ঢাকা ০৭:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
–অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। চট্টগ্রামে দুই চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে-২ ঘণ্টার কর্মবিরতির ঘোষণা বিএমএর হকার আর যত্রতত্র আবর্জনা কমাতে অভিযানের ঘোষণা মেয়র রেজাউলের রামগঞ্জে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী ২০২৪ অনুষ্ঠিত। অনার্স ফাইনাল পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন গজারিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে দিনভর গনসংযোগ ও লিফলেট বিতরন গজারিয়ায় নারী উদ্যোক্তা সম্মেলন অনুষ্ঠিত পুলিশের বিশেষ অভিযানে ভয়ঙ্কর ডাকাত সর্দার মামুন গ্রেফতার বগুড়ায় অবকাশ হোটেলে অবৈধ কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ৯ জন খরিদ্দারকে দুই দিনের কারাদণ্ড দিলেন আদালত নানা বাড়ি বেড়াতে এসে নদীতে ডুবে কিশোর কিশোরীর মৃত্যু

ঠাকুরগাঁওয়ে হুমকিতে এলাকা ছাড়লো গাছিরা, খেজুরের রস দিয়ে গুড় তৈরী বন্ধ!

মোঃ আকতারুল ইসলাম আক্তার জেলা প্রতিনিধি ঠাকুরগাঁওঃ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বোচাপুুকুর এলাকার গড়ে উঠেছে একটি খেজুরের বাগান। চার বছর থেকে শীত মৌসমে এই বাগানের খেজুরের রস থেকে উৎপাদন হচ্ছিলো গুড়। তবে এই মৌসমের মাঝামাঝিতেই চাঁদাবাজের হুমকিতে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে গাছিদের।

জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও সুগারমিলের এই বাগানে ৫০০ টি ছোটবড় খেজুরগাছ ছিলো। ২০১৮ সালে রাজশাহীর কয়েকজন গাছি বাগানটি লিজ নেয়। তারা গাছের রস সংগ্রহ করে তৈরী করছিল গুড়। আস্তে আস্তে খেজুরের রস ও রস থেকে তৈরীকৃত গুড় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল জেলাজুড়ে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখানকার গুড় যাচ্ছিল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন মানুষ এই বাগানে ভিড় করতো বাগান দেখতে, খেজুরের রস খেতে কিংবা গুড় তৈরি দেখতে।

প্রতিবারের ন্যায় এবছরও রাজশাহীর গাছিরা এই বাগানে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি শুরু করে। তবে তাদের অভিযোগ কিছু দিন আগে একদল যুবকের দেওয়ার হুমকির ভয়ে গুড় তৈরি বন্ধকরে তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে।

শনিবার(২২ জানুয়ারি) সকালে খেজুরের গুড় তৈরির বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে সেখানে গাছিদের দেখা পাওয়া যায়নি। পরে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় গাছি দলের প্রধান কারিগর সুজন আলীর সাথে।

এই বিষয়ে কারিগর সুজন আলী মুঠোফোনে জানান, কিছুদিন আগের এক রাতে কয়েকজন লোক এসে বিনামূল্যে খেজুরের রস খেতে চায়। তাদের রস খেতে না দিলে কিছু কথা কাটাকাটি হয়। এতে তারা নানা রকম হুমকি প্রদান করেন। রাতের সময় এসে হত্যা করবে বলে ভয় দেখায়।

সুজন আলী বলেন, ‘খেজুর বাগানে এক দুইদিন পর পর এসে তারা এভাবে চাদা দাবি করেন ও হুমকি দেন। ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত তারা চাদা দাবি করেন। শেষ পর্যন্ত উপায়ান্তর না পেয়ে আমরা বাধ্য হয়ে গুড় তৈরীর কাজ বন্ধ করে বাড়ি চলে আসি।,

চাদা দাবি করা ও হুমকি প্রদানকারিদের পরিচয় জানতে চাইলে সুজন আলী জানান, চাদা দাবি করা ও হুমকি প্রদানকারিরা রাতের আধারে আসতো, নাম পরিচয় জানতে চাইলে তারা তাদের পরিচয় দিত না। তাই তাদের নাম ও পরিচয় জানা যায়নি।,

এবিষয়ে সুজন আলী স্থানীয় প্রশাসন বিভাগের কারও কাছে অভিযোগ করেছে কিনা তা জানতে চাইলে তিনি জানান, আমাদের বাড়ি অনেক দুরে। রাতের আধারে তারা যদি সেখানে আমাদের মেরে ফেলতো কে আসতো আমাদের বাঁচাতে? তাই প্রাণের ভয়ে আমরা প্রশাসনকে বিষয়টি জানাইনি।,

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মাঘ মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত খেজুর রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করতাম কিন্তু হুমকি ও চাদা দাবি করার কারণে গত সপ্তাহে আমরা বাড়ি চলে আসি।,

এই বিষয়টি শুনে স্থানীয়রা জানান, এটি খুব দুঃখজনক বিষয়। এতে কিছু অসাধু লোকের জন্য আমাদের জেলার সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। এই বিষয় গুলো এড়াতে প্রশাসনকে আরও তৎপর হতে হবে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মোঃ সামসুজ্জামন বলেন, বিষয়টিকে অত্যান্ত দুঃখজনক। গাছিরা বিষয়টি যদি আমাকে অবগত করতো তাহলে তাৎক্ষণিক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেত। ভয়পেয়ে গাছিরা গুড় তৈরির কাজ বন্ধ না করে তাদের উচিত ছিল প্রশাসনকে অবগত করা। আগামিতে এরকম কোনো কিছু হলে কঠোর হস্তে তা দমন করা হবে বলে জান

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

–অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০।

ঠাকুরগাঁওয়ে হুমকিতে এলাকা ছাড়লো গাছিরা, খেজুরের রস দিয়ে গুড় তৈরী বন্ধ!

