ঢাকা ০৫:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রেস বিজ্ঞপ্তি (২০ এপ্রিল ২০২৪ ) —————————————- ১৫ দিনের ঈদযাত্রায় ২৯৪ প্রাণের মৃত্যুমিছিল : সেভ দ্য রোড চন্দনাইশে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল বশর ভূঁইয়া পরিষদের ঈদ পুনমিলনী অনুষ্ঠিত ফরিদপুর জেলার মধুখালিতে “শ্যালিকার সঙ্গে পরকীয়ার জেরে দুলাভাইকে নৃশংসভাবে হত্যা” শীর্ষক চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার পলাতক প্রধান আসামি আশারুল শেখ এবং তার প্রধান সহযোগী ইলিয়াস শেখ ও খায়রুল শেখ’কে ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। রাঙ্গুনিয়ায় নববর্ষ বৈশাখী উৎসবে জলকেলি ও বলি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে বেলখাইন স্পোটিং ক্লাবের অলনাইট ফুটবল টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল সম্পন্ন বগুড়ায় চাঞ্চ্যল্যকর শিশু বন্ধনকে গলাকেটে হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন গজারিয়ায় দুই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিরুল ইসলাম এর পক্ষে গনসংযোগ ও লিফলেট বিতরন প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনী সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে আলোচনা ও পুরুষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠান –অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন করাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০৪ জন পরিবহন চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। চট্টগ্রামে দুই চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে-২ ঘণ্টার কর্মবিরতির ঘোষণা বিএমএর

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে আবাদী জমি ধ্বংস করে চলছে মাটি বিক্রির মহোৎসব

মোঃ মশিউর রহমান/টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় ভূমি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ফসলি জমির মাটি বিক্রির মহোৎসবে মেতেছে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করছে কৃষিসংশ্লিষ্ট সচেতন মহল। স্থানীয়দের অভিযোগ, সারা বছরই এসব মাটিখেকো তাদের অবৈধ মাটি বিক্রির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মাটিখেকোদের উৎপীড়নে দিশাহারা হয়ে উঠেছে ফসলি জমির মালিক ও কৃষি শ্রমিকরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, নাগরপুর উপজেলার মানড়া, কেদারপুর, দেইল্লা, কাশাদহ, পাঁচতারা, নন্দপাড়া, ভুগোলহাট, দপ্তিয়র, ঘুনিপাড়া, সলিমাবাদ, গয়হাটা সহ কয়েকটি স্পটে মাটি উত্তোলন হচ্ছে। বিশেষ করে ভুগোলহাট বাজারের পশ্চিম পাশে মেসার্স আলিফ এন্ড রাজু এন্টারপ্রাইজ ও মানড়ার ইউপি সদস্য আরিফ, মাটি ব্যবসায়ী রশিদ ও বজলুর হক পীর সহ বিভিন্ন এলাকার মাটি বিক্রির চক্র ইটাভাটার মালিকদের কাছে শত শত বিঘা কৃষিজমির মাটি তুলে দিয়ে আবাদি জমি ধ্বংস করে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের অর্থ। মাটিখেকো নামে বহুল পরিচিত বেশ কয়েকটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট গ্রুফ রয়েছে নাগরপুর উপজেলায়।
