ঢাকা ১২:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রোজা মানুষের মানবিক গুণাবলি বিকশিত করে-লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল। গজারিয়া বালুয়াকান্দি ইউনিয়নে সিকদার পরিবারে আমিরুল ইসলাম এর সর্মথনে আলোচনা সভা ও ইফতার দোয়া মাহফিল চসিকের ৬ ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ৩৮ তম সাধারণ সভায় মশা কমাতে কার্যক্রম বাড়াবে : মেয়র রেজাউল “বিড়ি শিল্পে ট্যাক্স প্রত্যাহারসহ চার দাবিতে রংপুর শ্রমিকদের মানববন্ধন” ইন্দুরকানী প্রেসক্লাবে ইফতার মাহফিল বরিশাল চকবাজার এবায়দুল্লাহ মসজিদে অগ্নিকান্ড। টাঙ্গাইলে দৈনিক সকালের সময় পত্রিকার পাঠক ফোরাম গঠিত চট্টগ্রাম পাহাড়তলীতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার চট্টগ্রামে জালনোটসহ প্রতারকচক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ রমজান মাসের পবিত্রতা লঙ্ঘন করছে নারায়ণগঞ্জ চিশতিয়া বাউল সমিত

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে ৪শ’ বছরের পুরনো ঐতিহাসিক আতিয়া মসজিদ

মোঃ মশিউর রহমান/টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ
বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলেই নতুন বা পুরনো অনেক মসজিদ চোখে পড়ে। এসব মসজিদকে জড়িয়ে রয়েছে নানা ইতিহাস। ঢাকার অদূরে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে উপজেলায় রয়েছে প্রায় ৪শ’ বছরের পুরনো ঐতিহাসিক নান্দনিক মসজিদের ইতিহাস । মসজিদটি হচ্ছে দেলদুয়ার উপজেলার লৌহজং নদীর পূর্ব পাড়ে আতিয়া গ্রামে সোয়া ৪শ’ বছরের প্রাচীন ইসলামী স্থাপনা আতিয়া মসজিদ।

টাঙ্গাইল অঞ্চলে প্রাপ্ত মূল শিলা লিপিগুলোর মধ্যে আতিয়া জামে মসজিদ এলাকায় প্রাপ্ত একটি আরবি এবং একটি ফার্সি শিলা লিপি রয়েছে তবে এগুলোতে মসজিদের নির্মাণকাল সম্পর্কিত তথ্যের ক্ষেত্রে কিছুটা অসংগতি পরিলক্ষিত হয়। বাংলাদেশের জাতীয় জাদুঘরে রক্ষিত শিলালিপিটিতে নির্মাণকাল ১০১৯ হিজরী (১৬১০-১১ খ্রি.) দেয়া হলেও কেন্দ্রীয় প্রবেশ পথের উপর স্থাপিত অপর শিলালিপিতে এর নির্মাণকাল ১০১৮ হিজরী (১৬০৮-৯ খ্রি.) উল্লেখ করা হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের পুরাতত্ত্ব বিভাগ এ স্থাপনার তত্ত্বাবধান করছে।

সুলতানি ও মোগল আমলের স্থাপত্য শিল্পরীতিতে মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনায় ছিলেন প্রখ্যাত স্থপতি মুহাম্মদ খাঁ। মসজিদটি নির্মাণের পর ১৮৩৭ সালে রওশন খাতুন চৌধুরানী এবং ১৯০৯ সালে আবুল আহমেদ খান গজনবি এ মসজিদ সংস্কার করেন।

এক গম্বুজ বিশিষ্ট বর্গাকৃতির মসজিদটির সামনের দিকে বারান্দার ওপর অপেক্ষাকৃত ছোট তিনটি গম্বুজ রয়েছে। বারান্দাসহ মসজিদটি আয়তন হলো ১৭.৭০ মিটার এবং ১২ মিটার। মসজিদের দেয়ালের পুরুত্ব হলো ২.২২ মিটার। মসজিদের চারকোনে অষ্টকোনী ৪টি মিনার রয়েছে। মিনারগুলো ছাদের অনেক ওপরে ওঠে ছোট গম্বুজে শেষ হয়েছে। পশ্চিম পাশের দেয়ালের অর্থাৎ কিবলা দেয়ালের মধ্যে তিনটি অলংকৃত মেহরাব আছে।

পূর্ব দিকে খিলান বিশিষ্ট তিনটি প্রবেশ পথ। বারান্দা থেকে তিনটি প্রবেশ পথের মাধ্যমে মূল মসিজদে প্রবেশ করা যায়। মসজিদের সম্মুখে অংশসহ পুরো মসজিদেই পোড়ামাটির টেরাকোটা নকশায় অলংকৃত। যে নকশা দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়া এবং যথাযথ পরিচর্যার অভাবে অনেকটাই বিলুপ্তি পথে।

