ঢাকা ১০:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
অগ্নিকাণ্ড ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে অনুদানের নগদ অর্থ সহায়তায়: আ জ ম নাসির “স্মার্ট সুদহারে বিপাকে ব্যবসায়ীরা ঢাকা মতিঝিলে ইসতেস্কার নামাজ ও দোয়া অনুষ্ঠিত প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষের শহরে অভিবাসন ও জীনবমান নিয়ে মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত রাঙ্গুনিয়ায় আ: লীগ নেতার মৃত্যুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর শোক বরিশালে বৃষ্টি কামনায় নামাজ আদায়। রুপগঞ্জ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে এক দুর্ধর্ষ ডাকাত ওমর ফারুক গ্রেফতার বানারীপাড়ায় কিশোরী অপহরণ করে ধর্ষণ। বাকেরগঞ্জ থেকে ধর্ষক গ্রেফতার। “কোলোরেক্টাল ক্যান্সার সচেতনতা ফোরামের আয়োজন করেছে এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা” বরিশালে পথ শিশুদের সহযোগিতায় কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।

দুমকিতে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী খেজুর রস

দুমকিতে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী খেজুর রস
মোঃ জাহিদুল ইসলাম, দুমকি পটুয়াখালী প্রতিনিধি: শীত মৌসুম শুরুর সাথে সাথে গ্রাম বাংলার অজো পাড়া-গাঁয়ে ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ থেকে সুস্বাদু রস সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত হতে দেখা যায় কৃষকদের। সুমিষ্ট এ রস দিয়ে পিঠা পায়েস সহ নানা ধরনের লোভনীয় খাবার তৈরি করা হয়। কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার অত্যন্ত জনপ্রিয় শীত কালীন ঐতিহ্যবাহী খেজুর রস। এমন এক সময় ছিল গোটা শীত মৌসুমজুড়ে রসের পিঠা,পায়েস,গুড় তৈরি হত ঘরে ঘরে। শীত আসার সাথে সাথে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়ত কৃষকরা। সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে একদিকে যেমন খেজুর গাছ বিলুপ্ত হতে চলেছে, অন্যদিকে অভিজ্ঞদের অভাবে গাছ ছেলা প্রায় বিলুপ্তির পথে। হঠাৎ চলার পথে দেখা গেল পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের জামলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাস্তার ২’পাশে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ব্যস্ত আঃ খালেক হাওলাদার(৪৫) কে। তিনি জানান, হারানো ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে তিনি এবছর, নিজের ও অন্যেরসহ মোট ৪০-৫০টি গাছ রস সংগ্রহের জন্য প্রস্তুত করবেন। ইতিমধ্যে প্রায় ২০টি প্রস্তুত করেছেন। গাছ ছেলা থেকে রস সংগ্রহ পর্যন্ত ১০থেকে ১২ দিন সময় লাগে। বিশেষ কৌশলে বাঁশের তৈরি খিল- চুঙ্গি বসানোর পর মাটির হাড়ি পেতে সুস্বাদু এ রস সংগ্রহ করা হয়। গাছ থেকে রস বের করতে প্রতিদিন গাছের কিছু অংশ ছেঁচে ফেলা হয়। একাধারে ৩ দিন কান্ড শুকানোর পর পুনরায় পালাক্রমে রস সংগ্রহ করা হয়। তিনি আরো জানান, গড়ে প্রতিটি গাছ থেকে ৩লিটার রস পাওয়ার আশা করছেন, বর্তমানে খেজুর রসের চাহিদা অনেক বেশি। দরদাম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১৫লিটারের প্রতি কলস সাড়ে ৪ থেকে ৫’শ টাকায় এবং প্রতি কেজি গুড় ১৪০-১৫০টাকায় বিক্রি করতে পারবেন। একই গ্রামের আরো কয়েকজন এবছর খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করবেন বলে জানান, ইউসফ খান, ছালাম মৃধা ও নাসির খান। এ ব্যাপারে দুমকি উপজেলা কৃষি অফিসার মেহের মালিকা জানান, রাস্তার পাশে, জমির আইল, পরিত্যাক্ত জমিতে বিনা পরিচর্যায় যে কোন ধরনের মাটিতে এ প্রজাতির গাছ ভালো জন্মায়। তিনি কৃষকদের উচ্চ ফলনশীল আরব জাতের পাশাপাশি দেশীয় খেজুর গাছ রোপন করার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এতে রস ও গুড়ের চাহিদা পূরণ ছাড়াও খেজুর রস বিক্রি করে আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়া যায়। অপরদিকে খেজুর গাছের পাতা দিয়ে মাদুর সহ বিভিন্ন কুটির শিল্পের কাজ করা ও জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