আপডেট টাইম ০১:০১:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২২

মোঃ আকতারুল ইসলাম আক্তার জেলা প্রতিনিধি ঠাকুরগাঁওঃ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বোচাপুুকুর এলাকার গড়ে উঠেছে একটি খেজুরের বাগান। চার বছর থেকে শীত মৌসমে এই বাগানের খেজুরের রস থেকে উৎপাদন হচ্ছিলো গুড়। তবে এই মৌসমের মাঝামাঝিতেই চাঁদাবাজের হুমকিতে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে গাছিদের।

জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও সুগারমিলের এই বাগানে ৫০০ টি ছোটবড় খেজুরগাছ ছিলো। ২০১৮ সালে রাজশাহীর কয়েকজন গাছি বাগানটি লিজ নেয়। তারা গাছের রস সংগ্রহ করে তৈরী করছিল গুড়। আস্তে আস্তে খেজুরের রস ও রস থেকে তৈরীকৃত গুড় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল জেলাজুড়ে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখানকার গুড় যাচ্ছিল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন মানুষ এই বাগানে ভিড় করতো বাগান দেখতে, খেজুরের রস খেতে কিংবা গুড় তৈরি দেখতে।

প্রতিবারের ন্যায় এবছরও রাজশাহীর গাছিরা এই বাগানে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি শুরু করে। তবে তাদের অভিযোগ কিছু দিন আগে একদল যুবকের দেওয়ার হুমকির ভয়ে গুড় তৈরি বন্ধকরে তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে।

শনিবার(২২ জানুয়ারি) সকালে খেজুরের গুড় তৈরির বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে সেখানে গাছিদের দেখা পাওয়া যায়নি। পরে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় গাছি দলের প্রধান কারিগর সুজন আলীর সাথে।

এই বিষয়ে কারিগর সুজন আলী মুঠোফোনে জানান, কিছুদিন আগের এক রাতে কয়েকজন লোক এসে বিনামূল্যে খেজুরের রস খেতে চায়। তাদের রস খেতে না দিলে কিছু কথা কাটাকাটি হয়। এতে তারা নানা রকম হুমকি প্রদান করেন। রাতের সময় এসে হত্যা করবে বলে ভয় দেখায়।

সুজন আলী বলেন, ‘খেজুর বাগানে এক দুইদিন পর পর এসে তারা এভাবে চাদা দাবি করেন ও হুমকি দেন। ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত তারা চাদা দাবি করেন। শেষ পর্যন্ত উপায়ান্তর না পেয়ে আমরা বাধ্য হয়ে গুড় তৈরীর কাজ বন্ধ করে বাড়ি চলে আসি।,

চাদা দাবি করা ও হুমকি প্রদানকারিদের পরিচয় জানতে চাইলে সুজন আলী জানান, চাদা দাবি করা ও হুমকি প্রদানকারিরা রাতের আধারে আসতো, নাম পরিচয় জানতে চাইলে তারা তাদের পরিচয় দিত না। তাই তাদের নাম ও পরিচয় জানা যায়নি।,

এবিষয়ে সুজন আলী স্থানীয় প্রশাসন বিভাগের কারও কাছে অভিযোগ করেছে কিনা তা জানতে চাইলে তিনি জানান, আমাদের বাড়ি অনেক দুরে। রাতের আধারে তারা যদি সেখানে আমাদের মেরে ফেলতো কে আসতো আমাদের বাঁচাতে? তাই প্রাণের ভয়ে আমরা প্রশাসনকে বিষয়টি জানাইনি।,

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মাঘ মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত খেজুর রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করতাম কিন্তু হুমকি ও চাদা দাবি করার কারণে গত সপ্তাহে আমরা বাড়ি চলে আসি।,

এই বিষয়টি শুনে স্থানীয়রা জানান, এটি খুব দুঃখজনক বিষয়। এতে কিছু অসাধু লোকের জন্য আমাদের জেলার সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। এই বিষয় গুলো এড়াতে প্রশাসনকে আরও তৎপর হতে হবে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মোঃ সামসুজ্জামন বলেন, বিষয়টিকে অত্যান্ত দুঃখজনক। গাছিরা বিষয়টি যদি আমাকে অবগত করতো তাহলে তাৎক্ষণিক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেত। ভয়পেয়ে গাছিরা গুড় তৈরির কাজ বন্ধ না করে তাদের উচিত ছিল প্রশাসনকে অবগত করা। আগামিতে এরকম কোনো কিছু হলে কঠোর হস্তে তা দমন করা হবে বলে জান