এলাকাবাসীর দাবি, মাছ চাষের কথা বলে পুকুর খনন করে শত শত বিঘা আবাদি কৃষি জমির মাটি ভেকু দিয়ে কেটে বিভিন্ন ইটভাটা ও স্থাপনা নির্মাণকারীদের কাছে বিক্রি করছে মাটি বিক্রেতা সিন্ডিকেট। অন্যদিকে কৃষি কাজের জন্য ভারত থেকে আমদানি করা মাহেন্দ্র দিয়ে মাটি আনা-নেয়ার ফলে অধিকাংশ গ্রামীণ কাঁচাপাকা সড়কের বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে সিংজোরা গ্রামের অটোরিক্সা (সিএনজি) চালক আবদুস সালাম  ও ধনাইল গ্রামের রিক্সাচালক করিম (ছদ্ম নাম) ভূগোলহাটে একটি চা স্টলে আলাপকালে বলেন, রাস্তাঘাট যতই ঠিক করা হোক না কেন তাতে কোন লাভ নেই, কারণ মাটি বিক্রি বন্ধ না হলে মাহেন্দ্র চলাচল বন্ধ হবে না। মাহেন্দ্রের কারণে পাকা সড়কের পিচ উঠে যায় ও গর্ত সৃষ্টি হয়। কাঁচা সড়ক ভেঙে বড় বড় গর্ত হয়, যা দেখার ও বলার কেউ নেই। ভুক্তভোগী কৃষক মানড়া  গ্রামের শাজাহান ও কেদারপুরে হোসন মিয়া বলেন, ফসলি জমির মাটি বিক্রির ব্যবসা চালাতে তৎপর সঙ্গবদ্ধ একটি চক্র। তারা সারা বছর মাটি বিক্রি করলেও অদৃশ্য কারনে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ দফতর সূত্রে জানা যায়, নাগরপুরে মোট আবাদি জমির পরিমাণ ২১৫৩০ হেক্টর। যার মধ্যে এক ফসলি জমি ১৮৪০ হেক্টর, দুই ফসলি জমি ১২৩৬৫ হেক্টর, তিন ফসলি জমি ৭৩২৫ হেক্টর। কিন্তু বর্তমানে প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ বিষা কৃষিজমি কথিত মাটি ব্যবসায়ীরা বিনষ্ট করছে। পুকুর খনন ও মাছ চাষের কথা বলে মাটি তুলছে তারা- উদ্দেশ্য মাটি বিক্রি করা।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি। বরং প্রভাব শালিদের চাপের মুখে পরতে হয় তাদের। বিভিন্ন স্পটগুলোতে গিয়ে মাটি ব্যবসায়ীদের কাছে ফসলি জমির মাটি কাটার অনুমোদনের বিষয়টি জানতে চাইলে তারা অনুমোদনের কাগজ দেখতে দেখাতে পারেননি।
এ বিষয়ে নাগরপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার সিফাত-ই-জাহানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেশ কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে বিগত কয়েক দিনে আমি ও সহকারী কমিশনার মোবাইল কোট পরিচালনা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। পরবর্তীতে এধরনের আইনের ব্যত্তয় ঘটলে এবং তা যদি আমার অধিক্ষেত্রের মধ্যে হয় তবে অবশ্যই আইনুগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রেস বিজ্ঞপ্তি (২০ এপ্রিল ২০২৪ ) —————————————- ১৫ দিনের ঈদযাত্রায় ২৯৪ প্রাণের মৃত্যুমিছিল : সেভ দ্য রোড

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে আবাদী জমি ধ্বংস করে চলছে মাটি বিক্রির মহোৎসব

আপডেট টাইম ০৭:৩৩:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২০
মোঃ মশিউর রহমান/টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় ভূমি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ফসলি জমির মাটি বিক্রির মহোৎসবে মেতেছে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করছে কৃষিসংশ্লিষ্ট সচেতন মহল। স্থানীয়দের অভিযোগ, সারা বছরই এসব মাটিখেকো তাদের অবৈধ মাটি বিক্রির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মাটিখেকোদের উৎপীড়নে দিশাহারা হয়ে উঠেছে ফসলি জমির