ঢাকা ০২:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রোজা মানুষের মানবিক গুণাবলি বিকশিত করে-লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল। গজারিয়া বালুয়াকান্দি ইউনিয়নে সিকদার পরিবারে আমিরুল ইসলাম এর সর্মথনে আলোচনা সভা ও ইফতার দোয়া মাহফিল চসিকের ৬ ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ৩৮ তম সাধারণ সভায় মশা কমাতে কার্যক্রম বাড়াবে : মেয়র রেজাউল “বিড়ি শিল্পে ট্যাক্স প্রত্যাহারসহ চার দাবিতে রংপুর শ্রমিকদের মানববন্ধন” ইন্দুরকানী প্রেসক্লাবে ইফতার মাহফিল বরিশাল চকবাজার এবায়দুল্লাহ মসজিদে অগ্নিকান্ড। টাঙ্গাইলে দৈনিক সকালের সময় পত্রিকার পাঠক ফোরাম গঠিত চট্টগ্রাম পাহাড়তলীতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার চট্টগ্রামে জালনোটসহ প্রতারকচক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ রমজান মাসের পবিত্রতা লঙ্ঘন করছে নারায়ণগঞ্জ চিশতিয়া বাউল সমিত

ডেঙ্গু আক্রান্ত চৌগাছার শিশু হালিমা চিকিৎসা শেষে ঢাকা থেকে এখন বাড়িতে

(চৌগাছা প্রতিনিধি) যশোরের চৌগাছায় ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারাত্মক অসুস্থ্য হালিমা খাতুন (১৪) ঢাকাতে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে ফিরেছেন। চরম অসহায় হালিমাকে সুস্থ্য অবস্থায় ফিরে পেয়ে বাড়ির সকলেই যেন আকাশের চাঁদকে হাতে পেয়েছে। খুশির অশ্রুতে ভিজেছে অনেকের চোখের পাঁপড়ি। হালিমা এখনও শারীরীক ভাবে বেশ দূর্বল কিন্তু সে আবার স্কুলে যাবে সহপাঠিদের সাথে খেলবে এই ভেবে খুশিতে আত্মহারা। মা হারা শিশুটি বাক প্রতিবন্ধি পিতা ও চাচা চাচির ভালবাসা মুগ্ধ। তাকে সুস্থ্য করে তুলতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর মেয়র যে ভূমিকা রেখেছে তাতে ওই পরিবার তাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ।

সূত্র জানায়, চৌগাছা পৌর সদরের ডাকবাংলা পাড়ার বাসিন্দা বাক প্রতিবন্ধী হাসু মিয়ার একমাত্র মেয়ে স্থানীয় ছারা পাইলট বালিকা বিদ্যারয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী হালিমা খাতুন (১৪)। সে চলতি মাসের ১৬ আগস্ট ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে চৌগাছা ৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি হয়।

হাসপাতালে হালিমার অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তৃপক্ষ তাকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে। যশোর সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করার পর সেখানে একদিন রেখে হালিমাকে শহরের কুইন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সেখানেও হালিমার শারীরীক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় কুইন্স হাসপাতালের ডাক্তাররা হালিমাকে ঢাকাতে রেফার করে।

হালিমার জন্ম গরীব অসহায় পরিবারে, পিতা হাসু মিয়া বাক প্রতিবন্ধি, চাচা মমিনুর রহমান একটি সরকারী অফিসের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী ঢাকাতে নেয়ার মত কোন টাকা তাদের ছিলনা। তাই বাধ্য হয়ে হালিমাকে চিকিৎসা ছাড়াই বাড়ীতে ফেরত আনা হয়।

বাড়িতে ফেরত আনার পর হালিমার শারীরীক অবস্থা ক্রমশ খারাপের দিকে যেতে থাকে। ২১ আগষ্ট বুধবার বিকালে খবর পেয়ে ওই পরিবারে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম ও পৌর মেয়ার নূর উদ্দীন আল মামুন হিমেল। সেখানে তাঁরা পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলেন এবং হালিমাকে দ্রুত চৌগাছা হাপাতালে ভর্তি করেন।

