ঢাকা ০৬:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষের শহরে অভিবাসন ও জীনবমান নিয়ে মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত রাঙ্গুনিয়ায় আ: লীগ নেতার মৃত্যুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর শোক বরিশালে বৃষ্টি কামনায় নামাজ আদায়। রুপগঞ্জ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে এক দুর্ধর্ষ ডাকাত ওমর ফারুক গ্রেফতার বানারীপাড়ায় কিশোরী অপহরণ করে ধর্ষণ। বাকেরগঞ্জ থেকে ধর্ষক গ্রেফতার। “কোলোরেক্টাল ক্যান্সার সচেতনতা ফোরামের আয়োজন করেছে এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা” বরিশালে পথ শিশুদের সহযোগিতায় কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। গজারিয়ায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান দুই প্রতিষ্ঠান কে অর্থদন্ড টেকপাড়া ও ইয়াকুব নগরের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্হদের মাঝে নগর অর্থ ও বস্ত্র বিতরণ বাস ও ফুটওভার ব্রিজ মুখোমুখি সংঘর্ষ

টাঙ্গাইলে সংযোগ সড়ক ছাড়া ব্রিজ নিমার্ণ করায় এলাকাবাসীর চরম দুর্ভোগ

মোঃ মশিউর রহমান,টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় সংযোগ সড়ক ছাড়া ব্রিজ নিমার্ণ করায় এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
এলাকাবাসীর দাবির কারনে ব্রিজটি নির্মান করার পর, ছয় বছর চলে গেলেও দু’পাশের সংযোগ সড়ক এখনো হয়নি। এ কারনে এলকাবাসীর দুর্ভোগ কমেনি বরং বেড়েছে। বারবার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানালেও গুরুত্ব দিচ্ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। কর্তৃপক্ষের উদাসিনতাকেই কারন বলে দাবী করছেন ভুক্তভোগীরা। শুষ্ক মৌসুমে ব্রিজের দু’পাশে কাঠের মই দিয়ে উঠা-নামা করলেও বর্ষাকালে বন্ধ থাকে। ব্রিজটি টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার ধোপাখালী ইউনিয়নের ধোপাখালী বাজার সংলগ্ন বংশাই নদের উপর। এলাকাবাসী বলেন, ব্রিজের এপাড়ে ধোপাখালী ওপাড়ে যদুনাথপুর ইউনিয়ন। ব্রিজটি নির্মাণের পর থেকেই কোন কাজে আসছে না দুই ইউনিয়নের আট থেকে দশ গ্রামবাসীর। বিগত কয়েক বছরে বিষয়টি উপজেলা এলজিইডি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানালেও কেউ পদক্ষেপ নেয়নি। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সরেজমিনে গেলে সংবাদকর্মী দেখে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন এবং কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান স্থানীয়রা। অনেকের সাথে কথা বলতে চেষ্টা করা হলে চলে যান তারা। দেখা যায় মাটি থেকে প্রায় নয় থেকে দশ ফুট উচ্চতায় ব্রিজটি। দু’পাশের সংযোগ সড়ক না থাকায় কাঠের মই বেয়েই উঠা-নামা করছে। গ্রামগুলো কৃষি প্রধান হওয়ায় কৃষকরা মাথায় ও কাঁধে করে উৎপাদিত কৃষ পণ্য নিয়ে যাচ্ছেন এপাড় থেকে