এস, এম, ওয়ালিদুজ্জামান শুভ কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :
কুষ্টিয়া সুগার মিল থেকে ৫৩ টন চিনি আত্মসাতের ঘটনায় কুষ্টিয়া
দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক নীল কমল পাল
বাদী হয়ে ১২ আগষ্ট (বৃহস্পতিবার) দুপুরে কুষ্টিয়া সদর থানায় এ মামলা
করেন। মামলায় কুষ্টিয়া সুগার মিলের উপ-ব্যবস্থাপক (ভান্ডার) আল আমিন,
গুদামরক্ষক ফরিদুল হক ও শ্রমিক সরদার বশির উদ্দিন কে আসামি করা হয়েছে।
চলতি বছরের জুনের প্রথম সপ্তাহে কুষ্টিয়া সুগার মিলের চিনির গুদামের
স্টক রেজিস্টার মেলাতে গিয়ে ধরা পড়ে গুদামে প্রায় ৫৩ টন চিনির হদিস
নাই। বিষয়টি জানাজানি হলে চিনিকল প্রশাসনে তোলপাড় সৃষ্টি হয় এবং ৫জুন
জুন রাতে এ সংক্রান্ত থানায় অভিযোগ করা হয়। সে সময় এ ঘটনায় গঠন করা
হয় একাধিক তদন্ত কমিটি। পরে বিষয়টা নিয়ে তদন্ত শুরু করে দুর্নীতি দমন
কমিশন দুদক। দুদকের দীর্ঘ তদন্তের পর তদন্তে উঠে আসে কুষ্টিয়া সুগার
মিলের উপ-ব্যবস্থাপক (ভান্ডার) আল আমিন, গুদামরক্ষক ফরিদুল হক ও শ্রমিক
সরদার বশির উদ্দিন এই চিনি আত্মসাতের ঘটনায় জড়িত থাকার প্রমাণ পায়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে ওই তিন কর্মকর্তা কর্মচারী পরস্পর
যোগসাজশে চিনিকলের ৫২.৭০০ টন চিনি আত্মসাৎ করেন। যার আনুমানিক মূল্য
৩৩,২০,১০০ টাকা।
উল্লেখ্য, লোকসানসহ নানা কারণে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ১৫টি চিনিকলের মধ্যে
কুষ্টিয়াসহ ছয়টি চিনিকলের উৎপাদন বন্ধ করে দেয় সরকার। মিলের উৎপাদন
কার্যক্রম বন্ধ হলেও গত তিন মৌসুমের উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ চিনি অবিক্রীত
রয়ে যায়।
সূত্র জানিয়েছে, কুষ্টিয়া চিনিকলে অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনা এটিই নতুন
নয়। দুর্নীতির দায়ে ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর কুষ্টিয়া চিনিকলের তৎকালীন
ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মুর্শেদ (এমডি) সুগারমিলের সিবিএ সভাপতি ফারুক
হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমানকে একযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
গত ১৯ বছরে কুষ্টিয়া সুগারমিলে লোকসান হয়েছে ৪২০ কোটি টাকা। ফলে
শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের দৌরাত্ম্য, চরম দুর্নীতি, ব্যবস্থাপনায়
ক্রুটি ও ক্রমাগত লোকসানে ২০২০-২১ অর্থবছর মিলে আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদন
বন্ধ রয়েছে।