অগ্নিকাণ্ড ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে অনুদানের নগদ অর্থ সহায়তায়: আ জ ম নাসির

দুমকিতে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী খেজুর রস

আপডেট টাইম ০৩:৩৫:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২১

দুমকিতে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী খেজুর রস
মোঃ জাহিদুল ইসলাম, দুমকি পটুয়াখালী প্রতিনিধি: শীত মৌসুম শুরুর সাথে সাথে গ্রাম বাংলার অজো পাড়া-গাঁয়ে ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ থেকে সুস্বাদু রস সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত হতে দেখা যায় কৃষকদের। সুমিষ্ট এ রস দিয়ে পিঠা পায়েস সহ নানা ধরনের লোভনীয় খাবার তৈরি করা হয়। কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার অত্যন্ত জনপ্রিয় শীত কালীন ঐতিহ্যবাহী খেজুর রস। এমন এক সময় ছিল গোটা শীত মৌসুমজুড়ে রসের পিঠা,পায়েস,গুড় তৈরি হত ঘরে ঘরে। শীত আসার সাথে সাথে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়ত কৃষকরা। সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে একদিকে যেমন খেজুর গাছ বিলুপ্ত হতে চলেছে, অন্যদিকে অভিজ্ঞদের অভাবে গাছ ছেলা প্রায় বিলুপ্তির পথে। হঠাৎ চলার পথে দেখা গেল পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের জামলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাস্তার ২’পাশে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ব্যস্ত আঃ খালেক হাওলাদার(৪৫) কে। তিনি জানান, হারানো ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে তিনি এবছর, নিজের ও অন্যেরসহ মোট ৪০-৫০টি গাছ রস সংগ্রহের জন্য প্রস্তুত করবেন। ইতিমধ্যে প্রায় ২০টি প্রস্তুত করেছেন। গাছ ছেলা থেকে রস সংগ্রহ পর্যন্ত ১০থেকে ১২ দিন সময় লাগে। বিশেষ কৌশলে বাঁশের তৈরি খিল- চুঙ্গি বসানোর পর মাটির হাড়ি পেতে সুস্বাদু এ রস সংগ্রহ করা হয়। গাছ থেকে রস বের করতে প্রতিদিন গাছের কিছু অংশ ছেঁচে ফেলা হয়। একাধারে ৩ দিন কান্ড শুকানোর পর পুনরায় পালাক্রমে রস সংগ্রহ করা হয়। তিনি আরো জানান, গড়ে প্রতিটি গাছ থেকে ৩লিটার রস পাওয়ার আশা করছেন, বর্তমানে খেজুর রসের চাহিদা অনেক বেশি। দরদাম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১৫লিটারের প্রতি কলস সাড়ে ৪ থেকে ৫’শ টাকায় এবং প্রতি কেজি গুড় ১৪০-১৫০টাকায় বিক্রি করতে পারবেন। একই গ্রামের আরো কয়েকজন এবছর খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করবেন বলে জানান, ইউসফ খান, ছালাম মৃধা ও নাসির খান। এ ব্যাপারে দুমকি উপজেলা কৃষি অফিসার মেহের মালিকা জানান, রাস্তার পাশে, জমির আইল, পরিত্যাক্ত জমিতে বিনা পরিচর্যায় যে কোন ধরনের মাটিতে এ প্রজাতির গাছ ভালো জন্মায়। তিনি কৃষকদের উচ্চ ফলনশীল আরব জাতের পাশাপাশি দেশীয় খেজুর গাছ রোপন করার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এতে রস ও গুড়ের চাহিদা পূরণ ছাড়াও খেজুর রস বিক্রি করে আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়া যায়। অপরদিকে খেজুর গাছের পাতা দিয়ে মাদুর সহ বিভিন্ন কুটির শিল্পের কাজ করা ও জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।