ঢাকা ০২:০৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রোজা মানুষের মানবিক গুণাবলি বিকশিত করে-লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল। গজারিয়া বালুয়াকান্দি ইউনিয়নে সিকদার পরিবারে আমিরুল ইসলাম এর সর্মথনে আলোচনা সভা ও ইফতার দোয়া মাহফিল চসিকের ৬ ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ৩৮ তম সাধারণ সভায় মশা কমাতে কার্যক্রম বাড়াবে : মেয়র রেজাউল “বিড়ি শিল্পে ট্যাক্স প্রত্যাহারসহ চার দাবিতে রংপুর শ্রমিকদের মানববন্ধন” ইন্দুরকানী প্রেসক্লাবে ইফতার মাহফিল বরিশাল চকবাজার এবায়দুল্লাহ মসজিদে অগ্নিকান্ড। টাঙ্গাইলে দৈনিক সকালের সময় পত্রিকার পাঠক ফোরাম গঠিত চট্টগ্রাম পাহাড়তলীতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার চট্টগ্রামে জালনোটসহ প্রতারকচক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ রমজান মাসের পবিত্রতা লঙ্ঘন করছে নারায়ণগঞ্জ চিশতিয়া বাউল সমিত

জীবন বাজি ও একজন সাহসী পুলিশ কর্মকর্তার ভূয়সী প্রশংসা

বিশেষ প্রতিনিধিঃ এএআই ফিরোজ আহাম্মদ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঘাতকের উপর ঝাঁপিয়ে না পড়লে হয়তো আজকে আরও কয়েটি তাজা প্রান ঝরে পরত। এএআই ফিরোজ আহাম্মদ এর সাহসিকতা আবশ্যই প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য।
অদ্য বেলা সোয়া ১১টা। কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের কার্যক্রম চলছে। বিচারক বেগম ফাতেমা ফেরদৌস এজলাসের চেয়ারে বসা। ২০১৩ সালের ২৬ আগস্ট জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার কান্দি গ্রামের আবদুল করিম হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আসামিদের ডাকা হয়।
কিন্তু হঠাৎ ওই হত্যা মামলার ৬নং আসামি হাসান সবার সামনে পকেট থেকে ধারালো ছুরি বের করে একই হত্যা মামলার ৪নং আসামি ফারুকের পেটে ঢুকিয়ে দেন। জীবন বাঁচাতে দৌড়ে বিচারকের খাস কামরায় আশ্রয় নিলে সেখানে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করলে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়েন ফারুক। পরে কুমেক হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক আদালতের বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আদালতের আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা ভয়ে ছোটাছুটি শুরু করেন। কিন্তু কেউ ঘাতককে আটক করতে সাহস পেলেন না। এ সময় মাদক মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসা জেলার বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশের এএআই ফিরোজ আহাম্মদ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোরা চালানোর মুখে ঘাতকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। সেই সঙ্গে ঘাতক হাসানকে জাপটে ধরে আদালত পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আদালতের আইনজীবী শাহনেওয়াজ সুলতানাসহ অন্য আইনজীবীরা জানান, হঠাৎ এমন ঘটনা দেখে আদালতের বিচারক, কর্মকর্তা, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে চারদিকে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। ওই সময় দৌড়ে এসে ঘাতকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন এএসআই ফিরোজ। ঘাতককে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করা না গেলে হয়তো আরও কয়েকজনের প্রাণহানি ঘটতো।
ঘাতককে আটককারী বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘আমি একটি মাদক মামলায় সাক্ষ্য দিতে ঘটনার সময় আদালত কক্ষে বসাছিলাম। আবদুল করিম হত্যা মামলার কার্যক্রম শুরু হলে একপর্যায়ে ঘাতক হাসান উন্মুক্ত ছোরা হাতে আসামি ফারুককে হত্যার চেষ্টা চালায়। কিন্তু আসামি ফারুক প্রাণ বাঁচাতে বিচারকের খাস কামরায় প্রবেশ করে বাঁচার আকুতি জানায়। এ সময় সেখানে গিয়ে ঘাতক তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। এতে আদালতের সবাই হতবিহ্বল ও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কেউ তাকে নিবৃত্ত করার সাহস পাচ্ছিল না। তখন আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঘাতককে জাপটে ধরি। এ সময় আদালতের বিচারক এজলাসে ছিলেন।

Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

রোজা মানুষের মানবিক গুণাবলি বিকশিত করে-লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল।

জীবন বাজি ও একজন সাহসী পুলিশ কর্মকর্তার ভূয়সী প্রশংসা

আপডেট টাইম ০৫:২৯:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০১৯

বিশেষ প্রতিনিধিঃ এএআই ফিরোজ আহাম্মদ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঘাতকের উপর ঝাঁপিয়ে না পড়লে হয়তো আজকে আরও কয়েটি তাজা প্রান ঝরে পরত। এএআই ফিরোজ আহাম্মদ এর সাহসিকতা আবশ্যই প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য।
অদ্য বেলা সোয়া ১১টা। কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের কার্যক্রম চলছে। বিচারক বেগম ফাতেমা ফেরদৌস এজলাসের চেয়ারে বসা। ২০১৩ সালের ২৬ আগস্ট জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার কান্দি গ্রামের আবদুল করিম হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আসামিদের ডাকা হয়।
কিন্তু হঠাৎ ওই হত্যা মামলার ৬নং আসামি হাসান সবার সামনে পকেট থেকে ধারালো ছুরি বের করে একই হত্যা মামলার ৪নং আসামি ফারুকের পেটে ঢুকিয়ে দেন। জীবন বাঁচাতে দৌড়ে বিচারকের খাস কামরায় আশ্রয় নিলে সেখানে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করলে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়েন ফারুক। পরে কুমেক হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক আদালতের বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আদালতের আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা ভয়ে ছোটাছুটি শুরু করেন। কিন্তু কেউ ঘাতককে আটক করতে সাহস পেলেন না। এ সময় মাদক মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসা জেলার বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশের এএআই ফিরোজ আহাম্মদ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোরা চালানোর মুখে ঘাতকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। সেই সঙ্গে ঘাতক হাসানকে জাপটে ধরে আদালত পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আদালতের আইনজীবী শাহনেওয়াজ সুলতানাসহ অন্য আইনজীবীরা জানান, হঠাৎ এমন ঘটনা দেখে আদালতের বিচারক, কর্মকর্তা, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে চারদিকে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। ওই সময় দৌড়ে এসে ঘাতকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন এএসআই ফিরোজ। ঘাতককে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করা না গেলে হয়তো আরও কয়েকজনের প্রাণহানি ঘটতো।
ঘাতককে আটককারী বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘আমি একটি মাদক মামলায় সাক্ষ্য দিতে ঘটনার সময় আদালত কক্ষে বসাছিলাম। আবদুল করিম হত্যা মামলার কার্যক্রম শুরু হলে একপর্যায়ে ঘাতক হাসান উন্মুক্ত ছোরা হাতে আসামি ফারুককে হত্যার চেষ্টা চালায়। কিন্তু আসামি ফারুক প্রাণ বাঁচাতে বিচারকের খাস কামরায় প্রবেশ করে বাঁচার আকুতি জানায়। এ সময় সেখানে গিয়ে ঘাতক তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। এতে আদালতের সবাই হতবিহ্বল ও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কেউ তাকে নিবৃত্ত করার সাহস পাচ্ছিল না। তখন আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঘাতককে জাপটে ধরি। এ সময় আদালতের বিচারক এজলাসে ছিলেন।