ঢাকা ০৭:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রোজা মানুষের মানবিক গুণাবলি বিকশিত করে-লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল। গজারিয়া বালুয়াকান্দি ইউনিয়নে সিকদার পরিবারে আমিরুল ইসলাম এর সর্মথনে আলোচনা সভা ও ইফতার দোয়া মাহফিল চসিকের ৬ ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ৩৮ তম সাধারণ সভায় মশা কমাতে কার্যক্রম বাড়াবে : মেয়র রেজাউল “বিড়ি শিল্পে ট্যাক্স প্রত্যাহারসহ চার দাবিতে রংপুর শ্রমিকদের মানববন্ধন” ইন্দুরকানী প্রেসক্লাবে ইফতার মাহফিল বরিশাল চকবাজার এবায়দুল্লাহ মসজিদে অগ্নিকান্ড। টাঙ্গাইলে দৈনিক সকালের সময় পত্রিকার পাঠক ফোরাম গঠিত চট্টগ্রাম পাহাড়তলীতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার চট্টগ্রামে জালনোটসহ প্রতারকচক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ রমজান মাসের পবিত্রতা লঙ্ঘন করছে নারায়ণগঞ্জ চিশতিয়া বাউল সমিত

কুষ্টিয়ারসাবেক পুলিশ সদস্য মিজান এখন লাশ বহনের ফেরিওয়ালা

মোহাম্মদ রফিক, কুুষ্টিয়া : নিচের ছবির মানুষটি কুষ্টিয়ার একজন সাবেক পুলিশ সদস্য। তার নাম মিজানুর রহমান মিজান (৬৩)। পুলিশের মাধ্যমে উদ্ধার হওয়া লাশ পরিববহন করে লাশ কাটাঘরে নিয়ে যাওয়া থেকে আবার সেখান থেকে স্বজনদের বাড়ীতে পৌছে দেয়ায় তার কাজ। এছাড়াও লাশের পরিচয় অজ্ঞাত হলে বেওয়ারীশ হিসাবে দাফনে কবরস্থান পর্যন্ত লাশ বহনে কাজ করে সে। বলা যায় লাশ পরিবহনই এখন তার পেশা। মিজানের পিতার নাম  মৃত দলিল উদ্দীন। বাড়ী ছিল কুষ্টিয়ার হাউজিং এ ব্লকে। বর্তমানে সে গত ৩০ বছর ধরে ২য় স্ত্রীর সাথে মিরপুর উপজেলার বারুইপাড়া  ইউনিয়নের চুনিয়াপাড়া গ্রামে ঘরজামাই হিসাবে বসবাস করছেন। শ্বশুরের নাম মৃত হামেদ মোল্লা। এস এস সি পর্যন্ত লেখাপড়া জানা মিজান এক সময় আর্মস পুলিশে চাকুরী করতেন।
১৯৯১ সালে তার চাকুরী চলে যায়। চাকুরী চলে যাবার দুর্বিসহ সময়ে কুষ্টিয়ার হাউজিংয়ের বাড়ী বিক্রি করতে হয় তাকে। শুধু তাই নয় ১ম স্ত্রীও মিনাজ নামের একমাত্র সন্তানকে নিয়ে বাপের বাড়ী চলে যায়। জীবন জীবিকার প্রয়োজনে সে সময় ভ্যান চালনা শুরু করেন মিজান। ১৯৯৪/৯৫ সালে ভ্যান চালক হিসাবে মিরপুর থানা থেকে একটি লাশ ডোমঘরে নিয়ে যাবার মধ্যদিয়ে মিজানের এ পেশার শুরু হয়। সেই থেকে  মিজান মিরপুর থানার লাশ পরিবহনে কাজ করছেন।
গত ২৪/২৫ বছর ধরে তিনি ৩ শতাধিক লাশ বহন করেছেন। লাশ পরিবহন ছাড়াও সে ভ্যান চালনা করে থাকেন। লাশ পরিবহনে ভয় লাগেনা? এমন প্রশ্ন করেছিলাম মিজানকে। তিনি জানান, প্রথম প্রথম ভয় লাগতো। এখন আর ভয় লাগেনা। মিজান আরো জানান,এখন ভয় লাগে ভ্যানে যখন জীবিত মানুষ বহন করি তখন।মৃত মানুষকে নিয়ে তার কোন ভয় করেনা। প্রতিটি লাশ পরিবহনে ৭ শত টাকা থেকে শুরু করে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত ভাড়া পেয়েছেন বলেও জানান তিনি। ভাড়া নির্ভর করে লাশের স্বজনদের আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী। তবে লাশের পরিচয় অজ্ঞাত হলে থানা থেকে ভাড়া পরিশোধ করে। মিজানের ১ম পক্ষের স্ত্রীর ঘরে মাহবুব মিনাজ নামের এক পুত্র সন্তান আছে। বর্তমানে মিনাজের যশোর রুপদিয়া বাজারে একটি টেলিফোনে দোকান দিয়ে ব্যবসা করে প্রতিষ্ঠিত। তবে পিতা মিজানের খোঁজ রাখে সে।
অন্যদিকে মিজানের দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে রয়েছে এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তান।
Tag :

