মোঃ আকতারুল ইসলাম আক্তার জেলা প্রতিনিধি ঠাকুরগাঁওঃ ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীর দুওসুও ইউনিয়নে চৌকিদার পাহাড়ায় জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান সোহেলের বিরুদ্ধে।
ইউপি নির্বাচনে বিরোধী সমর্থকদের দমন নিপীড়নের জন্যেই তিনি এসব কার্যক্রম করছন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
শুক্রবার(২১ জানুয়ারি) দুপুরে দুওসুও ইউনিয়নের সমির উদ্দিন কলেজের অভিমুখের রাস্তার পাশের এক জমিতে দেখাযায় ইউনিয়নে কর্মরত ৯ জন চৌকিদার পাহারায় বসিয়ে একটি ভবন নির্মাণেরকাজ করাচ্ছেন চেয়ারম্যান সোহেল।
কথা হয় উপস্থিত চৌকিদারের দফাদার শরিফুল ইসলাম সাথে। ভবন নির্মাণের স্থানে পাহাড়া দেওয়ায় কারন জানতে চাইলে তিনি চেয়ারম্যানের আদেশের একটি কাগজ দেখান। তিনি বলেন, গত চার দিন থেকে আমরা এই ভবন নির্মাণের কাজ দেখাশোনা করছি। ইউনিয়নের সব চৌকিদারকে এখানে থাকার আদেশ দিয়েছেন চেয়ারম্যান। কেউ বাধা দিতে আসলে আমাদেরকে প্রতিহত করার নির্দেশনা দেয়া আছে।
দফাদারের দেখানো কাগজে দেখা যায়, খতিয়ান নাম্বার ২৮৪ দাগ নাম্বার ৮৭৮৮ জিমির পরিমান ১৩ সতকের মধ্যে ২ শতক জমিতে ঘর নির্মাণের কাজে অত্র ইউনিয়নের সকল গ্রাম পুলিশকে আইন শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনের জন্যে বলা হলো।
যদিও সম্পুর্ন ইউনিয়ন এলাকা ফাকা করে এসকল ব্যক্তিগত কাজে ইউনিয়নের চৌদারদের ব্যবহার সম্পুর্ন বেআইনি বলে মনে করেন দুওসুও ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম।
ভবন নির্মাণাধীন জমির কিছু কাগজপত্র দেখিয়ে জমির মালিকানা দাবি করছেন মজিবর রহমান নামের এক সাবেক ইউপি সদস্য। জমি দখলের বিষয়ে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি অভিযোগ পত্র দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি এবার ইউপি নির্বাচনে সোহেলের বিরোধী প্রার্থী আনারস মার্কার মোকলেসুরের নির্বাচন করেছিলাম। তখন থেকেই সে আমার উপরে ক্ষিপ্ত। নির্বাচনে জিতার পরেই আমাকে হুমকি দিয়েছিলো। এখন শপথ গ্রহনের পরপরেই আমার জমি দখলে ব্যস্ত হয়ে গেছে।
মজিবরের অভিযোগের বিষয়ে কথা হয় অভিযুক্ত চেয়ারম্যান সোহেলের সাথে। তিনি বলেন, জমিটা আমি নিজের জন্যে দখল করছিনা। আমার ভাগনি জামাই সৈয়দ আলী এই জমির মালিক। বিষয়টি নিয়ে মজিবরের সাথে বসতে একটি নোটিশ পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সে আমার নোটিশ গ্রহণ করেনি। বরং সে বলেছে আমাকে নাকি চেয়ারম্যান হিসেবে মানেনা। তাই সৈয়দ আলীর হক বুঝিয়ে দিতে আমি তাকে জমি দখল করে দিচ্ছি।
ইউনিয়ন পরিষদ ও পুরো এলাকা ফাকা করে চৌকিদারদের সেখানে ব্যবহার করার যুক্তি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি মনে করেছি সেখানে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে। তাই চৌকিদার পাহাড়া বসানো হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় জমির আরেক দাবিদার সৈয়দ আলীর সাথে। তিনি বলেন, ক্রয় সূত্রে এই জমির মালিক আমি। কিন্তু মজিবর রহমান আমার জমিতেই আমাকে কাজ করতে দিচ্ছিলোনা। চেয়ারম্যান আমার আত্মীয়। সেই সাথে আমি তার ইউনিয়নের একজন নাগরিক। তাই আমি তার কাছে সাহায্য চেয়েছি।
এই বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের হোসেন বলেন, এই বিষয়ে একটি অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। এমন কাজে চৌকিদারদের ব্যবহার করা বেআইনি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।