স্পোর্টস ডেস্ক : টেস্ট ক্রিকেটে যাত্রা শুরুর পর থেকে এমন একটি দিনেরই স্বপ্ন দেখে এসেছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। বাংলাদেশ যে স্পিন শক্তিকে ভালো তা আবারো প্রমাণ করলো মিরাজ,সাকিব ও তাইজুল। টাইগারদের স্পিনের সামনে দাঁড়াতেই পারলোনা সফরকারীরা। মিরাজদের ঘূর্ণিতে ভেংগে গেলো দ্বীপরাষ্ট্রের ব্যাটিং লাইন আপ। ১১২টি টেস্ট খেলা হয়েছে বাংলাদেশের। এর মধ্যে জিতেছেও ১২টিতে। কিন্তু টাইগারদের কপালে একটিও ইনিংস ব্যবধানে জয়ের সৌভাগ্য জোটেনি। বরং, একের পর এক ইনিংস ব্যবধানে হারতেই ছিল অভ্যস্ত।
এবার সেই অধরা স্বাদটিও পেয়ে গেলো টাইগাররা। এক সময় যারা ক্রিকেট বিশ্বে নিজেদের একাধিপত্য বিস্তার করে ফেলেছিল, এক সময় যাদের মনে করা হতো- ক্যারিবীয়দের ক্রিকেট সূর্য বুঝি কখনোই অস্ত যাবে না, সেই দেশটিকেই বাংলাদেশ নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারেরমত ইনিংস ব্যবধানে হারিয়ে রেকর্ড গড়ে ফেললো। ঢাকা টেস্টে বাংলাদেশের গৌরবম জয়টি এলো ইনিংস ও ১৮৪ রানের ব্যবধানে।
সে সঙ্গে ক্যারিবীয়দের হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশ। প্রথম টেস্টে ৬৪ রানে জয়ের পর এই টেস্টে ইনিংস ও ১৮৪ রানের বিশাল ব্যবধানে জয়। নিশ্চিত এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম সেরা এক সিরিজ হয়ে থাকবে। অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডকে হারানোর চেয়েও কম গুরুত্বপূর্ণ নয় এই সিরিজ জয়।
এর আগে,সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে প্রথম ইনিংসে মাহমুদউল্লাহর শতক এবং সাকিব-সাদমান-লিটনের অর্ধশতকে ৫০৮ রানের পাহাড় গড়ে বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে মিরাজ ও সাকিবের ঘূর্ণিতে ১১১ রানে অলআউট হয় উইন্ডিজ। মিরাজ ৭টি ও সাকিব ৩টি উইকেট নেন।
৩৯৭ রানে পিছিয়ে থাকা ক্যারিবীয়ানরা ইনিংস পরাজয় ঠেকাতে ব্যাটিং নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি। প্রথম ইনিংসের ন্যায় দ্বিতীয় ইনিংসেও প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় তারা। ব্রাথওয়েটকে এলবিডব্লিউয়ের শিকার করেন টাইগার দলপতি সাকিব আল হাসান। দলীয় ১৪ রানে মেহেদি মিরাজের বলে স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হয়ে ফিরে যান পাওয়েল।
এরপর দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন শাই হোপস এবং সুনীল আম্ব্রিস। কিন্তু তাইজুলের জোড়া আঘাতে মুহূর্তেই চার উইকেট হারায় সফরকারীরা। আম্ব্রিসকে এলবিডব্লিউতে পরিণত করেন। ব্যক্তিগত পরের ওভারেই চেজকে মুমিনুলের তালুবন্দি করে এই বাঁহাতি স্পিনার। এরপরই ৬৬ রানের জুটি গড়েন শাই হোপস ও হেটমেয়ার। মিরাজের বলে পুল খেলতে গিয়ে সাকিবের হাতে ধরা পড়েন হোপস। যাওয়ার আগে করেছেন ব্যক্তিগত ২৫ রান। কিছুক্ষণ পর সৌম্যের হাতে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ডাওরিচও।
ক্যারিবিয়ানদের স্কোর দুইশ পার করানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছেন হেটমেয়ার। ৯ ছক্কা ও ১ চারে ৯৩ রান করেন তিনি। ছক্কা মারতে গিয়ে মিরাজের বলে মিথুনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন এই হার্ড হিটার। ওয়ারিক্যানকে করা বলে নিজেই ক্যাচ ধরে ৭ম বারের মতো ক্যারিয়ারে পাঁচ উইকেট দখল করেন মেহেদি হাসান মিরাজ। শেষ পর্যন্ত ক্যারিবিয়ানরা অলআউট হয় ২১৩ রানে। শেষ উইকেট জুটিতে রোচ ও লুইস ৪২ রান যোগ করেন।
বাংলাদেশের পক্ষে মিরাজ ৫ উইকেট, তাইজুল ৩টি, নাঈম ও সাকিব একটি করে উইকেট নেন।