হাসপাতালে প্লাটিলেট কাউন্ট করা হলে দেখা যায় হালিমার প্লাটিলেক মাত্র ৬০ হাজার। হালিমাকে দ্রুত ঢাকাতে পাঠাতে হবে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিমানের কোন টিকিট পাওয়া যাওয়ানি।

এমন এক পরিস্থিতিতে বিশেষ এম্মুলেন্সে করে ওই রাতেই হালিমাকে ঢাকা পিজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে রবিবার রাত ২ টায় হালিমা চৌগাছাতে ফেরে, পিজি হাসপাতালের চিকিৎসকের পরামর্শে দুই দিন তাকে ভর্তি রাখা হয় স্থানীয় হাসপাতালে।

সেখান থেকে সোমবার সন্ধ্যায় সে চাচা মমিনুর রহমানের বাড়িতে ফিরেছে।
হালিমার চাচা মমিনুর রহমান জানান, মেয়েটির (হালিমা) বাবা হাসু মিয়া জন্ম থেকেই বাক প্রতিবন্ধি। হালিমার বয়স যখন ৩ বছর তখন মা বিউটি খাতুন তাকে রেখে অন্যত্র সংসার পেতেছে। হালিমা ছোট বেলা থেকেই আমার কাছে থেকে বড় হয়েছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে তার শারীরীক অবস্থার যে অবনতী হয়েছিল তাতে আমরা সকলেই ভেঙ্গে পড়েছিলাম। কিন্তু আল্লাহর আশেষ রহমতে ওই মুহুর্তে ই্উএনও স্যার ও পৌর মেয়র আমাদের পাশে দাড়িয়েছে হালিমাকে আজ সুস্থ্য করে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিয়েছে আমরা তাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ।

এ প্রসঙ্গে পৌর মেয়র নূর উদ্দীন আল মামুন হিমেল জানান, মেয়েটিকে সুস্থ্য করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া আমার দায়িত্ব বলে আমি মনে করি। সে সুস্থ্য হয়ে বাড়িতে ফিরেছে এটি সকলের জন্য নিশ্চয় খুশির খবর। নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, টাকার অভাবে একজন শিশুর চিকিৎসা হবে না এমনটি আমি ভাবতে পারেনি, তাই শিশুটির পাশে দাড়িয়েছি।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

রোজা মানুষের মানবিক গুণাবলি বিকশিত করে-লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল।

ডেঙ্গু আক্রান্ত চৌগাছার শিশু হালিমা চিকিৎসা শেষে ঢাকা থেকে এখন বাড়িতে

আপডেট টাইম ০৬:৩৮:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ অগাস্ট ২০১৯

(চৌগাছা প্রতিনিধি) যশোরের চৌগাছায় ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারাত্মক অসুস্থ্য হালিমা খাতুন (১৪) ঢাকাতে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে ফিরেছেন। চরম অসহায় হালিমাকে সুস্থ্য অবস্থায় ফিরে পেয়ে বাড়ির সকলেই যেন আকাশের চাঁদকে হাতে পেয়েছে। খুশির অশ্রুতে ভিজেছে অনেকের চোখের পাঁপড়ি। হালিমা এখনও শারীরীক ভাবে বেশ দূর্বল কিন্তু সে আবার স্কুলে যাবে সহপাঠিদের সাথে খেলবে এই ভেবে খুশিতে আত্মহারা। মা হারা শিশুটি বাক প্রতিবন্ধি পিতা ও চাচা চাচির ভালবাসা মুগ্ধ। তাকে সুস্থ্য করে তুলতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর মেয়র যে ভূমিকা রেখেছে তাতে ওই পরিবার তাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ।

