ঢাকা ০৮:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রোজা মানুষের মানবিক গুণাবলি বিকশিত করে-লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল। গজারিয়া বালুয়াকান্দি ইউনিয়নে সিকদার পরিবারে আমিরুল ইসলাম এর সর্মথনে আলোচনা সভা ও ইফতার দোয়া মাহফিল চসিকের ৬ ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ৩৮ তম সাধারণ সভায় মশা কমাতে কার্যক্রম বাড়াবে : মেয়র রেজাউল “বিড়ি শিল্পে ট্যাক্স প্রত্যাহারসহ চার দাবিতে রংপুর শ্রমিকদের মানববন্ধন” ইন্দুরকানী প্রেসক্লাবে ইফতার মাহফিল বরিশাল চকবাজার এবায়দুল্লাহ মসজিদে অগ্নিকান্ড। টাঙ্গাইলে দৈনিক সকালের সময় পত্রিকার পাঠক ফোরাম গঠিত চট্টগ্রাম পাহাড়তলীতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার চট্টগ্রামে জালনোটসহ প্রতারকচক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ রমজান মাসের পবিত্রতা লঙ্ঘন করছে নারায়ণগঞ্জ চিশতিয়া বাউল সমিত

টাঙ্গাইলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীকে ঘর উপহার দিলেন মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান শামীমা আক্তার

মোঃ মশিউর রহমান/টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলে আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়েছেন অন্তত এক হাজারের বেশি পরিবার। সরকারি ব্যবস্থাপনা ছাড়াও টাঙ্গাইলে ব্যক্তিগত অর্থায়নে নিজ উদ্যোগে ঘর নির্মাণ করে দিয়েছেন সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীমা আক্তার। এমন উদ্যোগে প্রশংসায় ভাসছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিত্তবানদের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সচেতন মহল।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার দ্যাইন্যা ইউনিয়নের চর ফতেপুর খোশালিয়া গ্রামের ৬৫ বছরের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এলাহী মোল্লাকে নিজস্ব অর্থায়নে ঘর উপহার দেন সদর উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীমা আক্তার। এ বিষয়ে তিনি ফেসবুকে একটি স্টেটাস দেন। যাহ হুবহুব তুলে ধরা হল ‘আমার নির্বাচনী এলাকা তোরাবগঞ্জ ব্রীজের পাশে এই ভদ্রলোক প্রতিদিন বসে থাকেন। উনার সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয় করোনার প্রথম ওয়েবে এর সময় যখন সারাদেশে নজিরবিহীন লকডাউন চলছে মানুষজন সবাই ভীতসন্ত্রস্থ হয়ে ঘরের মাধ্যে বসে আছে। তখন আমি আমার সাধ্যমত ব্যক্তিগত অর্থায়নে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে সদরের বিভিন্ন ইউনিয়নে ছুটে যাচ্ছি ঠিক ওই সময়টাতে প্রায়ই দেখতাম এই ভদ্রলোক ব্রীজের এক পাশে নির্লিপ্তভাবে বসে থাকতেন। উনার এই একা একা বসে থাকা আমাকে অনেক কষ্ট দিতো তাই একদিন ওনার কাছে যাই কথা বলি আর আমার কাছে থাকা খাদ্যসামগ্রী একটা প্যাকেট দেই। এরপর থেকেই মনে হত এই ভদ্রলোকের জন্য যদি কিছু করতে পারতাম তাহলে অনেক শান্তি পেতাম। হঠাৎ একদিন মনে হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ড্রিম প্রজেক্ট আশ্রয়ন প্রকল্পের অংশ হিসেবে যদি এই ভদ্রলোককে নিজ অর্থায়নে একটি বাড়ি করে দেই তাহলে হয়তবা এই প্রকল্পের সাথে এক বিন্দু হলেও আমি নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পারব। এতেই আমার জীবনের সার্থকতা আসবে। গত২০ জুন উনার ঘরসহ ১১৩০টি ঘর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেন। উনি ওনার পরিবারসহ নতুন বাড়িতে উঠে গেছেন আল্লাহর কাছে আমি দোয়া করি উনি যাতে উনার পরিবার নিয়ে ভালো থাকেন, সুস্থ থাকেন আমিন। এমন মহতী কাজের ভুসয়ী প্রসংশা করেছেন এলাকার সুধীজন। তারা বলেন, সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান শামীমা আক্তার একজন দানশীল মানুষ। মহামারী করোনার শুরু থেকেই তিনি নিজ অর্থায়নে চর এলাকার অসহায় মানুষের জন্য সহযোগিতার দ্বার উন্মুক্ত রেখেছেন। এবার নিজ অর্থায়নে বৃদ্ধ এক প্রতিবন্ধীকে ঘর উপহার দিয়ে এলাকায় সাধারণ মানুষের মনের ভিতর জায়গা করে নিয়েছে। ঘর পেয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক এলাহি বলেন, করোনার সময় ভিক্ষার টাকা খুব একটা পাইনা, খুব কষ্টে দিন কাটছিল। হঠাৎ একদিন কোথা থেকে ফেরেস্তার মত একজন আসলো আমাকে এক বস্তা খাদ্য সামগ্রী দিলেন এবং বললো বাবা দেখি আপনার জন্য কিছু করতে পারি কিনা। তিনি আমাকে একটি ঘর উপহার দিয়েছে। শেষ বয়সে ঘর পেয়ে আমি খুব খুশি হয়েছি। আল্লাহ আমাদের মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান শামীমা আক্তারকে হাজার বছরের আয়ু দান করেন। এ ব্যাপারে দ্যাইন্যা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. লাভলু মিয়া লাবু বলেন, সদর উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীমা আক্তার তার নিজস্ব অর্থায়নে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক এলাহী মিয়াকে ঘর উপহার দেওয়ার বিষয়টি আমি জানি। এমন উদ্যোগে আমার ইউনিয়নবাসীর সাথে আমি নিজেও খুব খুশি হয়েছি।
সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের সুধীজন বলেন, সবাই যদি ব্যক্তিগত উদ্যোগে সাধ্যমত এভাবেই তার চারপাশের মানুষের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়ায়, তাহলে সমাজটা আরো সুন্দর ও সমৃদ্ধ হতো।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

