর সিংগা হাটবাজারের লোকজন সহ প্রায় ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াত চরম ঝুঁকিতে পরিনত হয়েছে।
দুর্গাপুর বাজারের ব্যবসায়ী আঃ মোতালেব জানান, এই বেইলী ব্রীজকে কেন্দ্র করে অসংখ্য দোকানপাট নির্মাণ হয়েছে। যেখানে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করে রুজি রোজগার করছেন। এছাড়াও প্রায় ৫ টি স্কুলের শিক্ষার্থীরা বিকল্প পথ হিসেবে এই ব্রীজের ওপর দিয়ে যাতায়াত করেন। ব্রীজটি নতুন সংস্কারের নির্মাণের দাবিতে গণ স্বাক্ষরিত অভিযোগ বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে।
সিংগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষার্থী বলেন, প্রতিদিনই বাজারের প্রধান রাস্তায় প্রচন্ড ভিড় থাকে। আমরা শিক্ষার্থীরা বিকল্প পথ হিসেবে বেইলী ব্রীজ দিয়ে যাতায়াত করি। তবে এ ব্রীজের অবস্থা এখন খারাপ হয়ে পড়েছে। যে কোন সময় পা ফাঁকা ভাঙ্গা জায়গায় পড়ে গিয়ে দূর্ঘটনার সম্ভবনা রয়েছে। এখানে নতুন করে বেইলী ব্রীজ সংস্কার করা হলে হাজারও শিক্ষার্থীর সুবিধা হবে।
দুর্গাপুর বাজার বনিক সমিতির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেব বলেন, বিকল্প যাতায়াত হিসেবে বেইলী ব্রীজটি খুই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাড়িয়েছে। হাটবাজারসহ প্রায় ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এই ব্রীজের ওপর দিয়েই যাতায়াত করে। নতুন করে সেখানে ব্রীজ সংস্কার করা হলে দুর্গাপুরের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে। দ্রুত ব্রীজটি সংস্কারের দাবি জানান তিনি।
রাজশাহী সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.সামসুজ্জোহা বলেন, মানুষের যাতায়াতের সুবির্ধাতে আমরা ব্রীজটি খুলে নিয়ে আসেনি। অনেক পুরাতন হওয়া হয়তোবা ব্রীজটি ভেঙে চুরে গেছে। সেখানে নতুন করে ব্রীজটি নির্মাণ করার আপাতত চিন্তা ভাবনা নেই। তবে মানুষের সুবির্ধাতে বেইলী ব্রীজটি আমরা সংস্কার করে দিতে পারি।
রাজশাহী-৫ (দুর্গাপুর-পুঠিয়া) আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ডা. মনুসুর রহমান বলেন, বেইলী ব্রীজটি বিকল্প হিসেবে নির্মাণ করে ছিল রাজশাহী সড়ক ও জনপদ বিভাগ। দীর্ঘ দিন হওয়ায় ব্রীজটির বর্তমান অবস্থা খুবই নাজুক। স্থানীয়রা এ বিষয়ে আমার সাথে কথা বলেছেন। যেহেতু একেবারেই দুর্গাপুর সদরের উপর, তাই অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।