সূত্র জানায়, চৌগাছা পৌর সদরের ডাকবাংলা পাড়ার বাসিন্দা বাক প্রতিবন্ধী হাসু মিয়ার একমাত্র মেয়ে স্থানীয় ছারা পাইলট বালিকা বিদ্যারয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী হালিমা খাতুন (১৪)। সে চলতি মাসের ১৬ আগস্ট ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে চৌগাছা ৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি হয়।

হাসপাতালে হালিমার অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তৃপক্ষ তাকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে। যশোর সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করার পর সেখানে একদিন রেখে হালিমাকে শহরের কুইন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সেখানেও হালিমার শারীরীক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় কুইন্স হাসপাতালের ডাক্তাররা হালিমাকে ঢাকাতে রেফার করে।

হালিমার জন্ম গরীব অসহায় পরিবারে, পিতা হাসু মিয়া বাক প্রতিবন্ধি, চাচা মমিনুর রহমান একটি সরকারী অফিসের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী ঢাকাতে নেয়ার মত কোন টাকা তাদের ছিলনা। তাই বাধ্য হয়ে হালিমাকে চিকিৎসা ছাড়াই বাড়ীতে ফেরত আনা হয়।

বাড়িতে ফেরত আনার পর হালিমার শারীরীক অবস্থা ক্রমশ খারাপের দিকে যেতে থাকে। ২১ আগষ্ট বুধবার বিকালে খবর পেয়ে ওই পরিবারে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম ও পৌর মেয়ার নূর উদ্দীন আল মামুন হিমেল। সেখানে তাঁরা পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলেন এবং হালিমাকে দ্রুত চৌগাছা হাপাতালে ভর্তি করেন।

হাসপাতালে প্লাটিলেট কাউন্ট করা হলে দেখা যায় হালিমার প্লাটিলেক মাত্র ৬০ হাজার। হালিমাকে দ্রুত ঢাকাতে পাঠাতে হবে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিমানের কোন টিকিট পাওয়া যাওয়ানি।

এমন এক পরিস্থিতিতে বিশেষ এম্মুলেন্সে করে ওই রাতেই হালিমাকে ঢাকা পিজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে রবিবার রাত ২ টায় হালিমা চৌগাছাতে ফেরে, পিজি হাসপাতালের চিকিৎসকের পরামর্শে দুই দিন তাকে ভর্তি রাখা হয় স্থানীয় হাসপাতালে।

সেখান থেকে সোমবার সন্ধ্যায় সে চাচা মমিনুর রহমানের বাড়িতে ফিরেছে।
হালিমার চাচা মমিনুর রহমান জানান, মেয়েটির (হালিমা) বাবা হাসু মিয়া জন্ম থেকেই বাক প্রতিবন্ধি। হালিমার বয়স যখন ৩ বছর তখন মা বিউটি খাতুন তাকে রেখে অন্যত্র সংসার পেতেছে। হালিমা ছোট বেলা থেকেই আমার কাছে থেকে বড় হয়েছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে তার শারীরীক অবস্থার যে অবনতী হয়েছিল তাতে আমরা সকলেই ভেঙ্গে পড়েছিলাম। কিন্তু আল্লাহর আশেষ রহমতে ওই মুহুর্তে ই্উএনও স্যার ও পৌর মেয়র আমাদের পাশে দাড়িয়েছে হালিমাকে আজ সুস্থ্য করে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিয়েছে আমরা তাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ।

এ প্রসঙ্গে পৌর মেয়র নূর উদ্দীন আল মামুন হিমেল জানান, মেয়েটিকে সুস্থ্য করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া আমার দায়িত্ব বলে আমি মনে করি। সে সুস্থ্য হয়ে বাড়িতে ফিরেছে এটি সকলের জন্য নিশ্চয় খুশির খবর। নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, টাকার অভাবে একজন শিশুর চিকিৎসা হবে না এমনটি আমি ভাবতে পারেনি, তাই শিশুটির পাশে দাড়িয়েছি।