রোজা মানুষের মানবিক গুণাবলি বিকশিত করে-লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল।

টাঙ্গাইলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীকে ঘর উপহার দিলেন মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান শামীমা আক্তার

আপডেট টাইম ০৫:০৭:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুন ২০২১

মোঃ মশিউর রহমান/টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলে আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়েছেন অন্তত এক হাজারের বেশি পরিবার। সরকারি ব্যবস্থাপনা ছাড়াও টাঙ্গাইলে ব্যক্তিগত অর্থায়নে নিজ উদ্যোগে ঘর নির্মাণ করে দিয়েছেন সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীমা আক্তার। এমন উদ্যোগে প্রশংসায় ভাসছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিত্তবানদের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সচেতন মহল।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার দ্যাইন্যা ইউনিয়নের চর ফতেপুর খোশালিয়া গ্রামের ৬৫ বছরের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এলাহী মোল্লাকে নিজস্ব অর্থায়নে ঘর উপহার দেন সদর উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীমা আক্তার। এ বিষয়ে তিনি ফেসবুকে একটি স্টেটাস দেন। যাহ হুবহুব তুলে ধরা হল ‘আমার নির্বাচনী এলাকা তোরাবগঞ্জ ব্রীজের পাশে এই ভদ্রলোক প্রতিদিন বসে থাকেন। উনার সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয় করোনার প্রথম ওয়েবে এর সময় যখন সারাদেশে নজিরবিহীন লকডাউন চলছে মানুষজন সবাই ভীতসন্ত্রস্থ হয়ে ঘরের মাধ্যে বসে আছে। তখন আমি আমার সাধ্যমত ব্যক্তিগত অর্থায়নে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে সদরের বিভিন্ন ইউনিয়নে ছুটে যাচ্ছি ঠিক ওই সময়টাতে প্রায়ই দেখতাম এই ভদ্রলোক ব্রীজের এক পাশে নির্লিপ্তভাবে বসে থাকতেন। উনার এই একা একা বসে থাকা আমাকে অনেক কষ্ট দিতো তাই একদিন ওনার কাছে যাই কথা বলি আর আমার কাছে থাকা খাদ্যসামগ্রী একটা প্যাকেট দেই। এরপর থেকেই মনে হত এই ভদ্রলোকের জন্য যদি কিছু করতে পারতাম তাহলে অনেক শান্তি পেতাম। হঠাৎ একদিন মনে হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ড্রিম প্রজেক্ট আশ্রয়ন প্রকল্পের অংশ হিসেবে যদি এই ভদ্রলোককে নিজ অর্থায়নে একটি বাড়ি করে দেই তাহলে হয়তবা এই প্রকল্পের সাথে এক বিন্দু হলেও আমি নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পারব। এতেই আমার জীবনের সার্থকতা আসবে। গত২০ জুন উনার ঘরসহ ১১৩০টি ঘর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেন। উনি ওনার পরিবারসহ নতুন বাড়িতে উঠে গেছেন আল্লাহর কাছে আমি দোয়া করি উনি যাতে উনার পরিবার নিয়ে ভালো থাকেন, সুস্থ থাকেন আমিন। এমন মহতী কাজের ভুসয়ী প্রসংশা করেছেন এলাকার সুধীজন। তারা বলেন, সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান শামীমা আক্তার একজন দানশীল মানুষ। মহামারী করোনার শুরু থেকেই তিনি নিজ অর্থায়নে চর এলাকার অসহায় মানুষের জন্য সহযোগিতার দ্বার উন্মুক্ত রেখেছেন। এবার নিজ অর্থায়নে বৃদ্ধ এক প্রতিবন্ধীকে ঘর উপহার দিয়ে এলাকায় সাধারণ মানুষের মনের ভিতর জায়গা করে নিয়েছে। ঘর পেয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক এলাহি বলেন, করোনার সময় ভিক্ষার টাকা খুব একটা পাইনা, খুব কষ্টে দিন কাটছিল। হঠাৎ একদিন কোথা থেকে ফেরেস্তার মত একজন আসলো আমাকে এক বস্তা খাদ্য সামগ্রী দিলেন এবং বললো বাবা দেখি আপনার জন্য কিছু করতে পারি কিনা। তিনি আমাকে একটি ঘর উপহার দিয়েছে। শেষ বয়সে ঘর পেয়ে আমি খুব খুশি হয়েছি। আল্লাহ আমাদের মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান শামীমা আক্তারকে হাজার বছরের আয়ু দান করেন। এ ব্যাপারে দ্যাইন্যা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. লাভলু মিয়া লাবু বলেন, সদর উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীমা আক্তার তার নিজস্ব অর্থায়নে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক এলাহী মিয়াকে ঘর উপহার দেওয়ার বিষয়টি আমি জানি। এমন উদ্যোগে আমার ইউনিয়নবাসীর সাথে আমি নিজেও খুব খুশি হয়েছি।
সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের সুধীজন বলেন, সবাই যদি ব্যক্তিগত উদ্যোগে সাধ্যমত এভাবেই তার চারপাশের মানুষের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়ায়, তাহলে সমাজটা আরো সুন্দর ও সমৃদ্ধ হতো।