মালিক ও কৃষি শ্রমিকরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, নাগরপুর উপজেলার মানড়া, কেদারপুর, দেইল্লা, কাশাদহ, পাঁচতারা, নন্দপাড়া, ভুগোলহাট, দপ্তিয়র, ঘুনিপাড়া, সলিমাবাদ, গয়হাটা সহ কয়েকটি স্পটে মাটি উত্তোলন হচ্ছে। বিশেষ করে ভুগোলহাট বাজারের পশ্চিম পাশে মেসার্স আলিফ এন্ড রাজু এন্টারপ্রাইজ ও মানড়ার ইউপি সদস্য আরিফ, মাটি ব্যবসায়ী রশিদ ও বজলুর হক পীর সহ বিভিন্ন এলাকার মাটি বিক্রির চক্র ইটাভাটার মালিকদের কাছে শত শত বিঘা কৃষিজমির মাটি তুলে দিয়ে আবাদি জমি ধ্বংস করে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের অর্থ। মাটিখেকো নামে বহুল পরিচিত বেশ কয়েকটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট গ্রুফ রয়েছে নাগরপুর উপজেলায়।
এলাকাবাসীর দাবি, মাছ চাষের কথা বলে পুকুর খনন করে শত শত বিঘা আবাদি কৃষি জমির মাটি ভেকু দিয়ে কেটে বিভিন্ন ইটভাটা ও স্থাপনা নির্মাণকারীদের কাছে বিক্রি করছে মাটি বিক্রেতা সিন্ডিকেট। অন্যদিকে কৃষি কাজের জন্য ভারত থেকে আমদানি করা মাহেন্দ্র দিয়ে মাটি আনা-নেয়ার ফলে অধিকাংশ গ্রামীণ কাঁচাপাকা সড়কের বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে সিংজোরা গ্রামের অটোরিক্সা (সিএনজি) চালক আবদুস সালাম  ও ধনাইল গ্রামের রিক্সাচালক করিম (ছদ্ম নাম) ভূগোলহাটে একটি চা স্টলে আলাপকালে বলেন, রাস্তাঘাট যতই ঠিক করা হোক না কেন তাতে কোন লাভ নেই, কারণ মাটি বিক্রি বন্ধ না হলে মাহেন্দ্র চলাচল বন্ধ হবে না। মাহেন্দ্রের কারণে পাকা সড়কের পিচ উঠে যায় ও গর্ত সৃষ্টি হয়। কাঁচা সড়ক ভেঙে বড় বড় গর্ত হয়, যা দেখার ও বলার কেউ নেই। ভুক্তভোগী কৃষক মানড়া  গ্রামের শাজাহান ও কেদারপুরে হোসন মিয়া বলেন, ফসলি জমির মাটি বিক্রির ব্যবসা চালাতে তৎপর সঙ্গবদ্ধ একটি চক্র। তারা সারা বছর মাটি বিক্রি করলেও অদৃশ্য কারনে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ দফতর সূত্রে জানা যায়, নাগরপুরে মোট আবাদি জমির পরিমাণ ২১৫৩০ হেক্টর। যার মধ্যে এক ফসলি জমি ১৮৪০ হেক্টর, দুই ফসলি জমি ১২৩৬৫ হেক্টর, তিন ফসলি জমি ৭৩২৫ হেক্টর। কিন্তু বর্তমানে প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ বিষা কৃষিজমি কথিত মাটি ব্যবসায়ীরা বিনষ্ট করছে। পুকুর খনন ও মাছ চাষের কথা বলে মাটি তুলছে তারা- উদ্দেশ্য মাটি বিক্রি করা।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি। বরং প্রভাব শালিদের চাপের মুখে পরতে হয় তাদের। বিভিন্ন স্পটগুলোতে গিয়ে মাটি ব্যবসায়ীদের কাছে ফসলি জমির মাটি কাটার অনুমোদনের বিষয়টি জানতে চাইলে তারা অনুমোদনের কাগজ দেখতে দেখাতে পারেননি।
এ বিষয়ে নাগরপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার সিফাত-ই-জাহানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেশ কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে বিগত কয়েক দিনে আমি ও সহকারী কমিশনার মোবাইল কোট পরিচালনা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। পরবর্তীতে এধরনের আইনের ব্যত্তয় ঘটলে এবং তা যদি আমার অধিক্ষেত্রের মধ্যে হয় তবে অবশ্যই আইনুগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।