জনপ্রিয় সংবাদ

রোজা মানুষের মানবিক গুণাবলি বিকশিত করে-লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল।

কুষ্টিয়ারসাবেক পুলিশ সদস্য মিজান এখন লাশ বহনের ফেরিওয়ালা

আপডেট টাইম ০৪:৪২:০২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০১৯
মোহাম্মদ রফিক, কুুষ্টিয়া : নিচের ছবির মানুষটি কুষ্টিয়ার একজন সাবেক পুলিশ সদস্য। তার নাম মিজানুর রহমান মিজান (৬৩)। পুলিশের মাধ্যমে উদ্ধার হওয়া লাশ পরিববহন করে লাশ কাটাঘরে নিয়ে যাওয়া থেকে আবার সেখান থেকে স্বজনদের বাড়ীতে পৌছে দেয়ায় তার কাজ। এছাড়াও লাশের পরিচয় অজ্ঞাত হলে বেওয়ারীশ হিসাবে দাফনে কবরস্থান পর্যন্ত লাশ বহনে কাজ করে সে। বলা যায় লাশ পরিবহনই এখন তার পেশা। মিজানের পিতার নাম  মৃত দলিল উদ্দীন। বাড়ী ছিল কুষ্টিয়ার হাউজিং এ ব্লকে। বর্তমানে সে গত ৩০ বছর ধরে ২য় স্ত্রীর সাথে মিরপুর উপজেলার বারুইপাড়া  ইউনিয়নের চুনিয়াপাড়া গ্রামে ঘরজামাই হিসাবে বসবাস করছেন। শ্বশুরের নাম মৃত হামেদ মোল্লা। এস এস সি পর্যন্ত লেখাপড়া জানা মিজান এক সময় আর্মস পুলিশে চাকুরী করতেন।
১৯৯১ সালে তার চাকুরী চলে যায়। চাকুরী চলে যাবার দুর্বিসহ সময়ে কুষ্টিয়ার হাউজিংয়ের বাড়ী বিক্রি করতে হয় তাকে। শুধু তাই নয় ১ম স্ত্রীও মিনাজ নামের একমাত্র সন্তানকে নিয়ে বাপের বাড়ী চলে যায়। জীবন জীবিকার প্রয়োজনে সে সময় ভ্যান চালনা শুরু করেন মিজান। ১৯৯৪/৯৫ সালে ভ্যান চালক হিসাবে মিরপুর থানা থেকে একটি লাশ ডোমঘরে নিয়ে যাবার মধ্যদিয়ে মিজানের এ পেশার শুরু হয়। সেই থেকে  মিজান মিরপুর থানার লাশ পরিবহনে কাজ করছেন।
গত ২৪/২৫ বছর ধরে তিনি ৩ শতাধিক লাশ বহন করেছেন। লাশ পরিবহন ছাড়াও সে ভ্যান চালনা করে থাকেন। লাশ পরিবহনে ভয় লাগেনা? এমন প্রশ্ন করেছিলাম মিজানকে। তিনি জানান, প্রথম প্রথম ভয় লাগতো। এখন আর ভয় লাগেনা। মিজান আরো জানান,এখন ভয় লাগে ভ্যানে যখন জীবিত মানুষ বহন করি তখন।মৃত মানুষকে নিয়ে তার কোন ভয় করেনা। প্রতিটি লাশ পরিবহনে ৭ শত টাকা থেকে শুরু করে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত ভাড়া পেয়েছেন বলেও জানান তিনি। ভাড়া নির্ভর করে লাশের স্বজনদের আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী। তবে লাশের পরিচয় অজ্ঞাত হলে থানা থেকে ভাড়া পরিশোধ করে। মিজানের ১ম পক্ষের স্ত্রীর ঘরে মাহবুব মিনাজ নামের এক পুত্র সন্তান আছে। বর্তমানে মিনাজের যশোর রুপদিয়া বাজারে একটি টেলিফোনে দোকান দিয়ে ব্যবসা করে প্রতিষ্ঠিত। তবে পিতা মিজানের খোঁজ রাখে সে।
অন্যদিকে মিজানের দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে রয়েছে এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তান।