মো.বিল্লাল মোল্লা.ক্রাইম রিপোর্টার
কুমিল্লার তিতাসের বড় গাজীপুর মাজার বাড়ির আমির হোসেন মুন্সী ওরফে বিষ পাগলার ঘর থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা পাওয়া গেছে। বুধবার তিতাস থানা পুলিশ, জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে তার ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া টাকা গণনা করা হয়। গত শুক্রবার চিরকুমার আমির হোসেন মুন্সি ওরফে বিষ পাগলা বয়স ৫৫ মৃত্যুবরণ করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৮ জুলাই উপজেলার গাজীপুর গ্রামের মৃত নসু মুন্সির ছেলে মো. আমির হোসেন মুন্সী ওরফে বিষ পাগলা মারা যায়। অবিবাহিত জীবনে বিষ পাগলা একাই একটি ঘরে বসবাস করে আসছিল। ঈদের কারণে তাৎক্ষণিক তার বসবাসের ঘরে কেউ প্রবেশ না করলেও ঈদের একদিন পর মঙ্গলবার তার আত্মীয়-স্বজন ঘরটি পরিস্কার করতে যায়। ঘর পরিস্কারের এক পর্যায়ে আলমারি খুললে তাতে সাজানো টাকার ব্যান্ডেল দেখতে পায়। বিষয়টি তারা তাৎক্ষণিক এলাকার গণ্যমাণ্য ও জনপ্রতিনিধিদের জানান। পরে থানা পুলিশের সহযোগিতায় ঘরটি তালাবন্ধ রাখা হয়।
এদিকে বুধবার বেলা ১১টায় বিষ পাগলার বাড়িতে তিতাস থানা পুলিশের একটি টিম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মুন্সি মুজিবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিনুল ইসলাম সোহেল শিকদার, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফরহাদ আহমেদ ফকির, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফরিদা ইয়াসমিন, কুমিল্লা (উত্তর) জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার হোসেন বাবু, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সাইফুল আলম মুরাদ,
বলরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নূর নবী, বিষ পাগলার বোন মুর্শিদা আক্তার, বড় ভাই আউয়াদ মুন্সি, ছোট ভাই জামান মুন্সিসহ গাজীপুর গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে তাৎক্ষণিক একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঘরের তালা খুলে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। প্রায় ৪০ মিনিট মেশিনের মাধ্যমে টাকা গণনা করে পুনরায় টাকাসহ ঘর তালাবদ্ধ করে দেওয়া হয়। টাকা গণনার সময় ঘরে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
টাকা গণনা শেষে বলরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নূরনবী জানান, বিষ পাগলার ঘর থেকে ২ কোটি ৪৫ লাখ নগদ টাকাসহ প্রায় তিন লাখ টাকার বিভিন্ন দেশের মুদ্রা ও স্বর্ণাংকার পাওয়া গেছে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উদ্ধার হওয়া টাকা যৌথ একাউন্টের মাধ্যমে ব্যাংকে রাখা হবে বলে জানানো হয়।
এবিষয়ে তিতাস থানার ওসি সুধীন চন্দ্র দাস বলেন, বিষয়টি স্থানীয় লোকজন আমাদের জানালে আমরা তাৎক্ষণিক গ্রামের লোকজনদের সহযোগিতায় ঘরটি তালাবদ্ধ করে দেই। আজ বুধবার স্থানীয় লোকদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক টাকা গণনা করা হয়। ঘর থেকে ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকাসহ প্রায় তিন লাখ টাকার বিদেশী মুদ্রা ও স্বর্ণাংকার পাওয়া যায়। যা বিষ পাগলার নিকট আত্মীয়-স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার পর তারা টাকা একটি ব্যাংকে জমা রেখেছে।
উল্লেখ্য, মৃত বিষ পাগলারা দুই বোন তিন ভাই ছিল। এদের মধ্যে বর্তমানে একজন বোন মুর্শিদা বেগম ও দুই ভাই আউলাদ মুন্সি ও জামাল মুন্সি জীবিত রয়েছে।