বাংলাদেশে সুলতানি ও মোগল আমলের যে সব প্রাচীন মুসলিম স্থাপনা রয়েছে, তন্মধ্যে আতিয়া জামে মসজিদ একটি উল্লেখযোগ্য ব্যাপক পরিচিত স্থাপনা। এক সময় বাংলাদেশের ১০ টাকার নোটে এ মসজিদের ছবি স্থান পেয়েছিল। বর্তমান সময়ে এ মসজিদের মতো ইসলামি স্থাপনা দেশে বিরল। বর্তমানে মসজিদটির সংস্কার খুবই জরুরি।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

রোজা মানুষের মানবিক গুণাবলি বিকশিত করে-লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল।

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে ৪শ’ বছরের পুরনো ঐতিহাসিক আতিয়া মসজিদ

আপডেট টাইম ০৮:৩১:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ অক্টোবর ২০২১

মোঃ মশিউর রহমান/টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ
বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলেই নতুন বা পুরনো অনেক মসজিদ চোখে পড়ে। এসব মসজিদকে জড়িয়ে রয়েছে নানা ইতিহাস। ঢাকার অদূরে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে উপজেলায় রয়েছে প্রায় ৪শ’ বছরের পুরনো ঐতিহাসিক নান্দনিক মসজিদের ইতিহাস । মসজিদটি হচ্ছে দেলদুয়ার উপজেলার লৌহজং নদীর পূর্ব পাড়ে আতিয়া গ্রামে সোয়া ৪শ’ বছরের প্রাচীন ইসলামী স্থাপনা আতিয়া মসজিদ।

টাঙ্গাইল অঞ্চলে প্রাপ্ত মূল শিলা লিপিগুলোর মধ্যে আতিয়া জামে মসজিদ এলাকায় প্রাপ্ত একটি আরবি এবং একটি ফার্সি শিলা লিপি রয়েছে তবে এগুলোতে মসজিদের নির্মাণকাল সম্পর্কিত তথ্যের ক্ষেত্রে কিছুটা অসংগতি পরিলক্ষিত হয়। বাংলাদেশের জাতীয় জাদুঘরে রক্ষিত শিলালিপিটিতে নির্মাণকাল ১০১৯ হিজরী (১৬১০-১১ খ্রি.) দেয়া হলেও কেন্দ্রীয় প্রবেশ পথের উপর স্থাপিত অপর শিলালিপিতে এর নির্মাণকাল ১০১৮ হিজরী (১৬০৮-৯ খ্রি.) উল্লেখ করা হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের পুরাতত্ত্ব বিভাগ এ স্থাপনার তত্ত্বাবধান করছে।

সুলতানি ও মোগল আমলের স্থাপত্য শিল্পরীতিতে মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনায় ছিলেন প্রখ্যাত স্থপতি মুহাম্মদ খাঁ। মসজিদটি নির্মাণের পর ১৮৩৭ সালে রওশন খাতুন চৌধুরানী এবং ১৯০৯ সালে আবুল আহমেদ খান গজনবি এ মসজিদ সংস্কার করেন।

এক গম্বুজ বিশিষ্ট বর্গাকৃতির মসজিদটির সামনের দিকে বারান্দার ওপর অপেক্ষাকৃত ছোট তিনটি গম্বুজ রয়েছে। বারান্দাসহ মসজিদটি আয়তন হলো ১৭.৭০ মিটার এবং ১২ মিটার। মসজিদের দেয়ালের পুরুত্ব হলো ২.২২ মিটার। মসজিদের চারকোনে অষ্টকোনী ৪টি মিনার রয়েছে। মিনারগুলো ছাদের অনেক ওপরে ওঠে ছোট গম্বুজে শেষ হয়েছে। পশ্চিম পাশের দেয়ালের অর্থাৎ কিবলা দেয়ালের মধ্যে তিনটি অলংকৃত মেহরাব আছে।

পূর্ব দিকে খিলান বিশিষ্ট তিনটি প্রবেশ পথ। বারান্দা থেকে তিনটি প্রবেশ পথের মাধ্যমে মূল মসিজদে প্রবেশ করা যায়। মসজিদের সম্মুখে অংশসহ পুরো মসজিদেই পোড়ামাটির টেরাকোটা নকশায় অলংকৃত। যে নকশা দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়া এবং যথাযথ পরিচর্যার অভাবে অনেকটাই বিলুপ্তি পথে।

বাংলাদেশে সুলতানি ও মোগল আমলের যে সব প্রাচীন মুসলিম স্থাপনা রয়েছে, তন্মধ্যে আতিয়া জামে মসজিদ একটি উল্লেখযোগ্য ব্যাপক পরিচিত স্থাপনা। এক সময় বাংলাদেশের ১০ টাকার নোটে এ মসজিদের ছবি স্থান পেয়েছিল। বর্তমান সময়ে এ মসজিদের মতো ইসলামি স্থাপনা দেশে বিরল। বর্তমানে মসজিদটির সংস্কার খুবই জরুরি।