ওপাড়ে। চলাচলে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়তে হচ্ছে মহিলা ও শিশুদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এডিপির অর্থায়নে স্থানীয় এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ব্রিজটি নিমার্ণ করেন। যদুনাথপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. তসলিম উদ্দিন বলেন, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মীর ফরিদ আহমাদের সময় ব্রিজটি নিমার্ণ হয়। সে সময় কোন রকমে মাটি ফেলে সংযোগ সড়ক করা হয়। বর্ষার পানি নদীতে আসার পরপই সড়কের মাটি ধসে নদীতে চলে যায়। ইসলামপুর গ্রাম থেকে উপজেলা সদরে যেতে ভাড়া ও সময় লাগে অনেক বেশি। ধোপাখালীর ওই পাড়েই স্থানীয় বাজার। সেখানে নিত্য প্রয়োজনীয় সব কিছু পাওয়া যায়। বর্ষা মৌসুমে আর যাওয়া যায় না। বর্ষার সময় স্কুল পড়ুয়া সন্তানেরা ওপাড়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না। নৌকায় চলাচল করতে হয়। আরেক বাসিন্দা সেকান্দর আলী বলেন, আমরা বিষয়টি বারবার জানাইছি, কোন কাজ হয়নি। কেউ গুরুত্ব দেয় না। তাঁদের কাছে গেলে শুধু কয় দেখতাছি। এ ব্রিজ থাকলেও যা, না থাকলেও তাই। এ ব্রিজ দিয়া আমরা কি করমু? ধোপাখালী ইউনিয়নের ধোপাখালী গ্রামের কৃষক মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ভাবছিলাম ব্রিজটি আমাদের অনেক উপকারে আসবে। এটা শুধু নামে মাত্র। এলাকার মানুষ কৃষি কাজ কইরা জীবন চালায়। আমাদের দুঃখ দেখার মানুষ কেউ নাই। কৃষাণী শাহিনা বেগম বলেন, কয়েক বছর আগে লোকজন আইসা ব্রিজটি দেইখা গেছে। তারা কইছে রাস্তা তাড়াতাড়ি হবে। মন চাইলে রাস্তা করলে করুক, না চাইলে না করুক। আরও এলাকাবাসীর নিকট জানতে চাইলে একই রকমের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তারা।
ধোপাখালীর ইউপির স্থানীয় ওয়ার্ড সসদ্য আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তাটির ব্যাপারে আমি একাধিকবার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনার রশীদ হীরা সাহেবকে বলেছি। তিনি করে দিতে চেয়েছেন। এরপর আর কোন খোঁজ নেয়নি। যদি আপনারা সংবাদ প্রকাশ করে আমাদের এলাকার এ জনদুর্ভোগ দূর করতে পারেন তাহলে খুবই উপকার হবে। এজন্য আপনাদের সহযোগিতা কামনা করি।’
জানতে চাইলে ধোপাখালীর চেয়ারম্যান আকবর হোসেন বলেন, এ বছরই রাস্তাটি করে দেয়া হবে। যদুনাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মীর ফিরোজ আহাম্মেদের সাথে সেলফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁকে পাওয়া যায়নি।
ধনবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী জয়নাল আবেদীন সাগর বলেন, দুর্ভোগ এড়াতে এই বছরই সংযোগ সড়ক করে দেয়া হবে।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষের শহরে অভিবাসন ও জীনবমান নিয়ে মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত

টাঙ্গাইলে সংযোগ সড়ক ছাড়া ব্রিজ নিমার্ণ করায় এলাকাবাসীর চরম দুর্ভোগ

আপডেট টাইম ১০:১৫:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২

মোঃ মশিউর রহমান,টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় সংযোগ সড়ক ছাড়া ব্রিজ নিমার্ণ করায় এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
এলাকাবাসীর দাবির কারনে ব্রিজটি নির্মান করার পর, ছয় বছর চলে গেলেও দু’পাশের সংযোগ সড়ক এখনো হয়নি। এ কারনে এলকাবাসীর দুর্ভোগ কমেনি বরং বেড়েছে। বারবার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানালেও গুরুত্ব দিচ্ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। কর্তৃপক্ষের উদাসিনতাকেই কারন বলে দাবী করছেন ভুক্তভোগীরা। শুষ্ক মৌসুমে ব্রিজের দু’পাশে কাঠের মই দিয়ে উঠা-নামা করলেও বর্ষাকালে বন্ধ থাকে। ব্রিজটি টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার ধোপাখালী ইউনিয়নের ধোপাখালী বাজার সংলগ্ন বংশাই নদের উপর। এলাকাবাসী বলেন, ব্রিজের এপাড়ে ধোপাখালী ওপাড়ে যদুনাথপুর ইউনিয়ন। ব্রিজটি নির্মাণের পর থেকেই কোন কাজে আসছে না দুই ইউনিয়নের আট থেকে দশ গ্রামবাসীর। বিগত কয়েক বছরে বিষয়টি উপজেলা এলজিইডি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানালেও কেউ পদক্ষেপ নেয়নি। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সরেজমিনে গেলে সংবাদকর্মী দেখে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন এবং কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান স্থানীয়রা। অনেকের সাথে কথা বলতে চেষ্টা করা হলে চলে যান তারা। দেখা যায় মাটি থেকে প্রায় নয় থেকে দশ ফুট উচ্চতায় ব্রিজটি। দু’পাশের সংযোগ সড়ক না থাকায় কাঠের মই বেয়েই উঠা-নামা করছে। গ্রামগুলো কৃষি প্রধান হওয়ায় কৃষকরা মাথায় ও কাঁধে করে উৎপাদিত কৃষ পণ্য নিয়ে যাচ্ছেন এপাড় থেকে ওপাড়ে। চলাচলে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়তে হচ্ছে মহিলা ও শিশুদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এডিপির অর্থায়নে স্থানীয় এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ব্রিজটি নিমার্ণ করেন। যদুনাথপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. তসলিম উদ্দিন বলেন, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মীর ফরিদ আহমাদের সময় ব্রিজটি নিমার্ণ হয়। সে সময় কোন রকমে মাটি ফেলে সংযোগ সড়ক করা হয়। বর্ষার পানি নদীতে আসার পরপই সড়কের মাটি ধসে নদীতে চলে যায়। ইসলামপুর গ্রাম থেকে উপজেলা সদরে যেতে ভাড়া ও সময় লাগে অনেক বেশি। ধোপাখালীর ওই পাড়েই স্থানীয় বাজার। সেখানে নিত্য প্রয়োজনীয় সব কিছু পাওয়া যায়। বর্ষা মৌসুমে আর যাওয়া যায় না। বর্ষার সময় স্কুল পড়ুয়া সন্তানেরা ওপাড়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না। নৌকায় চলাচল করতে হয়। আরেক বাসিন্দা সেকান্দর আলী বলেন, আমরা বিষয়টি বারবার জানাইছি, কোন কাজ হয়নি। কেউ গুরুত্ব দেয় না। তাঁদের কাছে গেলে শুধু কয় দেখতাছি। এ ব্রিজ থাকলেও যা, না থাকলেও তাই। এ ব্রিজ দিয়া আমরা কি করমু? ধোপাখালী ইউনিয়নের ধোপাখালী গ্রামের কৃষক মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ভাবছিলাম ব্রিজটি আমাদের অনেক উপকারে আসবে। এটা শুধু নামে মাত্র। এলাকার মানুষ কৃষি কাজ কইরা জীবন চালায়। আমাদের দুঃখ দেখার মানুষ কেউ নাই। কৃষাণী শাহিনা বেগম বলেন, কয়েক বছর আগে লোকজন আইসা ব্রিজটি দেইখা গেছে। তারা কইছে রাস্তা তাড়াতাড়ি হবে। মন চাইলে রাস্তা করলে করুক, না চাইলে না করুক। আরও এলাকাবাসীর নিকট জানতে চাইলে একই রকমের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তারা।
ধোপাখালীর ইউপির স্থানীয় ওয়ার্ড সসদ্য আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তাটির ব্যাপারে আমি একাধিকবার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনার রশীদ হীরা সাহেবকে বলেছি। তিনি করে দিতে চেয়েছেন। এরপর আর কোন খোঁজ নেয়নি। যদি আপনারা সংবাদ প্রকাশ করে আমাদের এলাকার এ জনদুর্ভোগ দূর করতে পারেন তাহলে খুবই উপকার হবে। এজন্য আপনাদের সহযোগিতা কামনা করি।’
জানতে চাইলে ধোপাখালীর চেয়ারম্যান আকবর হোসেন বলেন, এ বছরই রাস্তাটি করে দেয়া হবে। যদুনাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মীর ফিরোজ আহাম্মেদের সাথে সেলফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁকে পাওয়া যায়নি।
ধনবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী জয়নাল আবেদীন সাগর বলেন, দুর্ভোগ এড়াতে এই বছরই সংযোগ সড়ক করে দেয়া হবে।